somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সমুদ্র পিয়াসী' দের জন্য সতর্ক বার্তা!

১৮ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রকৃতিতে কিছু মৌলিক বল আছে। সেই মৌলিক বলগুলো আমাদের জগত কে কিছু মৌলিক নিয়মের মধ্যে বেঁধে দিয়েছে। জগতে আমরা যারা প্রাণী হিসেবে বিচরণ করি তাদেরকে সেই নিয়মগুলো প্রথমত বুঝতে হয়, তারপর সেগুলো মেনে চলতে হয়। সেই নিয়মগুলো না মানলে আমাদের দেহের খাঁচা টি প্রান কে ধারণ করে রাখতে অসমর্থ হয় এবং আমাদের প্রাণহীন দেহের সাথে তখন অন্য সাধারণ জড় বস্তুর কোন পার্থক্য থাকেনা। খুব দ্রুত দাফন, দাহ, ফ্রিজিং অথবা ফেরাউনিয় পদ্ধতিতে মমি করা না হলে প্রাণহীন দেহ পৃথিবীর স্বাভাবিক চাপ এবং তাপমাত্রায় দ্রুত পঁচতে আরম্ভ করে।
প্রান কে বাঁচিয়ে রাখার জন্য প্রকৃতি কে অনুভব করা জরুরী এবং সেই অনুভব করার ক্ষমতা প্রকৃতি আমাদের দিয়েছে। আমাদের শরীরে রয়েছে অনেকগুলো সেন্সর। সেগুলোকে আমরা ইন্দ্রিয় বলি এবং সুস্পষ্ট ভাবে চিহ্নিত পাঁচ টা ইন্দ্রিয় ছাড়াও আরো ইন্দ্রিয়ের উপস্থিতি কে আমরা বিশেষ বিশেষ মুহুর্তে সনাক্ত করতে পারি যার নাম আমরা দেই ষষ্ট ইন্দ্রিয়। এই ইন্দ্রিয়গুলো যখনি আমরা প্রকৃতির বেঁধে দেয়া কোন নিয়মকে ভাঙতে যাই তখন আমাদের নিরব সংকেত দিয়ে বলে- প্রকৃতির নিয়মের মধ্যে থাক এবং বেঁচে থাক!
উপরের আলোচনার সূত্র ধরে এবার এই আলোচনার মূল উদ্যেশ্যে যাই। এই আলোচনার মূল উদ্যেশ্য কি? মূল উদ্যেশ্য হচ্ছে হাজার হাজার পর্যটক যারা সারা বছর ধরে কক্সবাজার, সেন্ট মার্টিন বেড়াতে যান সমুদ্র সম্পর্কে তাদের একটু সতর্ক করা। কারন সামান্য অসতর্কতার কারনে অনেকেই সমুদ্রে ভেসে যান। সুর্য তাপে তপ্ত বিদীর্ন নিষ্ঠুর বেলাভূমিতে ভেসে উঠে তাদের পঁচে যাওয়া লাশ!বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় সেই লাশের চোখ এবং হাত পায়ের তালু খুবলে খেয়েছে সামুদ্রিক মাছ।
এরকম কেন হয়?
সমুদ্র সৈকতের সবচেয়ে উঁচু যায়গায় দাঁড়িয়ে বেলাভূমিতে যতটুকু চোখ যায় দেখুন। দেখবেন ক্রমশ ঢালু হয়ে নিচের দিকে নেমে যাওয়া বেলাভূমি সব যায়গায় একরকম নয়। কিছু কিছু যায়গা অন্যান্য যায়গার চেয়ে উঁচু অথবা নিচু। হাঁটতে গেলে খেয়াল করবেন( বিশেষত ভেজা বালিতে) সব জায়গায় পা একই রকম ডোবেনা। আবার একদম ভাটার সময় যেটা বেলাভূমি ভরা জোয়ারের সময় সেটাই গভীর সমুদ্রের তলা!
এখন ধরেন আপনি জোয়ার ভাটার একটা মাঝামাঝি সময়ে পানিতে নামলেন। মনের আনন্দে পানিতে দাপাদাপি শুরু করলেন। লবনাক্ততার কারনে সমুদ্রের পানির প্লবতা বেশি। সেই অধিক প্লবতার ঢেউয়ের ধাক্কা শরীরে লাগলে অন্যরকম শিহরন হয়! মনে হয় আহা আরেকটু যাই! ঠিক যেন মাতালের পঞ্চম পেগ! আহা, আরেক টু পান করি! এই আরেক টু তেই সব সমস্যার শুরু।
এই ‘আরেক টু’ আপনাকে এমন একটা অবস্থানে নিয়ে যেতে পারে যেখানে সমুদ্র অনেক গভীর। হঠাৎ করে পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে গিয়ে অথবা হঠাৎ নিচু হয়ে যাওয়া ভূমিতে পা হড়কে আপনি পড়তে পারেন উল্টো স্রোতে অথবা ভাটার গভীর টানে। সেই গভীর টান মুহুর্তের ভগ্নাংশে আপনাকে নিয়ে ফেলবে কয়েকশ গজ দূরে। মনে রাখবেন সেই মুহুর্তে প্রকৃতির কাছে আপনি এবং সমুদ্রে ভেসে যাওয়া এক টুকরো ভেজা কাঠের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। কারণ আপনি এবং ভেজা কাঠ দু’জনেই সেই মুহুর্তে প্রকৃতি’র একই নিয়মের অধীন। পানিতে ভেসে যেতে যেতে আপনি সমুদ্র কে যতই নিষ্ঠুর ভাবুন কোন লাভ নাই। প্রকৃতির নিয়ম লঙ্ঘনের চরম মূল্য আপনাকে দিতেই হবে!
আপনি ঠিক কোন যায়গায় প্রকৃতির নিয়ম লঙ্ঘন করেছেন?
সমুদ্রের বিপদ সীমানায় যাবার আগে আপনার ইন্দ্রিয় গুলোর উপর আপনি পূর্ণ মনোযোগ দেন নি। পূর্ণ মনোযোগ দিলে আপনি স্পষ্ট শুনতে পেতেন আপনার চোখ, আপনার কান, আপনার ত্বক, আপনার পায়ের তালুর কোন সেন্সর আপনাকে বলছে- আর যেওনা! আর যেওনা! আর গেলে বিপদ হবে!
মনে রাখবেন!আপনার জীবন রক্ষার সবচেয়ে বড় রাডার আপনার ইন্দ্রিয় সমূহ এবং সবচেয়ে বড় আবহাওয়া অফিস আপনার মস্তিষ্ক। কাজেই সমুদ্র স্নানের অপরিমেয় আনন্দ নিয়ে সমুদ্রেই সমাধিস্ত হতে না চাইলে সমুদ্রে নামার সময় আপনার নিজস্ব ‘রাডার’ এবং ‘আবহাওয়া অফিস’ কে কর্মক্ষম রাখুন।

সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ২:১৩
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ডালাসবাসীর নিউ ইয়র্ক ভ্রমণ

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:৪৪

গত পাঁচ ছয় বছর ধরেই নানান কারণে প্রতিবছর আমার নিউইয়র্ক যাওয়া হয়। বিশ্ব অর্থনীতির রাজধানী, ব্রডওয়ে থিয়েটারের রাজধানী ইত্যাদি নানান পরিচয় থাকলেও আমার কাছে নিউইয়র্ককে আমার মত করেই ভাল ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×