শিক্ষক দের খুবই পেটানো উচিৎ। পারলে পিটিয়ে খাল পার করে দেয়া উচিৎ। অপ্রয়োজনীয় জিনিষ আস্ত রেখে কি হবে? শিক্ষকের কাজ ত শিক্ষা দেয়া। এখন শিক্ষার যদি প্রয়োজন না থাকে শিক্ষকের তাহলে প্রয়োজন কি?
শিক্ষা যে চুড়ান্ত অপ্রয়োজনীয় একটা জিনিষ সেটা আমি ধাপে ধাপে প্রমান করব।চোখ রাখুন আমার লেখার পর্দায়!
প্রথমে আসি বিজ্ঞান শিক্ষার কথায়। বিজ্ঞান শিক্ষা যে শুধু অপ্রয়োজনীয় সেটা নয়। এর কূফল মারাত্নক। শুধুমাত্র পরীক্ষা পাশের জন্য মুখস্ত না করে একটু বুঝে শুনে পড়লেই সর্বনাশ। আপনি যখন বিজ্ঞান মনস্ক হয়ে যাবেন তখন সমাজের মহান অনেক ব্যাপার নিয়ে আপনি হাসি তামাশা করবেন। চাকর কে চাকর না বলে আপনি বলবেন তার শরীরেও ত মানুষের রক্ত! মেয়েদের কে স্বাভাবিক ভাবে চলাফেরা করতে দেখলে ‘মেয়েমানুষের এত বাড়াবাড়ি ঠিক না’ সহ আরো সব রসালো মন্তব্য না করে আপনি ফট করে বলে ফেলবেন- মেয়েরাও ত মানুষ, সৃষ্টিপ্রক্রিয়া অক্ষুন্ন রাখার জন্য দেহের আকার শুধু ছেলেদের চেয়ে ভিন্ন। আড্ডায় চায়ে চুমুক দিতে দিতে কেউ সাম্প্রদায়িক কথাবার্তা বললে আপনিও হ্যাঁ সূচক মুচকি হাসতে পারবেন না। বরং আপনি- ‘আরে ভাই, সব ধর্মের লোকের মধ্যেই ত ভাল খারাপ আছে। কাজ দিয়ে বিচার না করে ধর্ম দিয়ে বিচার করা কেন?’ এ ধরনের বেফাঁস কথাবার্তা বলে সবার বিরাগভাজন হবেন। এই মহান সমাজের সাথে তাল-লয়-রাগ-অনুরাগ-মান-অভিমান মিলিয়ে চলতে বিজ্ঞান শিক্ষা চুড়ান্ত ভাবে পরিহার করা উচিৎ এবং সত্যিকারের বিজ্ঞানের শিক্ষক কোথাও পাওয়া গেলে তাকে পিটিয়ে খাল পার করে দেয়া উচিৎ।
এবার আসি গনিত শিক্ষার কথায়। গনিত শিক্ষা আপনার সাফল্যের পথে বিরাট অন্তরায়। শুধুমাত্র পরীক্ষা পাশের জন্য মুখস্ত না করে গনিত বুঝে পড়লেই সর্বনাশ। আপনি যখন গনিত মনস্ক হবেন তখন মহান সমাজের অনেক বানী কে আপনি অবজ্ঞা করবেন। আপনি বলবেন-জৈবিক ভাবে সীমাবদ্ধ মানুষ কোন প্রক্রিয়াতেই নির্দিষ্ট পরিমানের বেশি সুখ উপভোগ করতে পারেনা। এক সাথে একজন মানুষ দুইটা গাড়িতে চড়তে পারেন না। দুইটা বিছানায় ঘুমাতে পারেনা। দুইটা টয়লেটে বাথরুম করতে পারেনা। চব্বিশ ঘন্টার দিন কারো জন্য আট চল্লিশ ঘন্টার হয়না। কাজেই এমন সিস্টেম তৈরি করি যাতে সবাই সবকিছু একটা করে পায়- এধরনের হাস্যকর কথাবার্তা বলে আপনি সবার কাছে খেলো হয়ে যাবেন এবং ঘুস খাওয়ায়, চুরি করায়, ভন্ডামি করায় আপনার নিরুৎসাহ দেখে আপনার কাছের মানুষ রাই আপনাকে কুৎসিত ভাষায় গালাগালি করা শুরু করবে। আপনাকে সবাই ভাববে নিবীর্য ঢোঁড়াসাপ। কাজেই নিজের বীর্য অক্ষুণ্ণ রাখতে গনিত পরিহার করুন। মহান সমাজের লসাগু হয়ে বেঁচে থাকার জন্য মানুষ কে ‘অঙ্ক দেয়া’ শিখুন এবং সত্যিকারের গনিত জানে এরকম শিক্ষক কোথাও পাওয়া গেলে তাকে পিটিয়ে খালপার করে দিন।
এবার আসি সাহিত্য শিক্ষার কথায়।সাহিত্যিকরাই সাহিত্যের বড় শিক্ষক। বিনোদনের জন্য চটি সাহিত্য অথবা লাইক পাবার উদ্যেশ্যে লিখা মনোরঞ্জনমূলক সাহিত্য আপনি চাইলে পড়তে পারেন। কিন্তু কালজয়ী মহান সাহিত্য কর্ম, তা সে দেশি বিদেশী যাই হোক,সব সময় বর্জনীয়। কারণ মহান সাহিত্য মানেই মহান সমাজের সাথে বেয়াদপি! একেবারে বেরসিক শার্লক হোমসের কথাই ধরুন না। এইত আজকেই জনৈক মহান মশাই এর সাথে শুধু শার্লক হোমস পড়ার কারণে আমি বড় একটা বেয়াদপি করে ফেললাম। আমি বলতেছিলাম- যেকোন দূর্ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া উচিৎ এই কারনে যে তদন্ত না হলে আমি কখনোই জানব না যে সেই দূর্ঘটনার কারণ আমার নিজের ঘরেও উপস্থিত নাই। মশাই ত সাথে সাথে তেলে বেগুনে জ্বলে উঠলেন- ‘খালেদ সাহেব, আপনি কি জানেন! সব ঘটনার তদন্ত করতে গেলে কত ভদ্রলোকের তলার কতকিছু তাতে বেরিয়ে আসতে পারে?? কাজেই মৃত ব্যক্তির সন্মান রক্ষা করার জন্য সব রকম তদন্ত পরিহার করা উচিৎ!’
শার্লক হোমস নামের কালজয়ী গল্প না পড়লে মশাই তথা মহান সমাজের সাথে এরকম বেয়াদপী করার সাহস আমি কোন দিনও পেতাম না।আমিও ‘ভদ্রলোকের তলারক্ষা’ কে সত্যের উপর স্থান দিয়ে নিজের তলানী ঢাকার দিকে সর্বোচ্চ মনোযোগ দিতাম। কাজেই সব কালজয়ী সাহিত্য পুড়িয়ে ফেলা উচিৎ এবং দেশের সব প্রকাশকের ঘোষনা দেয়া উচিৎ- আমরা চটি, প্রেম চুলকানি এবং আবেগ চুলকানি বিষয়ক নির্দোষ বই ছাড়া আর কোন ধরনের বই আজ থেকে ছাপাব না। সরকারের উচিৎ ফেসবুক এবং ব্লগে পুলিশ নিয়োগ করা যাতে চটি, প্রেম চুলকানি এবং আবেগ চুলকানি বিষয়ক লেখা ছাড়া মহান সমাজের জন্য মান হানিকর অন্য কোন ধরনের লেখা কেউ লিখলে সেই লেখা সাথে সাথে গায়েব করে দেয়! এভাবে করলে লেখক রা নিজেরাই নিজেদের খালপার করে দেবে। পিটিয়ে লাঠিক্ষয় করার দরকার হবেনা।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে আগস্ট, ২০১৫ রাত ১১:৩৭