মহাজাগতিক রশ্মির গুজব
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
মুনশি আলিম: ২৭.০৪.২০১৫: সিলেট:: “এই নিয়েছে, ঐ নিল যা কান নিয়েছে চিলে...” কবি শামসুর রাহমান প্রচলিত প্রপাগাণ্ডা থেকে নিজেকে মুক্ত করার জন্যই হয়ত কবিতাটি লিখেছিলেন।সমাজের পরতে পরতেই আমরা নানা গুজবের কারণে বিভ্রান্ত হই। বেশির ভাগ সময়ই আমরা তলিয়ে দেখি না সেটার সত্যিকার বাস্তবতা কতটুকু।
‘আজ রাতে পৃথিবীতে ধেয়ে আসছে ক্ষতিকর উচ্চ তেজস্কিয়তাসম্পন্ন কসমিক রে (মহাজাগতিক রশ্মি। সুতরাং ক্ষতিকর এই রশ্মি থেকে রক্ষা পেতে রাত ১২:৩০ মিনিট থেকে ৩:৩০ মিনিট পর্যন্ত আপনার মোবাইল ফোন বন্ধ রাখুন অথবা শরীরের কাছ থেকে দূরে কোথাও রাখুন। বিশ্বাস না হলে গুগল, নাসা ও বিবিসি’র খবর অনুসন্ধান করে দেখুন। এবং সংবাদটি আপনার বন্ধু-বান্ধব ও প্রিয়জনকে জানান।’
বিভিন্ন প্রকার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ম্যাসেজটি ইতোমধ্যে সয়লাভ হয়ে গেছে। এবং সেটা বিশ্বাস করে আতঙ্কিত হয়ে মেসেজটি প্রিয়জনকে ফরোয়ার্ড করা শুরু করেছেন অনেকেই। সত্যিকার অর্থে এটা নিছকই একটা গুজব। গত সাত বছর ধরে বিভিন্ন সময়ে এই ধরনের মেসেজ দিয়ে গুজব ছড়ানো হয়েছে। বাস্তবে এই মেসেজের কোনো ভিত্তি নেই।
খবর নিয়ে দেখা গেল, আজ রোববার (২৭ এপ্রিল) আবার নতুন করে একই ধরনের গুজব ফেসবুকে ছড়ানো হচ্ছে। সিঙ্গাপুর টিভির খবরের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হচ্ছে রাত ১২:৩০ মিনিট থেকে ৩:৩০ মিনিট পর্যন্ত মোবাইল ফোন বন্ধ রাখতে।
বিভ্রান্তকর এসব গুজবে কান দিয়ে ব্যক্তিগত ও সামষ্টিক ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছে অনেকেই।কিন্তু প্রকৃতপক্ষে বহুল প্রচারিত এই গুজবটির সত্যতা জানতে যোগাযোগ করা হয় বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনে। জানা যায় এই মেসেজের কোনো বাস্তব ভিত্তি নেই। এটি পুরোটাই একটি গুজব।
এ বিষয়ে এটমিক এনার্জি রিসার্চ এসটাবলিশমেন্টের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেন, “ওজন স্তর ভেদ করে কসমিক রে বা মহাজাগতিক রশ্মি সবসময়ই পৃথিবীর ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। কিন্তু ক্ষতিকর মাত্রায় নয়। মহাজগতে কোনো বিস্ফোরণ ঘটলে কসমিক রে প্রবাহের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। যেহেতু এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। সুতরাং কসমিক রে প্রবাহের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। এবং এর সঙ্গে মোবাইল ফোন বন্ধ বা খোলা রাখারও কোনো সম্পর্ক নেই।”
ইন্টারনেট ঘেটে নাসা বা বিবিসির ওয়েবসাইটে এ ধরনের কিছু পাওয়া যায় নি কিংবা গুগলের কোথাও বার্তটির সত্যতা মেলেনি। বরং এর আগে একাধিকবারও যে এই ধরনের গুজব ছড়ানো হয়েছে এবং এতে কান না দেওয়ার কথা বলা হয়েছে, সেই বিষয়ে অসংখ্য সংবাদ পাওয়া গেছে।
--------------------------------------
মুনশি আলিম,
সিলেট,
ইমেইল: [email protected]
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
ছায়ানটের ‘বটমূল’ নামকরণ নিয়ে মৌলবাদীদের ব্যঙ্গোক্তি
পহেলা বৈশাখ পালনের বিরোধীতাকারী কূপমণ্ডুক মৌলবাদীগোষ্ঠী তাদের ফেইসবুক পেইজগুলোতে এই ফটোকার্ডটি পোস্ট করে ব্যঙ্গোক্তি, হাসাহাসি করছে। কেন করছে? এতদিনে তারা উদঘাটন করতে পেরেছে রমনার যে বৃক্ষতলায় ছায়ানটের বর্ষবরণ... ...বাকিটুকু পড়ুন
বয়কটের সাথে ধর্মের সম্পর্কে নাই, আছে সম্পর্ক ব্যবসার।
ভারতীয় প্রোডাক্ট বয়কটটা আসলে মুখ্য না, তারা চায় সব প্রোডাক্ট বয়কট করে শুধু তাদের নতুন প্রোডাক্ট দিয়ে বাজার দখলে নিতে। তাই তারা দেশীয় প্রতিষ্ঠিত ড্রিংককেও বয়কট করছে। কোকাকোলা, সেভেন আপ,... ...বাকিটুকু পড়ুন
মানুষের জন্য নিয়ম নয়, নিয়মের জন্য মানুষ?
কুমিল্লা থেকে বাসযোগে (রূপান্তর পরিবহণ) ঢাকায় আসছিলাম। সাইনবোর্ড এলাকায় আসার পর ট্রাফিক পুলিশ গাড়ি আটকালেন। ঘটনা কী জানতে চাইলে বললেন, আপনাদের অন্য গাড়িতে তুলে দেওয়া হবে। আপনারা নামুন।
এটা তো... ...বাকিটুকু পড়ুন
একজন খাঁটি ব্যবসায়ী ও তার গ্রাহক ভিক্ষুকের গল্প!
ভারতের রাজস্থানী ও মাড়ওয়ার সম্প্রদায়ের লোকজনকে মূলত মাড়ওয়ারি বলে আমরা জানি। এরা মূলত ভারতবর্ষের সবচাইতে সফল ব্যবসায়িক সম্প্রদায়- মাড়ওয়ারি ব্যবসায়ীরা ঐতিহাসিকভাবে অভ্যাসগতভাবে পরিযায়ী। বাংলাদেশ-ভারত নেপাল পাকিস্তান থেকে শুরু করে... ...বাকিটুকু পড়ুন
ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...
ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।
মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন