হ্যাঁ আমি তাদের কথাই বলছি—
ওরা আদর্শ আর চেতনার আড়তদার। আক্রমণে—পুরুষের চেয়ে নারীশরীরই ওদের বেশি পছন্দ!
শহিদমিনার, সিএনজির ভেতর কিংবা রক্ষাকবচ থানার ভেতরেও প্রাকাশ্য দিবালোকে ওরা যখন শেয়াল-শকুনের মতো ছিঁড়ে খাচ্ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের লড়াকু ছাত্রীর দেহ—আমার তখন মনে পড়ে গেল পাকিস্থানি হায়েনাদের কথা!
আমার তখন মনে পড়ে গেল দু’লক্ষ মা-বোনদের বর্বর নির্যাতনের কথা!
আমার তখন মনে পড়ে গেল আগ্রাসী দখলদারদের কথা!
তবে কি আদর্শের নামধারী এই পেটুয়াবাহিনীই নব্য হানাদার?
রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার যাতাকলে পিষ্ট এদেশের স্বপ্নহৃদয়,
রাষ্ট্রযন্ত্র কি মানবিক অধিকারটুকুও কেড়ে নেবে?
রাষ্ট্রযন্ত্র কি শিশু-কিশোরের মুখের কথাও কেড়ে নেবে?
রাষ্ট্রযন্ত্র কি লক্ষ-কোটি তরুণের ন্যায্য অধিকারের স্বপটুকুও কেড়ে নেবে?
রাষ্ট্রযন্ত্র কি উদ্বিগ্ন অভিভাবকদের বিলাপের মুহূর্তটিও কেড়ে নেবে?
রাষ্ট্রযন্ত্র কি মানববন্ধনের অধিকারটুকুও কেড়ে নেবে?
সভাসমাবেশের অধিকার কেড়ে নেবে?
রাষ্ট্রযন্ত্র কি মুক্তির কথা কেড়ে নেবে?
রাষ্ট্রযন্ত্র কি কান্নার অধিকারও কেড়ে নেবে?
এদেশ কি আমার নয়?
এদেশ কি স্বপ্নবাজ তরুণপ্রজন্মের নয়?
তবে কি কেউ এদেশে ন্যায্য অধিকারের কথা বলতে পারবে না?
শাসকগোষ্ঠীর মতের বিপরীত হলেই কি পেটুয়াবাহিনী লেলিয়ে দিতে হবে?
এর নামই কি গণতন্ত্র?
আর কত?
এদেশ থেকে কি মানবতা উঠে যাবে?
বুদ্ধিজীবীরা কি কেবলই সরকারের প্যাকেজ প্রোগ্রাম?
তাদের কি কখনোই বোধোদয় হবে না?
চেতনার মিউজিয়ামে রক্ষকের কুৎসিত মুখ,
তকমাধারী আদর্শের সমুদ্রে স্নান করা নব্য হায়েনারা দেখতে আমাদের মতোই—কেবল ভেতরটা পশুর!
ভয়? না, এখন আর কোনো ভয় নেই। বোবার আবার কানে শোনার ভয় কী!
বাকস্বাধীনতা? একাত্তরে বুকের তাজা রক্ত দিয়ে স্বাধীনতা এনেছি; সত্যিই কি স্বাধীনতা এনেছি? বাকস্বাধীনতা?
বোধহীন রাজ্যে পশুত্ব আর গণতন্ত্র উভয়ই এক। দু’জায়গাতেই ক্ষমতাবানদের দাপট ও স্বৈরাচরিতা সমান!
দলগুলোতে এখন ক্ষমতার এঁটো গন্ধ!
তবে কি হুমায়ুন আজাদের কথাই সত্য—সবকিছু নষ্টদের অধিকারে যাবে?
হায়রে! হাতুড়িবাহিনী, তোরা জানলিই না, তোদের বর্বর হাতুড়ির আঘাতে শুধু তরিকুলের হাড় ভাঙেনি, ভেঙেছে বাংলাদেশের হাড়!
ওহে ভ্রষ্ট পেটুয়াবাহিনী! মনে রাখিস, বেলাশেষে তোরাও একা, শ্মশানের মতোই একা!
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই জুলাই, ২০১৮ দুপুর ১২:১২