মসলিন নিয়ে সেই ছোটবেলা থেকেই জানি। খুবই পাতলা কাপড়। এর প্রধান দুইটি বৈশিষ্ট্য হলো মসলিন শাড়ীকে একটা ম্যাচ বাক্সে ভরে রাখা যায়, একটা আংটির ভেতর দিয়ে টেনে নিয়ে যাওয়া যায়। আওরঙ্গজেবের কন্যা নাকি একবার সেই শাড়ি(বা মসলিনের জামা) পরে রাজার সামনে এসেছিল, রাজা জিজ্ঞেস করেছিল তুমি কি আজকে কোন কাপড় পরোনি?(উইকিপিডিয়াতে আছে রাজা বলেছিল, তোমার কি কাপড়ের অভাব?)
মসলিন ছিল মূলত রপ্তানী পন্য। এই অঞ্চলে রাজা, জমিদারদের মহিলা সদস্য বা ব্রিটিশ মেমসাহেবদের পোশাক হিসেবে ছিল। তাও একান্ত ঘরের পোশাক। তখনকার সাধারণ কেউ এই কাপড়ের জামা বা শাড়ি পরতো না। তাহলে এটা কীভাবে আমাদের ঐতিহ্য হয়? মসলিনে তৈরি পোশাক ছিল একটা ভালগার পোশাক। সাধারণ পশ্চিমা পোশাককে আমাদের বুদ্ধিজীবিরা বলছেন, বাঙালী সংস্কৃতির সাথে যায় না। তাহলে মসলিন কীভাবে আমাদের ঐতিহ্যের সাথে যায়? আবার এই ঐতিহ্যকে নাকি ফিরিয়েও আনা হচ্ছে। গবেষণা চলছে। কিন্তু কেন?
মসলিন কি হাসিনা খালেদা পরবেন?
মসলিন পরে কি পুতুল, জোবায়দা রাস্তায় বের হবেন?
'শাড়ি আর টিপ ছাড়া বাঙালী হয় না' বলা মিতা হক পরে বের হবেন?
একটু পর আমাকে 'গুহায় চলে যেতে বলা' কলাবাগান-এর স্ত্রী পরবেন?
উইম্যান চ্যাপ্টারের নারীবাদিরা পরবেন?
তাহলে মসলিন কার জন্য ফিরিয়ে আনা হবে? রক্ষণশীল সমাজে মসলিনের কোন দরকার নেই। আরও পরে হয়তো আমরা আর এত রক্ষণশীল থাকবো না। তবে এখন এই কাপড় ফিরিয়ে আনা ঠিক হবে না।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে অক্টোবর, ২০১৭ রাত ১০:২৮