১. জাতীয় সঙ্গীত বদলানোর ব্যপারে -
জাতীয় সঙ্গীত স্বাধীন বাংলাদেশের জন্য লেখা হয়নি। যখন দুই বাংলা এক ছিল তখনকার সময়ে লেখা। ভালো কথা। আমরাও তখন এক ছিলাম। বঙ্গবন্ধু, আওয়ামী লীগ, সর্বোপরি সব বাংলাদেশীই শুরুতে বাংলাদেশকে পূর্ব বাংলা বলতে অভ্যস্ত ছিল। যে কারণে হয়তো বা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা এই গানকে জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে মর্যাদা দেয়া হয়েছে। কিন্তু স্বাধীনতার অনেক পরে যদি আত্মমর্যাদাশীল জাতি হিসেবে আমরা কেউ নিজেদের দেশের জন্য একটা জাতীয় সঙ্গীত দাবি করি সেটাতে কেন চেতনাবাজদের এত কষ্ট হয়? এটা কি বঙ্গবন্ধুর আমলে লেখা যে আমরা বদলানোর কথা বলে বঙ্গবন্ধুকে অপমান করছি? এটা বদলাতে বললে কি মুক্তিযুদ্ধ বা স্বাধীনতাবিরোধী কোন ভাব চলে আসে? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের বিরোধীতাকারি চেতনাবাজদের গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেই কি সমালোচনা করা যাবে না?
২. জাতীয় পতাকার উপর নামাজ পড়া -
মানলাম জাতীয় পতাকা ব্যবহারের কিছু নিয়ম নীতি আছে। কিন্তু পতাকার উপর নামাজ পড়লে সেটা অবমাননা হয় না। বরং আরো মর্যাদা বেড়ে যায়। অন্য দেশে জাতীয় পতাকার ডিজাইন দিয়ে কি কি তৈরি হয় তা আর বললাম না। আমার আপত্তি হল, এটাকে কেন চেতনাবাজরা ইস্যু করবে? কই তারা তো অন্য এক চেতনাবাজের কুকুরের গায়ে জাতীয় পতাকা নিয়ে ছবি ভাইরাল করেনি? তাহলে মুসলিম প্রধান দেশে পতাকার উপর নামাজ পড়লে কেন এত জ্বলবে?
৩. মঙ্গল শোভাযাত্রার ব্যপারে -
আমাদেরও একটা আলাদা বর্ষপুঞ্জী আছে। যার টাকা আছে সে শখ করে পান্তা ইলিশ খাচ্ছে। যার সামর্থ্য কম সে মেলায় গিয়ে এটা সেটা কিনছে। ব্যবসায়ীরা হালখাতা করছে। কোন আপত্তি নাই। ঠিক আছে বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে একটা শোভাযাত্রা করা হচ্ছে। ওখানে দেশীয় ঐতিহ্য ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে। কিন্তু ওখানে মূর্তি কেন, মুখোশ কেন? পেঁচা কেন? এগুলোর সাথে বৈশাখের কি সম্পর্ক? এটাও তো বঙ্গবন্ধুর আমল থেকে শুরু না যে এটার বিপক্ষে বললে বঙ্গবন্ধুকে অপমান করা হবে? পেঁচা, মুখোশ বাদ দিতে বললে কি মুক্তিযুদ্ধ বা স্বাধীনতাবিরোধী কোন ভাব চলে আসে? মুসলিম হিসেবে কোন দুঃখে শোভাযাত্রাকে 'মঙ্গল' নাম দিব? ভালোই হল, ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ আর শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীনকে এসব চেতনাবাজদের দেখে যেতে হয়নি।
অফ টপিক - নারায়ণগঞ্জের স্কুল শিক্ষককে কানে ধরে উঠাবসা করানোর পর যেভাবে চেতনাবাজদে হাহাকার দেখলাম সোশাল মিডিয়াতে সেভাবে তো দেখলাম না চট্টগ্রাম বিজ্ঞান কলেজের শিক্ষককে মারধরের পর। ঐ শিক্ষক বেশী টাকা ফি নিয়েছিল বলেই কি কাজটা(মারধর) ঠিক হয়েছিল? নাকি সংখ্যালঘুদের জন্য মায়াকান্না করলে জাতে উঠা যায়?
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৯:১৮