somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ধর্ষণ ★ অনুগল্প

০১ লা আগস্ট, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



বিছানায় শুতে গিয়ে আইমা চমকে উঠল । তার বালিশের পাশেই ছিল একটা মাকড়সা । বাঁ হাতের ঝটকায় মাকড়সাটা ফেলে দিয়ে । তাঁর স্বামীর বালিশটা তুললো । বালিশের নীচে একটা সাদা খাম দেখতে পেলো আইমা । কৌতূহলী মন নিয়ে আইমা খামটা হাতে তুলে নিয়ে । খামটা খোলার চেষ্টা করল । আইমা খামের মুখটা খুলতেই একটা অল্প বয়সি মেয়ের ছবি দেখতে পেলো । কে এ ! এক ঝটকা ভাবতেই । আইমার চোখের ঘুম বেমালুম উবে গেল । ঝাপসা চোখ পরিস্কার হতেই । গাঢ় দৃষ্টিতে আইমা ছবির মেয়েটাকে চেনার চেষ্টা করল । কিন্তু চিনতে পারল না । বুক কেঁপে উঠল । সুমনকে আইমা ভালবেসে বিয়ে করেছিল । তাই আইমার ছোট পিসি আইমাকে মজা করে মাঝে মাঝে বলতেন , “প্রেম করে তো বিয়ে করলি । ছোঁড়াটাকে চোখে চোখে রাখিস । এই প্রেমে পড়া ছোঁড়ারা মেয়ে মানুষ দেখলেই বারবার প্রেমে পড়তে চায় । ” সত্যি তো তাই । সুমনকে বিয়ে করে এক দিনের জন্যেও শান্তি পেলো না সে । বাবা মায়ের অমতে বিয়ে করে সুমনের সব খারাপ আচরণ হজম করা ছাড়া আর কোন উপায় ছিল না । বাবা-মাকে বললেই হয়তো বলবে , “ তুমি যেহেতু নিজের পছন্দে বিয়ে করেছো । সম্পর্কের ভাল-মন্দ তোমার ।” সেই ভেবেই হজম করা ছাড়া তার আর কোন উপায় ছিল না । আইমা এখন নিঃসঙ্গ হয়ে গেছে । সংসারের এক কোণে কখন যে ফেলনা হয়ে রয়ে গেল তা বুঝে ওঠার আগেই মানসিক মৃত্যু ঘটে গেল । কোনো ভাবেই সুমনের সাথে অ্যাডজাস্টমেন্ট করে উঠতে পারছে না আইমা । হয় তো আর পারবেও না । আটে না হলে তা যে আশিতেও হয় না । এ হচ্ছে গুণী জনের কথা । মানুষের একটা বা দুটো বদ অন্যায় কে মেনে নেওয়া যায় । কিন্তু একাধিক অন্যায় ক্ষমা করার মত মানসিক জোড় বা ভরসা কোনটাই ছিল না আইমার । অতীত বড় নিষ্ঠুর হয়ে বুকে চেপে বসেছে । যে অতীত আইমাকে স্বপ্ন দেখিয়েছিল । বিশ্বাস করতে শিখিয়েছিল । পথ চলতে শিখিয়ে ছিল । আর আজ সে সব ভুলের মাশুল হয়ে কাঁদায় । তাকে কোনো ভাবেই ভুল বলে হেসে উড়িয়ে দেওয়া যায় না ।

সুমন যখন আইমার প্রেমিক ছিল । তখন ওর ঔ সহজ সরলতায় আইমাকে বোকা বানিয়ে রেখেছিল । সুমন বারবার আইমাকে বলত । প্রেম না কি গরিব বড়লোক মানে না । বয়সের ভার মানে না । এমন কি , ধর্মেরও কারণ হয়ে ওঠে না । মিথ্যা কথা । একদম ডাহা মিথ্যা কথা । প্রেম যদি ধর্মই না মানবে , তবে বিয়ে করতে গেলে ধর্মান্তরের প্রশ্ন উঠে কেনো ? রিমার ব্যাপারটা তো সচক্ষেই দেখলাম । রিমা যখন আসাদকে বিয়ের চাপ দিচ্ছিল । তখন আসাদ স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছিল । ধর্মান্তর না করে নাকি আসাদ বিয়ে করতে পারবে না রিমা কে । রিমাও তখন কোন পথ খুঁজে না পেয়ে কালমা পড়ে আসাদকে বিয়ে করেছিল । সত্যি প্রেমের বই-এ কত প্রকারের ফেক কোটেশন আছে । যা শুধু মিথ্যাই না , ডাহা মিথ্যা । এই ধর্ম পরিবর্তন ব্যপারটাই যেনো বড্ড গোলমেলে । ধর্ম কি পোষাক ! পছন্দ হলো না । ফেলে দিয়ে আর একটা পড়ে নিলাম । ধর্ম আর প্রেম দুটো দুই প্রান্তের সামাজিক বাঁধন । মোহের আরাক নাম যদি প্রেম হয় । ধর্ম সেই মোহের শরীরে দেয় সিল মোহর ।
তবে কেনো বাপু এই মিথ্যা জ্ঞানের শিয়ালী তরপাও । কত প্রকারের মিথ্যার মধ্যে এই একটা মিথ্যা যুগ য়ুগ ধরে চলে আসছে । ভাবলেই গা গুলিয়ে ওঠে । যে “ প্রেম ভালবাসায় নাকি ধর্ম নেই ।”

আইমা সুমনকে বারবার চিৎকার করে তারার-সপ্তমে গলা চড়িয়ে ডাকতে লাগল ,“ কি গো শুনছো ? এ দিকে একটু এসো তো । অনেক তো জ্বালালে । আর কিভাবে জ্বালালে তুমি সুখি হবে ।"

সুমন বিরক্তি ভাব নিয়ে আইমার সামনে দাঁড়াতেই । আইমা ছবির খামটা সুমনের দিকে বাড়িয়ে ধরল । সুমন খামটা হাতে নিয়ে । তাপ বা উত্তাপ না দেখিয়ে মেজাজ চড়িয়ে বলল , “তো.... ”

সুমনের নির্লজ্জপনা কথা শুনে । আইমা চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করে দিল । এক সময়ে সে ঝগড়াটা চরম মাত্রায় গিয়ে দাঁড়াল । আইমা যতটা গলা চড়িয়েছে । সুমন ছিল তার চেয়ে এক ধাপ এগিয়ে । সুমনে হাতে যে সিগারেটটা ছিল । তা আইমার কাধে চেপে ধরে দাঁত কিটিমিটি করে বলল ,“ বেশ করেছি । ”

আইমা এক পর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসে । এরপর যা ঘটল তা যেনো ভালবাসার চরম উপহার । অন্ধকার রাস্তা আইমাকে তিরস্কার করতে লাগল । পিসির কথাটা এত মূল্যবান ছিল । আগে কখনও ভেবে ওঠতে পারে নি ।

এদিকে সুমন ১০ মিনিটের মধ্যে ৫/৭ জন বন্ধুকে নিয়ে । আইমাকে এক অন্ধকার গলির মধ্যে পেয়ে গেল । সেখান থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে সুমন তার ভালবাসার বৌটিকে গণ ধর্ষণ করালো । আইমা সুমন কে চিনতে পেরেছিল । যখন সুমন আইমার উপর শারিরীক অত্যাচার চালায় । বহুদিনের অভ্যাস গত বেডপার্টনার ছিল সুমন । তাই সুমনকে চিনতে অসুবিধা হলো না । সুমনের লালসার মধ্যে ধরে পড়ে গেল আইমার কাছে সুমন । সুমনও চায়নি নিজেকে ধরা দিতে । আইনি প্রমান লোপাট করতে । তাই নিজে হাতে আইমার শরীরে কেরসিনের তেল ঢেলে জ্বালিয়ে দিতে ভুলেন নি সুমন । এই মানুষ সুমনটা কখন যে কনভার্ট হয়ে জানোয়ার হয়ে গেল । বেমালুম বুঝতে পারল না আইমা । আইমার মুখ বাঁধা ছিল বলে বলতে পারল না ,“ সুমন ! তুমি কি সেই অতীতের সহজ সরল সুমন ! তোমাকে চিনতে এতটাই ভুল হয়ে গেল !”
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা আগস্ট, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৩৫
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ

লিখেছেন রাজীব নুর, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:৪০



'অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ'।
হাহাকার ভরা কথাটা আমার নয়, একজন পথচারীর। পথচারীর দুই হাত ভরতি বাজার। কিন্ত সে ফুটপাত দিয়ে হাটতে পারছে না। মানুষের... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্য অরিজিনস অফ পলিটিক্যাল জোকস

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:১৯


রাজনৈতিক আলোচনা - এমন কিছু যা অনেকেই আন্তরিকভাবে ঘৃণা করেন বা এবং কিছু মানুষ এই ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। ধর্ম, যৌন, পড়াশুনা, যুদ্ধ, রোগ বালাই, বাজার দর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×