somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

লাতিনা বিবাহ করিবার বিবিধ কুফল---

১৫ ই আগস্ট, ২০১০ দুপুর ২:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ছুট্টবেলায় আদর্শলিপিতে পড়ছিলাম, ভাবিয়া করিও কাজ, করিয়া ভাবিও না - আর পরে কোন হালায় জানি কইছিলো বিয়া হইলো দিল্লীকা লাড্ডু, যে খায়, সে পস্তায়, যে না খায় হেইডাও পস্তায়। ছোটবেলার সেই অমর বাণী আম্রিকা আইসা বার্গার আর কুকাকুলার লগে গুলাইয়া খাইয়া যেই ভুলডা করছি, সেই ভুলডা হইতে সবাইরে সাবধান কইরা দিবার লাইগা আইজকার এই বাচালতার প্রয়াস

হে বঙবাসী পুরুষগন, জিন্দেগীতে যাই করেন না কেন, ভুলেও লাতিনা মহিলা বিবাহ করিবেন না। ইহারা দেখিতে চরম সৌন্দর্ঝময়ী হইলেও বিবাহের পূর্বাবর্তী চেহারা দেখিয়া পরবর্তী চেহারার কথা ঘুনাক্ষরেও আপনার মরমে ঠেকিবে না। বরং সৌন্দর্য দেখিয়া ঠেক খাইলে নিজেই পস্তাইবেন। মনহরন হইয়া শেষে জীবনহরণও হইয়া যাইতে পারে।

বঙবাসী কুমারী ললনাদের ছলনায় ভুলিয়া হৃদয় ভাঙিয়াছিল সেই কৈশোরে, ধণুর্ভাঙা পণ করিয়াছিলাম, বিবাহ করিব না, কেবল রমনী হৃদয় লইয়া খেলিবো আর সেই হৃদয় পুরানো হইলে অপর হৃদয়ের পরশে নিজেকে নবীন করিব। প্রাচ্যে বঙললনার প্রাচূর্য্য থাকিলেও পাশ্চাত্যে নাই, সেই সুযোগে মাজেদা-খালেদা নাম্মী ডিভিওয়ালীরা আম্রিকাতে নিজেরে বেঙলী প্রিন্সেস জাহির করিয়া বড়াই করিয়া থাকে, মিলিওনিয়ার না হইলে তাহাদের কাছে কারো বেইল নাই। আমি এমনিতেই রাজকীয় বংশের সন্তান, নিম্মবর্ণের এহেন ব্যাভিচার সহ্য কি করিয়া হইবে, ঠিক করিলাম বঙললনা পাণি এ জীবনে গ্রহন করিব না। এমন অত্যাচার আমার রাজকীয় নীলাভ রক্ত সইবে না।

কিন্তু হায়, বিধি বাম। বিধাতা যখন ঝড়বৃষ্টির মাঝে উষ্ঠা দিয়া ফালায়া দেন, তখন তিনি বজ্রপাতের টর্চ মাইরা ঠিকই চেক করিয়া দেখেন, হালায় পরছে কিনা। আমারও সেই অবস্থা হইলো, কপালে ছিলো বিবাহ, আল্লাহ কানে ধইরা আমারে আমার স্ত্রীর হস্তে সমর্পন করিলেন। ফুটন্ত তৈলাধার পাত্র হইতে গরম চুলার মাঝে পতিত হইলাম।

প্রথমদিনে আমারে দেখিয়া আমার স্ত্রী আমারে পছন্দ করেন নাই। এমনিতেই সুন্দরী মহিলা, তার উপরে তাহার পাণিপ্রার্থীর সংখ্যা নেহায়েত কম ছিলো না। আমি বেটে কালো বাঙালী ভূত, আমারে পছন্দ করিবেন কি দেখিয়া। তবে সবই উপরওয়ালার মর্জি, তিনি ছাগলা রোমিওর জন্য সুন্দরী জুলিয়েট পাঠাইতে দ্বিধাবোধ করেন না, আমার জন্যও তিনি শিকে ছিড়িলেন। এক মায়াময়ী রাতে আমার লুঙি পরা অবয়ব দেখিয়া আমার ভাবী বধুর মনে প্রেমের উদ্রেক হইলো। এবং তিনি ও আমি দিন কয়েক পরে কবুল বলিয়া সংসার শুরু করিলাম।

আমার সেই উদারপন্থী প্রেমিকা আজ আর নেই, বর্তমানে উনি ফ্যাসীবাদের সমর্থক। উনার জ্বালাময়ী কন্ঠ আর দূরপাল্লার ক্ষেপনাস্ত্র নিক্ষেপের কৌশল ইরানী সামরিক শক্তিকেও হার মানাইয়া দিতে পারে। কোথায় স্বামীভক্ত হইয়া আমার জন্য বাপের বাড়ির কুমড়া আলু আনিবেন, তা না করিয়া উনি আমার ওয়ালেট, ক্রেডিট কার্ড আর ব্যাংকের চেক বইটা লইয়া গিয়াছেন, আর এখনও ফেরৎ দেন নাই। উনার ভয়ে আমি একটা আন্ডারওয়ার পর্যন্ত ক্রয় করিতে পারিতেছি না, এক লুংগি দশ বছর ধরিয়া পড়িতে পড়িতে নরম হইয়া গিয়াছে। ভাগ্য ভাল লু্ংগিটা উত্তরাধিকারসূত্রে আমার দাদাজানের, উনি বাবুগন্জ থেইকা কিনছিলেন, এ যুগের লুংগি হইলে এতদিন টিকিতো না

লাতিনা শব্দটা শুনিলেই মানুষজন ভাবে আমার স্ত্রী আর শাকিরা আপা হয়তোবা আত্মীয় হইতে পারে। একারণে বন্ধুমহলে আমার নানারকম শাকিরা সংলিশ্ট কৌতুক শুনিতে হয়। তবে করুণ সত্য কথা হইলো, লাতিনা হইবার কারণে আমার মহিয়সী স্ত্রী কেবল নাচিতেই পারেন না, নাচাইতেও পারেন। আমি গত দশ বছর যাবৎ তাহার তর্জনীনির্দেশনায় নাচিতে নাচিতে আত্মারাম খাঁচাছাড়া করিতেছি, এখন টিভিতে কেন, রেডিওতেও শাকিরার গান শুনিলে অন্তরআত্মা কাঁপিয়া ওঠে।

হয়ত কহিতে পারেন এমন নপুংসকের মতো জীবনধারণে আমার আমার আভ্যন্তরীন বঙশার্দুল কি ভাবে মানাইয়া নিতাছে। সে কেন গর্জাইয়া উঠে না? ব্যাপার হইলো, বঙশার্দুলের চাইতে লাতিনা বাঘিনীর তেজ বেশি, গর্জন তো দূরের কথা, একটু মিউমিউ করিলেই তিনি পশ্চাতের সম্মুখের, অতীত বর্তমান ভবিষ্যতের সকল উদাহরণ টানিয়া বুঝাইয়া দেন যে আমার সাতজনমের ভাগ্য যে উনার মত বিবি আমার মত অধমরে বিবাহ করিতে রাজী হইয়াছে। হাজার হইলেও আমার চাইতে বলশালী, ধনশালী, পাসপোর্টশালী লম্বা চওড়া পাত্র তাহার দ্বারে দ্বারে প্রতিদিন প্রেমের সারিন্দা বাজাইতো। সেই সারিন্দা উপেক্ষা করিয়া তিনি যখন আমার মত ভিখিরী রাজকুমারের পাণি গ্রহন করিয়াছেন, তাহার লাতিনা মেজাজের তেজ সহ্য করা আমার জন্য ফরজে কেফায়া।

কি আর করিব বলেন, মনের দুঃখ মনে রাখিয়া ঘরজামাইয়ের কাজ করি আর সবাইকেই বলি। আমার দূর্ভাগ্য হইতে শিক্ষা নিন, জান থাকিতে লাতিনা বিবাহ করিয়া পস্তাইবেন না।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই মার্চ, ২০১৫ সকাল ১০:৪৫
৪১টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ডালাসবাসীর নিউ ইয়র্ক ভ্রমণ

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:৪৪

গত পাঁচ ছয় বছর ধরেই নানান কারণে প্রতিবছর আমার নিউইয়র্ক যাওয়া হয়। বিশ্ব অর্থনীতির রাজধানী, ব্রডওয়ে থিয়েটারের রাজধানী ইত্যাদি নানান পরিচয় থাকলেও আমার কাছে নিউইয়র্ককে আমার মত করেই ভাল ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×