somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নারীদের প্রতি পরুষদের কিছু ভুল ধারণা ও সংশোধন পদ্ধতি

০৮ ই জুন, ২০১৬ সকাল ১১:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



রমণীদের বক্রতাঃ হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) – বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন, মহিলাদের ব্যাপারে তোমরা আমার সদুপদেশ গ্রহণ কর। কেননা রমণীরা পাঁজরের বাঁকা হাড় দিয়ে সৃষ্টি। আর পাঁজরের উপরাংশের হাড় সবচেয়ে বেশী বাঁকা। এখন যদি তুমি তা সোজা করতে যাও, তবে তা ভেঙ্গে যাবে।আর যদি একেবারেই ছেড়ে দাও, তবে সব সময় বক্রই থেকে যাবে। (বুখারী, মুসলিম)

হযরত আদম (আঃ) – এর পাঁজরের উপরাংশের হাড় দ্বারা সৃষ্টি করা হয়েছিল। আর উপরাংশের হাড় সবচেয়ে বেশী বাঁকা। তাই এরা কখনোই সোজা হবে না। সৃষ্টি থেকেই এদের মাঝে বক্রতা রয়েছে। কাজেই সোজা করতে গেলে ভেঙ্গে যাবে আর ছেড়ে দিলে তা বক্রই থেকে যাবে। তাই রাসূল (সঃ) বলেছেন যে, তোমরা আমার উপদেশ অনুসরণ কর। পুরুষেরা তাদের এই বক্রতা সহ্য করতে পারে না। ফলে খুব ঝামেলা হয় দুইজনের মাঝে। এক সময় এমন ভাবে চলতে চলতে তালাকের পর্যায়ে পৌছায়। এজন্য এদের বক্রতা ও সীমালংঘনকে ক্ষমা না করে কাজ আদায় করা অসম্ভব। সৃষ্টির শুরু থেকে নারীরা সর্বদা একরকম থাকে না। কখনো খুশী, কখনো নাখোশ। কখনো শুকর করবে আবার কখনো না-শুকরী করবে। একবার কথা মানবে, একবার অবাধ্যতা করবে। তাই শরীয়তের সীমার মধ্যে থেকে রমণীদের সাথে সদ্ব্যবহার করতে হবে এবং বক্রতা ও গোড়ামীর ব্যাপারে ধৈর্যাধারণ করতে হবে।

স্ত্রীর দুর্ব্যবহারে ধৈর্য্যধারণঃ হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) – বর্ণিত যে, আল্লহর রাসূল (সঃ) বলেছেন, কোন মুমিন পুরুষ তার স্ত্রীর সাথে বিদ্বেষ রাখতে পারে না। স্ত্রীর কোন কাজ বা কথা অপছন্দ হলে, অন্য কথায় বা কাজে সন্তুষ্ট হবে। (মুসলিম)

একজন মানুষের সবকিছুই খারাপ হতে পারে না। কিছু মন্দ স্বভাব থাকলেও কিছু উত্তম স্বভাবও থাকে। তাই পুরুষের উচিত স্ত্রীর ভাল স্বভাবগুলো দেখে রাখা আর মন্দ স্বভাবগুলোর ব্যাপারে সবর করা আর যেকোন খারাপ আচরণকে সহ্য করে স্ত্রীর সাথে উত্তম আচরণ করে সুন্দর ভাবে মিলেমিশে থাকা। মনে রাখতে হবে, সম্পূর্ণ নির্দোষ সাথী পাওয়া যায় না। যদি কেউ এমন নির্দোষ এবং সম্পূর্ণ মনের মত খুঁজে পেতে চায় তাহলে তাকে চিরজীবন একলা থাকতে হবে। এইরকম ব্যক্তির পক্ষে সংসার করাই সম্ভব নয়।

স্ত্রীকে প্রহার করাঃ হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে যাম’আ (রাঃ) – বলেছেন যে, রাসূল্লাহ (সঃ) ইরশাদ করেছেন, এমন যেন না হয় যে, তোমাদের কেউ আপন স্ত্রীকে ক্রীতদাসের ন্যায় প্রহার করবে আর রাতের বেলা তার সাথে সহবাস করবে। (বুখারী)

রাতের বেলা যার সাথে অন্তরঙ্গ হয়ে থাকতে হয় দিনের বেলা তাকে প্রহার করা অশোভন। কাজেই প্রত্যেকের উচিৎ যেভাবেই হোক স্ত্রীর সাথে মিলেমিশে থাকা। অনেক স্বামী সামান্য ব্যাপারেও স্ত্রীকে প্রহার করে। এমন ভাবে প্রহার করে যেন তার মনে বিন্দু মাত্র মায়া নেই। যেমনঃ সময় মত খাবার কেন পেলাম না? ভাত এত নরম কেন হয়েছে? খাবার ঠাণ্ডা কেন? রান্না ভাল হয়নি কেন? লবন বেশী হলো কেন? ইত্যাদি।

মনে রাখবেন, ভাত-তরকারী রান্নার দায়িত্ব স্ত্রীর নয়। আপনার অর্থাৎ সংসারের সকল কাজ করে থাকে শুধু স্বামীদের ভালবাসা ও অনুগ্রহের জন্য। শরীয়ত অনুসারে এটা তার দায়িত্ব নয়। তবে স্বামীর ভালবাসা ও সুখের জন্যই মাত্র তারা এটা করে। কাজেই এর জন্যে তাকে প্রহার করা না জায়েয।


স্ত্রীর বদমেজাজ বা কর্কশভাষাঃ হযরত লাকীত ইবনে ছাবরা (রাঃ) বলেন, আমি একদিন রাসূল (সঃ) – কে বললাম, আমার এক মুখরা ও কর্কশভাষী স্ত্রী আছে। আমার কি করা উচিৎ? রাসূল (সাঃ) বললেন, তাকে তালাক দিয়ে দাও। আমি বললাম, ইয়া রাসূললুল্লাহ! তার কোলে আমার একটি সন্তান আছে, তাছাড়া দীর্ঘদিন ধরে তার সাথে একত্রে বসবাসের দরুন এখন পৃথক হতে মনে শায় দেয় না। রাসূল (সঃ) বলেন, তবে তাকে রেখে দাও এবং নসীহত করতে থাক। এতে যদি সে পরিবর্তন হয়। তবে খবরদার তাকে দাসীর ন্যায় প্রহার করা জায়েয হবে না। (আবু দাউদ)

রাসূললুল্লাহ (সঃ) – স্ত্রীর প্রতি স্বামীর দায়িত্ব নিয়ে বলেছেন যে, ১. তুমি যখন খাবে, তাকেও খাওয়াবে। ২. যখন তুমি পরবে, তাকেও পরাবে। ৩. স্ত্রীর চেহারার ওপর আঘাত করবে না না। ৪. স্ত্রীকে গালি দেবে না। ৫. স্ত্রীকে কোথাও ছেড়ে যাবে না। তবে যদি মনে কর তবে শাসনের জন্য ঘরের মধ্যে বিছানা পৃথক করে দিতে পার।

ফতোওয়ায়ে কাজীখানে আছে যে, একজন মুসলিম স্বামী স্ত্রীকে চার কারণে প্রহার করতে পারবে।
১. স্বামী যদি তাকে সেজে গুজে চলতে বলে কিন্তু সে যদি তানা করে, ভাল পোষাক না পরে চুল পরিপাটী না রাখে।
২. স্বামী সহবাসের ব্যক্ত করলে স্ত্রী শরয়ী ওজর ব্যতীত রাজী না হলে।
৩. হায়েজের পর এবং গোসল ফরয হওয়ার পর গোসল না করলে ও
৪. নামায পড়ায় অভ্যস্ত না হলে।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই জুন, ২০১৬ সকাল ১১:২১
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ডালাসবাসীর নিউ ইয়র্ক ভ্রমণ

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:৪৪

গত পাঁচ ছয় বছর ধরেই নানান কারণে প্রতিবছর আমার নিউইয়র্ক যাওয়া হয়। বিশ্ব অর্থনীতির রাজধানী, ব্রডওয়ে থিয়েটারের রাজধানী ইত্যাদি নানান পরিচয় থাকলেও আমার কাছে নিউইয়র্ককে আমার মত করেই ভাল ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×