somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আধুনিক বিশ্বে সামান্য কমতিঃ পানি

০২ রা জুন, ২০১৭ রাত ৮:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



পানির অপর নাম জীবন। বৌজ্ঞানিক নাম ডাই-হাইড্রোজেন মনোক্সাইড। দু’টি হাইড্রোজেন এবং একটি অক্সিজেন পরমাণুর সমন্বয়ে গঠিত রাসায়নিক যৌগকে পানি বলা হয়। যার রাসায়নিক সংকেত H2O. পৃথিবীর প্রায় সমস্ত জীবের জীবনধারণের জন্যে পানি অতি গুরুত্বপূর্ণ পদার্থ।

ভূপৃষ্ঠের ৭০.৯% অংশ জুড়ে পানির অস্তিত্ব রয়েছে। পৃথিবীতে প্রাপ্ত পানির ৯৬.৫% পাওয়া যায় মহাসাগরে, ১.৭% ভূগর্ভে, ১.৭% হিমশৈল ও তুষার হিসেবে, একটি ক্ষুদ্র অংশ অন্যান্য বড় জলাশয়ে এবং ০.০০০১% বায়ুমণ্ডলে অবস্থিত মেঘ, জলীয় বাষ্প হিসেবে ও বৃষ্টিপাত, তুষারপাত ইত্যাদি। পৃথিবীতে মাত্র ২.৫% বিশুদ্ধ পানি এবং বাকি ৯৮.৮% ভূগর্ভস্থ পানি ও বরফ। বিশুদ্ধ পানির ০.৩% এরও কম অংশ পাওয়া যায় নদীতে, হৃদে ও বায়ুমণ্ডলে।

আজ বিশ্ব অত্যাধুনিক পথে এগিয়ে চলেছে। বিজ্ঞান পাল্টে দিয়েছে মানুষের জীবনযাত্রা। অথচ বেড়ে চলেছে পানির অভাব। প্রায় দেড়’শ কোটি মানুষ আজ পানির অভাবে ভুগছেন। পানির অপর নাম যেমন জীবন তেমনি মরণও হতে পারে। প্রতিবছর শুধু মাত্র পানিবাহিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে প্রায় সাড়ে ৩ কোটি’রও বেশি মানুষ।

বাংলাদেশে পানযোগ্য পানির প্রধান উৎস নদী, খাল-বিল, হাওড়-বাঁওড়, পুকুর ও জলাশয়। এক সময় হাজারেরও বেশি নদী থাকলেও শেষ হয়ে গেছে সেই সমস্ত নদনদী। পানি উন্নয়ন বোর্ডের সর্বশেষ হিসেবে নদীর সংখ্যা মাত্র ৩১০টি।

ভারতের থার মরুভূমিতে বসবাসরত মানুষদের পানির তীব্র সঙ্কট। সেখানকার পুরুষের ৩-৪ জন স্ত্রী। একজন ঘরের কাজকর্ম করেন আর বাকিরা যান পানি সংগ্রহ করতে। ভোর ৬ টায় তারা বাড়ি থেকে বের হয় এবং বিকাল ৫-৬ টার দিকে বাড়িতে ফেরে। অনুভব করতে পারেন কতটা কষ্ট করে তাদের পানি সংগ্রহ করতে হয়?



জিম্বাবুয়ে’র গুকউই, সোমালিল্যাণ্ডের বালিগাউডলি গ্রামে তীব্র খরায় গৃহপালিত পশুগুলোর মৃতদেহ কঙ্কাল হয়ে পড়ে থাকে। সিয়েরালিওন রাজধানী ফ্রিটাউন, নাইজেরিয়া, প্যারাগুয়ের পিলকামওয়ে, সোমালিয়ার সাবেলি অঞ্চল, ভারতের কলকাতা, গুজরাটের পশ্চিম রাজ্যসহ পানির তীব্র সঙ্কট রয়েছে। নারী-পুরুষ, শিশুদের দীর্ঘ লাইনে দাঁড়াতে হয় একটু পানির জন্যে। দৈনিক কার্য সম্পন্ন করার জন্য মাইলকে মাইল হেঁটে যেতে হয় পানি সংগ্রহের জন্য। তারাই মাত্র বুঝতে পারছে পানির মূল্য কত








জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ২০৫০ সালের মধ্যে জনসংখ্যার হার কয়েক’শ গুণ বেড়ে যাবে। যার ফলে প্রচুর পরিমাণ পানির চাহিদা বেড়ে যাবে। কিন্তু সেই পরিমাণ পানি সরবরাহ করা অসম্ভব হবে। কারন ভূগর্ভে পানির স্তর নিচে নেমে গেছে। প্রায় ১.৮ মিলিয়ন মানুষ পানির অভাবে ভুগছেন। শোনা যাচ্ছে চড়া দাম দিতে প্রস্তুত থাকলেও মিলবে না পানি।



কি করবেন তখন?
আমরা যারা পানির অভাব বুঝতে পারছি না তারা আন্দাজ করতেও পারবো না তাদের এই দুর্ভাগ্য। কারন আমরা প্রতিদিন এত পরিমাণ পানি নষ্ট করি যা দিয়ে প্রায় ৩০ টি হাতি বা ১৫০ টি গাড়ি ধোয়া যায়। অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি যে একদিন আমরা এই কষ্ট বুঝতে পারবো।

কি করা উচিত আমাদের?
আমরা চাইলেই পানির এই বিশাল অপচয় থেকে নিজেকে দূরে রাখতে পারি। প্রয়োজন অনুযায়ী পানি খরচ করা। অতিরিক্ত খরচ না করা। অনেক সমইয় দেখা যায় থাবা-বাসন ধুতে গিয়ে আমরা পানির কলটি ছেড়ে রেখেছি। ঝর্ণার মত পানি বয়ে যাচ্ছে। হাত ধুতে গিয়ে পানির কল খুলেছি ঠিক তখনই মোবাইল বেজে উঠলো। দৌড়ে গিয়ে পিক আপ করে কথা বলেই যাচ্ছি কিন্তু পানির দিকে খেয়াল নেই। এতে করে শুধু পানির অপচয় হচ্ছে না। অন্যেকে তার অংশ থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। আমরাই পারি আমাদেরকে, মাদের পরিবারের মানুষদেরকে, প্রতিবেশীদেরকে সচেতন করে তুলতে। যাতে পানির অপচয় কিছুটা হলেও কমে যাবে।

সর্বশেষ এডিট : ০২ রা জুন, ২০১৭ রাত ৮:৫২
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ

লিখেছেন রাজীব নুর, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:৪০



'অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ'।
হাহাকার ভরা কথাটা আমার নয়, একজন পথচারীর। পথচারীর দুই হাত ভরতি বাজার। কিন্ত সে ফুটপাত দিয়ে হাটতে পারছে না। মানুষের... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্য অরিজিনস অফ পলিটিক্যাল জোকস

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:১৯


রাজনৈতিক আলোচনা - এমন কিছু যা অনেকেই আন্তরিকভাবে ঘৃণা করেন বা এবং কিছু মানুষ এই ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। ধর্ম, যৌন, পড়াশুনা, যুদ্ধ, রোগ বালাই, বাজার দর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×