বড্ড মায়া হচ্ছে, সাথে বিরক্তি! এবারের বিপিএলের কথা বলছি! একটা ম্যানেজমেন্ট কতটা অদূরদর্শী আর অযোগ্য হলে এ ধরনের একটা বিশ্বমাতানো আসর পাড়ার ক্রিকেটীয় মানে আয়োজন করতে পারে!
প্রথমে আসি আম্বায়ারদের বিষয়েঃ
সব দেশী আম্পায়ার, ভাল কথা, দেশী প্রোডাক্টে আমার কোন এলার্জি নেই, কিন্তু প্রশ্ন হলো এসব আম্পায়াররা কতটুকু যোগ্য এমন একটা আসর পরিচালনার ক্ষেত্রে?! তাদের হাস্যকর সব সিদ্ধান্ত দেখে মনে প্রশ্নের উদয় হয়ঃ এরা আসলে ক্রিকেট কতটুকু বুঝে?
: আম্পায়াররা মানুষ, কম্পিউটার নয়, সুতরাং ভুল হতেই পারে! ঠিক আছে মানলাম ভুল হতে পারে।
ঠিক আছে মানলাম তাদের ভুল হতেই পারে, কিন্তু সেটার একটা সিমা থাকা উচিত! একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত দিয়ে আসরের মানটাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। দেশে আম্বায়ার সাথে কয়েকজন অভিজ্ঞ বিদেশী আম্পায়ার থাকলে কি এমন ক্ষতি হতো সেটাই আমার বোধগম্য নয়। বরং আমার মনে হয় অভিজ্ঞ আম্পায়ারদের সাথে মিশে আমাদের দেশী আম্পায়াররা নিজেদের দক্ষতাকে একটু বাড়িয়ে নিতে পারতো।
এবার আসা যাক 'পিচ' বিষয়েঃ
শের এ বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে পিচ মোটে তিনটে। প্রতিদিন খেলা হচ্ছে দুটো করে। তার মানে আসরের আজ ৬ষ্ট দিনে পিচের অবস্থা টেস্টের ৪র্থ বা ৫ম দিনের মত। টি টোয়েন্টি ক্রিকেট মানেই ধুম-ধারাক্কা চার-ছক্কার খেলা। সেই খেলায় যদি পিচের কারনে ১১০/১২০ রান করতেই ব্যাটসম্যানদের গলদঘর্ম হতে হয় তাহলে আসরের মান কতটা বজায় থাকলো সেটা নিয়ে প্রশ্নের অবকাশ থেকে যায়।
মিডিয়া পার্টনার - টেলিভিশনঃ
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজের অ্যাডমিন না হলে হয়তো বিষয়টা এতটা নজরে আসতো না। প্রতি দিন গড়ে হাজার খানেক মেসেজ আসে ইনবক্সে তারমধ্যে প্রায় ৭০০ প্লাস মেসেজে একটাই অভিযোগঃ চ্যানেল নাইনের সম্প্রচার মান। নাম উল্টা পাল্টা লেখা, বল করে মোস্তাফিজুর রহমান দেখায় মুশফিকুর রহিম, স্কোরিং ভুল দেখানো, হয় রান আউট, দেখায় উমুকের বলে উমুক ক্যাচ ধরেছে, বল যায় একদিকে আর ক্যামেরা যায় অন্যদিকে। ক্রিকেটারদের এক্সপ্রেশন হলো সরাসরি খেলা সম্প্রচারের প্রাণ। সেই এক্সপ্রেশনের দিকে ক্যামেরাম্যানদের ভ্রুক্ষেপ নেই বললেই চলে। কোন টেলিভিশন চ্যানেলকে সম্প্রচার স্বত্ব দেয়ার জন্য তাদের QAC বা 'Quality Assurance Capabilities' নিশ্চিত করা আসর পরিচালকদের। দুটো মাত্র ক্যামেরা দিয়ে কিভাবে এত বড় একটা আসর ভালভাবে সম্প্রচার করা যায় সেটাই আমার বোধগম্য নয়।
মিডিয়া পার্টনার - রেডিও
ইমপ্রেস গ্রুপের সরাসরি কোন সিস্টার কনসার্ন নয় রেডিও ভুমি। এটি মুলত ইমপ্রেস গ্রুপের উপ-কনসার্ন। অর্থ্যাৎ রেডিও ভুমি চ্যানেল আই এর একটি সিস্টার কনসার্ন। এই রেডিও চ্যানেলটির তত্ত্বাবধায়নের দায়িত্ব মুলত অভিনেতা শামস সুমনের উপর। তিনিই সিদ্ধান্ত নেন এর অনুষ্ঠান সহ যাবতীয় বিষয়ে। বিপিএলের সরাসরি বাংলা ধারাভাষ্য যাচ্ছে এই রেডিওতে আর সেখানের প্রধান আকর্ষন হলো সুবর্না মোস্তফা! উনার ক্রিকেটীয় জ্ঞান প্রায়মারি স্কুলে পড়া ক্লাস টু'এর একটা বাচ্চার চেয়ে কম। যতসব হাস্যকর আর ল্যাদামার্কা কথাবার্তা বলে সম্পুর্ণ ধারাভাষ্যটাকে নিরামিষ আর বোরিং করে চলেছেন এই অভিনেত্রী।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের সব চেয়ে বড় পোষ্টার বয় ক্রিস গেইল এখনো এসে পৌঁছাননি, এসে পৌঁছাননি আফ্রিদি-ডুপ্লেসিসরাও, সেই সাথে এবারের আসরে নেই খুলনা ও রাজশাহী। সব মিলিয়ে আসরটা যেন বড্ড নিরামিষ লাগছে দর্শকদের কাছে। সাইফুল আমিন মানব ভাইয়ের মত জিনিয়াস মানুষ বিপিএলের মার্কেটিংয়ের দায়িত্ব পাবার পরও আসরটার অবস্থা এরকম কেন সেটা ভেবেই বড্ড অস্থির লাগছে! হয়তো সবকিছু দেখে বিপিএল কমিটির বোধদয় হবে এবং পরবর্তি আসরে যথাযথ পরিকল্পনা নিয়েই মাঠে নামবে কতৃপক্ষ।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:৩১