১। পুরানো পত্রিকার হকার: এরা বাসা বাড়ি ঘুরে ঘুরে পুরোনো পত্রিকা কিনে। একটা দাড়িপাল্লা এবং ৫০০ গ্রামের একটা বাটখারা নিয়ে। ৫০০ গ্রাম দিয়ে একবার ওজন করবে, পরে সেই পত্রিকা অন্যদিকে দিয়ে ১ কেজি করবে বাটখারা সহ। তারপর ওজন করবে। এই হকারদের আপনার কাছ থেকে হয়ত ৫ কেজি কিনে নিলো, কিন্তু আপনি সেই পত্রিকাই বাইরে কোথাও ওজন করলে সেটা ওজন হবে কমপক্ষে ১০ কেজি। এরা যে দাড়িপাল্লা ব্যবহার করে, সেটাতে ঘাপলা থাকে।
২। গুড়ামশলার দোকানী: এখন এই দোকানীদের উপদ্রব কমে এসেছে, কারণ এখন সবকিছু প্যাকেটে পাওয়া যায়। তারপরও এদের কাছে অনেকেই যায়। চাল, মশলা, মরিচ, হলুদ গুড়া করার জন্য। চালে কোনো ভেজাল করে না এরা। কিন্তু হলুদ কিংবা ধনিয়াও সস্তা, এখানে ভেজাল করে কম। জিরাতে ভেজাল করে বেশি। মরিচের গুড়াতেও। এইসব মিলিং এর দোকানে দেখবেন, বাইরে কিছু টিনের বক্সে গুড়া হলুদ, মরিচ বিক্রি করছে, এইসবই চুরির জিনিস। ঢাকায় একটা দোকান দেখলাম, তারা বলছে, ১কেজি জিরা মিলিং করতে দিলে তারা ওজন করে ফেরত দিবে ৯০০ গ্রাম, বাকীটা সিস্টেম লস হিসাবে দিতে হবে। এরা হলুদ, মরিচ , জিরার সাথে চালুর গুড়া মিশিয়ে দেয়।
৩।গরুর কসাই: বাজারে যারা নিয়মিত ক্রেতা, তাদের সমস্যা হয় না। কিন্তু আপনি যদি হঠাৎ করে গরুর মাংস কিনতে যান, তবে কপালে খারাপী আছে। আপনাকে দেখিয়ে ওজন করে দিবে ঠিকই ১ কেজী (যদিও তখন পরিমাণে কম থাকে)। এরপর বলবে, এই চর্বিটুকু ফ্রী দিলাম, সাথে ২টা নরম হাড্ডি। (আসলে এইসব দিয়ে ওজন মিলায়, আপনি পরে ওজন করে দেখবেন ঐ ১ কেজিই, কোনো এক্সট্রা পাবেন না)
এরা গরুর কলিজা বিক্রি করে পানিতে ভিজিয়ে, যাতে ওজনের সাথে অনেক পানি যায়। গরুর মাংশ ওজন করে একদিকে ছুড়ে মারে কেটে দেওয়ার জন্য, এই ফাঁকে আরো হাড় মিশিয়ে দেয় তারা।
৪। ফল বিক্রেতা: ফলমূলের ব্যবসা করতে গেলে পঁচা ফল হাতে আসবেই। তাই দোকানীদের টার্গেট থাকে এই নষ্টফল যে কোনো ভাবে ক্রেতাকে গছিয়ে দেওয়া। যেমন আপনি কমলা/আম কিনবেন। আপনি যদি নিয়ে হাত দিয়ে না নেন, তবে ২-১টা নষ্ট ফল আপনার পড়বেই। আমি এমনও দেখেছি, আমি নিজের হাতে দিচ্ছি, আর বিক্রেতা যে ঠোঙাতে নিচ্ছে, সেখানে আগে থেকেই নষ্ট আপেল দিয়ে রেখেছিলো।
৫। দুধওয়ালা এরা যে পানি মিশায়, সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না।
৬।স্বর্ণকার: সবাই না, কেউ কেউ। তাদের থেকে কিনার সময় আপনাকে খাদ, পাথর সবকিছুই স্বর্নের দামে কিনতে হবে। মানে ১৬ আনাতে ভরি, এতে হয়ত ২ আনা খাদ মিশানো থাকে। আপনি কিনার সময় আপনাকে ১৬ আনা স্বর্ণের দামই দিতে হবে। কিন্তু যখন আপনি বিক্রি করতে যাবেন এই স্বর্ণ একই দোকানীর কাছে, তখন সে আপনাকে ১৪ আনার দাম দিবে। কোনো স্বর্ণ গলিয়ে যদি নতুন করে গড়ে দিতে বলেন, তবে তো তাদের পোয়াবারো। ইচ্ছেমতো খাদ মিশিয়ে স্বর্ণ সরাবে।
একবার আমার মায়ের একটা চেইন শুধু ছিড়ে গিয়েছিলো, সেটা জোড়া লাগাতে দিয়েছিলাম। বাসায় নিয়ে আসার পর দেখি, চেইনটা ছোট হয়ে গেছে, মেরামত করতে গিয়ে সে আরো কয়েক টুকরো কেটে নিয়েছে।
পরে দোকানে গেলাম, সে অস্বীকার করলো। আমার আর কিছুই করার ছিলো না।
আর মনে আসছে না, মনে পড়লে যোগ করে দিবো। আপনারাও জানাতে পারেন।
সব ব্যবসায়ীই খারাপ না, ভালো খারাপ সবপেশাতেই আছে।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই আগস্ট, ২০১২ রাত ২:১৯