প্রিয় রোজলিন,
হতাশার বালুচরে নিমজ্জ্বিত সেই কিঞ্চিৎ
মানুষটা এখন অনেক হাসতে শিখেছে।
নিজে নিজেই ভাল থাকতে শিখেছে।
জানিনা কি বুঝে জানি ঐ সময়ে তার
হাতটা ধরে ছিলাম আজও বুঝে কূল
কিনারা পাইনা। মানুষের জীবন কত
বিচিত্র। কত রকমের নাটাকীয় অভিজ্ঞতার সঞ্চরণ
হচ্ছে প্রতিনিয়ত।
রোজলিন, তার জীবন টা কিছুই না। শুধুই
স্রোত। অবিরাম ছুটে চলা। লাইফ ইজ নাথিং অনলি রেস। কখনো বা ম্যারাথন, কখনোও সজোরে দৌড়ানো, কখনো একাকি, কখনো প্রতিযোগীর সাথে, কখনোও
প্রতিযোগীবিহিন, সব কিছু অপারগ
থাকলে ন্যূনতম হাটা হলেও বন্ধ করা যায় না। স্রোত
যেমন চলার সময় কোন স্থান থেকে কিছু
একটা সাথে নিয়ে চলে, অন্য স্থানে পৌছেদেয়।
কখনোও সময় মত, কখনোও বা কখনোও
সময়ের আগে, পরে। ঠিক আমাদের জীবন টা ও এমনই।
প্রত্যেক প্রকরনের জন্য আছে আলাদা আলাদা প্রতিদান।
এই নশ্বর পৃথিবীর স্রোতের এই বিরামহীনতা সে খুবই পছন্দ করে। সে নিজেকে স্রোতের মনুষ্য রুপভেদ
মনে করে মাত্র। শুধু পার্থক্য একটাই প্রকৃতির
টা কখন কোথায় স্থির আদো হবে কিনা তার
জানা নাই, কিন্তু তার জীবন নামক স্রোতটা অবশ্যই থেমে যাবে। রেস খেলা খান্ত হবে। যায়গা করে দিবে নুতন রেসার দের।
রোজলিন! এটাই কি স্বার্থকতা? হয়ত তুমি বলবে এটাই স্বার্থকতা। জানো? স্রোত যখন প্রমত্তাল থাকে নিজের
চলতে অসুবিধা হয়না, সাথে অনেক চুনোপুঠি সহ
বিশালাকার বস্তু সমুহ কে নিতে অসুবিধায়
ঠেকে না। একটা জড় পদার্থের বোঝা যে কত
অসহনীয় হতে পারে, তা সাধ বয়ে না বেড়ালে শুধুই দেখে অনুভব করা অবান্তর। এই সমস্ত চুনোপুঠি ঐ জড় পদার্থের
চাইতে অনেক ভাল। ক্ষণিকের জন্য হলেও সংগি হয়, খেলে, সময় দেয়। যে কনোও সময় কে ভাল সময় বানানোর জন্য
তার জুড়ি মেলা ভার। অর্ক, বস, কিউট স্যার, টিচার এবং সব্যসাচী সবাই কে খুব মনে পড়ে, কিন্তু পদ্ভুত কনো কারণে কাউকে সে এখন আর মিস করেনা। ব্যস্ততা!! নাকি অন্য কিছু
সকল মানুষই বিভিন্ন ভাবে অদ্ভুত, সে ও কনোও অর্থে ব্যাতিক্রম হতে পারেনি। সে ডিজগাস্টিং, সকল কিছু ডিজগাস্টিং, উপরের লিখাগুলো ডিজগাস্টিং, অহেতুক।সে একটা ডিজগাস্টিং।
এখন রাত ঠিক ১২টা ৪মিনিট। কি কর? চার
পাশ নিরব। আমি আজ যে বাসায় আছি,
এখানে সুন্দর সুন্দর কবুতর আছে। আমার এক
ফ্রেন্ড এই গুলো পোষে। কি দারুণ। কবুতর
গুলো অনেক দামি দামি। সে বিক্রি ও
করে। অনেক টাকা পায়। সব গুলো কবুতর
বিদেশি। তোমার সাথে এখন
কথা বলতে পারলে শোনাতাম।
কি যে কিউট সব গুলা। আমার
মোবাইলে রাতে ছবি তোলা যায়না।
নইলে তোমায় দেখাতাম। আজ
বিকালে এই চিঠিটা লিখা টা শুরু
করছিলাম। বাসের প্রথম দু ঘন্টা কখন
যে কেটেছিল টের করতে পারিনি। প্রিয়
যেই ফ্রেন্ড টার বাসায় আছি এই
ছেলেটার অনেক কিছুই ছিল,
কয়েকটা দোকান, একটা আইটি পার্ক,
একটা হাসপাতাল ক্লিনিক এর মালিক
ছিল। আর এখন!
বাড়ি ভাড়া যোগাতে কবুতর পোষে।
বিক্রি করে, আর এক সময়ের তার নিজের
ক্লিনিকের প্যাথলজিতে জব করে। দারুণ,
না। আরেকটা ব্যাপার কি জান? আমি এই
ছেলেটা কে কখনোও কান্না বা মন
খারাপ করতে দেখিনি।
নিজে নিজে ভালো থাকার জন্য
কোয়ান্টাম মেথড এ কোর্স করে আসে।
সে এই দুনিয়াটা কে পর করে দিয়েছে।
এমনকি তার মৃত্যুর পর মরদেহটা ও দান
করে দিয়ে দিছে। সবই তার চারপাশের
মানুষজন দের অবদান। ঘর থেকে বাহির
হতে ভয় পায় সে কখন পাওনাদার
রা ধরে রাখে। জীবন, জীবন।
কারো কাছে কিভাবে প্রত্যাশা না রেখে থাকব!
প্রত্যাশার পাহাড় আছে যে! মায়াময়ী?
আজ সহ অনেক দিন যাবত তো আর গুড
নাইট বলি না, অথচ কনোও একটা সময় এই
ব্যাপার মিস করা টা কল্পনার বাহিরে ছিল। এখন
আরতো খোশ গল্প কর না। যাইহোক
তুমি সফল কতটুকু? ভার্সিটির ঐ ছেলেটা,
যে তোমায় ডিস্টার্ব করত?
ভালো থেক, তুমি, অনেক ভালো।
আমি যেখানেই থাকিনা কেন, যে ভাবেই থাকিনা,
তুমি সত্যিকারের সুখে আছ, নিউজ
টা আমায় অনেক সুখে রাখবে, কথা দিলাম। বলবনা যে আমি তোমায় চাইবনা,
তোমার পাশে থাকতে অবশ্যই চাইব, ভালবাসব, পাশে থাকব।
ভালোবাসি।
ভালবাসি।
ভালবাসি।