ট্রেন ভ্রমণ অনেক মজার । এক সময় আমি প্রচুর ট্রেন ভ্রমণ করতাম। ঢাকা থেকে ময়মনসিংহ যেতাম আবার ময়মনসিংহ থেকে ঢাকা আসতাম। এটা ১৯৯৪-২০০১ সাল পর্যন্ত ছিল আমার নিয়মিত ভ্রমণ। আমি ট্রেন পছন্দ করতাম কারণ ঢাকা-ময়মনসিংহ রোডে বাস ভাড়া ছিল অনেক বেশী আর তা প্রায়ই অ্যাসিডেন্ট করত । ফলে আমি ঝুকি এড়ানোর জন্য ট্রেনকেই বেছে নিতাম। আর ট্রেনে চড়ার মজাই এখন আর ট্রেন ভ্রমন করি না। কারণ দরকার পড়ে না। তবে আজ প্রথম আলোর একটি খবর পড়ে আমার কাছে কেম যেন অবিশ্বাস হতে লাগল। ট্রেনে কেন লোকসান হবে? ট্রেনের ব্যবস্থাপনা ভাল হলে তো লোকসান হবার কথা নয়।
সম্প্রতি প্রথম আলোর খবরে প্রকাশ, “৪০ বছরে জনসংখ্যা বেড়ে দ্বিগুণ হলেও রেলওয়ের যাত্রী ও মালামাল পরিবহন কমেছে। এর ফলে রেলওয়ে একটি লোকসানি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে রেলওয়ে বছরে লোকসান গোনে গড়ে ৫০০ কোটি টাকা। গত নয় বছরে রেলওয়ে লোকসান দিয়েছে তিন হাজার কোটি টাকার বেশি।
রেলওয়ের হিসাব অনুযায়ী, ১৯৬৯-৭০ অর্থবছরে রেলওয়েতে যাত্রী পরিবহন হয়েছিল সাত কোটি ২৮ লাখ জন এবং মালামাল পরিবহন হয়েছিল প্রায় ৪৯ লাখ মেট্রিক টন। কিন্তু জনসংখ্যা দ্বিগুণ হলেও ২০০৮-০৯ অর্থবছরে রেলওয়ে যাত্রী পরিবহন করে সাড়ে ছয় কোটি জন এবং মালামাল পরিবহন করে ৩০ লাখ টন।
১৯৭৪ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী দেশের জনসংখ্যা ছিল সাত কোটি ৬৪ লাখ। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাব অনুযায়ী ২০০৮ সালে দেশের জনসংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১৪ কোটি ৬০ লাখে।”
আমি যখন ট্রেনে ভ্রমণ করতাম তখন সিট একটাও ফাকা থাকত না। তারপরও “স্ট্যান্ডিং সিট” নামে এক ধরনের সিট পাওয়া যেত যার দাম ছিল সমানই । অনেক মানুষ আমার মতো দাঁড়িয়ে যেত। স্বাভাবিক সিটের চেয়ে বেশী সিটে মানুষ যেত। তাও ফাও না। এখনও নিশ্চয়ই এররকম হয়।
আমার প্রশ্ন হল: টাকা যায় কোথায়? আন্ত:নগর ট্রেনগুলোতে কোন যাত্রীই ফাও যাতায়াত করে না। তাহলে টাকা কোথায় যায়? আর লোকসানই বা হয় কেন?
আরাম দায়ক দীর্ঘ ভ্রমণের জন্য ট্রেনের কোন বিকল্প নেই। তবে ট্রেনের প্রতি সরকারের সুনজর দিতে হবে। পৃথক রেল মন্ত্রণালয় এখন সময়ের দাবি।