somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

টিপাইমুখ বাঁধ ও আমাদের করণীয়

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১০ বিকাল ৩:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


টিপাইমুখ বাঁধঃ এখন টিপাইমুখ বাঁধ সম্পর্কে প্রাথমিক তথ্য অনেকেরই অজানা নয়। ভারত মনিপুর-মিজোরাম সীমান্তে ১৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত উৎপাদনের জন্য বরাক ও টুইভাই নদীর সঙ্গমস্থল থেকে ৫০০ মিটার নিম্নে একটি বাঁধ নির্মাণ করার উদ্যোগ নিয়েছে। যে জায়গায় বাঁধ হবে সে জায়গার নামানুসারে বাঁধের নাম রাখা হয়েছে টিপাইমুখ বাধ প্রকল্প। সে স্থানটি বাংলাদেশের সীমান্ত থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার উজানে দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চলে অবস্থিত। এখন পর্যন্ত বাঁধ সম্বন্ধে পর্যাপ্ত তথ্যের অভাব আছে। তবে বিভিন্ন সুত্রে জানা গেছে যে বাঁধটি নির্মিত হবে যে স্থানে তা সমুদ্র পৃষ্ট হতে ১৭৮ মিটার উঁচু ও মারাত্মক ভূমিকম্পন প্রবণ এলাকা। এই উচ্চ্চভূমিতে বাঁধের উচ্চতা হবে ১৬২.৮ মিটার ও দৈর্ঘ হবে ৩৯০ মিটার। বাঁধ শুরুতে বরাক উপত্যকায় অতিরিক্ত পানি সংরক্ষণের জন্য পরিকল্পতি হলেও পরে তা পরিবর্তন করে হয়েছে জলবিদ্যুত প্রকল্প।
আশংকাঃ বরাক নদী বাংলাদেশের সিলেট জেলার জকিগঞ্জ উপজেলা দিয়ে প্রবেশ করে অমলসিদ নামক স্থানে সুরমা ও কুশিয়ারা এই দুই নদী প্রবাহে বিভক্ত হয়ে পুনরায় মিলিত হয়েছে মেঘনা নদীর জলস্রোতে। কুশিয়ারা ও সুরমা নদীর প্রবাহের উপর সিলেট বিভাগ, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, ময়মনসিংহ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার চাষাবাদ ছাড়াও এতদঞ্চলের ৭ লাখ ৮৪ হাজার হেক্টর জলাভূমি নিয়ে গঠিত প্রায় ৪২৩ টি হাওরের জীববৈচিত্র ও পরিবেশ নির্ভরশীল। টিপাইমুখ বাঁধ বাস্তবায়িত হলে এই বিস্তৃত অঞ্চলে কি বিরূপ প্রভাব পরে তা নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে উদ্বেগ ও আশংকা। আশংকার তিনটি কারণ খুবই স্পষ্ট। (১) বাঁধের দ্বারা পানি প্রত্যাহার হলে শুস্ক মৌসুমে খরা এবং বর্ষাকালেও বন্যায় কবলিত হবে এই বিস্তীর্ণ এলাকা। (২) বিদ‌্যুতের জন্য বৃষ্টির মওসুমে জলাধারে পানি সংরক্ষণ করলে ভাটি অঞ্চল বর্ষা কালে পানি স্বল্পতা ও শুস্ক মৌসুমে অকাল বন্যা দেখা দেবে এবং তাতে এলাকার জীববৈচিত্রে পড়বে মারাত্মক হুমকিতে। (৩) ভূমিকম্পে বাঁধ ক্ষতিগ্রস্থ হলে একই এলাকা সুনামীতে বিধ্বস্থ হয়ে দেখা দেব মারাত্মক ধ্বংসলীলা। এ তিনটি কারণের মধ্যে প্রথম দুটি বিষয়ে ভারত মৌখিকভাবে আশ্বস্থ করলেও তৃতীয় কারণটি ভারতে মুখের কথার উপর নির্ভর করে না। আর এখন টিপাইমুখ এলাকা সম্বন্ধে যেসব ভূতাত্বিক তথ্য পাওয়া যাচ্ছে তাতে সেখানে ভূমিকম্পের আশংকার বিষয়টি আরো জোরদার হয়েছে। জানা যায় টিপাইমুখ ভূতাত্বিক দিক দিয়ে অতিশয় স্পর্শকাতর এলাকা। এখানে সতত চলছে মহাদেশীয় ভূতাত্বিক প্লেটের সংঘাত এবং ভূমির অধোগমন। প্রকল্পের উদ্যোক্তারাও এ সমস্যা স্বীকার করেন। প্রকল্পের উদ্যোক্তাদের প্রণীত পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়ন দলিলে এ প্রক্রিয়াকে এই বলে বর্ণনা করা হয়েছে যে , ভারত-ব্রহ্ম পরিপ্লব বলয়ের সমান্তরালে ভারতীয় ভূতাত্বিক প্লেট এবং শান-টেনাসেরিম ব্লকের মধ্যে অবস্থিত বলে এ অঞ্চলে অধোগমন প্রক্রিয়া অত্যন্ত সক্রিয়। উপরন্ত মহাদেশীয় প্লেটের মধ্যে হিমালযেল ঘাত-প্রতিঘাতের সম্মুখভাগসহ ভারতীয় ভূখন্ডের উত্তর-পূর্ব অভিক্ষেপ, পূর্ব মিশিমি ব্লক এবং ভারত-ব্রহ্ম ব্লকের ঘাত-প্রতিঘাত অধোগমন প্রক্রিয়ার সাথে যুক্ত হয়েছে (Sub-conduction process between Indian Plate and Shan-Teanagserim Block along Indo-Burma Mobile Belt has made this area technically very active. In addition continent-continent collision of (1) NE Projection of India shield with Himalayan Thrust Front and (2) Eastern Mishimi Block and thrust implicated Indo-Bumese Block have added to this subduction process)। এই ভূতাত্বিক পরিবেশে ভুমিকম্পের সম্ভাবনা অনেক বেশি। উদ্যোক্তাদের হিসাবে এখানে রিখটার স্কেলে ৭ মাত্রার চেয়েও বড় ভূমিকম্প হয়েছে ১৬ টি। এর মধ্যে দুটি ছিল রিখটার স্কেলে ৮.৫ মাত্রার ভূমিকম্প যা বিশ্বের সবচেয়ে বড় ভূমিকম্পের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত। এ ধরণের ভূমিকম্প এলাকায় বাঁধ নির্মাণের ফলে রিজার্ভারে যে পরিমাণ পানি অতিরিক্ত সংরক্ষিত হবে, তাতে ভূমিকম্পর আশংকা কয়েকগুন বৃদ্ধি পাবে। ফলে কোন বড় ভূমিকম্প দ্বারা প্রকল্পটি ক্ষতিগ্রস্থ হলে, নাগাল্যান্ড, মণিপুরসহ কুশিয়ারা ও সুরমা অববাহিকায় সুনামি হয়ে এর ধ্বংসলীলা কল্পনাকেও ছাড়িয়ে যাবে, মুত্যুমুখে পতিত হবে লক্ষ লক্ষ লোক, বাংলাদেশের প্রায় এক দশমাংস এলাকা পরিণত হবে ধ্বংসস্তুপে। সেজন্য মণিপুর বিশ্বিবিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সোইবাম ইরেটোমবি (Dr. Soibam Ibotombi of the Department of Earth Sciences, Manipur University) এক নিবন্ধে এই বলে মন্তব্য করেছেন যে টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণ আন্তর্জাতিক মাত্রায় একটি গুরুতর ভুল (“Tipaimukh dam is a geo-tectonic blunder of international dimensions.”) ১। আশংকার আর একটি কারণ হল পূর্বাঞ্চলে ভারতের জলবিদ্যুত স্থাপনের অভিজ্ঞতা ভাল নয়। সেখানে ইতোমধ্যে দুটি জলবিদ্যুত কেন্দ্র ব্যর্থ হয়েছে, অথচ এ প্রকল্পগুলো দুটি স্থানীয় আদিবাসীদের অপুরণীয় ক্ষতি সাধন করেছে ২। একটি হল গোমতী নদীর উপর ডম্বুর বাঁধ। ৩০ মিটার উচু এই বাঁধ ১০ মেগাওয়াট জলবিদ্যুত উৎপাদনের জন্য ১৯৭৬ সালে চালু করা হয়েছিল। এতে ৩৬.৩৪ বর্গকিলোমিটার ভূমি তলিয়ে যায় পানিতে এবং উদ্বাস্ত হয় প্রায় ৭০ হাজার লোক (সরকারি হিসাবে ২ হাজার ৫ শথ ৫৮ টি পরিবার)। এখন সেখানে এ কারণে বিচ্ছিন্নবাদী আন্দোলনে নেমে পড়ে, পাহাড়ে লিপ্ত হয জুমচাষে এবং ৩০ বছরের মধ্যে গোমতী প্রকল্প প্রায় অকার্যকর হয়ে পড়ে। দ্বিতীয় বাঁধটি মণিপুরে। এটি ইথাই বা লোকটাক প্রকল্প নামে পরিচিত। ১১৫ কোটি রুপি ব্যয়ে ১৯৮৩ সালে ১০৫ মেগাওয়াটের জলবিদ্যুত প্রকল্প গড়া হয় সেখানে। ইতোমধ্যে কচুরিপানা ও পলি জমে জলাধারের কার্যকারিত শূণ্য হতে চলেছে। মণিপুর রাজ্যের লোকজন এ তিক্ত অভিজ্ঞতার প্রেক্ষিতে নাগাল্যান্ডসহ টিপাইমুখ বাঁধের বিরোধীতায় লিপ্ত হয়েছে। সেখানে এখন টিপাইমুখ বাঁধের বিরুদ্ধে জনমত প্রবল ৩ । পরিবেশ বিষয়ক সংগঠন কোর মণিপুর-এর নির্বাহী পরিচালক আনা পিন্টু টিপাইমুখ বাঁধের বিরোধীতা করে বলেছেন, টিপাইমুখ বাঁধ বাস্তবায়িত হলে ভারত ও বাংলাদেশে পরিবেশগত শরণার্থী তৈরী হবে ৪। তবে ভারত সরকারের বক্তব্য এ বিষয়ে ভিন্ন। তাদের মতে টিপাইমুখ বাঁধ ভারত ও বাংলাদেশের জন্য লাভজনক হবে। ভারত পাবে জলবিদ্যুত, বন্যা নিয়ন্ত্রণ, মৎস্য উৎপাদন ও পর্যটনের সুফল; আর বাংলাদেশের কুশিয়ারা সুরমা অববাহিকা হবে বর্ষায় বন্যামুক্ত ও শুস্কমৌসুমে অফুরন্ত চাষাবাদের মূল্যবান পানি সম্পদ। বর্ষায় বাঁধের উজানে অতিরিক্ত পানি সংরক্ষণ করা হবে এবং শুস্কমৌসুমে সে পানি বিদ্যুত উৎপাদনের জন্য ছেড়ে দেয়া হবে, এই প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশ ও ভারত উভয়ে হবে লাভবান। তবে ১৯৮৮ সালে হাভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক পিটার রজার্স-এর নেতৃত্বে ইউএসএইড পরিচালিত একটি কারিগরি সমীক্ষা ইস্টার্ন ওয়াটার স্টাডি নামে ১৯৮৯ সালে প্রকাশিত হয়েছে। এই সমীক্ষায় অভিমত প্রকাশ হয়েছে যে উত্তর-পূর্ব ভারতে কোন জলাধার নির্মাণ করে বাংলাদেশে বন্যা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। বাংলাদেশে বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রায় ২২ বিলিয়ন কিউসেক পানি জলাধারে সংরক্ষণ রাখতে হবে যা একেবারেই অসম্ভব। ফলে টিপাইমুখ বাঁধকে ঘিরে যে সব আশংকা দিয়েছে, তার যথাযথ কারণ আছে।
অভিন্ন নদীর পানি সম্পর্কে আন্তর্জাতিক আইনের ভাষ্যঃ বরাক নদী সুরমা ও কুশিয়ারার উজান অংশ হওয়ায় আন্তর্জাতিক আইনের সংজ্ঞায় এ জলপ্রবাহ হচ্ছে একটি অভিন্ন বা আন্তঃসীমান্ত নদী। আন্তঃসীমান্ত নদীর ক্ষেত্রে অতীতে রোমান আইনের অনুসরণে নদীতীরবর্তী দেশসমূহের অধিকার সক্রান্ত তত্ব বা কমন ল (Riparian Rights Doctrine or Common Law)-এর প্রয়োগ হত। এ তত্বমতে অভিন্ন নদীর পানিতে সকল অংশীদারদের সমান অংশ ও অধিকার বর্তায়। প্রাচীন এই তত্ব মোতাবেক বরাক নদীর প্রবাহ বাংলাদেশ-ভারতের অভিন্ন নদী হওয়ায় উভয়েই এর সমান অংশীদার। ফলে ভারত একতরফা ভাবে এ নদীর পানিসম্পদ উন্নয়নের উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারে না। হেলসিংকি রুলস ১৯৬৬ এর আর্টিকেল ৪ এ বলা হয়েছে যে আন্তঃসীমান্ত নদী বা অভিন্ন নদীর অববাহিকায় অবস্থিত রাষ্ট্রসমূহ তার ভূখন্ডের মধ্যে পানি ব্যবহার করার জন্য যুক্তিসঙ্গত ও ন্যায়সম্মত অধিকার পাবে। সেখানে বিবেচ্য বিষয় হবে আবহাওয়া, ভৌগলিক বৈশিষ্ট, অতীত ও বর্তমান পানির ব্যবহার, অর্থনীতি, সামাজিক প্রয়োজনীয়তা, অংশীদার রাষ্ট্রের জনজীবনে পানি নির্ভরতা ইত্যাদি। বরাক নদীর পানির উপর ভারতের চেয়েও বাংলাদেশের চাষাবাদ, যোগাযোগ, মৎস্য আহরণ, জীববৈচিত্র তথা জীবনযাপনের সার্বিক উপায় ও পদ্ধতির নির্ভরতা অনেক বেশী। এমনকি বরাক উপত্যকায় যে সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে তাতেও নদীর বড় অবদান আছে। সেজন্য বরাক নদীর পানি ভারত এমনভাবে ব্যবহার করতে পারেনা যাতে বাংলাদেশের যুক্তিসঙ্গত ও ন্যায়সম্মত অধিকার ক্ষুণ্ণ হয়। ১৯৭২ সালে জাতিসংঘ আয়োজিত স্টকহোম কনভেনশনের ২১ নং নীতিমালায় বলা হয় যে জাতিসংঘ চার্টার এবং আন্তর্জাতিক আইনের নীতিমালা অনুযায়ী প্রত্যেক রাষ্ট্র তাদের সম্পদ এমনভাবে আহরণ করবে যাতে অন্যকোন রাষ্ট্রের পরিবেশ ক্ষুন্ন না হয় (States have, in accordance with the Charter of the United Nations and the principles of international law, the sovereign right to exploit their own resources pursuant to their own environmental policies, and the responsibility to ensure that activities within their jurisdiction or control do not cause damage to the environment of other States or of areas beyond the limits of national jurisdiction) । ফলে বরাক নদীর পানিতে ভারত এমন কোন হস্তক্ষেপ করতে পারে না, যা বাংলাদেশের পরিবেশের ক্ষতির কোন কারণ হয়। এজন্য টিপাইমুখ বাঁধ প্রকল্পে বাংলাদেশের পরিবেশের সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি বৈজ্ঞানিক উপায়ে যাচাই করে যদি দেখা যায়, এতে বাংলাদেশের ক্ষতি হবে, সেক্ষেত্রে ভারতেকে বাধ নির্মাণ পরিকল্পনা বাতিল করতে হবে। আন্তঃসীমান্ত জলপ্রবাহের উপর সর্বশেষ যে আন্তর্জাতিক আইনটি প্রণীত হয়েছে, তা হল নৌচলাচল ব্যতীরেকে আন্তর্জাতিক পানি প্রবাহের অন্যান্য ব্যবহার সম্পকিত কনভেনশন ১৯৯৭। এর ৫ নং আর্টিকেলে বলা হয়েছে যে রাষ্ট্রগুলো তাদের সীমান্তের মধ্যে আন্তর্জাতিক পানি প্রবাহ বা নদীকে ন্যায় সম্মত ও যুক্তিসঙ্গতভাবে ব্যবহার করা ছাড়াও উন্নয়নের ক্ষেত্রে লাগসই পদ্ধতি অনুসরণ করবে এবং অংশীদার রাষ্ট্রের স্বার্থও বিবেচনায় রাখবে (Article 5 : Equitable and reasonable utilization and participation : 1. Watercourse States shall in their respective territories utilize an international watercourse in an equitable and reasonable manner. In particular, an international watercourse shall be used and developed by watercourse States with a view to attaining optimal and sustainable utilization thereof and benefits therefrom, taking into account the interests of the watercourse states concerned, consistent with adequate protection of the watercourse. 2.Watercourse States shall participate in the use, development and protection of an international watercourse in an equitable and reasonable manner. Such participation includes both the right to utilize the watercourse and the duty to cooperate in the protection and development thereof, as provided in the present convention.)। সর্বশেষ এ আইন মোতাবেকও টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণ করতে হলে ভারত বাংলাদেশের স্বার্থকে উপেক্ষা করতে পারে না। সুতরাং বলা যায় যে আইনগত দিক দিয়ে বরাক নদীর অববাহিকায় বাংলাদেশের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে ভারত একতরফাভাবে কোন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে পারে না।
অভিন্ন নদীর পানিতে বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষায় আন্তর্জাতিক আইনের ভূমিকাঃ অভিন্ন নদীর পানি সংক্রান্ত ১৯৯৭ সালের কনভেনশন জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে পক্ষে ১০৬ ভোট ও বিপক্ষে মাত্র ৩ ভোটের ব্যবধানে পাশ হয়েছিল এবং তখন বাংলাদেশ ও নেপাল ভোট দিয়েছিল প্রস্তাবের পক্ষে, ভারত করেছিল বিরোধীতা। এ আইনটি বাধ্যতামূলক হওয়ার প্রয়োজন জন্য কমপক্ষে ৩৫টি সদস্য রাষ্ট্রের অনুসমর্থন বা রেটিফিকেশনের। অবাক করা ঘটনা হল যে এ আইনটি এখনো ৩৫ দেশের অনুসমর্থন লাভ করেনি, আরা যারা রেটিফিকেশন করেনি তাদের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ ও নেপাল উভয়। এখন এ আইনের সুফল নিতে হলে, প্রথমেই প্রয়োজন হবে নিজেদের রেটিফিকেশনন ছাড়াও মোট ৩৫টি দেশের অনুসমর্থনের। এ আইনটিকে Gabcíkovo-Nagymaros মামলায় প্রথা হিসাবে স্বীকৃত হয়েছে। তবে ভারত এ আইনটি গোঁড়াতেই বিরোধীতা করায়, ভারতের উপর এ আইন কতটুকু প্রয়োগ করা যাবে, তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহের কারণ।
নদী সংক্রান্ত আইনে হেলসিংকি রুলস গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু হেলসিংকি রুলস প্রণীত হয় আন্তর্জাতিক আইন এসোসিয়েশন দ্বারা। এ রুলসগুলো হচ্ছে আদর্শ আইন। এর বলবৎ যোগ্যতা নির্ভর করে বিবাদমান রাষ্ট্রসমূহের সদিচ্ছার উপর। ফলে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে অভিন্ন নদীর পানি নিয়ে কোন বিরোধ হলে, আন্তর্জাতিক আইনে বাংলাদেশের ন্যায্য অধিকার থাকলেও, তা আন্তর্জাতিক ফোরামে উত্থাপন করে কোন সুবিধা আদায় করা কঠিন হবে। আন্তর্জাতিক আইন দেশীয় আইনের মত সবল নয়, আন্তর্জাতিক আইনের প্রয়োগ প্রধানত নির্ভর করে বিবাদমান রাষ্ট্রের সদিচ্ছার উপর। আন্তর্জাতিক আদালতের (International Court of Justice - ICJ) মাধ্যমেও এ বিরোধ নিস্পত্তিযোগ্য নয়। কারণ ভারত আন্তর্জাতিক আদালতের এক্তিয়ারে নিজেকে সম্পৃক্ত করেনি। সে কারণে ভারতের উপর আইসিজে-এর এক্তিয়ারগত সীমাবদ্ধতা রয়েছে। যে জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালযের সহকারি অধ্যাপক বিদওয়ানুল হক এক সাক্ষাৎকারে টিপাইমুখ বাঁধ নিয়ে আন্তর্জাতিক আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন ৫। এ বিষয়ে ড. আকবর আলীর মতও প্রণিধানযোগ্য। তিনি বলেছেন, ”টিপাইমুখ বাঁধের প্রশ্নকে আন্তর্জাতিক প্রশ্নে রূপান্তর কঠিন হবে। ফারাক্কার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এ পর্যন্ত মোটেই সফল হয় নি। এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক আইন অস্পস্ট ও এসব আইন আদালতের মাধ্যমে বলবৎ করা সম্ভব নয়।” ৬ । সুতরাং আইন আদালত করে টিপাইমুখ বাঁধের বিষয়ে কোন প্রতিকার পাওয়া খুবই দুরহ। বর্তমান বিশ্ব ব্যবস্থায় দুঃখজনক হলেও সত্যি যে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে প্রতিকার পাওয়ার জন্য আইনের চেয়ে কূটনৈতিক, অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক, সামরিক, রাজনৈতিক শক্তির প্রয়োজনীয়তা অনেক বেশী। আন্তর্জাতিক সব ধরণের আইনে অভিন্ন নদীসমূহে বাংলাদেশের সম্মতি ব্যতীত ভারত কর্তৃক কোন পদক্ষেপ নেয়া আইন বিরোধী। কিন্তু আন্তর্জাতিক কোন আইনে এর প্রতিকার পাওয়া দুঃসাধ্য। এক্ষেত্রে অন্ধের যষ্টির মত একটি আইন আছে যা অভিন্ন নদীর ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যেতে পারে। তাহল ফারাক্কা চু্ক্তি। ফারাক্কা চুক্তির আর্টিকেল
৯ ও ১০ এ বলা হয়েছে যে উভয়দেশ পরস্পরের কোন ক্ষতি সাধন করবে না এবং গঙ্গা নদী ছাড়াও অন্যান্য অভিন্ন নদীর পানি বন্টনের ক্ষেত্রে ন্যয়পরায়নতা, যৌক্তিকতা ও একে অন্যের কোন ক্ষতি না করার নীতি মান্য করা হবে। ভারত ও বাংলাদেশ উভয়ে এ চুক্তি স্বাক্ষর করেছে, ফলে ন্যায়ত এ চুক্তির ৯ ও ১০ নং আর্টিকেল মানতে উভয় দেশ বাধ্য। তবে এ চুক্তির দুর্বলতা হল যে দুদেশের মধ্যে চুক্তি নিয়ে কোন বিরোধের সৃষ্টি হলে কোন তৃতীয় পক্ষকে সালিশ মান্য করার বিধান না রাখায় সমাধান করতে হবে দ্বিপক্ষীয় আলোচনার মাধ্যমে। ফারাক্কা চুক্তি স্বাক্ষর করতে ১০২টি বৈঠক ও প্রায় ২০ বছর যাবত আলাপ আলোচনা করত হয়েছে, সুতরাং বিরোধ নিরসণে ভারতের আন্তরিকতার বিষয়টি এ ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য। অবস্থা দৃষ্টে দেখা যায় যে বাংলাদেশের ন্যায্য দাবী প্রতিষ্টা করার ক্ষেত্রে ভারতের বিরোধীতা থাকলে, তা আদায় করার উপায় খুবই সীমাবদ্ধ। বিশ্বের বড় বড় দেশ যুক্তরাষ্ট, চীন, কানাডা, জাপান প্রভৃতি দেশ নদীর পানি ব্যবহার করে নিজেরাই বিদ্যুত উৎপাদন করছে। তারা কি বাংলাদেশকে টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণ কাজ বন্ধ করার দাবীর প্রতি সমর্থন দেবে? তাদের সমর্থন ব্যতীত আন্তর্জাতিক অঙনে বাংলাদেশের ন্যায্য স্বার্থ রক্ষা করা কঠিন। বিশ্বের কোন প্রভাবশালী দেশের বিরুদ্ধে অপেক্ষাকৃত দুর্বল রাষ্ট্রের বিচার পাওয়া যে কঠিন, দুঃখজনক হলেও এটাই হচ্ছে বাস্তবতা। অনেকে মনে করেন বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে কোন সুদৃঢ় বন্ধুসমাজ গড়ে তোলতে পারে নি। যদি বা ভারতের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক ফোরামে বাংলাদেশ কোন অভিযোগ উত্থাপন করে, তাতে ভারতের চিরবৈরী পাকিস্তান ব্যতিত আর কাউকে পাওয়া যাবে না। এছাড়া বাংলাদেশের কর্ণফূলী নদীর উপর বাঁধ নির্মাণ করে বিদ্যুত উৎপাদন করায় উজানে মারাত্মক ক্ষতি হলেও ভাটিতে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে শুনা যায় না। ফলে টিপাইমুখে বাঁধ হলে উজানের ক্ষতির চেয়ে ভাটি বেশী ক্ষতিগ্রস্থ হবে, এটা প্রমাণ করা কঠিন হবে। যাহোক আন্তর্জাতিক আইন যে বাংলাদেশের স্বার্থরক্ষায় তেমন কোন কাজে আসবে না সেটা মোটামোটি পরিস্কার। তারপরও আন্তর্জাতিক আইনে প্রতিকার পাওয়ার জন্য সরকারের ভূমিকাই প্রধান। সরকার যদি কোন উদ্যোগ না নেয়, তাহলে কোন কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা অসম্ভব। বর্তমান সরকার প্রধান জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ভাষণ দানের পর এক সংবাদ সন্মেলনে টিপাই মুখ নিয়ে সিভিল সোসাইটির উদ্যোগ ও উদ্বেগকে ”অহেতুক ইস্যু সৃষ্টি করা ” বলে আখ্যায়িত করেছেন ৭। ফলে সরকার যে আন্তর্জাতিক আইনে অভিয়োগ করার বিষয় ভাবছে না, তা দিবালোকের মত পরিস্কার। এ অবস্থায় কি ভাবে আন্তর্জাতিক আইনের দ্বারস্থ হওয়া সম্ভব?

করণীয়ঃ ১. টিপাইমুখ বাঁধ ভারত ও বাংলাদেশের জন্য ক্ষতিকর ও আশংকাজনক বলে উভয়দেশে এর বিরুদ্ধে গড়ে বিরূপ জনমত গড়ে উঠছে। ইতোমধ্যে ভারতের পূর্বাঞ্চলে বাঁধের বিরুদ্ধে গড়ে উঠেছে অনেকগুলো সংগঠন। বাংলাদেশেও তারা সহয়োগীতা লাভের জন্য যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছেন। ভারতের পরিবেশবাদীরাও কেউ কেউ টিপাইমুখ বাঁধের বিরোধীতা করে লিখছেন পত্রপত্রিকায়। বাংলাদেশে টিপাইমুখ বাঁধের বিষয়ে পরিবেশবাদীরা যত না সোচ্চার তার চেয়ে বেশী সোচ্চার ধর্মীয় উগ্রবাদী ও রাজনৈতিক কিছু দল। টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণে তাদের বিরোধীতার চরিত্র অনেকটাই রাজনৈতিক। বাংলাদেশে টিপাইমুখ বাঁধ শুধু নয়, বাংলাদেশে ভারত থেকে আসা ৫৪ টি নদীর পানিজনিত সমস্যা রয়েছে। তাই এ আন্দোলনকে একটি পরিবেশগত আন্দোলনে রূপ দিতে হবে। ভারতে যারা টিপাইমুখ বাঁধের বিরোধীতা করছে, তাদেরকেও উভয় দেশের সার্বিক পরিবেশ সংরক্ষণ-এর সংগ্রামে নিয়ে আসতে হবে। প্রতিটি নদীর জন্য এক একটি আন্দোলন সৃষ্টি না করে, আন্দোলন হতে হবে উপমহাদেশের নদীগুলো অভিন্ন অববাহিকার পরিবেশ সংরক্ষণের। নদীর অববাহিকাকে রাজনৈতিক সীমান্ত দিয়ে চিহ্নিত করা যায় না। অববাহিকার পরিবেশ ও বাস্ততন্ত্র হচ্ছে অভিন্ন। তাই ভারত ও বাংলাদেশে অভিন্ন নদীগুলোর পানি প্রবাহে হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে দুদেশের পরিবেশবাদীদের একজোট হয়ে কাজ করতে হবে, গড়ে তোলতে হবে অভিন্ন প্লাট ফরম।
২. জলবিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণ থেকে কোন দেশকে বিরত রাখা কঠিন কাজ। বিশ্বব্যাপী জনমত উপেক্ষা করে চীনেও গড়ে উঠছে জলবিদ্যুত কেন্দ্র। ভারতকেও জলবিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণ থেকে বিরত রাখা সহজ হবে না। সেজন্য অভিন্ন নদীসমূহের পানি ব্যবস্থাপনায় যৌথ বিনিয়োগ, যৌথ ব্যবস্থাপনা ও যৌথব্যবহার দ্বারা ক্ষতির পরিমাণ বহুলাংশে হ্রাস করা যায়। কোশী নদীর জলবিদ্যুত উৎপাদনে ভারত ও নেপালের মধ্যে এরকম ব্যবস্থাপনা রয়েছে। বিশ্বে এখন ক্রমেই জনপ্রিয়তা লাভ করছে অভিন্ন নদীর পানি সম্পদ উন্নয়নে যৌথ ব্যবস্থাপনার ধারণা ।
৩. সরকার যদি অভিন্ন নদীতে বাঁধ দ্বারা বাংলাদেশের কোন ক্ষতি না করার ভারতীয় প্রতিশ্রুতিতে আস্থাশীল থেকে ভারতে সঙ্গে শলা-পরামর্শ করে টিপাইমুখ বাঁধের বিষয়ে ফয়সালা করতে চায়, তাহলেও নিদেন পক্ষে বাঁধের ইমপ্যাক্ট নিয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে একটি গাণিতিক মডেল স্টাডি করা প্রয়োজন। এতে অর্জিত ফলাফলের ভিত্তিতে কিছু পদক্ষেপ নিলে বাঁধের ক্ষতি কিছুটা হলেও হ্রাস করার ব্যবস্থা নেয়া যাবে। এ ধরণের গবেষণা কয়েক মাসের মধ্যেই শেষ করা সম্ভব ৮।
মন্তব্যঃ আন্তর্জাতিক আইনের দুর্বলতার কথা চিন্তা করে আন্তর্জাতিক আইনবিজ্ঞানী গন পরিবেশ সংক্রান্ত আইন কঠোর হওয়ার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছেন। এ প্রসঙ্গে ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের জিউ হ্যানকিন যথার্থই মন্তব্য করেছেন যে, পরিবেশ সংরক্ষণে সংশ্নিষ্ট সকলেই আইনের কঠোরতার প্রয়োজন অনুভব করেছেন (Amidst the worldwide demand for increased environmental protection, international jurists, academic and practicing, have again raised the topic of trans boundary damage, urging more and stricter rules of international liability for the protection of the environment - Xue Hanqin) ৯। নেলসন ম্যান্ডেলার নেতৃত্বাধীন বাঁধ সংক্রান্ত বিশ্ব কমিশন স্পষ্ট করেই বলেছেন, অভিন্ন নদীর তীরবর্তী দেশ সমূহের আপত্তি থাকলে তার নিরপেক্ষ প্যানেল দ্বার স্বীকৃত না হলে বাঁধ নির্মাণ করা উচিত নয়। আন্তর্জাতিক খ্যাতিমান আইন বিজ্ঞানী ওপেনহাম বহুপুর্বেই বলেছিলেন, কোন রাষ্ট্রকে তার নিজ ভূ-খন্ডের প্রাকৃতিক অবস্থা এমনভাবে পরিবর্তন হতে দেয়া হবে না, যার ফলে প্রতিবেশী কোন রাষ্ট্রের ভূখন্ডের প্রাকৃতিক অবস্থায় বিপত্তি সৃষ্টি হতে পারে (No State is allowed to alter the natural condition of its own territory to the disadvantage of the natural condition of the territory of a neighboring state) ১০। কিন্তু আন্তর্জাতিক আইন বিজ্ঞানীদের এসব কথা কূটনৈতিক শক্তির কাছে হার মেনে আছে। বিশ্বে শক্তিধর রাষ্ট্র দুর্বলের প্রতি অত্যাচার করলে, আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে কোন প্রতিকার পাওয়ার উপায় আজো নিশ্চিত নয়। সেজন্য জাতিসংঘের প্রস্তাব ছাড়াই যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা ইরাকে অন্যায় যুদ্ধে লিপ্ত হয়, রাশিয়া অভিযান চালায় ইউক্রাইনে। এ অবস্থায় ভারতের সাথে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিবাদ বিসম্বাদ না করে উভয়দেশের সচেতন নাগরিকদের নিয়ে পরিবেশ বিনষ্টকারী সকল বিষয়ে আন্দোলন গড়ে তোলা জরুরী। অন্তত মনে এইটুকু সান্তনা পাওয়া যাবে যে অন্যায়ের প্রতিবাদ জানিয়েছি, সহ্য করিনি।

১০. অধ্যক্ষ আলতাফ হোসেন (২০০৮), আন্তর্জাতিক আইন, ঢাকা ল’ বুকস, ঢাকা
‌৯. Xue Hanqin (2003); Transboundary Damage in International Law, Cambridge University Press, UK, p 261
৮. মোঃ সিরাজুল ইসলাম, টিপাইমুখ বাঁধঃ কিছু শর্ত মানলে কম ক্ষতিকর হতে পারে, প্রথম আলো, ১৬ জুলাই ২০০৯
৭. প্রথম আলো, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০০৯
৬. আকবর আলী খান, প্রাগুক্ত
৫. রিদওয়ানুল হক, আন্তর্জাতিক নদী আইনে দুর্বলতা রয়েছে, প্রথম আলো ০২ আগস্ট ২০০৯
‌৪. সাক্ষাৎকারে আনা পিন্টু, আমাদের সময়, ৩০ আগস্ট ২০০৯
৩. আসিফ নজরুল, টিপাইমুখঃ প্রতিবাদ জরুরী কেন, প্রথম আলো, ১ জুন ২০০৯
‌২. আকবর আলী খান, প্রস্তাবিত টিপাইমুখ বাঁধ, প্রথম আলো ৮-১১ সেপ্টেম্বর ২০০৯
১ Kangla Online, 7 September 2009
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১০ বিকাল ৩:৫৮
৩টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×