ইনফ্রারেড:
মানুষের চোক্ষু আল্লাহর বিশেষ দান। এই যে দুনিয়ার এত আলো আসলে দেখতে পাই, এত রূপ সৌন্দর্য্য মাঝে মাঝে চিন্তা করি কেমনে কি সেট হয়েছে চোক্ষে এত সুন্দর সব কিছু দেখছি। কিন্তু রাতের বেলা আমরা কিছুই দেখি না। আলো ক্ষীন হলেও দেখি না আবার আলো যদি তীব্রতর হয়ে চোখের রেন্জ্ঞের বাইরে চলে যায় তাহলে সেটা দেখা সম্ভবপর নয় এই খোদা প্রদত্ত চক্ষু দিয়ে। পেক পেক না করে নীচের ফটুকটা দেখা যেতে পারে।
উপরোক্ত ছবিতে দেখতেছেন দৃশ্যমান আলো নামের অংশের এই তরঙ্গদৈর্ঘ্যের রেন্জ্ঞ আমাদের চোখে বিভিন্ন বর্নালী আকারে ধরা পড়ে। যদি আমরা পদার্থবিজ্ঞানের ভাষায় চিন্তা করি আমাদের চোখ এমন ভাবে বানানো যে আমরা আসলে আলোটা দেখি না। কোনো বস্তুতে আলো পড়ে সেটা যখন প্রতিফলিত হয় সেটা আমরা দেখি। এখন কোনো বস্তু যদি আলো প্রতিফলন না করে পুরোটাই বাইর করে দিতো তাহলে কিন্তু আপনে ঐ বস্তু দেখতে পারতেন না এই যেমন বায়ু অথবা এমন একটা কাচ যা দিয়া কোনো প্রতিফলন নাই। এজন্য এখনও আমি বড় বড় কাচ ওয়ালা অফিসে ঢুকতে গেলে ধাম করে খাই গুতা। কারন সামনে যে কাচ আছে ঐটা আমার মত কানা লোক বুঝতে পারে না।
নীচের ছবিতে দেখেন বাইরে এই যে আলোকিত বা অনালোকিত বা আধার সবার মধ্যেই তরঙ্গ আছে যার মধ্যে আমরা যেসব তরঙ্গ দেখি তাদের নিজস্ব একটা বর্ন বা রং আছে। সবার ওপরে আছে লাল এবং লালের ঢেউটা একটু মোটা আর সবার নীচে আছে বেগুনী যেটার ঢেউটা খুব চিকনা এবং ঘন। এগুলা উচা নীচা ঢেউ যদি মাথার মধ্যে খেলেন তাহলে একেকটা আসলে বৃত্ত। মাঝখানে একটু ভাজ করে দেখেন সবই বৃত্ত হয়ে গেছে। এই বৃত্ত গুলো হলো একেকটা চক্র বা সাইকেল। প্রতি সেকেন্ডে যার চক্র যত বেশী তার ফ্রিকোয়েন্সী বা স্পন্দন তত বেশী। এখন ফ্রিকোয়েন্সি বৃদ্ধি পাইলে তার তরঙ্গ দৈর্ঘ কিন্তু কমতেছে। কারন নির্দিষ্ট সময়ে এক সাথে অনেকগুলো চাকা ছোট হয়ে গাদাগাদি করতেছে ফলে স্বভাবতই ঐ গোলকের পরিধি কমতেছে তাই না?
এখন ইনফ্রারেড বা অবলোহিত রশ্মী হইলো সেই রশ্মি যেটা আমাদের দৃস্টি সীমার মধ্যে থেকে সর্বোচ্চ তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের অধিকারী তার মানে হইলো তরঙ্গদৈর্ঘ্য বাড়লে ফ্রিকোয়েন্সি কমতেছে। ফলে একসময় ঐটা লাল হইতে হইতে আমাদের দৃস্টি সীমার বাইরে চলে যায় তখন হয় অতি লাল টাইপ কিছু। এরপর আরও বাড়াইলে সেইতরঙ্গ দিয়া আপনি মাইক্রোওয়েভ ওভেন বানাইলেন আরও বাড়ায় দিয়া সেটা দিয়া আপনি এফএম রেডিও চালাইলেন। তখন কিছু আর দেখার থাকবে না। এইটাই হইলো ইনফ্রারেডের কারিগরী যার তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের রেন্জ ১০^-৬ থেকে ১০^-৩ মিটার। মানে হইলো ১ মিটারর স্কেল নিয়া তারে প্রথমে ১০০০ টা ভাগ করে তার এক ভাগ হইতে ১০০০০০০ ভাগ করার পর তার এক ভাগ সমানের মধ্যে যত সাইজ হয় সেইটা ইনফ্রারেড।
জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ
এইটা নিয়া সবাই অলরেডি সুন্দর কইরা লেইখা ফেলাইছে নেটে তো আমি এইটা নিয়া খুব বেশী বাতচিত করবো না কারন আমার পোস্টের উদ্দেশ্য এইটা না। তারওপর নাসার এইখানে গুতা মারলে এইটার উপর পুংখানুপুংখ ডিজাইন সহ খুব সুন্দর ব্যাখ্যা করছে খুব সরল ইংরেজী ভাষায়। তাই আমি খুব শর্টকাটে বলি।
আসলে দুনিয়াতে যেসব টেলিস্কোপ আছে সেগুলা দিয়া আকাশের গ্রহ নক্ষত্র আর গ্যালাক্সি (নক্ষত্র মানে কি গ্যালাক্সি নাকি নক্ষত্রপুন্জ? বাংলা নিয়া আমার বেশ কিছুদিন সমস্যা চলতেছে ইদানিং) এর ছবি ঠিক মতো পাওয়া যাইতেছে না। কারন এসব দূর দুরান্ত থেকে এসব গ্রহ নক্ষত্রের যে আলো আসে তা ধরেন যখন পয়দা হয় তখন তো তাদের মেলা ফ্রিকোয়েন্সি থাকে। তার পর বিভিন্ন চড়াই উৎড়াই পার হইয়া, ব্লাক হোলের পাশ দিয়া গেলে কিছুটা খাইয়া ফেলায় কিছুটা বেকায় যায় (যার ফলে গ্রাভিটেশনাল ল্যান্সিং হয়) আবার বিভিন্ন ধূলা আর কসমিক রশ্মির কারনে সেটার মধ্য থাকা এনার্জী শোষিত হয়, পরে ঐ আলোর কনিকার এনার্জী ক্ষয় হইয়া যেইটা পাওয়া যায় সেইটার কাহিনী দুনিয়ার বায়ুমন্ডলে আইসা আরো খুব খারাপ থাকে। তো প্রথমে হাবল টেলিস্কোপ দুনিয়ার বাইরে পাঠায়া বায়ুমন্ডলের সেই সমস্যা মিটানো গেলেও যেসব নক্ষত্র থেকে আলো গুলো শক্তি হারাইতে হারাইতে এমন ইনফ্রারেডের মতো রশ্মিতে পরিনত হয় সেগুলা ধরো মতো শক্তি তার নাই। তার শক্তির বিচার আর পৃথিবীর কক্ষপথে যেসব ইন্টারফিয়ারেন্স সেটাও ব হুদূর আগত কোনো কোয়াসারের বিস্ফোরন বা সুপার নোভা, সেইটা বাদ আমরা যদি সৃষ্টির আদিকালের চেহারা দেখতে যাই সেটার জন্য এটা খুব বেশী কার্যকরী না, তার ওপর সৌরঝড়, পৃথিবী থেকে উৎপন্ন নিজস্ব ইনফ্রারেড, মাইক্রোওয়েভ ইন্টারফিয়ারেন্স তো আছেই। তাই চিন্তা করলো এমন একটা টেলিস্কোপ বানানো যেটা পৃথিবীর কক্ষপথ বা উপ্রের বায়ুমন্ডলের কসমিক রশ্মি বা ধূলা বালি থেকে এটা মুক্ত থাকবে। তো সেই চিন্তা করে মাথায় আসলো পরবর্তী প্রজন্মের টেলিস্কোপ এবং দুনিয়ার ২০ টা দেশ প্রায় ৮.৮ বিলিয়ন ডলার খরচ কইরা এই টেলিস্কোপ বানানির সিদ্ধান্ত নিলো। এখন ২০ টা দেশে বাংলাদেশ ইন্ডিয়া নাই এমনকি শান্তির ধর্ম ইসলাম অনুসারী কোনো মাচলম্যান থুক্কি মুসলমান দেশও নাই। তার মানে মাদ্রাসার গোড়া পুলাপানদের মতে ইহা একটা হারাম প্রজেক্ট, কারন কোরান শরীফেই সব আছে ব্লা ব্লা, তো এই হিসাবে না যাই কারন আমরা এখন আইসিসের জন্য জঙ্গিও সাপ্লাই করি, জ্ঞানে বিজ্ঞানে বিনিয়োগ না কইরা!
তো এই জেমস ওয়েব টেলিস্কোপের কাজ হলো এই যে যত ইনফ্রারেড রশ্মি আছে সবগুলাকে ধরা প্রথমে তাদের একটা প্রাইমারী আয়না আছে সেটা দিয়ে। এই প্রাইমারী আয়না ধরেন ৪-৫ জন মানুষ ঘাড়ের ওপর দাড়া করায় একটা টাওয়ার বানান সেরকম লম্বা যেটা হাবল টেলিস্কোপের আয়নার প্রায় ৪ গুন। এর কাজ হলো অতি দূর হতে আগত ইনফ্রারেড সিগন্যালটারে দৈর্ঘ প্রস্থে বিবর্ধিত করা। পরে সেই আয়না থেকে প্রতিফলিত রশ্মি একটা অপেক্ষাকৃত ছোট সেকেন্ডারী আয়নাতে পাঠায় যেখানে একটা ইনফ্রারেড ক্যামেরা আছে সেটা ঐ ইনফ্রারেডের উৎসের ছবি ধারন করে । যাতে ক্যামেরাটা ঐ প্রতিফলিত রশ্মি থিকা মহাবিশ্বের আদিমতম চেহারাটা দেখতে পারি।
বিগ ব্যাং এবং কসমিক ইনফ্ল্যাশন অনুযায়ি একটা বিস্ফোরনের পর যখন মৌলিক কনিকা যেমন ইলেক্ট্রন প্রোটন নিউট্রন পয়দা হলো এবং এর কিছু পর হাইড্রোজেন হিলিয়াম তৈরী হলো তখন মহাবিশ্ব বেশ ভালোই উত্তপ্ত ছিলো এবং খুব দ্রুত প্রসারিত হওয়া শুরু করলো। ফলশ্রুতিতে মহাবিশ্বের তাপমাত্রাও কমতে শুরু করে। একটা সময় যখন এসব হাইড্রোজেন হিলিয়াম থেকে তারা, নক্ষত্র তৈয়ার হতে শুরু করলো তখন সেখান থেকে আলো নিঃসৃত হয়েছিলো সেগুলো এখনো চলমান কারন হিসাবে দেখা গেছে বর্তমানে মহাবিশ্বের প্রসারন আলোর গতির কাছাকাছি। চিন্তা করেন পুরো আলোবিহীন স্পেসে কসমিক ইনফ্লেশনের মাধ্যমে স্পেসটাইমের প্রসারন শুরু হলো তখন চারিদিকে আলোও ছড়ায়া পড়ছিলো। বাইবেলের সেই ডায়লগ: let there be light
এখন জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ বানানতি হইছে যেই ৪-৫ টা কারনে সেগুলান হলো:
১) এই যে আদিম তম তরঙ্গ এইগুলো পাকড়াও করে মহাবিশ্বের আদিমতম রূপ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া। এতদিন যা বলা হইছে তা সব চোখের দেখা আর গনিতের ফল। এবার চাক্ষুষ কিছু দেখার অপেক্ষা।
২) গ্যালাক্সী গুলান কিভাবে তৈরী হইছে সেইগুলা আমাদের প্রচলিত ধারনার সাথে মিলায়া দেখা যে আমরা সব ঠিক মতো অনুমান করতে পারছি কিনা
৩) এরপর তারা আর তাদের গ্রহ গুলো কিভাবে তৈরী হইছে তাদের আদিম তম চেহারা। পৃথিবী তো তৈরী হইছে ৪.৫ বিলিয়ন বছর আগে আর বিগ ব্যাং হইছে ১৩.৫ বিলিয়ন বছর আগে। এখন বিগ ব্যাং এর প্রায় ১০০ থেকে ২০০ মিলিয়ন বছর পর প্রথম তারা তৈরী হওয়া শুরু করে। তো তাদের অবস্থা কি ছিলো? এখন ধরেন সেই অবলোহিত রশ্মি যদি ধরা যায় তাহলে তার তরঙ্গ দৈর্ঘ্য দেইখা বুঝতে পারছি তখন সেটা কি রকম গরম ছিলো, দশা দেখে বোঝা যেতে পারে তার ঘুরাফিরা আর তাপমাত্রার পরিবর্তন দেখে বোঝা যেতে পারে কি কি জিনিস দিয়ে সেসব তৈরী হইছিলো।
৪) সবার লাস্টে দেখা হবে গ্রহ আর তার মধ্যে জীবনের পরিবেশ আছে কিনা।
কিছু তথ্য দেই: বড় আয়নাটায় বেরিলিয়াম ব্যাব হার করা হইছে কারন এই মৌলটা ধাতু বা মেটাল ধর্ম প্রদর্শন করে এবং তাপ মাত্রা স হনীয় হওয়ায় এইটা উচ্চ বা নিম্ন তাপেও বেশ শক্ত থাকে। আয়নার ওপর গোল্ড মানে সোনার প্রলেপ দিছে যাটে আলো ভালো প্রতিফলিত হইতে পারে। সূর্য্যের কাছাকাছি গেলে যাতে বেশী গরম না হইয়া যায় সেহেতু পরম শূন্য মানে -২৭৩ ডিগ্রীর বেশ কাছাকাছি ঠান্ডা রাখা হইবো পুরা যন্ত্রটারে। এইটার ভিতর দুইটা কম্পু আছে যার দুইটাতেই ইন্টেল প্রসেসর, তবে এখনকার মতো কোর আই না। মাত্র ৬০০-৭০০ মেগাহার্টজের কম্পু। তাই এই কম্পু দিয়া এসাসিন ক্রিড বা কল অব ডিউটি খেলার চিন্তা না করাই ভালো। তারপর আর অনেক খুটিনাটি আছে ওগুলা পড়ে মনে পড়লে পোস্টে বা কমেন্টে বলবো।
এখন আসি আসল কথায়:
ল্যাগ্রান্জিয়ান পয়েন্ট আর থ্রি বডি প্রবলেম
আপনারা হয়তো বলতে পারেন খাইতে দিলাম পোলাও গরু খাসির তরকারী কিন্তু পইড়া রইলেন সালাদ নিয়া, কাহিনী কি? আসলে কাহিনী কিছুই না। কারন এইটা নিয়া কেউ কথা কয় নাই। এইটাই কাহিনী। খুশী?
আপনারা যারা শার্লক হোমসের ডাইহার্ড ফ্যান এবং ওর প্রতিটা লাইন ঠোটের আগায় তারা হয়তো জানবেন কুখ্যাত শয়তাম মোরিয়ার্টি বিশাল বড় গনিতবিদ এবং জ্যোতির্বিজ্ঞানী ছিলেন। সে মাঝে মাঝেই বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক পাবলিকেশন ছাপাইতেন যার মধ্যে একটা ছিলো এই থ্রি বডি সম্পর্কিত, যদিও টাইটেলটা এমন ছিলো যে একটা উল্কার গতিপ্রকৃতি, সেইখানে এই থ্রি বডি প্রবেলম ছিলো। যদিও বাস্তবিকভাবে এমন কোনো জার্নাল লেখা হয় নাই, কিন্তু এই থ্রি বডি প্রবেলম বইলা আসলেই একটা গানিতিক সমস্যা ছিলো। যেইটা সমাধান করার জন্য তৎকালীন সুইডিশ রাজা মেলা টাকার পুরস্কার ঘোষনা করে এবং পয়েন্টকেয়ার সাহেব এটার সমাধানের জন্য গুরুত্বপূর্ন অবদান রাখেন। সময়কাল বলতে গেলে ১৮০০ শতাব্দির মাঝামাঝি। আমি যদিও ইতিহাস খুব ভালো জানি না কিন্তু সুইডেনে থাকার কারনে এই কাহিনী মেলাবার শুনছি কিন্তু পুরাটা মনে রাখতে পারি নাই। তবে থ্রি বডি প্রবেলম টা আমার মনে আছে।
আমি এখানে ব্যাখ্যা করবো আসলে জেমস টেলিস্কোপের সাথে এই থ্রি বডি প্রবলেমের কি সম্পর্ক। আমরা জানি সূর্য সৌরজগতের সবাইরে টানে এমনকি সৌরজগতের পৃথিবীও তার চাদ রে টানে। এখন কথা হইলো সূর্যের খুব কাছাকাছি গেলে খুব গরম হয়ে যাবে আবার সুর্য্য থেকে দূরে গেলে জিনিসপত্র খুব ঠান্ডা হয়ে যাবে। এটা আমরা ভালোই বুঝি কারন বিষুবীয় অন্ঞ্চলে থাকার কারনে আমাগো শীতকালেও ফ্যান ছাড়তে হয় আর সুইডেন উত্তর মেরুর কাছে থাকার কারনে ভরা গ্রীস্মেও ল্যাপ গায়ে দিয়া ঘুরতে হয়। পৃথিবীর কাছাকাছি ঘুরাইতে গেলে সেটারে আবার নির্দিস্ট গতিতে ঘুরাইতে হবে। এই গতির কমে গেলে সেটা টুক করে দুনিয়াতে আছড়াই পড়বে কেন্দ্রমূখী বলের কারনে। আবার খুব বেশী দূরে নিয়া গেলে নির্দিষ্ট গতিতে না ঘুরলে জিনিসটা দুরে চইলা গিয়া সুর্য্যের পেটে বা মহাশূন্যে হারায়া যাবে কেন্দ্রবিমুখী বলের কারনে। এখন এত ভারী একটা টেলিস্কোপরে নির্দিস্ট কক্ষপথে রাখার জন্য সেরাম জ্বালানী নিয়া যায় তাহলে সেই জ্বালানীর কারনেই ইনফ্রারেড রেডিয়েশন হবে। ফলে মহাবিশ্বের দূর দুরান্ত থেকে যেসব সংবেদনশীল রশ্মি আসবে সেগুলা আবার নিজের শরীরের রেডিয়েশনের কারনেই ক্ষতিগ্রস্হ হবে। এইটাও একটা কাহিনী।
থ্রী বডি প্রবেলম ব্যাখ্যা করার আগে কুটিকালের চেনা পরিচিত একটা কাহিনী বলি:
তো আমরা ছোট বেলায় যারা গোলাকৃতির ফুটা ওয়ালা চুম্বক নিয়া নাড়াচাড়া করছি তারা নিশ্চয়ই সুই দিয়া চুম্বকের মাঝখানের গোলাকারের কেন্দ্রে রেখে দেখার চেস্টা করছি এর নিরপেক্ষ পয়েন্ট বের করার জন্য। যেখানে রাখলে ঐ সুই কোনোদিকেই যাবে না। যেই পয়েন্টে আকর্ষন বল সমান থাকায় ব্যাটা জায়গায় দাড়ায়া থাকবে। এখন আমরা যদি পয়েন্টে একটা লাট্টু রেখে ঘুরাই আর একটু শূন্যে উঠাতে পারে তাহলে কি হবে? ব্যাটা কোনো জ্বালানী ছাড়াই ভো ভো শূন্যে ঘুরতে থাকবে এই কনসেপ্ট টা ম্যাগনেটিক ট্রেনে ব্যাব হার করে জাপান দ্রুততম গতির ট্রেন সার্ভিস চালু করছে যেটা শূন্যে ভ্রমন করবে।
এই ভিড্যুটা দেখলে কিছুটা মাথায় আসবে।
এখন আসলে জানার চেষ্টা করি থ্রি বডি প্রবলেম কি?ধরা যাক তিনটি গতিশীল বস্তু যারা নিজেদের সাথে পারস্পরিক ব্যাস্তানুপাতিক বর্গের বলের মাধ্যমে একে অপরের ওপর ক্রিয়াশীল (ক্রিয়াশীল বল দুইটার একটা গ্রাভিটি আরেকটা বৈদ্যুতিক আকর্ষন)। কিন্তু সমস্যাটা হলো এই তিনটা বস্তুর স্থির কক্ষপথ নির্নয়ের আর এর সমাধানের জন্য নিউটোনিয়ান গ্রাভিটেশনাল ল দিয়ে ব হুদিন ধরেই মাথা কুটে খাচ্ছিলো বভু বিজ্ঞানি কারন তিনটা গতিশীল বস্তুকে স্ট্যাবল কক্ষপথে ঘুরানির যে প্রক্রিয়া তা পৌনঃপুনিকতার হিসাবে ব্যাখ্যা করাটা অতটা স হজও ছিলো না। তো আমরা যদি প্রথমে চিন্তা করি তিনটা না নিয়া যদি দুইটা বস্তু নিয়া কাজ করা যায় তাহলে কেমন হয়? সেইক্ষেত্রে এটা আরও স হজ হবে যদি আমরা একটা গতিশীল বস্তু নিয়া কাজ করি। এখন একটা গতিশীল বস্তুর ক্ষেত্রে কি হতে পারে সেটা উপরে চুম্বক দিয়ে বর্ননা করছি। দুই বস্তুর ক্ষেত্রেও এই উদাহরনটা ধরি শুধু এখানে পার্থক্য থাকবে দ্বিতীয় বস্তুটির সাপেক্ষে প্রথমটা স্থির। তার মানে সুর্য্যকে কেন্দ্র করে ঘূর্নায়মান পৃথিবী আর পৃথিবী থেকে তাকালে মনে হবে আমরাই ঘুরতেছি সূর্য্য জায়গায় ঠায় দাড়ায়ে।
নিউটন সূর্যকে ঘিরে যে গ্রাভিটি দিয়ে সমাধান করে গেছেন পৃথিবীর জন্য, এর কক্ষপথ হইছিলো উপবৃত্ত। এখন আমরা যদি একটা অনুর ভেতর তাকাই তাহলে দেখি নিউক্লিয়াসের চারপাশে ইলেক্ট্রন ঘুরতেছে। একই আইডিয়া, হিসাব ভিন্ন! কিন্তু যখন তিনটা গতিশীল বস্তু তখন আমরা একটা বস্তুকে স্থির রাখতে পারি না।
তো এখন আমরা আগাই নিউটনের গ্রাভিটির সুত্র দিয়ে তার আগে আমরা যেনো একটু F=MA কে মাথায় রাখি।M_1 এবং M_2 ধরলাম দুইটা গ্রহের ভর আর vec(P)_1 এবং vec(P)_2 ধরলাম তাদের পজিশন।
M_1* vec.right{dP১} = -((G*M_1*M_2)/(|vec(P)_1-vec{P}_2|^3))*( vec(P)_1-vec(P)_2)
এখন আমরা যদি শুধু ম্যাগনিচুডের হিসাব করি তাহলে নীচের যে ত্রিঘাত ওটা ওপরে থাকা পজিশনের পার্থক্যের সাথে কাটাকাটি হয়ে যাবে। তাহলে ডেরিভেটিভের ধারনা মাথায় রেখে এভাবে লিখতে পারি
M_1 *| (vec.right(rP১)| =- ((G*M_1*M_2)/(vec(P)_1-vec{P}_2|^3))*|vec(P)_1-vec(P)_2|= -((G*M_1*M_2)/(|vec(P)_1-vec{P}_2|^২)) ------১
আবার প্রতিটা কাজের সমান এবং বিপরীতমুখী প্রতিক্রিয়া আছে, সেহেতু লেখা যায় যে M_1* vec{P}
M_1 *| (vec.right(rP১)|= -M_1 *| (vec.right(dP২)|
তাহলে (vec.right(rP১) - (vec.right(rdP২) = (vec.right(rP১)+M_1/M_২ (vec.right(rP১)
= (১+ M_1/M_২ )(vec.right(rP১)= (১+ M_1/M_২ )M_1/M_২(vec.right(rP১)
= -(১+ M_1/M_২ )১/M_1* ((G*M_1*M_2)/(vec(P)_1-vec{P}_2|^3))*vec(P)_1-vec(P)_2|
= -(১+ M_1/M_২ )* ((G*M_2)/(vec(P)_1-vec{P}_2|^3))*vec(P)_1-vec(P)_2|
= -((G*M_1+M_2)/(vec(P)_1-vec{P}_2|^3))*vec(P)_1-vec(P)_2|
এখন আমরা লিখতে পারি {vecright{rx}} = -(GMvec(x))/(|vec{x}|^3) যেখানে (vec(P)_1-vec{P}~vec{x} আর M_1+M_2~M
তার মানে এখানে সূর্য্যের আপেক্ষিক গতিকে স্থির ধরে এগুলে আমরা দুই বডির একটা সমাধান পেতে পারি যেটা মূলত একটা উপবৃত্তাকার পথেরই নির্দেশ করে। কিন্তু সূর্য্য বেটা চলমান।
এখন আমরা ১ নম্বর অনুসারে যদি ৩ টা বডির জন্য ইকোয়েশন লিখি তাহলে সমস্যাটা দাড়াচ্ছে সেখানে একটার সাপেক্ষে আরেকটা করলে বিন্যাস সমাবেশে তিনটা ইকোয়েশন আর তিনটা উপবৃত্তাকার পথ পাবো। যেটা দিয়ে মূলত এই সিদ্ধান্তে আসা কষ্টকর যে তিনটি গতিশীল বস্তু হলে কি হবে। কারন নিউটোনিয়ান গ্রাভিটেশনাল ল দিয়া যে ডেরিভেশন দেখানো হইছে সেটাতে সূর্যকে স্থির ধরা হইছে। তাই নিউটোনিয়ান গ্রাভিটেশনাল সুত্র দিয়ে এটার সমাধান বেশ কষ্টকরই ধরা যায় যখন তিনটাই গতিশীল হয়। এটাই হলো থ্রী বডি প্রবেলম। উপরের ইকোয়েশনগুলা ভালো ভাবে লেখতে পারি নাই। কেউ চাইলে খাতায় লেইখা ফটুক আপলাডাইতে পারি।
এই সমস্যার বেশ কিছু সমাধানের মধ্যে সর্বপ্রথম পয়েন্টকেয়ার সাহেব একটা কার্যকরী রাস্তা বলেন যেখান থেকে পরে আমরা পাই পিরিয়োডিক পারবুটেশন। এই সমাধান অনুসারে দুইটি গতিশীল বস্তুর যারা একে অপরের ওপর তাদের মহাকর্ষীয় বলের দ্বারা ক্রিয়াশীল তাদের কক্ষপথে এমন ৫ টা পয়েন্ট আছে যেখানে এই বলগুলো একে অপরকে নিস্ক্রিয় করে।
এখন সূর্য্য পৃথিবী ও চাঁদের নিজস্ব মহাকর্ষীয় বলের কারনে বল রেখা কল্পনা করি প্রথমে। যেহেতু তাদের বল রেখা আছে সেহেতু এসব গোলাকার বস্তুর এমন পয়েন্ট থাকবে যেখানে তাদের বলরেখা সমূহ পরস্পরকে নিস্ক্রিয় করে এরকম কিছু নিরপেক্ষ অন্ঞ্চলের সৃষ্টি করবে। সেই হিসেবে এমন তিনটি অসম ভারী বস্তুর আশে পাশে এমন কোনো পয়েন্টে অপেক্ষাকৃত ভারহীন (কমভরযুক্ত থাকায় তাকে ভরহীন ধরে নিতে পারি) কোনো বস্তুকে এসব পয়েন্টে রাখলে নিজের কক্ষপথে ঠিক রাখার জন্য এর সেরকম শক্তির প্রয়োজন হবে না। যেটা মূলত জিওস্ট্যাশনারী স্যাটেলাইট হিসেবে কাজ করতে পারবে। যেহেতু এই তিনটি গ্রহ উপগ্রহ আর নক্ষত্রের কক্ষপথ উপবৃত্তাকার সেহেতু এখানে পাঁচটা পয়েন্ট পাওয়া যায় যেগুলোকে ল্যাংগ্রান্জিয়ান পয়েন্ট বলে।
উপরের ছবিটা এই পাঁচটা পয়েন্ট দেখানো হইছে। যার মধ্যে জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ থাকবে ২ নম্বর পয়েন্টে। এই খানে এক নম্বর পয়েন্ট নেয়া হয় নাই কারন ১ নম্বর পয়েন্টে সূর্য্যের গ্রাভিটিকে নিস্ক্রিয় করার জন্য কিছু কিছু সময় পৃথিবীর গ্রাভিটির সাহায্য নিতে হবে ফলে এর কক্ষপথ পরিক্রমের সময় বেড়ে যাবে। সেখানে ২ নম্বর পয়েন্টে ঐ টেলিস্কোপ ভাবতে হবে দুইটা বড় বস্তুর গ্রাভিটির টানের বিরুদ্ধে নিজের কেন্দ্রবিমুখী বল দিয়ে নিস্ক্রিয় করার। সেটা অনেকটা সহজই।
পৃথিবীর কক্ষপথের একটু বাইরে কিন্তু বিপরীত দিকে থাকা ৩ নম্বর পয়েন্টে টাতে পরিক্রমার সময় একই লাগলেও ওটা দুনিয়া থেকে দূরে। আরও কোনো সাড়াই কাজের দরকার হলে অতদূর গিয়া কাজ করা ঝামেলা। ৪ এবং ৫ নম্বর পয়েন্টে স্ট্যাবল কক্ষপথ থাকলেও ২ নম্বর পয়েন্টে এই কক্ষপথ থেকে তাপমাত্রা অনেক কম। ফলে আমাদের পারিপার্শ্বিক বস্তু যেমন সূর্য, শুক্র, বুধ গ্রহ সমুহের অবলোহিত রশ্মির বাধা ২ নম্বর পয়েন্টে অপেক্ষাকৃত কম।
তাই ২ নম্বর পয়েন্টই ভালো।
এখন আপনাদের একটা সিম্যুলেশন লিংক দেই এখানে আপনি ইচ্ছা করলে সূর্য্যের ভর দুনিয়ার ভর আর জেমস ওয়েব টেলিস্কোপের ভর বসাইয়া নিজেই এসব পয়েন্টের পুংখানুপুংখ কক্ষপথ দেখতে পারেন। যদিও থ্রি বডি প্রবলেমের অনেক সমাধান আছে যেগুলো বেশীর ভাগ অনেক জটিলতর কক্ষপথের নির্দেশ করে কিন্তু সেগুলো জেমস ওয়েবের জন্য বর্তায় না।
এই হইলো টোটাল কাহিনী। সূত্র আপনারা লেখার ভেতরেই পাবেন যেসব লেখা নীল হয়ে আছে সেখানে ক্লিক করলেই এসবের জার্নাল বা পুংখানুপুংখ তথ্য এসব পড়বে। প্রশ্ন থাকলে কমেন্টে করতে পারেন। উত্তরদেবার চেষ্টা করবো। খুব জটিল একটা ম্যাথমেটিক্যাল এলগরিদম নিয়া পোস্টানো মেলা কষ্টের।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই আগস্ট, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:০১