somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পঞ্চম মৌলিক বল ও ডার্ক এনার্জী, ডার্ক ম্যাটার ইত্যাদি খিচুড়ী

১৮ ই আগস্ট, ২০১৬ রাত ৮:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মৌলিক বলসমূহ:

পৃথিবীর সকল কিছু কি দিয়ে সৃষ্টি? আগে বলা হতো বায়ু পানি মাটি অগ্নি দিয়ে সৃষ্টি। পরে আমরা জানলাম মৌলিক পদার্থ সমুহ দিয়েই এই মহাবিশ্বের সবকিছু সৃষ্টি। তখন স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন আসে এই মৌলিক পদার্থ গুলো কি দিয়ে সৃষ্টি! প্রযুক্তির উন্নয়নের সাথে সাথে জানতে পারলাম সকল মৌলিক পদার্থ চোখে দেখা যায় না এমন অতি ক্ষুদ্র ইলেক্ট্রন প্রোটন নিউট্রন দিয়ে তৈরী। কোয়ান্টাম ফিজিক্সের উন্নয়নের সাথে জানতে পারলাম এই কনিকা সমুহ বিভিন্ন মৌলিক মিথস্ক্রিয়া বা বলের মাধ্যমে সংযুক্ত বা পারস্পরিক সহাবস্থানে এমন অনুপরমানু গঠন করেছে।

এখন কথা হলো এমন পারস্পরিক বল দিয়ে কিভাবে অনু পরমানু গঠন করেছে? আসলে কোয়ান্টাম ফিজিক্সে এ নিয়ে বিশাল বিশাল এবং জটিলতর গানিতিক মডেল ও তত্ব আছে যেগুলো সব আলোচনা করা সম্ভব না। তবে আমরা আমাদের চারপাশে দেখা বিভিন্ন কিছু থেকে একটা উদাহরন দেই। ধরা যাক আর্জেন্টিনা আর ব্রাজিল একটা ফুটবল টিম গঠন করলো। আর্জেন্টিনা ডিফেন্সিভ খেলা খেলে আবার ব্রাজিল খেলে অফেন্সিভ মানে আক্রমনাত্মক। খাবে একটা দিবে ৪ টা। যাই হোক সে হিসেবে আর্জেন্টিনা দলে একজন গোলকীপার, ৪ জন ডিফেন্স, ৪ মিডফিল্ড আর ২ জন স্ট্রাইকার। মিডফিল্ডে আবার দেখা গেলো ২ জন লেফট উইং আর ২ জন রাইট উইং। ওদিকে ব্রাজিল একজন গোল কীপার, ৩ জন ডিফেন্স, ৩/৪ জন মিডফিল্ড, ৪/৩ স্ট্রাইকার।

তার মানে দুটো টিমেরই চারটা ভাগ:
গোলকিপার যার কাজ গোলপোস্ট সামলানো
ডিফেন্স যার কাজ গোলকীপারকে সাহায্য আর নিজেদের ডিবক্স দখলে রাখা
মিডফিল্ডের কাজ হলো মধ্যমাঠে বলের দায়িত্ব নেয়া এবং ডিফেন্স ও স্ট্রাইকারদের সাহায্য করা
স্ট্রাইকারের কাজ হলো বিপক্ষ ডিবক্সে ঝটিকা আক্রমন করে গোলপোস্টে বল ঢুকানো

তার মানে খেলোয়াড় সংখ্যা এই চার সজ্জায় নিজেদের টিমকে ধরে রেখে বিভিন্ন স্টাইলে খেলা উপহার দিচ্ছে। সে হিসেবে এখন পর্যন্ত আমরা যতটুকু বুঝতে পেরেছি এই যে কত কত পার্টিক্যাল এরা চারটি মৌলিক বল দ্বারা বিভিন্ন সজ্জায় একটা সুনির্দিষ্ট নিয়মে এই পরমানু গঠন করেছে। এখন কথা হলো মৌলিক বল গুলাই বা কি আর এই কনিকা সমুহই বা দ্বারা সৃস্টি?

বল কি? নিউটনের সুত্রানুসারে একটা কনসেপ্ট আমরা পেতে পারি। ধরেন একটা বস্তু চলা শুরু করছে তো করছেই থামার নাম নাই যদি বাইরে থেকে কেউ বাধা প্রদান করে। এখন এই বাধা প্রদান করতে হলে একটা শক্তির দরকার। এটাই বল। আপনার শিশুটি কথা শুনছে না, খালি বিছানার ওপর লাফাইতেছে। দিলেন দুটা বন চটকানা। পুচকা ঠান্ডা। এই যে তুল তুলে গালে বন চটকানা দিলেন, এটাই বল, যদিও এটা কু-বল।

আর কনিকা সমূহ কিসের সৃষ্টি? এই যে প্রোটন নিউট্রন এরা সব কোয়ার্কের সৃষ্টি। এখন কোয়ার্ক কিসের তৈরী? আমরা আইনস্টাইনের বিখ্যাত সুত্র E=mc^2 অনুসারে প্রচুর শক্তির উৎপন্ন হবে। তার মানে এখন কেউ যদি মোটা দাগে বলেন কোয়ার্কও সেই শক্তি দিয়ে সৃষ্টি, তাহলে এর উত্তর হ্যা হবে আবার না ও হবে। কারন আমরা যেটা পাই তার মধ্যে আমরা প্রচুর শক্তি, তাপ, শক ওয়েভ, তার ওপর তাদের আবার এঙ্গুলার মোমেন্টামও আছে। তার মানে আপনি বলতে পারেন এটা তাপের সৃষ্টি বা শকওয়েভের সৃষ্টি অথবা মোমেন্টাম না কি এর সৃষ্টি? কিন্তু এটা কি সম্ভব? এগুলো তো বৈশিষ্ট্য। সত্য কথা হলো আমরা জানি না। তবে স্ট্রিং তত্ব আমাদের একটা ধারনা দেয় সেটা হলো এসব কোয়ার্ক হলো এক ধরনের তন্তুর সৃষ্টি যার মধ্যে শক্তি, মোমেন্টাম, ক্লোজড লুপ না ওপেন লুপ ইত্যাদি একেকটা বৈশিষ্ট্য। তবে এটা যাই হোক, এটাই হলো সবচেয়ে আদিমতম রূপ। কারন শক্তির নিত্যতা সূত্র এর পরে যাবার রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে।

এখন কথা হলো শক্তি আর বলের মধ্যে পার্থক্য কি? পার্থক্য হলো আপনে যখন পুচকুরে বন চটকানা দিলেন তখন প্রয়োগ হইছে বল আর আপনার মধ্যে কিছু শক্তি জমা ছিলো তা পুচকুর মধ্যে গমন করছে। পুচকুর কান গাল গরম করে ফেলছেন, গালে লাল টক টক দাগ পড়ছে। হয়তো ব্যাপারটা বুঝতে পারছেন। আর যদি অল্প বিস্তর সায়েন্স পড়া থাকে তাহলে আপনার শরীরের স্থিতিশক্তি গতিশক্তির আকারে পুচকুর ওপর কিছু চাপ প্রয়োগ হইছে এবং তাপের উৎপত্তিও হইছে।

যাই হোক এখন আসি মৌলিক চার বল। আসেন ঐ পুরোনো ফুটবল টিমের উদাহরনের মতো চিন্তা করি। যদি পার্টিক্যাল সমূহ ফুটবল দলের প্লেয়ার হয় তাহলে তারা যে বিভিন্ন সজ্জায় আছে সেগুলোকে বল ধরি। ঐ সজ্জা বা কর্তব্যসমূহ (গোলকিপিং, ডিফেন্স, মিডফিল্ড ইত্যাদি) যদি বল হয় তেমনি পরমানুর ভেতরও চারটা মৌলিক বল ক্রিয়াশীল সেগুলো হলো:

১) গ্রাভিটি: গ্রাভিটির কারনে একটা বস্তু আরেকটা টানে যদিও কোয়ান্টাম গ্রাভিটি তত্বের মাধ্যমে এই বল সম্পর্কে জানার চেষ্টা চলছে। প্রায় সকল ভরযুক্ত কনিকার ওপর এর কমবেশী প্রভাব আছে। খুবই দুর্বল এই বল ব হন কারী কনিকা গ্রাভিটনের অস্তিত্বের প্রমান এখনও পাওয়া যায় নি।
২) দুর্বল মিথস্ক্রিয় বল: বিভিন্ন ভারী তেজস্ক্রিয় কনিকার বিকিরন এর কারনে ঘটে এমনকি সুর্য্যের অবিরত ফিউশন প্রক্রিয়ার মূলে এই বল। কোয়ার্ক লেপটনের ওপর ক্রিয়াশীল।W+, W−, এবং Z বোসন এর বল বহনকারী কনিকা
৩) শক্তিশালী মিথস্ক্রিয় বল: হেড্রন কনিকা (যারা মূলত কোয়ার্ক আর মেসন (কোয়ার্ক ও এন্টিকোয়ার্ক দিয়ে গঠিত)/পাইওন (পি মেসন) কনিকা সমূহ দ্বারা গঠিত)সমূহের ওপর ক্রিয়াশীল এই বল কোয়ার্ক সমূহকে সংযুক্ত করে প্রোটন, নিউট্রন গঠনে ভূমিকা রাখে এবং মেসন ও গ্লুওন কনিকা হলো এর বল ব হনকারী কনিকা।
৪) তড়িৎচৌম্বক বল: ফোটন হচ্ছে এর ব হনকারী কনিকা তার মানে আলো, এবং ক্রিয়াশীল যেকোনো তড়িৎচার্জযুক্ত কনিকার ওপর। আপনারা মোবাইল ফোন থেকে শুরু করে, মাইক্রোওয়েভ বা মোটর জেনারেটর ইত্যাদি সবকিছুই এই বলের নীতির ওপর চলছে।



পঞ্চম বল:

স্ট্যান্ডার্ড মডেল হলো পার্টিক্যাল ফিজিক্স বা আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানের জন্য একটা সংবিধান বা কুকবুক হলেও সাম্প্রতিক কিছু আবিষ্কৃত তথ্য এর সমূলে আঘাত করছে। স্ট্যান্ডার্ড মডেলের সাম্প্রতিক বড় আঘাতটা ছিলো।


মিওনিক ডিওটোরিয়ামেরঅনুর ব্যাসার্ধের দৈর্ঘ্য। এটা হলো স্ট্যান্ডার্ড মডেল অনুসারে হাইড্রোজেনের অনুর ভেতর প্রোটনের চারপাশে ইলেক্ট্রন ঘুর ঘুর করলো যে আনবিক ব্যাসার্ধ পাওয়া যায়, এখন সেই ইলেক্ট্রন সরিয়ে ভারী মিওন কনিকা লাগানো যায় তাহলে এটা বেড়ে যায়। কিন্তু স্ট্যান্ডার্ড মডেল অনুসারে হবার কথা ছিলো না।
আরেকটা বড় এনোমালী হলো প্রোটনের ব্যাসার্ধ যদি ইলেক্ট্রন প্রোব দিয়ে মাপা হয় তা মিওন প্রোব দিয়ে মাপলে কিছু বেশী পাওয়া যায়। আরো একটা এনোমালী সেটা হলো B মেসন আর এন্টি B মেসনের ক্ষয়িষ্ণু চ্যানেলের অসামন্জ্ঞস্যতা। তারপরও ভুলে গেলে চলবে না যে এই পর্যন্ত স্ট্যান্ডার্ড মডেলের গানিতিক ফ্রেমওয়ার্কের শুদ্ধতা ৯০ শতাংশের ওপরে এবং এর অতীতে যেমন সাফল্য আছে, সাম্প্রতিক হিগস বোসনের মাধ্যমে ভরের সংজ্ঞাও একটা সফলতা।
তবে স্ট্যান্ডার্ড মডেলের যে উদ্দেশ্য: থিওরী অব এভ্রিথিং যার প্রধান মশল্লা এই মৌলিক চারটি বলের একীভূতকরন সম্প্রতি এটা নিয়েও সংশয় উঠেছে।

ইতিহাস:

ইতিহাসের পুংখানুপুংখ বিশ্লেষনে যাবো না। ১৯৮৬ সালে মৌলিক চারটি বলের বাইরে যে আরেকটি বল আছেতার যে ধারনা পাওয়া যায় একটা এক্সপেরিমেন্ট থেকে। তখনকার এক্সপেরিম্যান্টের ম্যাথমেটিক্যাল মডেল নির্দেশ করেযে পঞ্চম মৌলিক বল থাকলে সেটা গ্রাভিটির সাথে তড়িৎ চৌম্বকীয় বলের একীভূত করনে সাহায্য করবে। শুধু তাই নয় ধারনা করা হয় যদি কোনো পঞ্চম বল হতেই হয় সেটা হতে হবে সুপারচার্জড এবং এটার যে আচার আচরন তা দিয়ে ডার্ক এনার্জীর ব্যাখ্যা দেয়া যেতে পারে।

২০১৪ সালের দিকে হাঙ্গেরিয়ান কিছু বিজ্ঞানী ডার্ক ফোটন (প্রশ্ন হলো ফোটন তো নিজেই আলো ছড়ায় সেটা ডার্ক কেনো? আসলে এটা একটা হাইপোথেটিক্যাল কনিকা এবং ডার্ক ম্যাটারের তড়িৎচৌম্বকীয় বল বাহী কনিকা হিসেবে ডার্ক ফোটনের অস্তিত্বের কথা প্রস্তাব করা হয়েছিলো মূলত ডার্ক ম্যাটার একটা হাইপোথেটিক্যাল কনিকা মানে এটা শুধু থিওরীতে বিদ্যমান কিন্তু বাস্তবে এর সরাসরি অস্তিত্ব পাওয়া যায় নাই। যা পাওয়া গেছে তা হলো অবজার্ভেশন ডাটা। এটা আসলে কি দিয়ে তৈরী তা নিয়ে অনেক তত্ব অনেক ক্যান্ডিডেট আছে যার মধ্যে এটা ডার্ক ফোটন। সিম্যাট্রির S(2) অনুসারে কোয়ান্টার প্যাকেট আকারে নির্গত গজ বোসন কনিকা যেটা মূলত ফোটনের মতো কিন্তু পার্থক্য হলো সাধারন ম্যাটারের সাথে দুর্বল বলের মিথস্ক্রিয়ার করনে এই কোয়ান্টার প্যাকেটে ভর যুক্ত হয়। এই ডার্ক ফোটন ইলেক্ট্রন-পজিট্রন জোড়ায় ক্ষয়প্রাপ্ত হবার কথা। এই হাইপোথিসিস নিয়ে আরো এগুলে দেখা যাবে যে এই সাধারন "ভার্চুয়াল" ফোটনও ডার্ক ফোটনে পরিনত হবে যা পরে ইলেক্ট্রন পজিট্রনে ক্ষয় প্রাপ্ত হয়। আর যদি এই ডার্ক ফোটনের অস্তিত্ব সত্যি থেকে থাকে এবং তার বৈশিষ্ট্য ও ভরসহ বাকি সব কাপলিং বৈশিষ্ট্য ঠিক তেমনি হয় যন্ত্রপাতীতে রেজোন্যান্স টাইপ কেনো সিগন্যালে ইলেক্ট্রন পজিট্রনের ভর এই গজ বোসনিক পার্টিক্যালের ভরের সমান হবে। যদিও এটা খুজে পাওয়া অনেকটা ঘড়ের গাদায় সূঁচ খুজে পাওয়ার মতোই।HADES কোলাবোরেশন বর্তমানে এই পদ্ধতিতে ডার্ক ফোটন খুজে বেড়াচ্ছে।) খুজতে গিয়ে লিথিয়াম ৭ এর পাতলা পাতের ওপর ফোটন কনিকা নিক্ষেপ করে এবং বেরিলিয়াম ৮ এর নিউক্লিয়াস গঠিত হয় যা প্রচন্ড আনস্টেবল। ১৪০ ডিগ্রী তাপমাত্রায় দেখা যায় যে বেরিলিয়াম ৮ নিউক্লিয়াস খুব অল্প সংখ্যক এনার্জী কনিকা আকারে নির্গত করে যেটা মূলত একটা হালকা বোসন কনিকা। পরে তার ভর মাপলে দেখা যায় এর ভর ইলেক্ট্রনের থেকে ৩৪ গুন বেশী। এবছর ইউসিআই এর আরেকটা টিম গবেষনা করে এর ভর ১৬.৭ meV মেপে মত দেন যে এটা কোনো প্রোটোফোবিক X-বোসন যেটার সৃষ্টি হয়েছে নিউক্লিয়াসে অবস্থিত নিউট্রনের সাথে ফোটনের সাংঘর্ষিক কাপলিং (কাপলিং মানে জোড় বদ্ধতা) এর মাধ্যমে। আর যে শক্তির কারনে এই ফোটন আর নিউট্রনের কাপলিং বা জোড়বদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে এটার মাধ্যমে মিওনের m-2 এর ডাটার এনোমালীর ব্যাখ্যা দেয়া যেতে পারে এবং এই এনোমালীর কারনটাই হতে পারে ডার্ক ম্যাটারের জন্য যোগ্য কোনো ক্যানডিডেট। যদিও এই আবিষ্কার নিয়ে আরো ল্যাব এক্সপেরিম্যান্ট করা বাকি আছে এবং সেহেতু আগে থেকেই কোনো কিছু কনফিডেন্স দিয়ে বলা যাচ্ছে না। কারন এলএইচসি গত বছর নতুন কনিকা পাওয়া গেছে বলে যে চিল্লাফাল্লা করলো, গত মাসে সে সম্ভাবনা ডাই ফোটন প্রসেসের যান্ত্রিক পর্যবেক্ষনের ভুল বলে তার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়। তবে যে নতুন টেট্রাকোয়ার্কের জন্য প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছিলো সেখানে কোয়ার্ক সমূহের কাপলিং নিয়েও একই সম্ভাবনার কথা বলা হয়েছিলো বিভিন্ন পেপারে।

প্রচলিত থিওরী সমূহ এবং ডার্ক এনার্জী-ডার্ক ম্যাটার কনসেপ্ট:

আসলে এক্সপেরিমেন্টে যা পাওয়া গেছে সেই কনিকার আসল স্বরুপ ও তার বৈশিষ্ট্য নিয়ে এখনো তেমন কিছু জানা যায়নি বিথায় আমরা সুনিশ্চিত ভাবে বলতেও পারছি না আসলে কি পাওয়া গেছে। তবে যাই পাওয়া যাক না কেন এর মধ্যে এমন একটি পার্টিক্যাল পাবার সম্ভাবনার কথা বলা হচ্ছে যার ফলে ধারনা করা হয় আমরা এমন কিছু পেতে যাচ্ছি যেটা আইনস্টাইন বা আব্দুস সালামের আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানের বলয় হতে বের হয়ে নতুন পদার্থবিজ্ঞানের দিকে ঝুকবো। এখন সেটা সুসকিন্ড বা হকিং এর স্ট্রিং থিওরী নাকি আইনস্টাইন/ হকিং এর থিওরী অব এভ্রিথিং এর নতুন কোনো রূপ সেটা দেখার বিষয়।

তবে যদি আমরা ধরেই নেই এই লাইট বোসন কনিকা সত্যি যদি থেকে থাকে অথবা গত শতাব্দীর ৮০ এর দশকের শেষ দিকে যে পঞ্চম মৌলিক বলের কথা বলা হয়েছে তা হলে তা কোন থিওরী দিয়ে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে।

নতুন কোনো বল খোঁজা বেশ কষ্টকর কারন গ্রাভিটি খুবই দুর্বল একটা বল এবং এরকম ক্ষুদ্রতম পার্টিক্যাল গুলোর ওপর এর প্রভাব প্লাংক স্কেলে কাজ করে। তাই এই পঞ্চম বলের অস্তিত্ব বের করার জন্য তিনটি পদ্ধতি অনুসরন করা হয়।

প্রথমটি হলো শাক্তিশালী সাদৃশ্যতা তত্ব। আইনস্টাইনের শক্তিশালী সাদৃশ্য বা তুল্যতা (Equivalence) তত্ব অনুসারে গ্রাভিটির কারনে বস্তুসমুহের ত্বরন একই থাকে বলে ভর সমূহের মধ্যে সাদৃশ্যতা খুজে পাওয়া যাবে। এই তত্ব থেকে জেনারেল রিলেটিভিটির কনসেপ্ট পাওয়া গেছে। এটা খুবই শক্তিশালী উপায় এই পঞ্চম বলের অস্তিত্ব নির্নয় করার জন্য।কিন্তু এর মাধ্যমে খুব অল্প দূরত্বের বস্তু সমুহের মধ্যে পরীক্ষা চালানো সম্ভব। এই সম্ভাবনা দূর করার জন্য ব্রানস-ডিক্কে থিওরী অনুসরন করা হয় যেখানে গ্রাভিটিকে ধ্রুবক না ধরে ১/G কে শুধুমাত্র একটা স্কেলার ফিল্ড হিসেবে ধরা হয়। তবে গানিতিক হিসাবটা পুরোটা রিকি টেনসর স্কেলে আর রাইম্যান কার্ভেচারের ওপর ভিত্তি করে করা। এই পদ্ধতি অসীমতম দুরত্বে কাজ করার কারন হলো গ্রাভিটির কারনে নতুন মাত্রার সৃষ্টি হয় ফলে স্থানের বক্রতার সৃষ্টি হয় এবং এর এফেক্টও বহুমুখী। গ্রাভিটির কারনে আলো পর্যন্ত বেকে যায়। এস্ট্রোফিজিক্সে এই কনসেপ্ট কাজে লাগানোর জন্য যে এফেক্ট দেখা হয় তাকে নর্ডেট এফেক্ট। এই হাইপো অনুসারে পৃথিবী আর চাদের আপেক্ষিক সরন দেখা যাবে যখন আপনশক্তিতে চলমান কোনো গ্রাভিটেশনাল বডি তার আসল ভরের সাথে গ্রাভিটেশনাল ভর যুক্ত করে। কিন্তু শক্তিশালী সাদৃশ্যতার নিয়ম এটা ভঙ্গ করে। কারন এই নিয়ম অনুসারে দুইটার ভর একই থাকবে।

দ্বিতীয় পদ্ধতিটি হলো অতিরিক্ত মাত্রা। কালুজা ক্লেইনের তত্বানুসারে এই মহাবিশ্বের অতিরিক্ত মাত্রা থাকবে এবং স্ট্রিং তত্ব কাজ করবে। তো যদি তাই থাকে তাহলে ইউকাওয়া বলের দেখা পাবো যেটা মূলত হালকা স্কেলার ফিল্ড আকারে পাওয়া যাবে। যেটা দেখা গেছে উপরে বর্নিত হাঙ্গেরিয়ানদের এক্সপেরিম্যান্ট। এখন এই ধরনের এক্সপেরিম্যান্টের সাথে সুপারসিমেট্রি, অতিরিক্ত মাত্রা যেগুলো মিলিমিটারের ভগ্নাংশের মধ্যে ক্রিয়াশীল এসব কিছুর সাথে সম্পর্কযুক্ত। আর গ্রাভিটিও তো তেমনি দুর্বল একটা বল। তবে যেটা দেখা দরকার এই ইউকাওয়া বল একটা নির্দিস্ট দূরত্বে কাজ করে কিনা। অস্ট্রেলিয়ানরা মাইনের গভীরে গ্রাভিটির ধ্রুবক মাপবার জন্য চেস্টা করতে গিয়ে দেখে যে যেই মান থাকার কথা ছিলো তার মাত্র ২ শতাংশ পাওয়া গেছে যে খুবই ছোট। তারা তখন এই পঞ্চম বলের দিকেই আঙ্গুল তুলে যেটা কয়েক সেন্টিমিটার থেকে কয়েক কিলোমিটার পর্যন্ত ক্রিয়াশীল একই রকম এক্সপেরিমেন্ট আমেরিকার একটা সাবমেরিন থেকেও করা হয় যখন এটা খুব গভীরে নিমজ্জিত ছিলো সমুদ্রে। গ্রীনল্যান্ডে বরফের স্তরের মাঝেও একই রকম ডাটার ডিসক্রিপেন্সি পাওয়া যায়, তবে অনেকেই সন্দেহ করছেন যে ভৌগলিক কোনো ইন্টারফিয়ারেন্স বিদ্যমান থাকতে পারে।

তৃতীয় পদ্ধতি হলো পৃথিবীর অন্তর্ভাগকে পার্টিক্যাল ডিটেক্টর হিসেবে বিবেচনা করে জিও ইলেক্ট্রনের খোজ করা

আরেকটা হলো ২৫ টা গ্যালাক্সির মধ্যে থাকা হিলিয়াম ৩ জেনারেশনের তারা যাদেরকে উজ্জ্বলতা কখনো এক থাকে না সেসব তারাদের উজ্বলতার হার নির্নয় করা। তত্বানুসারে যদি পঞ্চম বল থেকেই থাকে তাহলে যেসব তারাদের উজ্বলতার তারতম্য মাপা হইছে তাদের মধ্যে যে প্যাটার্ন পাওয়া যাবে পার্শবর্তী গ্যালাক্সিতে থাকা তারা সমুহের মধ্যে সেটা পাওয়া যাবে না। আইনস্টাইনের রিলেটিভিটি অনুসারে সেরকম কোনো তারতম্য পাওয়া যায় নি এখনো।
তো আশির দশক বা তার ও আগে যেসব এক্সপেরিম্যান্ট হয়েছিলো নতুন বল খোজার জন্য তা মূলত তারা আকাশের ভারী তারকা বেছে নেন যার স্বাভাবিকভাবেই অতি শক্তিশালী গ্রাভিটি থাকবে। তারা ইউকাওয়া গ্রাভিটির (দুটি ভারী বস্তুর মধ্যকার গ্রাভিটি ফিল্ডের মধ্যে যে শক্তির আদান প্রদান করা হয় তা কনিকার আকারে হয় যা পরে পাইওন নামে আবিস্কার করা হয়) মাধ্যমে গ্যালাক্সির মধ্যে অবস্থিত ঐ তারকার গতিবিধি পর্যবেক্ষন করে গানিতিক ভাবে নির্নীত তাদের কক্ষপথের ডাটার সাথে একটা অমিল খুজে পায়। যার ফলে ধারনা করা হয় তাদের পর্যবেক্ষনের সাথে ডাটার যে অমিল (কক্ষপথের তারকার অগ্রসরমানতা এবং অবস্থান) সেটা কোনো কারনে বিঘ্নিত হচ্ছে। তারা সবাই প্রস্তাব করেন এ নিয়ে আরো গবেষনার প্রয়োজন আছে। এরপরে আরো এক গবেষনায় প্রস্তাব করা হয় এখানে হাইপারচার্জড(হাইপেরন কনিকা(টপ, বটম, চার্ম কোয়ার্ক বাদে এক বা একাধিক স্ট্রেন্জ অথবা কোথাও স্ট্রেন্জ, আপ, ডাউন কোয়ার্ক দিয়ে গঠিত কনিকা সমূহ) যে চার্জ বহন করে) বল ক্রিয়াশীল।

এছাড়া আরো কিছু উপায় আছে যার মধ্যমে এই পঞ্চম বলের অস্তিত্বের ব্যাপারে খোজ পাওয়া যেতে পারে।

ডার্ক এনার্জির যোগসূত্র:

ডার্ক এনার্জী মূলত আমাদের মহাবিশ্বের সম্প্রসারনের দায়ী। আইনস্টাইন এই কসমোলজিক্যাল কনস্ট্যান্টের কথা উল্লেখ করে পরে বাদ দিয়েছিলেন। কিন্তু গত শতাব্দীর ৯০ এর দশকের শেষ দিকে কয়েকজন বিজ্ঞানী একে সত্য প্রমান করায় তাদেরকে বছর কয়েক আগে পুরস্কৃত করা হয়। কিছু কিছু বিজ্ঞানী একে অন্য নামে অভিহিত করলেও একে মূলত পঞ্চম মৌলিক বল হিসেবে অনেকে ধারনা করেন।এই মৌলিক বলের ফিল্ড বা ক্ষেত্র আছে তার ঘনত্ব সময়ের সাথে পাল্টায় এবং এই পরিবর্তনের হার ইনফ্লেশনের পর বস্তু-বিকিরনের শক্তির ঘনত্ব যখন সমান ছিলো (১৩.৭ বিলিয়ন বছর আগে বিগ ব্যাং হলে বস্তু বিকিরন শক্তির ঘনত্বের হার প্রায় সমান থাকে ১০ বিলিয়ন বছর আগে) তখন থেকে এর চরিত্র ডার্ক এনার্জীর চরিত্রের সাথে মিলে যায় এবং তখন থেকেই পুরো মহাবিশ্বতে প্রাধান্য বিস্তার করে। এটাকে ট্রাকারের সমাধান বলে। তবে এই পঞ্চম বলের মাধ্যমে চিপি ভায়োলেশন, ডার্ক ম্যাটার আর ডার্ক ফ্লো (কিছু কিছু ক্লাস্টার আর গ্যালাক্সির উদ্ভট গতিবিধি)র ব্যাখ্যা প্রদানে সমর্থ হবে।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই আগস্ট, ২০১৬ রাত ৮:৪৮
৮টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×