somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নারীবাদী চলচ্চিত্র তত্ত্ব: একটি পর্যালোচনা

২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০০৮ রাত ১১:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


চলচ্চিত্র মাধ্যমটি বিকাশের পর এর আঙ্গিক ও আধেয়গত অনেক পরিবর্তন এসেছে, বিচিত্র বিষয়ের চলচ্চিত্র নানা জঁরার জন্ম দিয়েছে। মূলধারায় রোমান্টিক, একশন, হরর প্রভৃতি ন্যারেটিভ চলচ্চিত্র থেকে শুরু করে নিরীাধর্মী বা আভাঁ-গার্দীয় পরাবাস্তব, উত্তরাধুনিক চলচ্চিত্র মাধ্যমটিকে ক্রমাগত সমৃদ্ধ করে চলেছে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে চলচ্চিত্রে, বিশেষত মূলধারার চলচ্চিত্রে, নারীর ভূমিকা প্রায় একই রকম থেকে গেছে। চলচ্চিত্র অধ্যয়নের একাডেমিক গণ্ডিতে এবং তার বাইরের চলচ্চিত্রিক ডিসকোর্সে তাই, এক পর্যায়ে, চলচ্চিত্রে নারীর অবস্থান নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-গবেষণা হয়েছে। জন্ম নিয়েছে নারীবাদী চলচ্চিত্র তত্ত্বের।

নারীবাদী চলচ্চিত্র তত্ত্বের আলোচনা, চলচ্চিত্রে নারীর অবস্থান নিয়ে গবেষণা এবং নারী নির্মাতাদের নির্মিত চলচ্চিত্র, উভয়কেই আলোকপাত করে। গবেষণায় বেরিয়ে এসেছে যে চলচ্চিত্রে নারীর ভূমিকা সীমিত। বিশেষত হলিউডের ১৯২০ ও ১৯৩০-এর দশকের চলচ্চিত্রে নারীর অবস্থান, পতিতা (whore) অথবা কুমারী (vergin), মূলত এই দুই ভূমিকায় সীমাবদ্ধ থেকেছে। আবার পৃথিবীব্যাপী যে-বিশাল চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রি, সেই ইন্ডাস্ট্রির কর্মী হিসেবে নারীর অংশগ্রহণও সামান্য। ‘নো জব ফর উইম্যান’ -- জিল নেমস (Nelmes, 1999: 268) চলচ্চিত্র নির্মাণ প্রক্রিয়ায় নারীর অবস্থানকে এভাবেই বর্ণনা করেছেন। ঊনবিংশ শতাব্দির শেষ দশকে শুরু হওয়া চলচ্চিত্র-শিল্পের গোড়া থেকেই এর নির্মাণপ্রক্রিয়ায় নারীর কোনো অবস্থান ছিলনা, বড়োজোর প্রডাকশন এসিস্ট্যান্ট বা মেক-আপ আর্টিস্ট হিসেবে কাউকে কাউকে দেখা যেত। সা¤প্রতিক সময়ে অবশ্য পরিস্থিতির অনেকখানি উন্নতি ঘটেছে, এখন পৃথিবীব্যাপী অনেক নারী-নির্মাতা রয়েছেন, যদিও পুরুষের তুলনায় এই সংখ্যা নিতান্তই কম।

১৯৬০-এর দশকের শেষে নারীবাদের বিকাশের সাথে সাথে নারীবাদী দৃষ্টিকোণ থেকে চলচ্চিত্রকে নিয়ে গবেষণা শুরু হয়। নারীবাদী আন্দোলনের দ্বিতীয় প্রবাহের হাত ধরে এই সময়েই নারীবাদী চলচ্চিত্র তত্ত্বের উদ্ভব হয়। বিশেষত ১৯৭০-এর দশকে নারীবাদী চলচ্চিত্র তত্ত্ব আটলান্টিকের দুই পাড়েই পূর্ণ বিকাশ লাভ করে, এবং সত্তরের দশকে এই ধারাই ফিল্ম স্টাডিজে প্রধান ধারা হিসেবে মনোযোগ পায়। যুক্তরাষ্ট্রে হয় সমাজতাত্ত্বিক ধারার গবেষণা এবং যুক্তরাজ্যে হয় মনঃসমীণ ধারার গবেষণা। উভয় ধারাই হলিউডি ন্যারেটিভ সিনেমার বিপরীতে, নারীবাদী নন-ন্যারেটিভ বা আভাঁ-গার্দীয় চলচ্চিত্র নির্মাণের প্রতি নির্মাতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তাদের নির্দেশিত পথে অনেক নারী-নির্মাতা নিরীাধর্মী চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন এবং এক পর্যায়ে নারীবাদী সিনেমা ও কাউন্টার সিনেমা সমার্থক হয়ে ওঠে। তবে ১৯৮০-এর দশকের সময় থেকে তাত্ত্বিক ও নির্মাতাদের এই উপলব্ধি হয় যে নিরীক্ষাধর্মী কাউন্টার সিনেমা বানিয়ে তারা বরং সংখ্যালঘু ও প্রান্তিক হয়ে পড়েছেন এবং সম্ভাব্য দর্শকদের হারাচ্ছেন। এক পর্যায়ে নারীনির্মাতারা মূলধারায় চলচ্চিত্র নির্মাণে উৎসাহী হন এবং পাশাপাশি বিকল্প ধারায় চলচ্চিত্র নির্মিত হতে থাকে। আর ১৯৮০ এবং ১৯৯০-এর দশকে একাডেমিক ক্ষেত্রে নারীবাদী রাজনীতি ও নারী অধ্যয়নের প্রেক্ষাপটে, চলচ্চিত্রে জেন্ডারের বিশ্লেষণ -- বর্ণ, শ্রেণী, লৈঙ্গিক সম্পর্ক ও জাতি -- এই কয়েকটি বিষয়ের রেপ্রিজেন্টেশন কীভাবে হচ্ছে তার অনুসন্ধান করেছে; এছাড়া চলচ্চিত্রের ইতিহাসরচনাকে পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছে, বিশেষত ভোক্তাসংস্কৃতির সঙ্গে এর সম্পর্ক কী তার সঙ্গে মিলিয়ে চলচ্চিত্রের ইতিহাসরচনার দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।

সুসান হেওয়ার্ড (Hayward, 2006) নারীবাদী চলচ্চিত্র তত্ত্বের বিকাশকে তিনটি পর্যায়ে ভাগ করেছেন। এই প্রবন্ধে তার বিভাজনকে অনুসরণ করেই নারীবাদী চলচ্চিত্র তত্ত্বকে আলোচনা করা হবে।

প্রথম পর্যায় (১৯৬৮-১৯৭৪): শ্রেণী থেকে জেন্ডার

প্রথম পর্যায়ের নারীবাদী চলচ্চিত্র তত্ত্ব খোদ চলচ্চিত্র তত্ত্বের প্রবণতাকে শ্রেণী প্রশ্ন থেকে জেন্ডার প্রশ্নে মনোযোগ দিতে বাধ্য করে। নারীবাদী চলচ্চিত্র সমালোচকরা তাদের গবেষণায় প্রমাণ করেন যে চলচ্চিত্রে উপস্থাপিত নারীর ইমেজ হলো, পুরুষ নির্মাতা/দর্শকের, পরস্পরের সঙ্গে দ্রষ্টব্য বিনিময়ের/আলোচনার বস্তু/বিষয় মাত্র। এই পর্যায়ে তাদের গবেষণার বিষয় ছিল হলিউডের চলচ্চিত্র। এমনকি যেসব চলচ্চিত্রের স্রষ্টা ‘অতুর’ মর্যাদা পেয়েছিলেন, তাদের চলচ্চিত্র বিশ্লেষণ করে তারা দেখান যে পুরুষের দৃষ্টিকোণ থেকে নির্মিত এসব চলচ্চিত্র নারীকে কেবলই ‘দ্রষ্টব্য বস্তু’ হিসেবে উপস্থাপন করা হয়ে থাকে। মোলি হাস্কেলের গ্রন্থ ফ্রম রিভেঞ্জ টু রেপ: দি ট্রিটমেন্ট অব ওমেন ইন দ্যি মুভিজ এই এপ্রোচের জন্ম দেয়। উল্লেখ্য যে, ‘অতুর থিওরি’র প্রবক্তা এন্ড্রু স্যারিস ছিলেন মোলি হাস্কেলেরই স্বামী। যাহোক, মার্কিন সাংবাদিক হাস্কেল তার বইতে বলেন চলচ্চিত্র সমাজকে প্রতিফলন করে বা সমাজে চলচ্চিত্রের প্রভাব রয়েছে। চলচ্চিত্র সমাজকে প্রতিফলন করতে গিয়ে নারীর আদর্শবাদী ও সামাজিক নির্মাণ চলচ্চিত্রে উঠে আসে যেখানে সে হয় নন্দিত (কুমারী হিসেবে) অথবা নিন্দিত (পতিতা হিসেবে)।

যুক্তরাষ্ট্রে ১৯৭০-এর দশকের প্রথম দিকে যুক্তরাষ্ট্রের চলচ্চিত্রে নারীর উপস্থাপনা বিষয়ক প্রধান গবেষক ছিলেন মোলি হাস্কেল, মারজরি রোজেন ও জোয়ান মেলেন। তাদের কাজের ধরন ছিল সমাজতাত্ত্বিক ও প্রায়োগিক (বসঢ়রৎরপধষ), যা সেইসময়ের আমেরিকান চলচ্চিত্র-সমালোচনারই ধরন ছিল। তাদের বিশ্লেষণে, হলিউডের চলচ্চিত্রে নারী যে পিতৃতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থার নিষ্পেষণের শিকার, এই বিষয়টি উঠে এসেছে। মোটের ওপরে তারা বলতে চেয়েছেন হলিউডের চলচ্চিত্রে নারীকে হয় কুমারী নয় পতিতা, এই দুই রূপে উপস্থাপন করা হয়ে থাকে।

প্রায় একই সময়ে ইউরোপে, বিশেষত ইংল্যান্ডে কাজ করেছেন কেয়ার জনস্টন, লরা মালভি, পাম কুক এবং এনেট কুন। এই তাত্ত্বিক ও গবেষকরা কাঠামোবাদী ও সেমিওটিকস্ ধারায় বৈজ্ঞানিক ও প্রায়োগিক-বিরোধী গবেষণা-পদ্ধতি অনুসরণ করেছেন। এছাড়া মনঃসমীণ ধারায়ও তারা কাজ করেছেন। ব্রিটিশ তাত্ত্বিকরা মার্কিন গবেষকদের কাজের সমালোচনা করে বলেন, তারা ধরে নিয়েছেন প্রত্যেক নারীরই চলচ্চিত্রে নারী অপ-উপস্থাপনাকে বোঝার স্বভাবজাত মতা রয়েছে এবং সব নারীনির্মাতাই নারীবাদী। ব্রিটিশ তাত্ত্বিকরা চলচ্চিত্রে নারীর অধস্তন ইমেজকে তুলে ধরার পাশাপাশি জোর দিতে চেয়েছেন কীভাবে নারীরা অধিক হারে নির্মাণপ্রক্রিয়ায় যুক্ত হতে পারে এবং নারীর প্রথাগত ইমেজকে পাল্টে দিতে পারে। এজন্য তারা তিন পর্যায়ে কাজ করার প্রতি নির্দেশ করেন। প্রথমত, মূলধারার চলচ্চিত্র কীভাবে নারীর অধস্তন ইমেজ তুলে ধরে তা তাত্ত্বিকভাবে বিশ্লেষণ করা; দ্বিতীয়ত, নারী-নির্মাতাদের কাজের সমালোচনাত্মক বিশ্লেষণ করা এবং তৃতীয়ত, এই দুই দিককে সমন্বয় করার জন্য নারীবাদী চলচ্চিত্র নির্মাণে যুক্ত হওয়া।

দ্বিতীয় পর্যায় (১৯৭৫-১৯৮৩): পুরুষের মনঃসমীক্ষণ

১৯৭২ সালে কেয়ার জনস্টন, লরা মালভি ও লিন্ডা মাইলসের উদ্যোগে এডিনবরা চলচ্চিত্র উৎসবে নারীবিষয়ক চলচ্চিত্র ও নারীনির্মাতাদের চলচ্চিত্র একটি বিশেষ গুরুত্ব পায়। কেয়ার জনস্টন সেই উপল্েয ‘নোটস অন ওমেন সিনেমা’ শীর্ষক একটি সংকলন সম্পাদনা করেন। সেখানে তিনি নিজেও একটি প্রবন্ধ লিখেন। ‘ওমেন্স সিনেমা এজ কাউন্টার সিনেমা’ শীর্ষক সেই প্রবন্ধটি নারীবাদী চলচ্চিত্র তত্ত্বে একটি মাইলস্টোন হয়ে রয়েছে। জনস্টন বলেন চলচ্চিত্রের পরিবর্তন চাইলে, নারীনির্ভর চলচ্চিত্র করতে চাইলে মূলধারার চলচ্চিত্র-চর্চায় উপস্থিত মতাদর্শিক নির্মাণকে বুঝতে হবে। তা বুঝতে গিয়ে নারীকে ‘কীভাবে’ রেপ্রিজেন্ট করা হচ্ছে তা যেমন দেখতে হবে, তেমনি অর্থনির্মাণ প্রক্রিয়ায় নারীর অবস্থানের ‘ফলাফল’ কী দাঁড়াচ্ছে তাও অনুধাবন করতে হবে। কীভাবে রেপ্রিজেন্ট করা হচ্ছে, এই বিষয়টি বুঝতে গেলে ইমেজের আইকোনোগ্রাফি-কে বুঝতে হবে। অর্থাৎ কীভাবে নারীকে ফ্রেমে বন্দী করা হয়েছে, নারীশরীরের কোথায় এবং কীভাবে আলো ফেলা হয়েছে, কী এবং কোন পোশাক নারীকে পরানো হয়েছে ইত্যাদি বুঝতে হবে। আর নারীর অবস্থানের ফলাফল বুঝতে হলে ন্যারেটিভ কাঠামোয় নারীকে কতটুকু রাখা হয়েছে বা হয়নি, তা বুঝতে হবে। জনস্টনের মতে, প্রথমত আমাদের চলচ্চিত্রের ইমেজকে ‘চিহ্ন’ হিসেবে পাঠ করতে হবে এবং তার নির্দেশক অর্থ (denotative meaning) ও গূঢ়ার্থ (connotative meaning) অনুধাবন করতে হবে। দ্বিতীয়ত, ন্যারেটিভের মনস্তত্ত্বকে চুলচেরা বিশ্লেষণ করতে হবে: কেন মূলধারার সব চলচ্চিত্রে নারীকে সবসময় পুরুষের আকাক্সার বস্তু হিসেবে পরিবেশন করা হয়? ক্যামেরা-পরিচালনা ও আলোকসম্পাত এটা স্পষ্ট করে তোলে যে নারীই হলো পুরুষের সেই কাক্সিত বস্তু যার ওপরে ফ্যান্টাসিকে প্রযুক্ত করা যায়। কেয়ার জনস্টন বলছেন আমাদের এই প্রথাগত উৎপাদনপদ্ধতির বিনির্মাণ করতে হবে এবং নিজস্ব নির্মাণপদ্ধতি বের করতে হবে। তবেই কেবল কাউন্টার-সিনেমা সম্ভব হয়ে উঠবে। জনস্টন পরামর্শ দেন এভাবে মতাদর্শ ও টেক্সটের ভেতরকার সম্পর্কে ভাঙ্গন ধরাতে হবে।

এই সময়ের আরেকটি যুগান্তকারী প্রবন্ধ হলো লরা মালভির ‘ভিস্যুয়াল প্লেজার এন্ড ন্যারেটিভ সিনেমা’ (১৯৭৫)। মালভি চলচ্চিত্রের মধ্যকার আধেয় বিশ্লেণের চাইতে জোর দিয়েছেন দর্শক ও চলচ্চিত্র-পর্দার মধ্যকার সম্পর্কের ওপরে। তার এই এপ্রোচ মনঃসমীণীয় পদ্ধতিতে চলচ্চিত্রের নারীবাদী বিশ্লেষনের ভিত্তি স্থাপন করে। সঙ্কেতলিপি (code) ও প্রথার মাধ্যমে চলচ্চিত্র যা নির্মাণ করে, তাতে পুরুষের দৃষ্টিতে নারী দর্শিত (looked at) হয় এবং ঐ পুরুষ চরিত্রের মধ্যে দর্শক নিজেকে খুঁজে পায়। তিনি দর্শনের এই পদ্ধতিকে তিনি বলছেন ‘স্কোপোফিলিয়া’ বা দর্শনকালীন তুষ্টি। নারী-দর্শকদের এেেত্র দুটো করণীয় থাকে। হয় তাকে চলচ্চিত্রের অক্রিয় নারী-চরিত্রের মধ্যে নিজেকে খুঁজে নিতে হবে অথবা চলচ্চিত্রে বিলিকৃত তুষ্টি পেতে হলে তাকে পুরুষ দর্শকের আসনে নিজেকে বসাতে হবে। মালভির এই প্রবন্ধ চলচ্চিত্র অধ্যয়নে ব্যাপক সাড়া ফেলে, বিতর্কের জন্ম দেয় এবং এসবের পরিপ্রেেিত ১৯৮১ সালে তিনি আরেকটি প্রবন্ধ লেখেন ঐ প্রবন্ধের ‘পুনর্ভাবনা’ হিসেবে।

প্রায় একই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে সমালোচকরা চলচ্চিত্রের টেক্সট বিশ্লেষণ ও আদর্শবাদিতা নির্মাণে ঐসব টেক্সটের ভূমিকা নিয়ে কিছু কাজ করেন। বিশেষত প্রভাবশালী জার্নাল ক্যামেরা অবসকিউরায় ১৯৭৬ সালের এক সংখ্যায় এসংক্রান্ত বেশ কিছু লেখা ছাপা হয়। কাঠামোবাদী-মনঃসমীণীয় ধারার বিশ্লেষণে সমালোচকরা দেখান যে ন্যারেটিভের সঙ্কেতলিপি ও প্রথা নারীকে শর্তাধীন ও নিয়ন্ত্রণে রাখার মাধ্যমে কীভাবে পিতৃতান্ত্রিক মতাদর্শ রা করে। মোলি হাস্কেল ও অন্যান্য সমালোচকরা ওয়েস্টার্ন জঁরার চলচ্চিত্রের বিশ্লেষণে দেখান যে পুরুষসৃষ্ট গণ্ডগোলের মধ্যে নারীর ভূমিকা পুরুষের ক্রিয়া ও পছন্দের ওপরে নির্ভরশীল। বহু ওয়েস্টার্ন চলচ্চিত্রে দেখা যায় পুরুষটি সূর্যাস্তের পর অস্ত্রহাতে ঘোড়ায় চড়ে চলে যায়, পেছনের নারীটির ভাগ্যে কী ঘটতে পারে সেসব চিন্তা না করেই। সমালোচকরা হরর ও ফিল্ম নোয়া জরাঁর ছবির বিশ্লেষণে দেখিয়েছেন সেখানে নারী হলো পুরুষের দৃষ্টির (male gaze) শিকার, ভয়ারিস্টিক কর্মকাণ্ডে যার প্রতিফলন দেখা যায়। মেলোড্রামা ও নারীপ্রধান চলচ্চিত্র নিয়ে তারা বিশ্লেষণ করেছেন যেসব চলচ্চিত্রে নারীর তথাকথিত ‘পরিসর’ (space) বেশি থাকে। ফিল্ম নোয়া ও হরর চলচ্চিত্রে নারীর মৃত্যু বা পতন আপাতদৃষ্টে তার নিজের কারণে হয়েছে বলে মনে হলেও, এখানে প্রকৃত সত্যি হলো, অন্যভাবে ভাবলে আসলে পুরুষ তার অস্তিত্বে উপস্থিত নারীত্বের অংশটুকুর ধ্বংস চায় এবং সেই অস্তিত্বটুকু নারীচরিত্রের ওপর চাপিয়ে দেয় এবং তাকে হত্যা করে। যেমন, আলফ্রেড হিচককের সাইকো (১৯৬০) চলচ্চিত্রে এই লৈঙ্গিক আত্মপরিচয়ের সঙ্কট নানা জটিল উপায়ে প্রকাশিত হয়। নরম্যান বেটস্ বিভিন্ন অবস্থান নেয়: তার মা তাকে সবসময় মনে করিয়ে দেয় যে নারী হলো নোংরা মেয়েমানুষ, এবং মার মতো করে বেশ ধারণ করে সে নিজেই সেই নোংরামানুষে পরিণত হয় -- যাকে অবশ্যই নির্মূল করা দরকার।

১৯৩০ ও ১৯৪০-এর দশকের হলিউডে নির্মিত মেলোড্রামা ও নারীদের চলচ্চিত্রসমূহ পিতৃতান্ত্রিক মূল্যবোধকে চ্যালেঞ্জ জানায়নি। কিন্তু ন্যারেটিভ নির্মাণে এসব ছবিতে নারীদের পরিসর বেশ খানিকটা দেয়া হয়েছে। সেহিসেবে এসব ছবিতে বেশ কিছু প্রশ্ন তোলা হয়েছে পিতৃতান্ত্রিক মূল্যবোধের বিরুদ্ধে, কিন্তু সমাপ্তিতে পারিবারিক মূল্যবোধ ও পারিবারিক সংহতি অক্ষুণ্ন রাখা হয়েছে। লরা মালভি এসব ছবির বিশ্লেষণে বলছেন, যদি পরিবারকে রা করতে হয় তবে একটি আপসমীমাংসা করতেই হয়, লৈঙ্গিক পার্থক্যের ইস্যুকে নমনীয় করতে হয় এবং পুরুষ চরিত্রটির উপলব্ধি হয় পারিবারিক জীবন কতটা মূল্যবান। (Mulvey, Hayward উদ্ধৃত, 2006: 140) সমালোচকদের বিশ্লেষণে বেরিয়ে এসেছে যে, পুরুষতান্ত্রিকতার বিরুদ্ধে নারীর সংগ্রাম যদি শেষপর্যন্ত পরিবারের স্বার্থে মুলতবী হয়ে যায় তবে তা মোটেও কম বিপজ্জনক নয়।

১৯৮৪-বর্তমান দশক

কিছু নির্দিষ্ট জঁরার মাহাত্ম্য ও গৌরবকে খর্বিত করার মাধ্যমে তাত্ত্বিকরা নারীবাদী চলচ্চিত্র তত্ত্বকে অনেকখানি এগিয়ে নিয়ে যান। কিন্তু মধ্য আশির দশক থেকে নারীবাদীরা অনুভব করলেন যে চলচ্চিত্রের আধেয়বিশ্লেষণ একটি সংকীর্ণ পদ্ধতি এবং একে আরও নানা দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বিশ্লেষণ করার প্রয়োজন রয়েছে। যেমন চলচ্চিত্রের উৎপাদন ও গ্রহণের ঐতিহাসিক ও সামাজিক প্রোপটকে বিশ্লেষণের অন্তর্ভুক্ত করলে, চলচ্চিত্রদর্শনের বিতর্কটিকে বৃহত্তর পরিসরে তুলে আনা যাবে এবং শ্রেণীর প্রশ্নটিকে পুনরায় সামনে আনা সম্ভব হবে -- যা কিনা জেন্ডারবিশ্লেষণের দাপটে হারিয়ে গিয়েছিল। লরা মালভি ১৯৭৫ সালের বিখ্যাত প্রবন্ধে ‘নারীদর্শকের পুরুষদর্শকের আসন নেয়া’র বিতর্কটি, সিলবারম্যানের ভাষায়, মর্ষকামী আসন নেয়া এবং ডোয়নের ভাষায় হয় মর্ষকামী অথবা ট্রান্সভেসাটাইট -এর অবস্থান গ্রহণ করা পর্যন্ত বিবর্ধিত হয়। (Hayward, 2006 উদ্ধৃত) এেেত্র তানিয়া মোডলেস্কির (১৯৮২) প্রবন্ধের পুনর্পাঠমূলক রচনায় ডি লরেটিস (১৯৮৪) একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেন। মোডলেস্কি বলেছিলেন নারীদর্শক একটি দ্বৈত-কাক্সার আসন উপভোগ করে। মা-মেয়ের সম্পর্কের ফলে, যেখানে মেয়ে তার মায়ের জন্য নিজ-আকাক্সা পুরোপুরি ত্যাগ করেনা, নারীদর্শক উভলৈঙ্গিক আসনে স্থাপিত হয়। আর দুই আসনে ক্রমাগত আসা-যাওয়ার ফলে নারী-বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়। (Hayward, 2006 উদ্ধৃত) এই স্থানান্তরের অর্থ, নারী কখনোই পিতৃতন্ত্রে পুরোপুরি সামাজিকীকৃত হয়না -- যার ফলে পুরুষ নারীকে ভয় পেতে থাকে এবং একদিকে নিজের ও নারীর লৈঙ্গিকতার মধ্যে একটি কঠিন দেয়াল তুলে দেয়, অন্যদিকে নারীকে ‘শেষ’ করতে চায়, হয় আরিক অর্থে অথবা বশ্যতাস্বীকারের মাধ্যমে। মোডলেস্কি ও ডি লরেটিসের যুক্তি অনুসারে ইদিপাস পথ (Oedipal trajectory) এবং সেই সূত্রে পুরুষের ‘খোজাত্বের উদ্বেগ’ (castration anxiety) ও নারীর ‘পুংদণ্ডের জন্য ঈর্ষা’ (penis envy) হলো পিতৃতান্ত্রিক নির্মাণ, যা দিয়ে পুরুষশাসন বলবৎ থাকা এবং লৈঙ্গিক বৈষম্যের ইস্যু আড়ালে পাঠিয়ে দেয়া নিশ্চিত করা হয়। আরভিং র‌্যাপারের নাউ ভয়েজার (১৯৪২) চলচ্চিত্রে এবং আলফ্রেড হিচককের মারনি (১৯৬৪) চলচ্চিত্রে পুরুষ নায়ক তার নায়িকাকে তার (পুরুষের ন্যায় পরাক্রম) মার কাছ থেকে ‘উদ্ধার’ করতে দেখা যায়।

এই পর্যায়ে নারীবাদী চিন্তকরা মনঃসমীক্ষণের সীমাবদ্ধতার বিষয়টি অনুধাবন করেন। লাকানীয় ভাবনা ভাষা/ডিসকোর্সের মাধ্যমে কর্তানির্মাণ লৈঙ্গিক বৈষম্যের বিষয়টি যদিও সফলভাবে তুলে আনতে পারছিল, কিন্তু একটা সমস্যা থেকেই গেল। নারীত্বের সংজ্ঞা পুরুষত্বের নিরিখেই নির্ণীত হচ্ছিল -- নারী পুরুষ-কর্তার ‘অপর’ হয়েই পরিচিত হচ্ছিল। তাই জেন্ডারের প্রশ্ন থেকে সরে এসে শ্রেণীর প্রশ্ন, নারীদের মধ্যকার মতাসম্পর্ক, এবং চলচ্চিত্রশিল্পকে কেবল আদর্শবাদিতা নির্মাণের চাইতে বেশি কিছু ভাবা -- ইত্যাদি বিষয়ে আলোকপাত করা প্রয়োজনীয় হয়ে ওঠে। আর ইতিহাসের সঙ্গে এসবের সম্পর্ক কী, সেই বিষয়টিকেও গুরুত্বও অনুভূত হয়।

আশির দশকে ব্রিটেনে সাংস্কৃতিক অধ্যয়নে (cultural studies) ঐতিহাসিক ও বস্তুবাদী ধারায় তখন অনেক কাজ হচ্ছিল, নারীবাদী চলচ্চিত্র তাত্ত্বিকেরা সেই ধারাতেই চলচ্চিত্র নিয়ে কাজ করতে থাকেন। ঐ ধারায় জনসংস্কৃতির (popular culture) বিভিন্ন উপাদানে শ্রেণী, জেন্ডার ও বর্ণ এবং এসবের সঙ্গে মতার কী সম্পর্ক এবং পাশাপাশি মতার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ইত্যাদি পরীা-গবেষণা করা হচ্ছিল। আর যুক্তরাষ্ট্রের নারীবাদীরা ফরাসি দার্শনিক মিশেল ফুকো এবং তার মতা-তত্ত্বের প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠেন।

ফুকোর ধারণাকে ব্যবহার করে এই পর্যায়ে নারীবাদীরা বলছেন, দর্শকদের, আদর্শবাদী-যন্ত্র (চলচ্চিত্র) দ্বারা সৃষ্ট কোনো একক নির্মাণ হিসেবে আর ধরা যাবে না। দর্শক নানা ধরনের রয়েছে। ‘পুরুষ’ বা ‘নারী’ দর্শক বলে আলাদা কিছু নেই, একেক দর্শক হলো সামাজিক-সাংস্কৃতিক পরিচয়ভিত্তিক পৃথক পৃথক ব্যক্তি, চলচ্চিত্র প্রপেণকালে সকলেই নিজের মতো করে বাস্তবতাকে বোঝে। বয়স, জেন্ডার, বর্ণ, শ্রেণীভেদে চলচ্চিত্রকে গ্রহণ ও এর অর্থপুনর্নিমানে পার্থক্য দেখা যায়। এভাবে মনঃসমীক্ষণ তত্ত্ব ব্যবহারের মাধ্যমে চলচ্চিত্রে পুরুষপ্রাধান্যের চিত্র তুলে ধরার প্রবণতা থেকে নারীবাদী চলচ্চিত্র তত্ত্ব বৃহত্তর পরিসরে এসে পড়ে, যদি মনঃসমীক্ষণকে পুরোপুরি বাদ দেওয়া হয়না। নারীত্বকে এই পর্যায়ে দেখা হলো মতাসম্পর্কের নেটওয়ার্কের মধ্যে একটি অস্তিত্ব হিসেবে। নারীত্ব তাই পুরুষনির্মিত একটি সত্তার চাইতে বেশি কিছু হিসেবে মূল্য পেল। ডি লরেটিস বলেছেন নারীত্বকে যেকোনো স্থান থেকে দেখা যেতে পারে।

ফুকোপ্রভাবিত তাত্ত্বিকদের আরেকটি প্রণোদনা হলো প্রতিরোধ। ফুকোর মতে মতাসম্পর্কের পাশেই প্রতিরোধের অস্তিত্ব রয়েছে। সামাজিক ও প্রাতিষ্ঠানিক স্তরের মধ্যেই এটি ছাঁকীকৃত হয়ে তার নিদর্শন রেখে যায়। সেইসূত্রে নারীবাদীরা বলছেন কাউন্টার সিনেমা দিয়ে মূলধারার সিনেমাকে প্রতিরোধ করতে হবে। ফুকো প্রতিরোধকে বলেছিলেন ‘কাউন্টার বিনিয়োগ’। কাউন্টার সিনেমা মূলধারার চলচ্চিত্রে মতাসম্পর্কের কাজকে কাউন্টার করে। আর এটি ডিসকোর্সে বৈচিত্র্য এনে দেয়। নারীনির্মাতার কাউন্টার সিনেমা একটি ডিসকার্সিভ প্রকাশ, মূলধারার চলচ্চিত্র যেসব বিষয় এড়িয়ে যায় তাকে সামনে আনা কাউন্টার সিনেমার কাজ। কেয়ার জনস্টন ১৯৭৬ সালেই বলেছিলেন, আমাদের সব পর্যায়েই কাজ করতে হবে: পুরুষপ্রাধান্যের চলচ্চিত্র এবং তার বাইরেও।

‘সমাজ হলো একটি ব্যবহারিক ত্রে যেখানে প্রযুক্তি ও ডিসকোর্স মোতায়েন থাকে’ -- ফুকোর এই ধারণার ভিত্তিতেও নারীবাদীরা কাজ করতে থাকেন। ফুকো মনে করতেন প্রযুক্তি হলো মতা (power) ও জ্ঞানের (logos) সন্ধিণ। লোগোসেরও অর্থ ডিসকোর্স। এভাবে টেকনোলজি হলো মতার ডিসকোর্স। ডি লরেটিস তার বিখ্যাত প্রবন্ধ ‘টেকনোলজি অব জেন্ডার’-এ (১৯৮৯) বলেন, জেন্ডার হলো চলচ্চিত্রসহ বিভিন্ন সামাজিক প্রযুক্তির ফসল।

উপসংহার
নারীবাদী চলচ্চিত্র তত্ত্ব বিগত কয়েক দশকে খোদ চলচ্চিত্র তত্ত্বের ওপরে ব্যাপক প্রভাব স্থাপন করতে সমর্থ হয়েছে। কিন্তু চলচ্চিত্রের এই বিতর্ককে আরও খানিকটা বৃহত্তর পরিসরে এগিয়ে নিয়ে যাবার সুযোগ রয়েছে। কৃষ্ণাঙ্গ নারীবাদীরা বলেছেন সব নারীর সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অভিজ্ঞতা নিয়ে এখানে কাজ হয়নি। শ্বেতাঙ্গ ও মধ্যবিত্ত নারীদের কণ্ঠই কেবল এই এলাকায় শোনা গিয়েছে। এছাড়া কেবল যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র -- এই দুই দেশের নারীবাদীর কাজের কথাই শোনা যায়। অন্য দেশে আদৌ কাজ হচ্ছে কিনা এবং হলে কী কাজ হচ্ছে, তা তেমন জানা যায়না। নারীবাদী চলচ্চিত্র তত্ত্বকে কেবল ধারণাগতভাবেই বৃহত্তর পরিসরে এগিয়ে নিতে হবে তাই নয়, এই এলাকায় অশ্বেতাঙ্গ, এশীয়, লাতিন এবং অন্যান্য জাতি-বর্ণের-শ্রেণীর মানুষের অংশগ্রহণেরও প্রয়োজন রয়েছে।


তথ্যসূত্র
Nelms, Jill (1999); An Introduction to Film Studies; Routledge; London.
Haward, Susan (2006); Cinema Studies: the Key Concepts; Routledge; London.
Timm O’Sulivan et al eds (1994); Key Concept in Communication and Cultural Studies; Routledge; London
Anthony Easthope ed. (1993); Contemporary Film Theory; Longman; London.
Mulvey, Laura (1975); ‘Visual Pleasure and Narrative Cinema, in Film Theory and Criticism, Leo Braudy and Marshall Cohen eds, 1999; Oxford University Press; New York.

[প্রবন্ধটি অতি সম্প্রতি মুজিব মেহেদী সম্পাদিত 'নারী ও প্রগতি' পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে।]
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০০৮ দুপুর ১:২৫
১৬টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×