somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এখন রোহিঙ্গা ইস্যুতে আমাদের করণীয়

১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ দুপুর ২:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আমরা যুদ্ধ চাইনা শান্তি চাই, পৃথিবীর কোন প্রান্তেই যুদ্ধ নয়, মানুষ শান্তিতে থাকুক এই আমাদের প্রত্যাশা। অতি আবেগে পরে বাংলাদেশের কখনো কোন ভাবেই যুদ্ধে জড়িয়ে পরা উচিৎ হবে না। শান্তি পূর্ণ সমাধান খুঁজে বের করতে হবে।
বারবার মিয়ানমারের যুদ্ধ বিমান বাংলাদেশের আকাশসীমা লঙ্ঘন করে উস্কানি দিয়ে যাচ্ছে। আর যদি কখনো যুদ্ধ লেগেই যায় তা হলে দেশ প্রেমিক হিসেবে ঘরে বসে থাকা যাবে না যুদ্ধের ময়দানে ঝাপিয়ে পড়তে হবে।
দেখা যাক বাংলাদেশ আর মিয়ানমার এর মধ্যে সব দিক দিয়ে কতোটা ব্যবধান- বাংলাদেশ থেকে ৫ গুণ আয়তনে বড় মিয়ানমারের মোট আয়তন ৬৭৬,৫৫২ বর্গকিলোমিটার। চাষ যৌগ্য সমভূমিগুলি অত্যন্ত উর্বর এবং দেশের সবচেয়ে অর্থনৈতিক গুরুত্ববিশিষ্ট অঞ্চল। এদের মোট আয়তন প্রায় ৪৭,০০০ বর্গকিলোমিটার। মূল্যবান সেগুন ও বিষুবীয় গাছপালায় ভরা বন মিয়ানমারের শতকরা ৪৯ ভাগের বেশি এলাকা জুড়ে রয়েছে। অন্যান্য গাছের মধ্যে রাবার, বাবলা, বাঁশ, ম্যানগ্রোভ, নারিকেল উল্লেখযোগ্য। উত্তরাঞ্চলে ওক, পাইন ইত্যাদি রয়েছে বিপুল পরিমাণে।
২০১৫ সালের আদমশুমারি হিসেবে জনসংখ্যা ৬ কোটি যা ১৯৮৩ সালে ৩ কোটি ৩২ লাখ ছিল। মোট দেশজ উৎপাদন (ক্রয় ক্ষমতা সমতা) GDP (PPP) ৯৩.৭৭ বিলিয়ন (বিশ্বের ৫৯ তম) মাথা পিছু আয় ৳১,৬৯১ (১৫০ তম) যেখানে বাংলাদেশ ৳৬৮৬.৫৯৮ বিলিয়ন (বিশ্বের ৩৩ তম) মাথা পিছু আয় ৳৪,২০৭ (১৩৯ তম) মিয়ানমারের সশস্ত্র বাহিনীর টাটমাডো বা দ্য মিলিটারি অব মিয়ানমার পুরোপুরি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে নিয়ন্ত্রিত হয়। এই সশস্ত্র বাহিনীর সহযোগী বাহিনী আবার দুটি। একটির নাম মিয়ানমার পুলিশ ফোর্স। অন্যটি পিপলস মিলিশিয়া ইউনিটস অ্যান্ড ফ্রন্টিয়ার ফোর্স, স্থানীয়ভাবে যেটি ‘নাসাকা’ নামেই পরিচিত। পুলিশ ফোর্স দেশের ভেতরের আইনশৃঙ্খলা দেখা-শোনা করলেও নাসাকা মিয়ানমারের সীমান্ত প্রহরার কাজে নিয়োজিত।
• সব বাহিনী মিলিয়ে মিয়ানমারের মোট সৈন্য সংখ্যা পাঁচ লাখ ৬৪ হাজার। এর মধ্যে চার লাখ ৯২ হাজারই সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য। সৈন্য সংখ্যায় মিয়ানমার বিশ্বে নবম।
• বর্তমানে বাংলাদেশে সেনা বাহিনীর সামর্থ্য প্রায় ৩ লক্ষ সদস্য। নৌবাহিনী বর্তমানে প্রায় ২৪০০০ নৌ সেনা (কর্মকর্তাসহ) এবং প্রায় ছোট-বড় ১১০ টি জাহাজের বাহিনী। বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে ১৭,০০০ সদস্য কর্মরত আছেন, যাদের মধ্যে বৈমানিক আছেন ৩৫০০ বিজিবির বর্তমান সদস্য সংখ্যা ৪৫,১৬৮ জন সব মিলিয়ে বাংলাদেশ সমর বাহিনীর সদস্য সংখ্যা- ৩ লাখ ৮৬ হাজার ১৬৮ জন (৩৮৬১৬৮)
• পুলিশ সর্বমোট ১ লাক্ষ ৭৭ হাজার জন কর্মকর্তা ও সদস্য ।
সৈন্য সংখ্যা এবং অস্ত্র বিচারে বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমার এগিয়ে থাকলেও যুদ্ধ জ্ঞান, অভিজ্ঞতা, রণকৌশল এই সব দিক দিয়ে বাংলাদেশ মিয়ানমার থেকে অনেকটা এগিয়ে। তার জ্বলন্ত প্রমান ২০০০ সালে বিডিআর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আ ল মফজলুর রহমানের নেতৃত্বে ২৫,০০০ (পঁচিশ হাজার) মিয়ানমারের সৈন্যের বিরুদ্ধে ২৫০০ (আড়াই হাজার) বাংলাদেশী বিডিআর BDR এর নাফ যুদ্ধ জয়।

বাংলাদেশের করণীয়-
•বহির্বিশ্বে জনমত গড়ে তোলতে হবে।
• চিন ভারতকে নিয়ে এক টেবিলে বসতে হবে
• মুসলিম দেশ গুলোর উপর চাপ সৃষ্টি করতে হবে।
• এই প্রযর্ন্ত যারা শরনার্থী হয়ে বাংলাদেশে এসে গেছে তাদের ভরণপোষণ স্বাস্থ্য, নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে, ধনী দেশ গুলো থেকে তাদের জন্য সাহায্যের ব্যবস্থা করতে হবে।
• সকল রাজনীতি দল মিলে এক সাথে কাজ করতে হবে, তবেই এই সমস্যার কিছুটা উপায় বাহির করা যাবে।
• জাতীসংঘের মাধ্যমে শরনার্থীদের তাদের দেশে প্রেরণ করার ব্যবস্থা করতে বিশ্ব সম্পদায়কে দিয়ে মিয়ানমার সরকারে উপর চাপ সৃষ্টি করতে হবে।
• পাকিস্তান ভিত্তিক কিছু জঙ্গি সংগঠন মিয়ানমারে ঢুকার চেষ্টা করতেছে বা ঢুকেছে, এই ব্যপারে বাংলাদেশকে সতর্ক থাকতে হবে, যেন বাংলাদেশ থেকে কোন গ্রুপ এমন কাজ না করতে পারে।
শরনার্থী হয়ে আসা রোহিঙ্গাদের তাদের নিজ বাসভূমে ফিরিয়ে দেয়ার জন্য আলোচনা ছাড়া কোন ভাবেই সম্ভব নয়।

আর জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের নিষেধাজ্ঞা কারণে অনেক বছর ধরে মিয়ানমারে কোন প্রকার বিদেশি বিনোয়োগ হয়নি এখন নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পর বিদেশি বিনিয়োগ আসতেছে আর বাংলাদেশের জন্য বিশাল একটা বাজার সৃষ্টি হচ্ছিল, বাংলাদেশী প্রচুর ব্যবসায়ী মিয়ানমারে নিজেদের ব্যবসা প্রটিষ্ঠান গড়ে তোলেছেন, আর অনেক গুলো বহুতল বিল্ডিং তৈরি হবে, মিয়ানমারের মাত্র ৬ কোটি জনগণ তাই এখানে প্রচুর নির্মাণ শ্রমিক প্রয়োজন পরবে, বাংলাদেশ সেই সুযোগটা কাজে লাগাতে পারতো, বর্তমানে এই গণহত্যা এবং এই চরম পরিণতি কারণে এই বিশাল খাতটি ভারতীয়দের দখলে চলে যাচ্ছে।
মিয়ানমারের সাথে প্রতিবেশি হিসেবে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে বাংলাদেশকে তার সুফল তুলতে চেষ্টা করা উচিৎ।

মিয়ানমার বিষয়ে সব গুলো পোস্ট-
প্রথম পর্ব-রোহিঙ্গা ও মিয়ানমারের ইতিকথা
দ্বিতীয় পর্ব-যুগে যুগে রোহিঙ্গা মুসলমানদের নির্যাতনের ইতিকথা
তৃতীয় পর্ব-রোহিঙ্গাদের গণহত্যার কারণ
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ দুপুর ২:২০
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দাদার দাদা।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৫৫

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী।

আমার দাদার জন্মসাল আনুমানিক ১৯৫৮ সাল। যদি তার জন্মতারিখ ০১-০১-১৯৫৮ সাল হয় তাহলে আজ তার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×