নাস্তিক বলে সব কিছু নিজে নিজে হয়েছে। কিন্তু যে নিজে নিজে হয়েছে তার প্রতি বন্ধক ও সীমা নির্ধারক ছিলনা। সুতরাং সে যতটুকু সম্ভব ততটুকু হয়েছে। যেহেতু নিজে নিজে হয়েছে সেহেতু এখানে অসম্ভব শব্দ প্রযোজ্য নয়। একলা সম্ভব শব্দ থাকায় এর সীমা অসীম পর্যন্ত গিয়েছে। তার মানে যে নিজে নিজে হয়েছে সে অসীম হয়েছে, সে সসীম হয়নি। সসীম হওয়ার কোন সংগত কারণ নেই। কারণ সে নিজে নিজে হয়েছে তাকে কেউ বাধা দেয় নাই, কাজেই সে অসীম হতে পারলে সসীম কেন হবে? সকলেই বড় হতে চায়, এটা প্রকৃতি। যে নিজে নিজে হয়েছে তার প্রকৃতিও বড় হওয়া। আর সসীম থেকে অসীম বড় বিধায় সে অসীম হয়েছে।
অসীম যে কটাই হয়েছে একটার সাথে আরেকটা মিশে গিয়েছে, আলাদা হতে পারে নাই। কারণ আলাদা করতে সীমা দিতে হয়। সীমা নির্ধারকতো মোটে ছিলইনা সীমা দিবে কে? আর সীমা দিলে অসীম আর অসীম থাকেনা, সসীম হয়ে যায়, সেজন্য নিজে নিজে হওয়া সকল অসীম মিলে-মিশে একাকার হয়ে একজন অসীম হয়েছেন। সুতরাং সব কিছু নিজে নিজে হয়নি বরং একজন অসীম নিজে নিজে হয়েছেন। যার মধ্যে সকল অসীম রয়েছে। কাজেই সব কিছু নিজে নিজে হওয়ার দাবী প্রকৃতি বিজ্ঞান অনুযায়ী ভ্রান্ত।
অসীম নিজে নিজে হওয়ার পর, সসীম নিরাকার ও আকার, অসীম সৃষ্টি করেছেন। কারণ অসীমের উপস্থিতি জনিত কারণে প্রতিবন্ধকতার ও সীমা নির্ধারকের প্রাপ্যতা পাওয়া গিয়েছে। কাজেই বলা যায় অসীমই সসীমকে সীমা দিয়ে কোনটিকে আকার ও কোনটিকে নিরাকার ভাবে সৃষ্টি করেছেন। তারমানে অসীম হলেন সৃষ্টিকর্তা। একমাত্র যিনি নিজে নিজে হয়েছেন। সুতরাং অসীম কখনো শেষ হতে পারেনা, কারণ শেষ হতে হলে সসীম হতে হয়। সুতরাং অসীম সৃষ্টিকর্তা আছেন। সুতরাং দাবীর দিক থেকে আস্তিক সত্য আর নাস্তিক সত্য নয়।
অসীমের আকার দেওয়া যায়না। কারণ আকার দিতে হলে সীমা দিতে হয়। অসীমের সীমাতো মোটে খুঁজেই পাওয়া যায়না, সীমা দিবে কোথায়? সুতরাং অসীম সৃষ্টিকর্তা নিরাকার। কোন স্থান অসীমের বাইরে যেতে পারেনা বিধায় অসীম সৃষ্টিকর্তা সর্বত্র বিরাজমান। অসীম সৃষ্টিকর্তা নিরাকার হওয়ার কারণে তাঁর সাকার কোন অঙ্গ নেই বরং নিরাকার সত্ত্বার অঙ্গও নিরাকার। আর সেগুলো তাঁর এক একটা শক্তি। যেমন তাঁর হাত হলো তাঁর ধারণ শক্তি, তাঁর চোখ হলো তাঁর দৃষ্টি শক্তি, তাঁর মুখ হলো তাঁর সত্ত্বা, তাঁর কান হলো তাঁর শ্রবণ শক্তি। তাঁর পা হলো তাঁর চলার শক্তি।
অসীম সৃষ্টিকর্তাকে আমি আল্লাহ বলি। আমার আল্লাহর সাথে কারো আল্লাহ যদি না মিলে তবে তারা যেন আমার সাথে ঝগড়া করতে না আসে। কারণ তাদের আল্লাহর কাছে আমার কোন আরজি নেই। আমার আরজি আমার আল্লাহর কাছে। আমার আল্লাহ সত্য সেটা আমি প্রমাণ করতে পারি। তারা পারলে তাদের আল্লাহ যে সত্য সেটা প্রমাণ করে দেখাক। যদি তাদের আল্লাহ তারা প্রমাণ করতে না পারে তবে তাদের কাল্পনিক আল্লাহর কোন দরকার আমার নেই।
সার কথা হলো আল্লাহ আছেন। তিনি নিরাকার। তিনি সর্বত্র বিরাজমান। তাঁর আকার সর্বস্বকোন অঙ্গ নেই। কারো আল্লাহ যদি এমন না হয়ে থাকে তবে সেটা তাদের আল্লাহ, সেটা আমার আল্লাহ নন। আমার আল্লাহকে আমি ক্বোরআন হাদীস দিয়ে প্রমাণ করতে পারি। তাদের আল্লাহকে যদি তারা ক্বোরআন ও হাদীস প্রমাণ করতে পেরে থাকে তবে সে প্রমাণ তাদের জন্য, সেটা আমার জন্য নয়।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই জুন, ২০১৭ রাত ৯:৫৭