somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আল্লাহর নিদর্শন

১১ ই নভেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আল্লাহ বলেছেন- ইন্না ফি খালকিস সামাওয়াতি ওয়াল আরদি ওয়াখতিলাফিল লাইলি ওয়ান নাহারি ওয়াল ফুলকিল্লাতি তাজরি ফিল বাহরি বিমা ইয়ানফাউন নাসা ওয়ামা আনযালাল্লাহু মিনাস সামায়ি মিমমায়িন ফা আহইয়া বিহিল আরদা বায়াদা মাওতিহা ওয়া বাসসা ফিহা মিন কুল্লি দাব্বাতিন ওয়া তাসরিফির রিয়াহি ওয়াস সাহাবিল মুসাখখারি বাইনাস সামায়ি ওয়ার আরদি লা আইয়াতিললি কাওমিই ইয়াকিলুন-নিশ্চয়ই আকাশমন্ডল ও জমিন সৃষ্টিতে, রাত্রি ও দিবসের পরিবর্তনে, যা মানুষের হিত সাধন করে তা’ সহ সমুদ্রে বিচরনশীল নৌযান সমূহে, আল্লাহ আকাশ হতে যে বারিবর্ষণ দ্বারা ধরিত্রীকে তাহার মৃত্যুর পর পুনর্জীবিত করেন তাহাতে এবং তার মধ্যে যাবতীয় জীবজন্তুর বিস্তারনে, বায়ুর দিক পরিবর্তনে, আকাশ ও পৃথিবীর মধ্যে নিয়ন্ত্রিত মেঘমালাতে জ্ঞানবান জাতির জন্য নিদর্শন রয়েছে।সূরা-২, বাকারা, আয়াত নং-১৬৪।

উপরোক্ত আয়াতে আল্লাহ বলেছেন তাঁর নিদর্শন কোথায় রয়েছে।যারা এ নিদর্শন দেখে আল্লাহকে বুঝতে পেরেছে এবং আল্লাহর ইবাদত করে জান্নাতের যোগ্য হতে পেরেছে তারা সৌভাগ্যবান।যারা আল্লাহকে বুঝতে পারেনি এবং জান্নাতের যোগ্য হতে পারেনি তারা অভাগা।অথচ তারা নাকি আল্লাহর পথে না চলে মহা সুখে আছে, এ সুখ কতক্ষণ? জীবন শেষ সুখ শেষ।তারা গর্ব করে তারা আল্লাহর বান্দাদের চেয়ে সুখে আছে। কেন তারা আল্লাহর বান্দাদের চেয়ে সুখে থাকবেনা? তাদের সুখতো এখানেই শেষ। এখানেও তারা সুখ না পেলে তারা তবে কোথায় সুখ পাবে? আর যারা আল্লাহর বান্দা তাদের কষ্টের স্থানতো এটা। জীবন শেষ হলেইতো তাদের জন্য রয়েছে অপার আনন্দ। তো তারা এখানে একটু কষ্ট পেলে কি আর এমন অসুবিধা? তারা কি মনে করে তাদের সুখে থাকা তাদের কাজের সঠিকতার প্রমাণ? তারপর এরা নাকি যথেষ্ট বুদ্ধিমান! এরানাকি বিজ্ঞান ব্যাধিতে ভুগছে। অদ্ভত এদের বিজ্ঞান। এরা এমন সব কথা বলে যা নিতান্ত হাস্যকর।

১। আসমান ও জমিন সৃষ্টিতে আল্লাহর নিদর্শনঃ আসমান হলো ফাঁকা স্থান আর জমিন হলো সে ফাঁকায় যা বিদ্যমান। এগুলো শূণ্যে ভাসমান। নিজের চারপাশে পাক খেয়ে ঘুরে এর কাছাকাছি বড় কিছুর চার পাশে ঘুরে।এরা কখনো স্থির থাকেনা। চলছে তো চলছেই। এরা সংখ্যায় অনেক। কারো সাথে কেউ আঘাত খায় না (গ্রহ, উপগ্রহ ও নক্ষত্র)। এরা সুশৃঙ্খল এবং নিয়ম মেনে চলে। অথচ এরা জড়। এদের এ অবস্থার পিছনে কি কেউ নেই? এমনি এমনি শৃঙ্খলা? বাপের জম্মে দেখিনি। অস্বীকারকারিরা কি ভাবে কে জানে? বিশ্বাসীর নিকট এটা আল্লাহর স্পষ্ট নিদর্শন।

অথচ উল্কার আঘাত জনিত ঘটনা ঘটে। এমন আঘাত কোন নক্ষত্রের হলে পৃথিবী এত দিনে ইতিহাস হয়ে যেত। তখন মানুষ বলতো একদা পৃথিবী নামক একটা গ্রহ ছিল। তাহলে কে মহাশূণ্যের সদস্যদের রক্ষা করে? এরা কি এমনি এমনি এমন শান্তিতে আছে?

মানুষ এখন বুঝে আসমান ও জমিন কতটা বিস্তৃত। তাদের এটাও বুঝার কথা এর শৃঙ্খলা কতবড় কর্মযজ্ঞ।
তা’রেখে তিনি পৃথিবীতে এসে বসবাস করলে বিষয়টা কেমন হয়? তাঁর স্ত্রী পুত্র কন্যা হওয়ার বিষয়টাও ভেবে দেখা দরকার।অনেকে মনে করে তিনি তাকে প্রাইভেট ছাত্রের মত বুঝিয়ে দিবেন তিনি আসলে কি? সে ভুল-ভাল কিছু করলে অমনি আল্লাহ কি একশনে নেমে পড়বেন? ক্ষুত্র প্রাণীর ক্ষেত্রে তাঁর বিশালত্ব কি এমটা হওয়া বুঝায়? মানুষ তাঁর নিদর্শন আসমান জমিন সৃষ্টি থেকে বুঝে নিক কোরআনের কথা সঠিক কি না।এরপর সঠিক কেউ বুঝতে না পারলে তাতে সঠিকের কোন গরজ নেই। বেঠিক কাজের মন্দ ফল ভোগ না করে কারো উপায় থাকেনা।

২। রাত্রি ও দিবসের পরিবর্তনে আল্লাহর নিদর্শনঃ শূণ্যে ভাসমান পৃখিবী নিজ অক্ষের চার পাশে পাক খায় বলে দিন রাত হয়। দিন ও রাত হওয়ার এ নিয়মে কখনো পরিবর্তন ঘটেনা। এমন হয়না যে কিছুকাল ধরে আর দিন রাত হচ্ছেনা। ইতিহাসে এ কথা লেখা নেই যে একদা পৃথিবীতে দিন রাত হতো বরং একদা নয় এখনো দিন রাত হচ্ছে।আর এ দিন রাত হওয়াতে পৃথিবীবাসীর বড্ড উপকার হচ্ছে। অবস্থা দৃষ্টে আমাদের মনে হচ্ছে এর নেপথ্যে কেউ আছে। অনেকের তা’ মনে হয়না। তাদেরকে অবশেষে আল্লাহ যখন জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন তখন তাদের মনে হবে প্রাকৃতিক ভাবে তারা কোন কষ্টকর স্থানে এসে পড়েছে। সেখান থেকে তারা বের হবার যথেষ্ট চেষ্টা করবে। তবে কখনই তারা সেখান থেকে বের হতে পারবেনা। আমরা সেখানে যেতে চাইনা। আমরা কোরআন মানি। আল্লাহ আমাদেরকে রক্ষা করুন।

৩। সমূদ্রে ভাসমান নৌযান সমূহে আল্লাহর নিদর্শনঃ পানির চাপ ও ভরতত্ত্বের উপর নৌযান বিশেষভাবে নির্ভরশীল।নৌযান যে পরিমাণ পানি অপসারন করে সে পরিমান পানির চেয়ে এর ওজন বেশী হলে এটা পানিতে ডুবে যাবে এর উপর ভিত্তি করে নৌযান নির্মান করা হয়। পানির এ বিশেষত্ব কি এমনি এমনি হয়ে গেল? আমাদের তা’ মনে হয়না। আমরা স্পষ্ট বিশ্বাস করি এর নেপথ্যে রয়েছেন মহান আল্লাহ। তিনি এ ব্যবস্থা না করলে আমাদের জীবন হতো মহা কঠিন।

৪। বারি বর্ষণে আল্লাহর নিদর্শনঃ সূর্যতাপে পানি আকাশে উঠে এরপর বৃষ্টি হয়ে নেমে আসে। আমাদের কি উপকার হয় আমরা তা’জানি। এমন যদি না হতো তাহলে কি উপায় হতো? অনেক গ্রহতেইতো এমন ঘটনা ঘটেনা।তথাপি কি আমাদেরকে আল্লাহকে ভাবতে ইচ্ছে করেনা? নাকি আমরা কাজের ভাবনা ছেড়ে অকাজের ভাবনাই ভেবে যাব?

৫। জীব-জন্তুর বিস্তারণে আল্লাহর নিদর্শনঃ কিছু জীব আমরা খাই। কিছু জীব আমাদের বিবিধ কাজে লাগে। কিছু জীব শোভা বর্ধক। কিছু জীব বন রক্ষক। আর বন প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষা করে। এত কিছু বুঝে আমাদের এত রকম জীবের ব্যবস্থার নেপথ্যে কি কেউ নেই? আমরা বিশ্বাস করি এসবের পিছনে নিশ্চিতভাবে আল্লাহ আছেন।

৬। বায়ুর দিক পরিবর্তনে আল্লাহর নিদর্শনঃ একেক সময় বায়ু একেক দিক থেকে প্রবাহিত হয়। যাতে আমরা বিশেষভাবে উপকৃত হই। বায়ূর এ দিক পরিবর্তন এমনি এমনি ঘটেনা।আমরা এর নেপথ্যে আল্লাহর উপস্থিতি অনুভব করি।

৭। আকাশ ও পৃথিবীর মধ্যে নিয়ন্ত্রিত মেঘমালাতে আল্লাহর নিদর্শনঃ এ মেঘমালার কারণে আকাশটা অনেক সুন্দর।যা আমাদের মনের শান্তির কারণ হয়ে থাকে। আমরা বিশ্বাস করি এর নেপথ্যে রয়েছে আল্লাহর রুচিবোধ।

আল্লাহর নিদর্শন রয়েছে তাঁর প্রতিটি সৃষ্টির পরতে পরতে। ভাগ্যবান এর মাধ্যমে আল্লাহর পথ প্রাপ্ত হয়। আর এসব অভাগাদের দৃষ্টি এড়িয়ে যায়। ফলে তারা পথহারা হয়।সাকুল্যে প্রত্যেককে তার কর্মফল ভোগ করতে হবে।

বিঃদ্রঃ ‘ইসলামের সঠিকতার অকাট্য প্রমাণ’ গ্রন্থের একটি অধ্যায় হিসেবে লেখাটি লেখা হয়েছে।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই নভেম্বর, ২০১৮ ভোর ৬:৪৯
১১টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহমিকা পাগলা

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


এক আবেগ অনুভূতি আর
উপলব্ধির গন্ধ নিলো না
কি পাষাণ ধর্মলয় মানুষ;
আশপাশ কবর দেখে না
কি মাটির প্রণয় ভাবে না-
এই হলো বাস্তবতা আর
আবেগ, তাই না শুধু বাতাস
গায়ে লাগে না, মন জুড়ায় না;
বলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩




তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×