somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার সহকর্মী, অধীনস্ত এবং অনুসারীদের প্রতি

২১ শে অক্টোবর, ২০১৪ রাত ৯:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমি আপনাদের কাছ থেকে মাত্র দুটি জিনিস চাই- সততা এবং বিশ্বস্ততা। আমি হিমাচলের মতো স্থির, আমার সততা এত গভীরে প্রোথিত যে আমাকে কোনোক্রমেই আমার সততার পথ থেকে বিচ্যুত করা সম্ভব নয়। সবার জন্য আমার উন্মুক্ত চ্যালেঞ্জ- আমাকে আজ পরীক্ষা করুন, কিংবা আজ থেকে আরও ২০ বছর পর, কিংবা আমার মৃত্যুর সময়ে। আমার সততা আমার অহংকার। আমি কোনো অসৎ ব্যক্তিকে ভয় করি না। আমি কাউকে তোয়াচ করি না। আমি কঠোর পরিশ্রমে অভ্যস্ত। দায়িত্বে অবহেলা আমার গুরুতর অপছন্দের। আপনারা যাঁরা কাজে ফাঁকি দিতে অভ্যস্ত, তাঁরা আমার তিরস্কার গ্রহণ করুন।

আমি কিছু উদাহরণ দিচ্ছি আপনাদের জন্য। ছোটোবেলায় আমরা মাটির স্লেট আর মাটির পেনসিলে লিখতাম। একদিন স্কুল ছুটির পর হয়তো দেখতে পেলাম বেঞ্চির উপর একটা মাটির পেনসিল পড়ে আছে। আমি নিয়ে নিলাম, এবং পরদিন ক্লাসে কাউকে জিজ্ঞাসা করলাম না ওটি কার পেনসিল ছিল। ১০ পয়সা দামের মাটির পেনসিলে আমি আনন্দের সাথে লিখতে থাকলাম। মাসখানেক পর হঠাৎ হাতের চাপ লেগে আমার দুই টাকা দামের স্লেটটি ভেঙে গেলো। ক্লাস ফোর বা ফাইভে পড়ার সময়ে আমার অতি সুন্দর দামি পাইলট কলমটি কীভাবে যেন হারিয়ে গেলো। আপনারা ভাবছেন এগুলো সবই মামুলি ঘটনা? না। এখানে মহান সৃষ্টিকর্তার অনেক ইশারা রয়েছে। আপনি অবৈধ উপায়ে ৫ হাজার টাকা অর্জন করলেন। ইদ বোনাসসহ ৩০ হাজার টাকা সঙ্গে নিয়ে বাড়ির দিকে পা বাড়ালেন। কিন্তু হায়, মলম পার্টির খপ্পরে পড়ে আপনার ৩০ হাজার টাকা খোয়া গেলো, আপনি অসুস্থ ও অজ্ঞান অবস্থায় নিজেকে এক হাসপাতালে আবিষ্কার করলেন। হয়তো হঠাৎ খবর পেলেন, আপনার ছেলেটি বাসের নীচে চাপা পড়ে মারা গেছে। আপনার মেয়েটি পুকুরে ডুবে মারা গেছে। আপনার ছোটো ভাই গাছ থেকে পড়ে মুমূর্ষু অবস্থায় মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। ভাবছেন, এগুলো খুব মামুলি ঘটনা? এর পেছনে কোনো কারণ বা কারো হাত নেই? না। আল্লাহপাক আছেন। তিনি নীরবে বিচার করেন। ভয়ঙ্কর সুষ্ঠু সেই বিচার।

আপনি অবৈধ পথে ৫, ১০, ২০, ৩০ লাখ টাকা উপার্জন করলেন। বিল্ডিং তুললেন। যেদিন ঘরে ঢুকলেন, ঐদিন বিল্ডিংটি ধসে পড়লো। কিংবা নদীর গর্ভে আপনার বিল্ডিং তলিয়ে গেলো। ঝড়ে আপনার টিনের ঘর উড়ে গেলো। আপনার ছেলে একটা দুরারোগ্য ব্যধিতে আক্রান্ত হলো, যার জন্য ৬০ লাখ টাকার প্রয়োজন। এই যে এসব ঘটছে, এগুলো হলো আপনার পাপের প্রতিদান। অবৈধ অর্থ হলো বিষ। আপনি খাবেন, আপনি আক্রান্ত হবেন।

আমি সততা এবং বিশ্বস্ততার একটা উৎকৃষ্ট উদাহরণ হিসাবে নিজেকে আপনাদের সামনে উপস্থাপন করছি। আমি আপনাদের নিয়ে থাকবো। আমি যেরূপ, আপনাদেরকেও আমি সেইরূপ দেখতে চাই। দয়া করে আমার গ্রামে যান। আমার ব্যাপারে আমার প্রাণপ্রিয় এলাকাবাসীকে জিজ্ঞাসা করুন। আমার প্রিয় গ্রামবাসী, আমার প্রিয় বন্ধুরা আমার ব্যাপারে যা যা বলবেন- আমি বেশি কিছু চাই না, আপনাদের গ্রামবাসীও যেন আপনাদের ব্যাপারে ঠিক অনুরূপ সত্যায়ন তুলে ধরেন।

আপনি সৎ রুজি করুন। সবচেয়ে বড় পুরস্কার হলো, আপনার মনের মধ্যে থাকবে প্রশান্তি, যা টাকা দিয়ে কেনা যায় না। আপনার সততা আপনাকে কঠিন আত্মবিশ্বাসী করে তুলবে, আপনি নিঃস্নঙ্কোচ নির্ভীক হবেন। আপনাকে কোথাও কারো সামনে মাথা নত করে কথা বলতে হবে না। বরঞ্চ, অসৎ লোকেরা আপনার সামনে ভয়ে কম্পমান থাকবে।

সততা হলো এমন বস্তু যা কেনাবেচা করা যায় না। এটা অমূল্য। আপনারা কি এই অমূল্য সম্পদের অধিকারী হতে চান না?
আপনারা কি পরিবারের সাথে সুখ ও শান্তিতে জীবনযাপন করতে চান না?
আমার প্রিয় সহকর্মীবৃন্দ, অধীনস্থগণ- এটা আপনাদের প্রতি আমার আকুতি- আপনারা দয়া করে আমার অনুসারী হবেন। যে সততা ও বিশ্বস্ততা আমার সবচেয়ে বড় শক্তি ও অহঙ্কার, আমি চাই, আপনারাও সবাই সেই মহৎ গুণাবলির অধিকারী হোন।

সবাই ভালো থাকুন। পরিবারকে সময় দিন। শান্তিতে থাকুন।
আমিন।

২৪টি মন্তব্য ২৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আপনি কি পথখাবার খান? তাহলে এই লেখাটি আপনার জন্য

লিখেছেন মিশু মিলন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৪

আগে যখন মাঝে মাঝে বিকেল-সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতাম, তখন খাবার নিয়ে আমার জন্য ওরা বেশ বিড়ম্বনায় পড়ত। আমি পথখাবার খাই না। ফলে সোরওয়ার্দী উদ্যানে আড্ডা দিতে দিতে ক্ষিধে পেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×