আগের পোস্ট
৪
‘এ মাদার ইন ম্যানভিল’ গল্পটা পড়ার পরই মনে হতে লাগলো আমার একজন দূরবর্তিনী জননী আছেন। তিনি মিসেস ম্যানভিল। আমি তাঁর কাছে যাই। তাঁর কাছে আমার মৃত মায়ের গল্প পাড়ি। মৃত মা’টা অবিকল মিসেস ম্যানভিলের মতো।
কিছুদিন কলেজ হোস্টেলে এক সিনিয়র ভাইয়ের বেডে ডাবলিং করার পর তিনি আমাকে একটা বাসায় লজিং থাকার ব্যবস্থা করে দিলেন।
মিসেস ম্যানভিল নয়, ভদ্রমহিলার নাম মিসেস মনোয়ারা।
তাঁর ব্যক্তিত্ব, উন্নত রুচিবোধ আর সর্বোপরি অভিজাত আচরণ আমাকে খুব আকৃষ্ট করলো। তাঁর স্বামী বিগত হয়েছেন কয়েক বছর। ১০-১১ বছরের এক স্কুলপড়ুয়া ছেলেকে নিয়ে তিনি বিশাল এ বাড়িতে থাকেন।
সোহানকে পড়িয়ে আমি খুব আনন্দ পাই। সে বেজায় মেধাবী ছাত্র। মায়ের সবগুলো গুণই ওর মধ্যে দেখতে পাই; ওর বাবাও যে খুব অমায়িক ও মার্জিত স্বভাবের ব্যক্তিত্ব ছিলেন, সংসারের সবকিছুতে তার একটা সুন্দর ছাপ থেকে তা বোঝা যায়। একটা মধুর ভালো লাগায় আমার বুক ভরে থাকে।
সোহানকে পড়ানোর সময় মিসেস মনোয়ারা সামনেই বসে থাকেন। আমার পড়ানোয় তিনি মুগ্ধ, তাঁর অভিব্যক্তিতেই এটা ফুটে ওঠে।
আমার মরহুমা জননীও এমনই ছিলেন। পড়ার সময় তিনি আমার পাশে বসে থাকতেন; মাথায় বিলি কেটে দিতেন; আমাকে খাইয়ে দিতেন।
আমার মা সুশিক্ষিতা ও আধুনিকা রমণী ছিলেন। তিনি কলেজে পড়াতেন না, কিন্তু তল্লাটের যুবকযুবতীরা তাঁকে একজন শিক্ষয়িত্রীর চোখে দেখতো। যুবকযুবতীরা দলে দলে আমাদের বাংলোয় এসে জড়ো হতো মায়ের সাথে আলাপচারিতার জন্য। তিনি ভালো নজরুল সঙ্গীত গাইতেন। তিনি শামসুর রাহমানের কবিতা পড়তেন আর বলতেন, বাংলাদেশের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ কবি তিনিই। আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রাম অনন্তকাল ধরে তার কবিতায় সমোজ্জ্বল থাকবে, বেঁচে থাকবেন তিনিও। মিসেস মনোয়ারার সাথে আমি প্রায় সময়েই এভাবে আমার মায়ের কথা বলি।
আমার মায়ের মৃত্যুর পর বাবা একটি বিয়ে করেন। আমাদের সুন্দর সংসারটা এলোমেলো হয়ে গেলো, যখন এর বছর খানেক পর আমার বাবাও মারা গেলেন। সৎ মা আমাদের সাথে থাকলেন না। আমরা এতিম হয়ে গেলাম। আমার ছোটো দুটি ভাইবোন নানুর বাড়িতে চলে গেলো। মিসেস মনোয়ারা গভীর মনোযোগে আমার কথা শোনেন। মাঝে মাঝে তিনি আঁচল দিয়ে চোখের কোনা মোছেন।
মিসেস মনোয়ারা সাহিত্য নিয়ে আলোচনা করেন। সাহিত্যের প্রতি আমার এতোটা ঝোঁক আগে কখনো ছিল না; বলা ভালো যে, তিনি আমাকে সাহিত্য পড়ান। তিনি কোনো কোনোদিন হারমোনিয়ম নিয়ে বসেন। সোহান আর আমাকে সামনে বসিয়ে তিনি গান ধরেন-
সহজ মানুষ ভজে দেখ না রে মন
দিব্য জ্ঞানে
পাবি রে অমূল্য রতন বর্তমানে...
এ গান আমি আগে কোনোদিন শুনি নি। কিন্তু মনে হলো তাঁর গানের সুরে পুরো ঘর দুলছে; আমি ‘মূর্ছনা’ শব্দটা অনেক শুনেছি। হয়তো এটাকেই গানের মূর্ছনা বলা হয়। এরপর তিনি আরেকটা গান ধরলেন-
দেখেছি রূপসাগরে মনের মানুষ কাঁচা সোনা
মিসেস মনোয়ারার গানের জগৎ সত্যিই আমার কাছে অচেনা। কিন্তু কী বিপুল, কী হিরন্ময়! আমি অবাক হয়ে ভাবতে থাকি।
কলেজ থেকে ফিরে বাসায় ঢুকতেই মিসেস মনোয়ারা বাগানের পাশ থেকে আমাকে ডাকলেন। তাঁর কাছে এগিয়ে গেলে তিনি বললেন, শার্শা থেকে একজন বৃদ্ধা এসেছেন।
আমার মুখ থেকে কিছুক্ষণ কথা সরলো না। কিংবা বলতে দ্বিধা নেই, আমার বুক খানিকটা আঁতকে উঠলো।
তিনি আবার বলেন, তুমি বলেছিলে তোমার কৈশোরে তোমার মা মারা গেছেন।
আমি মিসেস মনোয়ারার চোখের দিকে তাকিয়ে থাকি। আমার বুকে বিপুল টাইফুন। আমি জানি যে, আমি কপট না। কিন্তু আমি একজন মাকে চাই, যিনি মিসেস ম্যানভিল কিংবা মিসেস মনোয়ারার মতো অভিজাতা, সুশিক্ষিতা এবং সুমার্জিতা।
মিসেস মনোয়ারার সাথে আমি ঘরে ঢুকলাম। দোতলার সিঁড়ির কাছে চৌকিদারের টোলের উপর আমার মা বসে আছেন, অত্যন্ত মলিনভাবে। পরনে একটা পুরোনো শাড়ি, জীর্ণ। তাঁর চুলগুলো অগোছালো।
লাঞ্চের সময় সুদৃশ্য ও অভিজাত ডাইনিং টেবিলে বসতে আমার মা খুব সংকোচিত বোধ করতে লাগলেন। বরাবর আমি মিসেস মনোয়ারার সাথে এখানে বসেই খাওয়া দাওয়া করতাম। কিন্তু আমি এ বিদ্ঘুটে পরিস্থিতির জন্য আদৌ প্রস্তুত ছিলাম না। প্রতি পদে আমি আজ জড়তাগ্রস্ত হয়ে পড়ছি।
এতো দামি খাবার আমরা কোনোদিন খেতে পারি নি। আমার মা গোগ্রাসে খাবার গিলতে লাগলেন। আমি ইশারায় মাকে থামিয়ে না দিলে আমাদের ৩জনের খাবার একাই তিনি সাবাড় করে ফেলতেন।
করিমন, এই নাও, তোমার জন্য যৎসামান্য অর্থ। এ দিয়ে ছোটো একটা দোকান করে কিছু ব্যবসা করতে পারো কিনা দেখো। এ কথা বলে মিসেস মনোয়ারা আমার মায়ের হাতে কিছু টাকা তুলে দিলেন। আমার মা প্রায় ছোঁ মেরে টাকাটা তাঁর হাত থেকে নিয়ে নিলেন।
আমাকে বললেন, করিম, আমিও তোমার মা। যা হয়ে গেলো, এ নিয়ে কখনো ভেবো না। মায়ের কাছে কোনো লজ্জা থাকতে নেই।
লজ্জায় আমি সত্যিই কাতর হয়ে উঠেছিলাম। আমার পা নড়ছিল না। আমার মা পরের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করেন। বাড়িওয়ালিকে দেখে ছোটোবেলায় ভাবতাম, ইশ, আমার মা ঝি না হয়ে ওরকম তেজওয়ালা একজন বাড়িওয়ালি হতো যদি!
মাকে রিকশা করে বাসস্ট্যান্ডে নিয়ে যাচ্ছি। যেতে যেতে তিনি যে কথা বললেন, তা শোনার চেয়ে মরে যাওয়াই অনেক ভালো ছিল।
- বাসার কাজের লুকগুলি বলতেছিল- তুই নাকি ঐ বুইড়া বেডিরে বিয়া করছস?
৫
প্রতিমাসের শেষ শুক্রবারে আমার বাসায় একটা পার্টি হয়। সকাল ১০টা না বাজতেই ওরা বাসায় চলে আসবে; দুজনে বেডের দুপাশে বসবে; ধাক্কাধাক্কি করে, কখনো বা মাথার চুল টানাটানি করে আমার ঘুম ভাঙাবে। চোখ খুলতেই মুখের কাছে এসে দুজনে উপুড় হয়ে একযোগে সুর করে টেনে টেনে বলবে- গুড মর্নিং।
আমি উঠে বসি। দুজনকে দুহাতে হাগ করে বলি- ইউ আর সো রিলেন্টলেস।
তারপর ওয়াশরুমে ঢুকি।
বের হলে দেখি দুজনে মিলেমিশে বেডরুম গোছাচ্ছে।
আচ্ছা, পার্টির কথাটা আগে বলে নিই। এদিন মনা বাজার-সওদা করে, আর কনা করে রান্নাবান্না। আমার দায়িত্ব হলো ওদের সাথে আরাম করে খাওয়া। আরেকটা দায়িত্ব আছে- এসবের খয়খরচা দেয়া।
আমার মায়ের রান্নার হাত খুব ভালো ছিল। সব রান্নার মধ্যে কষানো মুরগির মাংসের কথা আমি আজও ভুলতে পারছি না। শীলার রান্নাও আমার মায়ের মতোই। কিন্তু ওর মুরগি কষানো আমার মায়ের কষানোর মতো হয় না। এ নিয়ে বিস্তর গবেষণা করেও কোনো সুরাহা পাই নি। এমন সময় একদিন মনা আর কনা বাসায় এলো। ওরা বললো, মাটির চুলোয় রান্না করতে হবে, আর হলুদ-আঁদা, মরিচ-জিরা, সব মসলা পাটায় পুষতে হবে। দ্য আইডিয়া। কিন্তু আমরা তো গ্যাসের চুলোয় রান্না করি, মাটির চুলো কোথায় পাবো? এবারও ওরাই দ্য সলিউশন নিয়ে হাজির হলো। বাসার বাইরে বাগানের পাশে যে খোলা জায়গাটা রয়েছে, ওখানেই গর্ত করে অ্যাডহক মাটির চুলো বানিয়ে ফেলা হলো।
এরপর শীলা আমাদের ঘিয়ের পোলাও আর মুরগি কষানো খাওয়ালো। আমি ৪৫ বছর আগে মায়ের কাছে ফিরে গেলাম- মা যেন কষানো মাংস দিয়ে আমাকে ভাত বেড়ে দিল।
এভাবে প্রায় নিয়মিতই আমাদের এ ক্ষুদ্র পার্টি চলতে থাকলো। দুপুরের পর পড়ন্ত রোদে গাছের ছায়া হেলে পড়লে তার নীচে একটা পিড়িতে বসে শীলা রান্না করতো; কনা তার সাথে যোগ দিত। আমি আর মনা পাশে চেয়ার পেতে বসে রান্নাবান্না দেখতাম, ধেড়ে গলায় গান গাইতাম।
কনা রান্নাবান্নায় খুব পটু নয়। কিন্তু ৩জনে একত্র হয়ে একটা গেট টুগেদার করি, এটাই হলো মূল লক্ষ্য।
খেতে বসে আমরা নানান আলোচনায় মেতে উঠি। কিন্তু কোনো কোনোদিন আমার মনটা খুব ভারী থাকে। খেতে খেতে একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে পড়ে।
শীলা খুব ভালো মেয়ে ছিল।
সন্ধ্যায় মনা বাসা থেকে বের হয়ে যায় শহর দেখতে। ফিরতে ফিরতে অনেক রাত হয়। কখনো রাত পার হয়ে যায়। দুপুরে লাঞ্চ করে সে বাগের হাটের বাসে চেপে বাড়ি চলে যায়।
এর পরের সময়টুকু কনা আর আমার খুব নিরিবিলিতে কাটে। টিভি দেখি; গান গাই; গল্প করি। কনা ভালো নাচতে পারে; কত্থক, না কী যেন নাম- সবই উচ্চমার্গীয়। শিল্পকলা একাডেমিতে দু-একটা অনুষ্ঠানে সে নেচেছে। কনা বলে, দর্শকসারিতে প্রতিক্রিয়া বেশ ভালো ছিল।
কনা বললো, ভাইয়াকে কি আজও টাকা দিয়েছ?
আমার কোনো প্রতিক্রিয়া হলো না। প্রতিক্রিয়া হওয়ার কথা ছিল কিনা তাও বুঝি না।
কনা বলতে লাগলো, তুমি তো সবই বোঝো। আপন ভাই বোনকে দিয়ে টাকা কামাচ্ছে। মাঝে মাঝে প্রতিবাদ করতে ইচ্ছে হয়। কিন্তু পারি না। আমাদের অবস্থা তো তুমি জানো। ভাইয়াকেও চিনো। আমাকে খুন করে ফেলবে।
মনা আমার মতো সচ্ছল পরিবারের সন্তান নয়। সারাবছর অভাব-অনটনের মধ্য দিয়ে ওদের চলতে হয়। ছোটোখাটো ব্যবসা আর আছে ঘেরের কাজ। তাতে সুখ হয় না। এর উপরে আছে কনার ইউনিভার্সিটির খরচ। ওকে হিমশিম খেতে হয়। আমার পুরো সম্পদের একাংশ ওর মতো একজন বন্ধুকে দিয়ে দিলে আমার কোনো কমতি হবে না। আমি ভেবে রেখেছি, আমার স্থাবর-অস্থাবর সব সম্পত্তি কনার নামেই উইল করে যাবো।
কনা আমার কেউ না। অথবা জানি না- কনা আমার কে।
সন্ধ্যায় চলে যাওয়ার সময় কনা অনেকক্ষণ পায়চারি করলো। ওর মনে ঐ ব্যাপারটা খুব তোলপাড় করছে তা ঢের বুঝতে পারলাম।
ইতস্তত করতে করতে কনা মুখ খুললো, ভাইয়া, বলছিলাম কী, কিছু মনে করবে না তো?
- নাহ। কী কথা, বলো?
- আমার কিছু টাকার দরকার।
- টাকা লাগবে নিবে। কত?
কনা একটা টাকার অঙ্ক বললো। অঙ্কটা খুব ছোটো নয়, অবশ্য অনেক বড়ও নয়। আমি ওর নামে একটা ক্রসড চেক লিখে হাতে দিলাম।
কনা চেকটা পেয়ে মাথা নীচু করে খাটের একপাশে বসে রইলো। ওর চোখ থেকে পানি ঝরছে আমি বুঝতে পারছি।
ও একটা ছেলেকে ভালোবাসে। এ টাকাটা সেই ছেলেটার জন্য।
- ভাইয়া। আমি তোমাকে আমার ভার্জিনিটি অফার করছি।
আমি রিমোট টিপে টিভি চ্যানেল চেঞ্জ করতে করতে টের পেলাম আমার মুখে একটা স্মিত হাসি।
কনা কাছে এসে সামনাসামনি বসলো। দু হাতে আমার হাত উঁচু করে ওর দু বুকের উপর রেখে বললো- এই নাও- এখানে হাত রাখো। তারপর আমার উরুর উপর চিৎ হয়ে শুয়ে গলা জড়িয়ে আমার চুম্বনের প্রতীক্ষায় গভীর নিশ্বাস ফেলতে লাগলো।
আমি ওর হাত ছাড়িয়ে দিলাম। ওর চোখের উপর আঙুল বুলিয়ে উপুড় হয়ে ওর কপালে খুব মোলায়েম একটা চুমো খেলাম।
আমি কোনো মহাপুরুষ নই। আমারও তীব্র কামভাব হয়। কিন্তু আমি কিছু মানুষের ভুল ভেঙে দিতে চাই।
আমি জানি, মনা চায়, আমি যেন কনাকে ভোগ করি, তার বিনিময়ে ও যাতে আমার কাছ থেকে কিছু টাকা পেতে পারে।
আমি ইচ্ছে করলেই মনাকে বলে দিতে পারি, আমি তোর বোনের সাথে সেক্স করি না। এটা বলে ফেললে মনা যে বিশ্বাস করবে না তা আমি জানি। কারণ, সকালবেলা কনাকে আমার ঘরে রেখেই সে বাজার করতে বেরিয়ে পড়তো। ইচ্ছে করেই একটু বেশি সময় নিয়ে বাসায় ফিরতো। এ দীর্ঘ সময়ে একটা ক্ষুধার্ত পুরুষ আর একটা যৌবনবতী মেয়ে ঘরে বসে লুডু খেলবে না। সন্ধ্যাবেলাতেও ওকে আমার বাহুতে সমর্পণ করেই সে বাইরে বেরিয়ে পড়তো। নির্জন গৃহে দুজন নর-নারী সারারাত বিবিসি চ্যানেল দেখে কাটাবে না, এটা যে-কোনো আহাম্মকই বোঝে। কিন্তু মনা নিজেই আসলে একটা আহাম্মক। কনাকে যদি আমি ভোগ করতেই চাই, তাহলে ও কি নিজ থেকে আমার বাসায় আসতে পারে না? ওর ভার্সিটি হল থেকে আমার বাসার ট্রাভেল টাইম বড় জোর দেড় ঘণ্টা। ও প্রতিরাতে একা-একাই আসতে-যেতে পারে। সে শিশু নয়।
আমি কনাকে বলি, আমার মেয়েটা তোমার চেয়ে দু বছরের ছোটো। ও বেঁচে থাকলে আজ এতোখানিই বড় হতো। হয়তো তোমার মতোই ভার্সিটিতে পড়তো। … আমি মহাপুরুষ নই, তবে কামকে জয় করতে জানি। মেয়ের মতো একটা মেয়ের সর্বনাশ করবো, আমি এতোটা নির্মম নই। তোমার দরিদ্রতার সুযোগে তোমাকে আমি ইউস করতে নারাজ। আমি ভালো আছি। তোমাদের নিয়ে খুব আনন্দেই তো আছি।
চলবে...
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১১:৫৮