যা তুমি কহো, কিংবা ইথারে ছড়িয়ে দাও অদৃশ্য তুলিতে
সবই তা ভিড় করে জড়ো হচ্ছে অমোঘ স্মৃতিতে।
যেমন তুমি বলো, আমার ভিতরে
অবিকল তোমার বাবা খুব তীব্রভাবে খেলা করে।
তাঁর সকল সারল্য কিংবা দৃঢ়তা আমার চরিত্রে দেখে
মুহূর্তে ভেবে নিলে হয়ত আমাদের একটি পূর্বজনম ছিল, সেখানে
আমরা বাবা ও কন্যা ছিলাম, কিংবা তুমি ছিলে মা
আমি তার অবাধ্য ছেলেটা।
অত বেশি রাত জেগো না। নিয়মিত খেয়ো।
নিয়মিত স্নান করো, শেভ করো। বিকেলে বাইরে ঘুরতে যেয়ো।
আরো কত উপদেশ! হাসিখুশি থেকো।
বেশি বেশি কবিতা লেখো।
রোদে যাওয়া যাবে না, বিপি ফল করবে।
কী কী বললাম, শুনেছ? সব মনে রাখবে।
যা কিছু তুমি বলো, কিছুতেই মন নেই; আমাকে উদাসীন দেখায়
তুমি খুব রেগে ওঠো - ‘তবে কি মনে করো তোমাকে
এভাবে দেখবো বলে উড়ে আসি তোমার আঙিনায়?’
এরপর দেখি, গোপন অশ্রুতে তোমার চোখ ভেসে যায়।
কেন তুমি এভাবে বলো, তুমি কি জানো না
আমিও অন্তরে ভেঙে পড়ি এসব কথায়? কারণ, এভাবে বলতো
আমার এক জন্মদুঃখিনী মা।
সে মায়ের মুখ খুব দূরের এক গাঁয়ে অস্পষ্ট ছায়ার মতো দেখি।
সে তো আর নেই। বলো সোনাপাখি, তোমার ভিতরে তবে
আমার মরে যাওয়া জননী এসেছে কি?
বড্ড ক্ষুদ্র এ জীবন। এ জীবন আমাকে দিয়েছে অজস্র
মানুষের ভালোবাসা, অজস্র প্রাণের অর্ঘ্য
কীভাবে শোধ দিব এসবের ঋণ, আমার আছে কি সাধ্য?
আমি আর চাই না কোনো স্মৃতি, নতুন বন্ধন
চাই না দেখতে তোমার গোপন ক্রন্দন।
তুমি ভুলে যেয়ো তোমার বাবাকে, আমার মাকে আমি ভুলে যাব
আমাদের নিশ্চিত আরেকটা জীবন হবে। সেখানে আমিই
তোমার সত্যিকারে বাবা হবো।
৩০ ডিসেম্বর ২০১৬
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:০৯