somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আই-ফ্রেন্ড

২৩ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১২:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কলিংবেল টিপতেই ইমু ভাবী এসে দরজা খুলে দিল। একগাল মিষ্টি হাসি ছড়িয়ে দিয়ে সে বলে উঠলো, শাহিদ ভাইয়া, আপনি এতদিন পরে? ... ইশ, আপনার কথা কদিন ধরে আমার এত মনে পড়ছিল... জানেন, পরশু রাতে আপনাকে স্বপ্নে দেখেই আমার মনটা খুব খারাপ হয়ে গেল।
কী এমন খারাপ স্বপ্ন সে দেখেছিল তা জিজ্ঞাসা করলো না। প্যান্টের পকেট থেকে ক্যান্ডিগুলো বের করে ইমু ভাবীর দিকে হাত বাড়িয়ে দেয়, ভাবী যেন আগেই এটা জানতো, ঠিক সেভাবেই হাত বাড়িয়ে অতি সহজাতভাবে ও-গুলো সে মুঠোয় তুলে নেয়।
বসছেন না কেন? বলেই শাহিদের দিকে একটা চেয়ার এগিয়ে দেয়।
বসবো না। এ কথা বললেও শাহিদ চেয়ারের সামনে গিয়ে অলসভাবে বসে পড়ে।
শাহিদ ভাইয়া, আপনি কি সাঁতার জানেন?
শাহিদ হেসে দিয়ে বলে, খাল-বিল-পুকুরের পানিতে বেড়ে উঠলাম, আর সাঁতার জানবো না?
ইমু ভাবী মুখটা খুব করুণ করে বলে, স্বপ্নে কী দেখলাম জানেন? কেরাই নৌকা ভাড়া করে আমরা আড়িয়াল বিলে নৌকা বাইচ দেখতে গেছি। অনেক আনন্দ হচ্ছে। আপনি আমাকে মুরলি কিনে দিলেন...। তারপর ভাবী একটু মুচকি হেসে বলে, স্বপ্নে কিন্তু আমার কোনো বাচ্চা-কাচ্চা নেই। নৌকা বাইচ দেখে ফেরার পথে প্রচণ্ড ঝড় উঠলো। মাঝ বিলে নৌকা ডুবে গেল। নৌকার সবাই দেখি সাঁতরে পাড়ে উঠে গেছি, কিন্তু আপনি নেই। ইমু বলে কী, আপনি সাঁতার জানেন না, তাই ডুবে মারা গেছেন। এই কথা শুনে আমি এমন জোরে কাঁদতে শুরু করলাম, দেখি সে আমাকে ঠেলছে আর ধমক দিচ্ছে, এই কাঁদছো কেন? কাঁদছো কেন?
শাহিদ হেসে দেয়। বলে, খুকী, স্বপ্ন স্বপ্নই। তা না হলে ঝড়ের মধ্যে মাঝ বিলে নৌকা ডুবে গেলে কি কেউ এতদূর সাঁতরে পাড়ে উঠতে পারে?
আমার মনে হয় আপনি পারেন।
আপনার কীভাবে এমন ধারণা হলো?
আমি জানি না। কিন্তু আমার মনে হয় আপনার এমন একটা অসাধারণ ক্ষমতা আছে।
আপনি একটা অদ্ভুত মেয়ে।
ইমু ভাবী মিষ্টি করে হেসে মাথা নীচু করে।
কী খাবেন? ভাবী জিজ্ঞাসা করে।
খিদে নেই, শাহিদ চেয়ারে গা এলিয়ে দিয়ে বলে, পাগলটা কোথায়?
সে তো কাল দেশের বাড়ি গেছে।
ওওও। আজ কি বাসায় ফিরবে?
না, কাল সকালে ফিরবে।
তাহলে চলুন এক কাজ করি।
কী?
তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নিন। জলদি।
কেন?
জাতীয় জাদুঘরের সামনে আজ চটপটি খাব।
আমি কিন্তু ভালো চটপটি বানাতে পারি।
আপনারটা অনেক খেয়েছি। জাদুঘরের অডিটরিয়ামে আজ ‘মাটির ময়না’ ছবি দেখানো হবে। গত ‘ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে’ এটা আমি দেখেছিলাম, জাতীয় জাদুঘরের অডিটরিয়ামেই দেখানো হয়েছিল। ছবিটা আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছিল। দেখতে দেখতে আপনার কথা খুব মনে পড়েছিল, ওটা আপনাকে দেখাবোই। আজ চটপটি খেয়েই ঢুকে পড়বো। বাচ্চাদের নেয়ার দরকার নেই। ওরা খালাম্মার কাছে থাক।
আমি তো এখনো গোসল টোসল কিছুই করি নি।
একদিন না করলে কিছু হবে না। ঝটপট রেডি হয়ে নিন।
ইমু ভাবী রেডি হওয়ার জন্য চলে গেল। শাহিদ ভাবে, এই অসাধারণ ছবিটা দেখে নিশ্চয়ই ভাবী কাঁদবে, কারণ তার মন খুব নরম, শাহিদের মনের মতোই। আলেয়া আপুর মনটাও এত নরম ছিল। ছোটোবেলায় ওদের টেলিভিশন ছিল না, পাশের বাড়িতে নাটক সিনেমা দেখতো। করুণ কোনো দৃশ্য দেখলেই আলেয়া আপু কেঁদে কেঁদে বুক ভাসাতো। রাতে শুয়ে শুয়েও সে কাঁদতো, শাহিদ তখন শক্ত করে আপুর গলা জড়িয়ে ধরে থাকতো, আর ফিশফিশ করে বলতো, আপু, তুই কাঁদিস না, তুই কাঁদলে আমারও খুব কান্না পায়। হঠাৎ একদিন শাহিদের কলেরা হলো, সবাই তাকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়লো, কোন ফাঁকে আলেয়া আপুও কলেরায় পড়ে গেল, দুদিনের মাথায় শাহিদ ঝরঝরে সুস্থ হয়ে উঠলো, কিন্তু দুপুরেই আলেয়া আপু মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লো। আপুর জন্য তারপর সে কত কেঁদেছে, গোপনে, নির্জনে, গভীর রাত্রিতে শুয়ে শুয়ে, খারাপ স্বপ্ন দেখে ঘুম ভেঙ্গে গেলে।
প্রথমবার ‘মাটির ময়না’ ছবি দেখার পর শাহিদ খুবই অভিভূত হয়ে গিয়েছিল। ছবি দেখা শেষে পরিচালক তারেক মাসুদের সাথে কিছুক্ষণ অন্তরঙ্গ আলাপ করবার সুযোগও সে পেয়েছিল, অবশ্য একা নয়, অনেক দর্শকের সাথে, জাতীয় জাদুঘরের প্রবেশ পথে দাঁড়িয়ে তিনি বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দিচ্ছিলেন, শাহিদও বেশ কয়েকটা প্রশ্ন করবার সুযোগ পেয়েছিল। ‘মাটির ময়না’ তারেক মাসুদের বাল্যজীবন ভিত্তিক ছবি। এই ছবি দেখার পরই শাহিদের মনে ইচ্ছে জেগেছিল, ‘মাটির ময়না’ ছবির মতোই সে একটা করুণ ছবি বানাবে, এটির নামও হতে পারে ‘মাটির ময়না’, তবে দ্বিতীয় খণ্ড। সেই ছবিটি আলেয়া আপুর জীবন থেকে নেয়া হবে, তবে শাহিদের জীবনটাও তা থেকে বাদ যাবে না।
ছবি বানাবার তীব্র বাসনা এখনো তার বুকের মধ্যে আগুন জ্বালে। তার ইচ্ছে মৃত্যুর পূর্বে সে অন্তত তিনটি ছবি বানাবে। এক সময়ে হুমায়ূন আহমেদের গল্প নিয়ে একটা কালজয়ী সিনেমা করার শখ তার হয়েছিল। হুমায়ূন আহমেদ দিনে দিনে তার ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যাচ্ছেন, তাঁকে নিয়ে ছবি করার ইচ্ছে আপাতত বাদ। ইদানীং ইমনের মাথায়ও এই ভূত চেপে বসেছে। তবে ওর পরিকল্পনা একটু অন্যরকম। ইমন ছোটো থেকে ধীরে ধীরে বড়ো’র দিকে পা বাড়াতে চায়, সেই হিসাবে তার প্রথম পদক্ষেপ হলো টেলিভিশন নাটক তৈরি করা। ইমন বলে, সাহিত্যে খ্যাতি পেতে চাইলে আগে মিডিয়ায় পরিচিতি পেতে হবে, মিডিয়ায় পরিচিতির জন্য নাটক তৈরি ও প্রচারের কোনো বিকল্প নেই। আজকাল ওদের তুলনায় বয়সে কত তরুণ ছেলেরা টিভি নাটক বানিয়ে রাতারাতি বিপুল নাম করে ফেলছে। শাহিদ অবশ্য এ সম্পর্কে একটু দ্বিমত পোষণ করে। সাহিত্য আর টেলিভিশন নাটক এক নয়। সাহিত্যে খ্যাতি পাওয়ার জন্য ভিন্ন মাধ্যমে খ্যাতি অর্জনটা অপরিহার্যও নয়। দৈবাৎ এমন জুটে গেলেও সেটা নিরেট প্রাপ্তি হয় না। সাহিত্যের প্রয়োজনেই সাহিত্যকে ভালোবাসতে হবে, সাহিত্যে আত্মোৎসর্গ করে যেটুকু প্রাপ্তি মিলবে সেটাই সত্যিকারের প্রাপ্তি। তবে ইমনের মতো টেলিভিশন মিডিয়ায় পরিচিতি অর্জন করার পর মিডিয়াকে একেবারে ছেড়ে দিয়ে সে সাহিত্যে ফিরে যেতে চায় না, সে-ও নাটক তৈরি করবে, সারাজীবন ভরে মাত্র তিনটি নাটক তৈরি করলেও কোনো আক্ষেপ নেই, তবে তা হতে হবে এমন যা মানুষকে বিষম ভাবিয়ে তুলবে, একটা নতুন দিগোন্মোচনের ইঙ্গিত তাতে থাকতে হবে। সে সাহিত্যেও থাকবে, একই সঙ্গে মিডিয়ায়ও থাকবে। ইমন অতি শীঘ্র নাটক করবার জন্য শাহিদকে চাপ দিয়ে আসছে। সে বলে, প্রথম নাটকটা হতে হবে ফুল অব ফানস, হাস্যরসে ভরপুর। নাটকে গরীব-মিসকিন মার্কা নায়িকাদের তরুণরা পছন্দ করে না, নায়িকাকে ধনীর দুলালী হতে হবে, শ্যুটিং হবে একটা অভিজাত বাসায়, ওটাই নায়িকাদের বাসা, নায়িকাটিকে হতে হবে চোখ-ধাঁধানো রূপসী ও স্মার্ট, বাস্তবে সুশিক্ষিত এবং নবাগত, আগামী দু-তিন বছর তাদের নাটক ছাড়া অন্য কোথাও অভিনয় করতে পারবে না, ভালো জিনিস সর্বত্র ছড়িয়ে পড়লে মূল্য কমে যায়। কিন্তু শাহিদ চায় একটা সিরিয়াস টাইপের নাটক করতে। কোনো অভিজাত বাসার দরকার নেই, শ্যামপুরে ওর যেই কোচিং সেন্টারটা আছে ওটাই হবে নাটকের লোকেশন। পাত্রপাত্রীর সংখ্যাও হবে অনেক কম। প্রধান চরিত্রটি ইমন নিজেই রোল করবে, একটা জীবনঘনিষ্ঠ চরিত্র হবে এটি, যে যুবক জীবন সংগ্রামে বার বার পরাজিত, তবুও অকুতোভয়ে সামনে এগিয়ে চলছে নিশ্চিত বিজয়ের লক্ষ্যে। এটা ইমনেরই জীবনকাহিনি। শাহিদ মনে মনে নাটকের বিষয়বস্তু ঠিক করে ফেলেছে। আরো দুটি চরিত্র থাকবে, একটি ছেলে একটি মেয়ে, দূরে কোথাও যাওয়ার দরকার নেই, ইমনের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে সুমন নামের যে ছেলেটি আছে সে সুদর্শন, বীনা নামের মেয়েটির মতো সুন্দরী মেয়েও খুব কম হয়। এদের নিয়ে নাটক করলে খরচের একটা বিরাট অংক বেঁচে যায়, নায়ক-নায়িকাদের পারিশ্রমিক। ওরা তো আর পারিশ্রমিক চাইবে না, অভিনয়ের সুযোগ পাচ্ছে এটাই ওদের জন্য সবচাইতে বড়ো পুরস্কার।
এসব শাহিদ আর ইমনের আকাশকুসুম কল্পনা ছাড়া আর কিছুই নয়, এতকিছু করার মোহ ওদের আছে, কিন্তু সামর্থ্য আছে কিনা এ সম্পর্কে ওরা নিশ্চিত নয়, ওরা আজও জানে না ওদের স্বপ্ন কোনোদিন পূরণ হবে কিনা।
সেজেগুঁজে মুখচোখ বেজার করে সামনে দাঁড়িয়ে আছে ইমু ভাবী।

**

'আই-ফ্রেন্ড', উপন্যাস, একুশে বইমেলা ২০০৫

**

ডাউনলোড লিংকঃ উপন্যাস 'আই-ফ্রেন্ড'
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১২:১৩
৮টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

প্রতি মাসে সামু-ব্লগে ভিজিটর কত? মার্চ ২০২৪ Update

লিখেছেন জে.এস. সাব্বির, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৮

মার্চ ২০২৪ সালে আমাদের প্রিয় সামু ব্লগে ভিজিটর সংখ্যা কত ছিল? জানতে হলে চোখ রাখুন-

গত ৬ মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভিউ ছিল জানুয়ারি মাসে। ওই মাসে সর্বমোট ভিজিট ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রোএক্টিভিটি এবং কম্পাউন্ড ইফেক্ট: আমার গুরুত্বপূর্ণ দুইটি শিক্ষা

লিখেছেন মাহদী হাসান শিহাব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১১



আমার গুরুত্বপূর্ন দুইটা লার্নিং শেয়ার করি। এই দুইটা টুল মাথায় রাখলে দৈনন্দিন কাজ করা অনেক সহজ হয়। টুল দুইটা কাজ করতে ও কাজ শেষ করতে ম্যাজিক হিসাবে কাজ করে।

এক.

স্টিফেন কোভের... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রসঙ্গ রূপান্তরঃ ট্রান্সজেন্ডার, সমকামিতা এবং যৌনতা বিষয়ক কিছু আবশ্যিক আলাপ

লিখেছেন সায়েমার ব্লগ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৩

প্রসঙ্গ রূপান্তরঃ
ট্রান্সজেন্ডার, সমকামিতা এবং যৌনতা বিষয়ক কিছু আবশ্যিক আলাপ

১।
যৌন প্রাকৃতিক, জেন্ডার নয়।জেন্ডার মানুষের সৃষ্টি (social, cultural construction)। যৌনকে বিভিন্ন সমাজ বিভিন্ন সময়ে যেভাবে ডিল করে, তাঁকে ঘিরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্মৃতির ঝলক: প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অনুভূতি এবং মনের শান্তির খোঁজে

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০১



সরল প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সংমিশ্রণে একটি ঘূর্ণায়মান পথ জুড়ে ঘুরে বেড়ানোর অবস্থানে আমি খুব শান্তি অনুভব করি। নদীর জল ছুঁয়ে পথ ধরে হাঁটতে হাঁটতে নৈসর্গিক সৌন্দর্যের সঙ্গে এক আন্তরিক সংযোগ অনুভব... ...বাকিটুকু পড়ুন

×