কবিতার মতো মেয়েটি সুচারু ছন্দে হাঁটে, কখনো-বা আনমনে।
দু চোখে দূরের বাসনা, চুলের কিশলয়ে গন্ধকুসুম, প্রগাঢ় আঁধারে হাসনাহেনার ঘ্রাণ; কপোলে একফোঁটা তিল, তেমনি একফোঁটা লালটিপ কপালে।
কবিতার মতো মেয়েটি নিজ্ঝুম বনের মতো; কখনো-বা দরজায় হেলান দিয়ে দিগন্তে মেলে ধরে দৃষ্টি; দু চোখে দূরের বাসনা, কবিতার মতো দুর্জ্ঞেয়। ডানগালে হেলে পড়ে দু-এক গোছা চুল, কখনো-বা পেলব বাতাসে নাচে; তার হাতে মেহেদির আলপনা, কবিতার মতো কারুকার্যে ভরা।
কবিতার মতো মেয়েটি কমনীয় ফুলের মতো; গোধূলির লজ্জার মতো স্নিগ্ধ হাসে, নাম তার সুস্মিতা; তার কণ্ঠে ঝরে পড়ে কবিতা ও কাকলি; সে বড্ড কবিতা ভালোবাসে, অপর্ণা মৃণ্ময়ীর মতো। নিক্কণে সন্ধ্যা নামে; চুড়ির শব্দে ঘুম ভেঙে নেচে ওঠে ভোরের দোয়েল।
কবিতার মতো মেয়েটি শাশ্বত বাঙালিনী, শাড়ি পরে, লতানো গ্রীবায় কবিতার ঘ্রাণ। বারান্দার ছায়ায় কেদারায় গা এলিয়ে অলক্ষ্যে হারিয়ে যায়; গাছের শাখায় দোল খায় দোলনায়; চোখে তার স্বপ্নের ভিড়।
কবিতার মতো মেয়েটি বই পড়ে, গান গায়, নৃত্য করে। কখনো-বা কবিতা লেখে, অপূর্ব স্বরে পাঠ করে কবিতা। তার কণ্ঠে ঝরে পড়ে মেঘরাগ মাধুরী।
কবিতার মতো মেয়েটি বনলতা, নীরা কিংবা লাবণ্য’র মতো। শবনম শায়মা, অথবা অদিতি আফ্রোদিতি। অরিহ অলকার মতো। নদীর মতো অবিরাম স্রোতস্বিনী। অনসূয়া অরুন্ধতী। সজীব স্নেহের মতো নরম ও নিষ্কাম, নীলকণ্ঠ প্রেমের মতো নিবিড় কামিনী।
কবিতার মতো মেয়েটি সিঁথির মতো শুভ্র ও সুন্দর, গাংপাড় ধরে কাশবনে হাঁটে। কবিতার মতো মেয়েটি বরুণার মতো, সারিকার মতো, অহনার মতো, প্রমীলার মতো,
যারা কেবলি হারিয়ে যেতে ভালোবাসে।
কবিতার মতো মেয়েটি দুর্বোধ্য কবিতার মতো একখণ্ড অনাঘ্রাত সুখ।
১ জানুয়ারি ২০১৫
উৎসর্গ
যারা কথা রাখে নি, এবং যারা রেখেছে
জন্মের আগে কিংবা পরে, কবিতার সবটুকু জুড়েই থেকেছে
**
অসম্পর্কের ঋণ, একুশে বইমেলা ২০১৫ ডাউনলোড লিংক
বিশেষ কৃতজ্ঞতা এবং ক্ষমাপ্রার্থী
জেনে, কিংবা না জেনে যাঁরা কবিতা হয়ে গেলেন।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই মে, ২০১৮ দুপুর ১:৪৭