somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

এক নিরুদ্দেশ পথিক
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব,ইইই প্রকৌশলী। মতিঝিল আইডিয়াল, ঢাকা কলেজ, বুয়েট এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র।টেলিকমিউনিকেশন এক্সপার্ট। Sustainable development activist, writer of technology and infrastructural aspects of socio economy.

চাই একটা জাতীয় পর্যায়ের এন্ড টু এন্ড পেমেন্ট গেইটওয়ে!

১৬ ই মে, ২০১৭ রাত ১২:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমি চাই বাংলাদেশ ব্যাংক একটা সম্পূর্ণ দেশীয় পেমেন্ট গেইটওয়ের দাঁড়া করুক, যা সকল ট্রাডিশনাল ব্যাংকিং, মোবাইল ব্যাংকিং, যে কোন ফাইনান্সিয়াল হাউজ ও সার্ভিস, অন্যান্য অফলাইন ও অনলাইন পে গেইটোয়েকে ইনকরপোরেইট করে দেশের স্বার্থ রক্ষা করবে এবং ফাইনান্সিয়াল মনিটরিং এ বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে। এটা দেশের ইকোনোমির জন্য অনন্যসাধারণ ভূমিকা রাখতে পারে।

বাংলাদেশ ব্যাংক এখন দিন/সপ্তাহ/মাস/বছর শেষে ব্যাংক গুলোর কাছে ট্রানজেকশন রেকর্ড নেয়, এই রেকর্ডে বহু গোঁজামিল আছে যার পোষ্ট প্রসেসিং ঝামেলা পূর্ণ এবং রেকর্ড প্রসেসিং এর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশেষ ক্যাপাবিলিটির ও জনবলের দরকার। একই সাথে আয়কর এবং ভ্যাটের হিসাবেও ব্যবসা, ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান, কোম্পানিগুলো সবাই যে যেভাবে পারছে চুরি করছে, কারণ দুর্নীতি প্রতিরোধী স্বচ্চ টেকনোলজি বেইজড ট্রাঞ্জেকশন প্ল্যাটফর্ম হয়ে উঠেনি আমাদের।

আজ সরকার ভ্যাট ১২% করছে, অথচ সরকার বা এনবিয়ার বা বাংলাদেশ ব্যাংক জানেন না যে, মাত্র ৪% ফ্ল্যাট ভ্যাট ঠিক করলে তার বিপরীতে কত রাজস্ব আসার কথা, কত আসছে কত চুরি হচ্ছে। ফলে একজন গরিব মানুষ তার তেল সাবান কিনবে এতে ১২% ভ্যাট দিবে অথচ এই ভ্যাট সরকারের পকেটে যাবে না সিঙ্ঘ ভাগ যাবে চুরিতে। মোট আর্থিক লেন্দেনের ভলিউমের % হিসেবে ভ্যাট আসছে না, বরং একটা গড়পরতা টার্গেট ধরা হয়, লোকবল দিয়ে যার কাছ থেকে যা আদায় করা যায়। স্বচ্চ আর্থিক সিস্টেম না থাকায় কে কোথায় ট্যাক্স ও ভ্যাট ফাকি দিচ্ছে তা ধরতে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান অক্ষম, উল্টো ফাইনান্সিয়াল ট্রাঞ্জেকশনের পোষ্ট প্রসেসিং নিয়ে গলদ্ঘর্ম। ফলে একদিকে সরকারি বেসরকারি বিজনেসকে সাথে নিয়েই রাষ্ট্র নিজেই চাঁদাবাজের ভুমিকায় আবির্ভুত হচ্ছে, অন্যদিকে নাগরিক হিসেবে কিংবা নিতান্ত কঞ্জিউমার হিসেবে আমরা ভোক্তা অধিকার পাচ্ছি না, মানে ক্রয় কৃত পণ্যে ১২% ভ্যাট দিতে হচ্ছে কিন্তু পণ্য ভাজালে ভরা, রোগ ব্যাধি, মরণ ঘাতী ক্যান্সারে ভরা।

এন্ড টু এন্ড ব্যাংকিং, ফাইনান্সিয়াল ট্রাঞ্জেকশন, বিজনেস, রেগুলেটর, গভর্নমেন্ট সার্ভিসেস ও ইউটিলিটি, স্মল-লার্জ একেইল বিজনেস এমনকি দোকান পাট সব কিছু, এইসবের মেশিন টু মেশিন টার্মিনাল গুলো, অনলাইন শপের পেমেন্ট, অন্যান্য মার্চেন্ট (ভিসা, মাস্টারকার্ড) এবং ফাইনালি মোবাইল ফাইনান্সিয়াল সার্ভিসের গেইটয়ে এই সব কিছু একটা জাতীয় পে -গেইটওয়ে তে (একটি সমন্বিত ও হাইলি সিকিউরড বহু স্তর ক্লাউড নেটোইয়ার্ক এর মাধ্যমে) সংযুক্ত থাকলে দেশের আর্থিক ব্যবস্থায় স্বচ্চতা আসা সময়ের ব্যাপার মাত্র, ইমাজিন একটা ক্লাউড যেখানে মুদি দোকান থেকে সব কোম্পানি, কর্পোরেইট এবং সরকারের সব প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক এবং এন বি আর কানেক্টেড, এই সিস্টেম থাকলে টাকার ট্রানজেকশন লুকাতে পারবে না। এখানে লোকাল ট্রাঞ্জেকশনের বেলায় বেলায় ন্যাশনাল গেইটয়ে থেকেই পারচেইজ প্রাইস এবং ভ্যাট আলাদা আলাদা ডেস্টিনেশনে নিয়ে নেয়া যাবে। এতে করে ভ্যাট থেকে সরকার যে বর্ধিত রাজস্ব আয় করবে তার একটা ক্ষুদ্র অংশ খরচেই (যদি দুর্নীতি মূক্ত রাখা যায়) এই হাইলি সিকিউরড নেটোয়ার্ক বসানো, মেইন্টেইন করা কিংবা অতি স্বল্প খরচে পে মেশিন বিক্রয় করা যাবে। মোবাইল ফাইনান্সের জন্য এখানে সরাসরি অপারেটরদের ইউএসএসডি গেইটোয়ের সাথে এপ্লিকেশন সার্ভার থাকবে। মোট কথা এটা একটা ক্লাউড যেখানে দেশের সব ব্যক্তি ও সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান যুক্ত থাকবে, বিদেশি ফাইনান্সিয়াল হাউজ থাকবে মার্চেন্ট গেইটোয়ের মাধ্যমে।


আরেকটা ব্যাপার হচ্ছে, সাধারণ একটি দেশের আর্থিক লেনদেনের জন্য এমন একটা গেইটয়ে থাকা চাই যাতে যে কোন পর্যায়ের একাউন্ট টু একাউন্ট ফান্ড ট্রান্সফার ও ক্রয় বিক্রয়ের মানি ট্রান্সফার ফ্রি করা যায়, মানে মানি প্রবাহে কোন আর্থিক ব্যারিয়ার না থাকে।
এত একদিকে পেমেন্ট ব্যবস্থা সহজ ও ওয়ান স্টেপ হবে, অন্য দিকে আর্থিক লেন দেনে স্বচ্চতা আসবে। আরেকটা ব্যাপার হোল ক্যাশ লেস ইকোনোমির দিকেও দেশ বহু স্তর এগুবে। বোধ করি বর্তমানে জাল টাকার বিস্তার কিংবা টাকার কাগুজে নোট ছাপাতে দেশের বেশ খরচ হচ্ছে। ক্যাশ লেস ট্রাঞ্জেশন ক্যাপাবিলিটির জন্য মুদি দোকান মার খাচ্ছে শহরে। অন্যদিকে আমাদের দেশের দিওয়ানি ও ফৌজদারি মামলা গুলোর ব্যাকগ্রাউন্ড দেখলে বেরিয়ে আসবে পাওনা প্রদানে,আর্থিক লেনদেনে অস্বচ্চতা সমাজের সিঙ্ঘ ভাগ অপারাধের বিস্তার ঘটাচ্ছে।

এর বাইরে, আরেকটা বিষয় আলোচনায় টানা দরকার। বেসরকারি খাতে পে-গেইট ওয়ে গেলে রেগুলেটরি অথোরিটি হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংক খুব বেশি ডিপেন্ডেন্ট হয়ে পড়বে বেসরকারি মার্চেন্ট (যেমন বিকাশ) ও অন্য ব্যাংক গুলর উপর। অন্যদিকে এনবিআর'কে ভুল ও অস্বচ্চ ট্রাঞ্জেকশন নিয়েই সময় কাটাতে হবে বিপুল জনবল নিয়ে যা নন টেকসই। সম্পর্ণ ডিজিটাইজড ট্রাঞ্জেকশন সিস্টেম ডিজাইন করা গেলে ফাইনান্সিয়াল মনিটরিং এবং আয়কর-ভ্যাট আদায় একেবারেই ট্রান্সপারেন্ট হবে। অর্থাৎ সদিচ্ছা থাকলে সতিক্যার ভাবেই দুর্নিতি প্রতিরোধী লেনদেন ব্যবস্থা ও রাজস্ব আয় ব্যবস্থাপনা সাজানো যাবে কারিগরি বাস্তবায়নে।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই মে, ২০১৭ রাত ১২:৫৫
৬টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও পদ্মশ্রী পুরস্কার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৬



এ বছরের পদ্মশ্রী (ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা) পদকে ভূষিত করা হয়েছে, বাংলাদেশের রবীন্দ্র সংগীত এর কিংবদন্তি শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে।

আমরা গর্বিত বন্যাকে নিয়ে । ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×