somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

এক নিরুদ্দেশ পথিক
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব,ইইই প্রকৌশলী। মতিঝিল আইডিয়াল, ঢাকা কলেজ, বুয়েট এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র।টেলিকমিউনিকেশন এক্সপার্ট। Sustainable development activist, writer of technology and infrastructural aspects of socio economy.

রপ্তানীমূখী খাতের নাম করে কাঁচামাল আমদানীর শুল্ক মুক্ত সুবিধার দুর্নীতি সহায়ক প্রসেস পরিবর্তন করা দরকার।

০৮ ই মার্চ, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রপ্তানি মূখী শিল্পে প্রণোদনা দিয়ে প্রায় ৬০২৯ টি প্রতিষ্ঠান বন্ডেড সুবিধার সুযোগ নিচ্ছে। এর মধ্যে যারা শতভাগ রপ্তানি মূখী বলে দাবি করছে তাদেরকে স্পেশাল বণ্ডেড ওয়ার হাউজ সুবিধার আওতায় বর্ধিত শুল্ক সুবিধাও নিচ্ছে। এতে রাষ্ট্রের ৩০ হাজার কোটি টাকার বেশি শুধু চট্রগ্রাম বন্দর শুল্ক আয়ে কম হচ্ছে। এর বাইরে আছে বহু পরোক্ষ লোকসান, বাণিজ্য আসমতা, বন্ড কমিশনার কার্যালয়ের কর্মকর্তা কর্মচারী সহ "বদি আলম" ও "ফালতু" নামে দেশের দুটি বেপারোয়া এবং শীর্ষস্থানীয় ঘুষ আদান প্রদান চক্র।

দেখা যাচ্ছে দেশের মোট বাৎসরিক রপ্তানী আয় ২১ বিলিয়ন ডলারের বিপিরীতে শুধু একটি বন্দরেই শুল্ক লোকসান হচ্ছে ৩.৫ বিলয়ন ডলার। সবগুলো বন্দরের হিসেব যুক্ত হলে দেখা যাবে আনুমানিক ৫ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ মোট রপ্তানী আয়ের প্রায় ২৫% শুধু প্রণোদনাই।

বণ্ডেড ওয়্যার হাউজ গুলো মিথ্যা তথ্য দিয়ে রপ্তানীমূখী পণ্যের কাঁচামালের বাইরেও যাবতীয় ক্যাটাগরির পণ্য আমদানি করে খোলা বাজারে চোরাচালান ও বিক্রি করে। ফলে নন বন্ডেড এবং ক্ষুদ্র আমদানীকারক ক্ষতি গ্রস্ত হচ্ছে। এর আরেকটি সরাসরি বিপদ হচ্ছে, দেশীয় পণ্য উৎপাদনকারীরা অনৈতিক প্রাইস ওয়ারে পড়ে বাজার হারাচ্ছেন, শুল্ক মুক্ত বিদেশী পণ্য দামের সাথে দেশীয় উৎপাদন খরচের সামঞ্জস্য রাখতে পারছে না এবং মধ্য ও ক্ষুদ্র বিনিয়োগ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

বাস্তবতা হচ্ছে স্পেশাল বন্ডেড হাইজ সুবিধা হাতিয়ে নিচ্ছে রাজনৈতিক প্রভাবশালী লোকেরা যারা সত্যিকারের রপ্তানীমূখী ব্যবসা ওউন করে না। এতে করে মূল ব্যবসায়ীরা অর্থনৈতিক ভাবে টার্মিনিটেড হচ্ছে।

রাষ্ট্র চাইলে এই শুল্ক সুবিধার ব্যাপারটা ভিন্ন ভাবে ম্যানেইজ করতে পারে। সাধারণ এবং স্পেশাল সব ধরণের বন্ডেড শুল্ক মুক্ত আমদানি সুবিধা সম্পুর্ণ বাতিল করা হবে। ক্যাটাগরি ভিত্তিক রপ্তানী আয় ব্রিকেতার ব্যাংকে ক্রেডিটেড হবার অব্যহতি পরেই এই আয়ের বিপরীতে কেনা কাঁচামালের উপর আগে জমা দেয়া প্রদত্ত শুল্ক বা এর আনুপাতিক হার অটোমেটেড আর্থিক সফটওয়্যার সিস্টেমের মাধ্যমে যাচাই বাছাই শেষে একই একাউন্টে জমা হবে। এতে করে রাজনৈতিক দুর্বিত্ত কিংবা ঘুষ জালিয়াতি করে ভুয়া কোম্পানী শুল্ক সুবিধা আদায় বন্ধ করা যাবে। চট্রগ্রাম বন্দরের সফটওয়্যার সিস্টেমের সাথে বাংলাদেশ ব্যাংকের ইনকামিং ফরেন কারেন্সি রেকর্ড সিস্টেম বা গেইটয়ের প্যাসিভ সফটওয়্যার ওয়্যার তৈরি করে এই প্রক্রিয়া সহজেই ট্রান্সপারেন্ট করা সম্ভব।

এমতাবস্থায় চট্রগ্রাম বা অন্য স্থল, নৌ বা বিমান বন্দরে আলাদা করে "বন্ডেড কমিশরার কার্যালয়" এর কোন প্রয়োজন থাকে না যেটি বর্তমানেঘুষ এবং বন্দর অপ ব্যবস্থাপনার সোর্স। আগত বৈদেশিক রপ্তানি আয়ের সাথে সামঞ্জস্য রেখে রপ্তানী কৃত কাঁচামালের সঠিক হিসেব টান ট্রান্সপারেন্ট হবে এবং তার অনুকুলে আগেই জমা দেয়া শুল্ক থেকে পুরো বা আংশিক (আইনে যা আছে) রিফান্ডেড হবে একই একাউন্টে।

চেক এন্ড ব্যালান্স হীন অগ্রীম শুল্ক মুক্তায়ন সুবিধা বন্ডেড কমিশনার অফিসের ভিতরে বাইরে যে ঘুষের সম্রাজ্য গড়ে তুলেছে তাকে, চেক এন্ড ব্যালান্স যুক্ত পোষ্ট শুল্ক মুক্তায়ন সুবিধায় আনতে পারলে ঘুষের তদবির কিছুটা কমতে পারে এবং বন্দরের ফ্রেইট এন্ড ফরোয়ার্ডিং এ শৃঙ্খলা আসতে পারে।

অন্যদিকে যেহেতু পোষ্ট শুল্কায়নে কাঁচামাল আমদানীর সাথে ক্রেডিটেড রপ্তানি আয়ের সম্পর্ক টানা হবে তাই, রপ্তানীর আড়ালে বৈদেশিক পাচারো কিছুটা কমিয়ে আনা যাবে।

রপ্তানী আয় নিয়োগের যে অবস্থা তাতে দেখা যাচ্ছে এটা স্ট্যাবল থাকবে কিংবা সামান্য কিছুটা বাড়বে যেহেতু ইউ এস ও ইউ'র অর্থনীতি ভালো অবস্থায় আছে (যদিও রানা প্লাজার পরবর্তিতে উদ্ভূত বিষয়াদির কারণে এর পূর্ণ সুবিধা নিতে ব্যর্থ দেশের ব্যবসায়ীরা)। ধরুন মোট রপ্তানি ২১ বা ২২ বিলিয়ন ডলারে স্ট্যাবল হবে। এই অবস্থায় দুর্বিত্তরা ঘুষ এবং তদবির যোগে শুল্ক ফাঁকি ক্রমাগত বাড়িয়ে চললে মোটামুটি স্থবির রপ্তানি আয়ের সুফল কমে যাবে।

এখানে সফটওয়্যার অটোমেশনের ডিজাইন ও বাস্তবায়ন এমনভাবে করতে হবে যাতে ম্যানুয়াল ইন্টারভেনশনের সুযোগ না থাকে এবং সঠিক ব্যবসায়ী সঠিক শুল্ক এমাউন্ট সঠিক সময়ে হ্যারাসম্যানেট ছাড়াই অটোমেটেড সিস্টেমে রিফান্ড পান। একই সাথে ফ্রেইট এন্ড ফরোয়ার্ডিং এর অপরাধের প্রকৃতি গুলোকে আমলে নিয়ে সেসব এবং সম্ভাব্য পন্থা ব্যবহার করে ঘুষ ও তদবিরকারীরা যাতে সিস্টেম এক্সপ্লয়েট করে অবৈধ রিফান্ড না নিতে পারে তার প্রটেকশন চাই। অর্থাৎ একটা ইফিশিয়েন্ট সফটওয়্যার সিস্টেম চাই যা রপ্তানীমূখী ব্যবসাকে ট্রান্সপারেন্ট করবে।

দেশী শিল্প বাঁচান, কর্ম সংস্থান বাঁচান। কিছু লোকের আঙুল ফুলে অতি দ্রুত কলা গাছ হওয়া ঠেকিয়ে শিল্প ও বাণিজ্য সমতা নিশ্চিত করুণ।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই মার্চ, ২০১৮ রাত ৮:১৩
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পিরিতের সংস্কৃতিওয়ালা তুমি মুলা’র দিনে আইলা না

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:৫৬


---- আমাদের দেশে ভাষা, সংস্কৃতি এবং সামাজিক সমুন্নয়ন তলানিতে। তেমন কোন সংস্কৃতিবান নেই, শিরদাঁড়া সোজা তেমন মানুষ নেই। সংস্কৃতির বড় দান হলো ভয়শূন্য ও বিশুদ্ধ আত্মা। যিনি মানবের স্খলনে, যেকোন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসরায়েল

লিখেছেন সাইফুলসাইফসাই, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৪৮

ইসরায়েল
সাইফুল ইসলাম সাঈফ

এ মাকে হত্যা করেছে ইসরায়েল
এ বাবাকে হত্যা করেছে ইসরায়েল
নিরীহ শিশুদের হত্যা করেছে ইসরায়েল
এই বৃ্দ্ধ-বৃদ্ধাদের হত্যা করেছে ইসরায়েল
এ ভাইক হত্যা করেছে ইসরায়েল
এ বোনকে হত্যা করেছে ইসরায়েল
তারা মানুষ, এরাও মানুষ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

গ্রামের রঙিন চাঁদ

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১২


গ্রামের ছায়া মায়া আদর সোহাগ
এক কুয়া জল বির্সজন দিয়ে আবার
ফিরলাম ইট পাথর শহরে কিন্তু দূরত্বের
চাঁদটা সঙ্গেই রইল- যত স্মৃতি অমলিন;
সোনালি সূর্যের সাথে শুধু কথাকোপন
গ্রাম আর শহরের ধূলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১৭



পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারের ধ্বংসাবশেষঃ
পালবংশের দ্বিতীয় রাজা শ্রী ধর্মপালদেব অষ্টম শতকের শেষের দিকে বা নবম শতকে এই বিহার তৈরি করছিলেন।১৮৭৯ সালে স্যার কানিংহাম এই বিশাল কীর্তি আবিষ্কার করেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

পরবাসী ঈদ

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:২৩

আমার বাচ্চারা সকাল থেকেই আনন্দে আত্মহারা। আজ "ঈদ!" ঈদের আনন্দের চাইতে বড় আনন্দ হচ্ছে ওদেরকে স্কুলে যেতে হচ্ছে না। সপ্তাহের মাঝে ঈদ হলে এই একটা সুবিধা ওরা পায়, বাড়তি ছুটি!... ...বাকিটুকু পড়ুন

×