১। অথরেটেরিয়ান শাসনের এক দালানে কেন্দ্রীভূত ক্ষমতার বলয় কেন্দ্রীভূত নগরায়ন পছন্দ করে। এতে দু একটা নগর নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলেই ক্ষমতা নিশ্চিত রাখা যায়।এর অন্য কারণ হল, দেশের সমূদয় প্রশাসনিক কার্যক্রম মূলত ঢাকায় কেন্দ্রীভূত করা ঘুষ ও লুট নিয়ন্ত্রণ ও বরাদ্দ করণ সহজ করে, তদবির, টেন্ডারবাজি ও নিয়োগ বাণিজ্য ওয়ান স্টপ করে। ফলে কেন্দ্রীভূত ক্ষমতায়ন আদতে একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, এতে এককেন্দ্রিক ক্ষমতার কাঠামোয় কেন্দ্রিভুত সহজ লুট ও স্বৈরাচারী শাসন সুনিশ্চিত করা হয়েছে। হ্যাঁ সব গুলো সরকারই তাই করেছে। এতে একে দোষ দিয়ে অন্যকে হিরো বানানোর সুযোগ নেই।
২। সরকারি ও বাণিজ্যিক ব্যাংক, বীমা, মোবাইল কোম্পানি, রেডিও, টিভি স্টেশন, হাসপাতাল, চেইন শপ, পত্রিকা, স্কুল ইত্যাদি যেসব যেসব ক্ষেত্রে সরকারি লাইসেন্স, ছাড়পত্র কিংবা অনুমোদনের প্রয়োজন সেখানে সহজ ভাবেই বিকেন্দ্রীকরণ এডমিনিস্ট্রেশন করা যায়। লাইসেন্সের শর্ত হিসেবেই দৈব চয়নে কোম্পানিকে ৬ টি বড় শহর থেকে (ঢাকা চট্রগ্রাম সিলেট খুলনা রাজশাহী ও বরিশাল) অপারেইট করার শর্ত দেয়া যায়। শুধু দরকার ৩ টি জিনিস-
ক। সেখানে উন্নত আবাসনের ফেসিলিটি তৈরি যা টুক টাক আছে। খুব দরকার সেখানে সিকিউরিটি এন্সিইউর করা।
খ। উন্নত স্কুল করা, এটা সরকারি বেসরকারি উভয় উপায়েই করা সম্ভব। ইংলিশ স্কুল গুলোকে শর্ত দেয়া যায় তাদের প্রতিটাকে অন্তত তিনটা সিটি থেকে অপারেইট করতে হবে। পাশাপাশি ক্যাডেট কলেজের আদলে সরকারই স্কুল করতে পারে। আর বিশ্ববিদ্যালয় এমনিতেই আছে বিভাগীয় শহরে। ব্যবসা ও কর্ম সংস্থান গেলে সেখানে উচ্চ মান শিক্ষকও যাবেন, বরং বিদেশে পিএইচডি করা গণ সেগুলোকে প্রেফার করবেন শুধু পরিবেশের কারণে।
গ। উন্নত হাস্পাতাল, এটাও সরকারি বেসরকারি উভয় মডেলেই সম্ভব। স্কয়ার, ল্যাব এইড, এপোলো এদেরকে শর্ত দিতে হবে অন্তত ৩টা মেগা সিটি থেকে অপারেইট করতে হবে, হ্যাঁ পুরোপুরি স্থায়ী ভাবে।
এর বাইরে সব ধরণের কোম্পানিকে তাদের লো স্কিল জব, পুনঃ পুনঃ করা হয় যেমন কল সেন্টার ঢাক্র বাইরে করার নির্দেশনা দেয়া যায়। হ্যাঁ ঢাক্র বাইরে উন্নত ইন্টারনেট সেবা দেয়ার ইনফাস্ট্রাকচার চাই এরজন্য। শুধু ব্রাঞ্চের বাইরেও ব্যাংক গুলো নির্দিস্ট লো স্কিল জব ঢাকার বাইরে নিয়ে সেখানে কর্ম সংস্থান তৈরির সুযোগ তৈরি করা যায়।
৪। ঢাকায় যেসব সরকারি অফিসের ফিজিক্যাল ফাংশন নেই (নৌ বাহিনী, আনসার ভিডিপি, বন বিভাগ, নৌ পরিবহণ, গ্রাম উন্নয়ন, পোর্ট ব্যবস্থাপনা, গ্রামীণ ব্যাংক ইত্যাদি ইত্যাদির মত সব) তাদের হেড অফিস সহ সকল লিয়াজো অফিস ঢাকা থেকে সরাতে হবে। অন্তঃ মন্ত্রণালয় যোগাযোগ আউটলুকের আদলে সিকিউরড মেইংলিং ব্যবস্থায় করতে হবে, চিঠি চালাচালি উঠিয়ে চিঠিকে ডিজিটাল ট্রান্সফর্মেশনে আনতে হবে, এঙ্ক্রিপ্টেড সিকিউরড ডক ফর্মেটে স্টোরেইজ করতে হবে। কোটি কোটি চিঠির কাগজে দেশের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে, কাগজ আমদানীতে বৈদেশিক মূদ্রা নষ্ট হচ্ছে, অন্যদিকে কাগজের রিসাইকেলে উৎসাহ নেই।
৫। সরকারি অফিসের কাজে লাইভ কনফারেন্স সিস্টেম কাজে লাগিয়ে আন্তঃ মন্ত্রণালয় ফিজিক্যাল মিটিং, রাস্তার জ্যাম, গাড়ির তেল, ওয়ার্ক হাওয়ার ওয়েস্টেইজ কমাতে হবে।
৬। আঞ্চলিক প্রশাসন স্থানীয় সরকারকে ক্ষমতা দান করতে হবে। সাংসদদের স্থানীয় সরকারের ক্ষমতায় নাক গলানো শতভাগ উঠিয়ে দিতে হবে। (এটা আপাতত হচ্ছে না, আর এটা টেকসই করতে ২ স্তরের সংসদ এবং ভোটের % কেন্দ্রিক জন প্রতিনিধিত্বশীল নির্বাচনী ব্যবস্থা গড়তে হবে)। এটা ছাড়াও কিছু ইম্প্রুভমেন্ট আনা যায়। সাংসদদের সমূদয় কাজকে সংসদ ও আইন প্রণয়ন এবং দলীয় ইশ্তেহার ভিত্তিক করতে হবে। এরজন্য রাজনৈতিক দুর্বিত্তপণার বিপরীতে সততা দরকার, যা কিনা এই দেশে মারা পড়েছে।
৭। শুধু সচিব ছাড়া বাদ বাকি সরকারি চাকুরেদের গাড়ী দেয়া বন্ধ করে গণপরিবহন ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা লাগবে।
৮। নগরীর প্রধান বাহন মেট্রো করা লাগবে, তার পরে বাস। মেট্রো করতে দেরি হলে শুধু বাংলাদেশ রেলের লোকাল ট্রেন গুলোকে ঢাকায় সার্কুলার পথ তৈরি করে ঘুরান। যে কোন ভাবেই প্রাইভেট গাড়ি চলাচলে উচ্চ নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে হবে , তবে তা উচ্চমান গণপরিবহন করার পরেই শুধু বোইধতা পাবে হবে। অন্যথায় বিজনেস ও কর্মসংস্থান ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
এই ক্ষত বিক্ষত নগরীকে এখনও কিছুটা হলেও ইম্প্রুভ করার সুযোগ আছে। চাইলে এখনও নাগরিক জীবনের মান বাঁচানো যায়।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই মে, ২০১৮ বিকাল ৪:০৭