somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

`সেলিম আল দীনকে নাট্যকার নামে ডাকতেই ভালো লাগত'- মেহেরুন্নেসা সেলিম

২৩ শে জানুয়ারি, ২০০৯ বিকাল ৪:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রবীন্দ্র-উত্তরকালে বাংলা নাটকের অন্যতম নাট্যকার সেলিম আল দীন। ১৪ জানুয়ারি ২০০৮-এ তিনি প্রয়াত হন। দেখতে দেখতে পার হয়ে গেল একটি বছর। এ নিয়ে আজিজ মার্কেটে হঠাৎই কথা হয় কবি নওশাদ জামিলের সঙ্গে। নওশাদ জাহাঙ্গীরনগরের ছাত্র। গত বই মেলায় কবি সোহেল হাসান গালিব আর নওশাদ জামিল মিলে `কহন কথা' নামে সেলিম আল দীনের নির্বাচিত সাক্ষাৎকার নিয়ে একটি বই বের করেছিল।
নওশাদ আমাকে বলে দুজনে মিলে পারুল আপার, মানে সেলিম আল দীনের স্ত্রী মেহেরুন্নেসা সেলিমের একটি সাক্ষাৎকার নেয়ার। ভেবে দেখলাম, ব্যক্তি সেলিম আল দীন সম্পর্কে জানা ও নাট্যকার সেলিম আল দীনের বেড়ে ওঠা সম্পর্কে আমাদের আগ্রহের কমতি নেই। আর এ ব্যাপারে পারুল আপার চেয়ে ভালো আর কে-ই বা বলতে পারবেন। ফোনে আগের দিন পারুল আপার সঙ্গে কথা বলে ১২ জানুয়ারি বিকালে হাজির হই জাহাঙ্গীরনগরে।
ক্যাম্পাসে ঢুকতেই শীতবিকেলের জাহাঙ্গীরনগরের নিসর্গ যেন বলছিল, এখানেই নিভৃতে ঘুমিয়ে আছেন জন্ডিস ও বিবিধ বেলুন, মুনতাসীর, শকুন্তলা, কিত্তনখোলা, কেরামতমঙ্গল, চাকা, বনপাংশুল, হাতহদাই, প্রাচ্য, ধাবমান, স্বর্ণবোয়ালসহ অসংখ্য নাটকের চরিত্রদের পিতা সেলিম আল দীন। মনে মনে একবার ইচ্ছে হয়, এই পিতার সঙ্গে কথা বলতে! শুনেছি তিনি নাকি তার ছাত্রদের অনেককেই `বাবা' বলে সম্বোধন করতেন।
আমি মোবাইল ফোনে কথা বলি নওশাদের সঙ্গে, সে এসে আমাকে নিয়ে যায় তার রুমে। নিজেদের মধ্যে পরামর্শ চলতে থাকে কী ধরনের প্রশ্ন করা যায়। এক ফাঁকে দেখা হয় তরুণ প্রাবন্ধিক তৈমুর রেজার সঙ্গে। তৈমুরের সঙ্গেও আমাদের কথা চলে সেলিম আল দীনকে নিয়ে।
আমি আর নওশাদ জামিল যখন যাই সেলিম আল দীনশূন্য সেলিম আল দীনের বাসায় তখন প্রায় শেষ বিকাল। কলিং বেল চাপতেই দরজা খুলে যায়। ভেতরে ঢুকতেই দেখি ড্রয়িং রুমের দেয়ালে ঝুলন্ত সেলিম আল দীনের অনেকগুলো ছবি। পারুল আপা আমাদের জানান কীভাবে সেলিম আল দীনকে তিনি আগলে রাখতেন, জানান কীভাবে বেড়ে উঠেছেন লেখক হিসেবে সেলিম আল দীন। অবাক লাগে জেনে, প্রথম দিকে লেখার পর্যাপ্ত কাগজও ছিল না সেলিম আল দীনের। তখন কখনো কখনো পারুল আপা সেলিম আল দীনের লেখার জন্য কলেজের পরীক্ষার্থীদের লেখার পর খাতার সঙ্গের অতিরিক্ত লুজশিটগুলোর কাগজও নিয়ে আসতেন! আর ওই কাগজে লিখতেন সেলিম আল দীন!

: সলিম আল দীনের সঙ্গে আপনার প্রথম কোথায় দেখা হয়েছিল?
মেহেরুন্নেসা সেলিম : আমাদের প্রথম দেখা করটিয়া কলেজে। আমার আব্বা করটিয়া কলেজের শিক্ষক ছিলেন। আটষট্টি সালের শেষ কিংবা উনসত্তর সালের কথা। তখন আমি টাঙ্গাইলের করটিয়া সা'দত বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের দ্বিতীয় বর্ষ সম্মানের ছাত্রী। এর মধ্যে সেলিম আল দীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এসে ভর্তি হলো আমাদের কাসে। ইয়া গোঁফ, বুদ্ধিদীপ্ত চোখ, মাথায় একরাশ ঝাকড়া চুল, চোয়াল দুটি ভাঙা, গায়ের রঙ উজ্জ্বল শ্যামলা, পরনে চেক শার্ট; কিন্তু সপ্রতিভ।
সেদিন আমাদের কাসটি ছিল তোফাজ্জল হোসেন স্যারের। নতুন ওই ছেলেটিকে স্যার প্রশ্নবাণে বিদ্ধ করতে লাগলেন, এখানে আসার কারণ জানতে চাইলেন। স্যার বললেন, `বাপু মানুষ মফস্বল ছেড়ে শহরে যায়, আর তুমি কিনা শহর থেকে মফস্বলে এসেছ?' স্যারের এ কথা শুনে বেচারা বড় লজ্জা পেয়ে গেল।

: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে সেলিম আল দীন আপনাদের ওখানে কেন ভর্তি হতে গেলেন?
মেহেরুন্নেসা সেলিম : ঢাকা ভার্সিটিতে তখন সরকার-সমর্থিত ছাত্র সংগঠন এন.এস.এফ. দলের দুর্দান্ত প্রতাপ। তাদের বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস ছিল না কারো। নাট্যকার কিভাবে যেন তাদেরই কোপানলে পড়ে গেল। পরে বাধ্য হয়ে চলে আসে এখানে। প্রথমে ভর্তি হতে চেয়েছিল আনন্দমোহন কলেজে। কিন্তু এখানে সাবসিডিয়ারি বিষয়ে মিল ছিল না। শেষ পর্যন্ত সে সা'দত বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে ভর্তি হয়ে গেল।

: তখন সা'দত বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের পরিবেশ কেমন ছিল?
মেহেরুন্নেসা সেলিম : অনেক আগে থেকেই এ ক্যাম্পাস উৎসবমুখর ছিল। তখন আমাদের অধ্যক্ষ ছিলেন তোফায়েল আহমেদ। মূলত তাঁর উৎসাহেই এখানে প্রায়ই কোনো না কোনো অনুষ্ঠান লেগেই থাকতো। চলতো নাটক প্রদর্শনী। শৈশব থেকেই আমরা নাটক দেখতে অভ্যস্ত ছিলাম।

: সেলিম আল দীনের সঙ্গে সে সময় আপনার কেমন সম্পর্ক ছিল?
মেহেরুন্নেসা সেলিম : ক্লাস করি নিয়মিত। সেমিনারে পড়াশোনা করি। বেশ আছি। মাঝে মধ্যে মেয়েদের হোস্টেলে গিয়ে মনু, হাজেরা, হালিমা আপার সঙ্গে ধুমছে আড্ডা দিই। লেখক হিসেবে নাট্যকারের তখনই সামান্য খ্যাতি ছিল। প্রবন্ধ-নিবন্ধ লেখে, কবিতা, নাটক লেখে। বিভিন্ন পত্রিকায় ছাপাও হয়। ক্যাম্পাসে সে বুক ফুলিয়ে চলে। মাঝে মধ্যে ওর ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণে ফোড়ন কেটে বলতাম, `শহরের চুনোপুঁটি মফস্বলে এলে বাঘ বনে যায়। ঢাকা শহরে হলে এ অহংকার মানাতো।' সে রাগে গজগজ করে বলতো `দেখা যাবে।'
: সেলিম আল দীনকে বারবার নাট্যকার বলছেন। আপনি কী তাঁকে `নাট্যকার' বলেই সম্বোধন করতেন?
মেহেরুন্নেসা সেলিম : কখনই তাঁকে নাম ধরে ডাকতাম না। কেমন যেন লাগত। সেলিম আল দীনকে নাট্যকার নামে ডাকতেই ভালো লাগতো বেশি। আর আমি প্রথম থেকেই প্রত্যাশা করতাম সে যেন বড় নাট্যকার হয়।

: একে অপরের প্রতি অন্যরকম ভালোলাগার শুরুটা কিভাবে হয়?
মেহেরুন্নেসা সেলিম : দিন বয়ে যায়, নাট্যকার আমার প্রতি দুর্বলতা অনুভব করতে থাকে। আমি শুরুতে এর বিন্দু-বিসর্গও বুঝতে পারিনি। একদিন বিকালের দিকে আমাদের বাসার গেটে এসে আমাকে ডেকে পাঠালো। বলল, `আমি বাড়ি চলে যাবো। আর পড়াশোনা করবো না।' বিস্মিত হয়ে আমি বললাম, `কেন, পড়াশোনা ছেড়ে বাড়ি চলে যাবেন?' বলল, `এমনি, ভালো লাগে না কিছু। আপনি যদি যেতে বারণ করেন তবে যাবো না?' এ আবার কেমন কথা, আমি বললে যাবে না। সাতপাঁচ না ভেবেই আমি বললাম, `না, বাড়ি যাবেন না। কেন যাবেন?'
এই এতটুকুই। আমি খুবই সরল ও বোকা ছিলাম যে, তাঁর মনোবাসনা এতটুকুও আঁচ করতে পারিনি। সহপাঠীর সঙ্গে ভালোবাসা, প্রেম করা এসব কথা কখনই মনে আসেনি আমার। অতশত তলিয়ে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখিনি কখনো। নাট্যকার চলে গেলে আমার ভেতরে হাজারো প্রশ্ন এসে আমাকে বিভ্রান্ত করে ফেললো।
দিন যাচ্ছিল সময়ের নিয়মে। কয়েক দিন পরের কথা। দিনক্ষণ এখন আর মনে নেই। বিকালে মেয়েদের হলের দারোয়ান একটা বই নিয়ে এলো আমার কাছে। প্রিয় বান্ধবী হাজেরা সুলতানা পাঠিয়েছে ‘লাইলী মজনু’ বই। বইটি আমার কাছ থেকে সে নিয়েছিল, ফেরত পাঠিয়েছে। খুলতেই দেখি দুপাতা কাগজ, আমার কাছে লেখা নাট্যকারের প্রেমপত্র। তিনচার পৃষ্ঠার দীর্ঘ প্রেমকাব্য। আমার আপাদমস্তক রোমান্সে নয়, বরং ভয়ে থরথর করে কাঁপতে লাগলো। গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেল। স্থির হতে বেশ খানিকটা সময় লাগলো। এবার পত্র পঠন। আমাকে তার খুব পছন্দ, হৃদয়ের গহীন থেকে ভালোবাসে ইত্যাদি ইত্যাদি।

: তখন আপনার প্রতিক্রিয়া কেমন ছিল...
মেহেরুন্নেসা সেলিম : নাট্যকার প্রায়ই চিঠি লিখতো। চিঠি পঠনে এতটুকু কার্পণ্য ছিল না আমার। এত সুঠাম ভাষায় লেখা সে চিঠি যে বারবার পড়লেও কান্তি আসতো না। তবু আমি ছিলাম নির্বিকার। আমার দিক থেকে কোনো সাড়াই ছিল না। চিঠির প্রত্যুত্তর দেয়ার মতো ভাষাও আমার জানা ছিল না। আমার কেন জানি এসব পছন্দ হতো না। প্রায় একতরফাভাবেই সে প্রেম নিবেদন করে চলছিল। আর এভাবেই যাচ্ছিল সব। এরপর সময় গড়ায়। আমি এমএ পড়ার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন ভর্তি হই, উনিও ভর্তি হন।

: আপাদের বিবাহে ড. আহমদ শরীফের ভূমিকা ছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি ছিলেন আপনাদের শিক্ষক। বিষয়টা একটু খোলাসা করে বলবেন?
মেহেরুন্নেসা সেলিম : সময়টা ছিল চুয়াত্তর সালের আগস্টের শেষ দিক। আমি তখন এম.এড দ্বিতীয় পর্বের ছাত্রী। আত্মীয়স্বজনের প্রবল আপত্তি এবং নাট্যকারের প্রচ- চাপের মুখে তাকে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিই। এতদিনের লালিত গাম্ভীর্যকে বিসর্জন দিতে হলো। নাট্যকারের শাণিত কথার অকাট্য যুক্তি ও আবেগকে অগ্রাহ্য করা আমার পক্ষে কোনোভাবেই সম্ভব হলো না।
চুয়াত্তর সাল। সারাদেশে দুর্ভিক্ষ চলছে। আমার জেঠাতো বড় ভাই হায়াত আলী খান (বর্তমানে পর্যটন করপোরেশনে কর্মরত) সাহেবের হাতিরপুলের বাসায় এনগেইজমেন্ট (আকদ) হওয়ার কথা। সে মতো ব্যবস্থা হয়েছে। কিন্তু নাট্যকারের বন্ধুরা তাকে পরমর্শ দিল `আকদ' নয় বিয়ে করেই বউ ঘরে তুলতে। তাদের ভাষ্য ছিল, `এই আক্রার বাজারে ঘটা করে যে বউ ঘরে তুলবি অর্থের জোগান দেবে কে?' কথা সত্য। এ আকালে কে-ই বা সাহায্যের হাত বাড়াবে।
অবশেষে বাচ্চু ভাই (নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু), নাট্যচক্রের ম. হামিদ, ড. এনামুল হক খান, নাট্যকারের ভগ্নিপতি শাহজাহান ফিরোজ, ঢাকা থিয়েটারের অনুজ বন্ধুরা এবং আমার কয়েকজন ঘনিষ্ঠ বান্ধবীর সাহচর্য ও সহযোগিতায় বিয়ে হয়ে গেল। বিয়েতে পরম পূজনীয় শ্রদ্ধাভাজন ড. আহমদ শরীফ স্যারের বিশেষ ভূমিকা ছিল। মূলত তার অনুমোদন পেয়েই আমরা বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিই। আর শরীফ স্যারের কারণেই আমার বাবা অবশেষে এ বিয়ে মেনে নেয়।
বিয়ের কিছুদিন পরই তো সেলিম আল দীনের চাকরি হলো। আপনারা চলে এলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। অধ্যাপনার সূত্রে অনেকদিন যাবৎ ক্যাম্পাসই ছিল সেলিম আল দীনের প্রকৃত আবাস। অধিকাংশ লেখা বা সৃষ্টিকর্মের সঙ্গে জড়িয়ে আছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, শকুন্তলা-পরবর্তী সব
লেখাই নাকি জাহাঙ্গীরনগর ক্যাম্পাসে থাকার সময়ে লেখা হয়?
মেহেরুন্নেসা সেলিম : বিয়ের কিছুদিন পরই আমরা চলে আসি এই ক্যাম্পাসে। আলবেরুনী হলের বর্ধিত ভবনের ছোট্ট একটা রুমে আমাদের নতুন সংসারের যাত্রা শুরু হয়। এ বাসায় থাকার সময়ই সে লিখল `আতর আলীদের নীলাভ পাট' নাটক। তখনো আমার পড়াশোনা শেষ হয়নি। আমি হলে থাকি। তখন রোববার প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকতো। প্রতি শনিবার কাস শেষে চলে আসতাম ক্যাম্পাসে। রান্না করতাম রাতে। সকালে নাস্তা করে দুজনে বেরিয়ে পড়তাম ক্যাম্পাসে। সকাল থেকে দুপুর অবধি বেড়িয়ে ঘরে ফিরতাম।
: তখনকার কোনো মজার স্মৃতি বলা যায়?
মেহেরুন্নেসা সেলিম : একদিন নাট্যকার তাড়াতাড়ি করে শেভ করতে গিয়ে অর্ধেক গোঁফ কেটেছে, বেশ খানিকটা বাকি রয়ে গেছে। রিকশায় উঠে বেশ খানিকটা পথ যেতেই বিষয়টা আমার চোখে পড়লো। নাট্যকার তাড়াতাড়ি হাত দিয়ে গোঁফের অংশটুকু ঢেকে রিকশা থামিয়ে দোকান থেকে একটা ব্লেড কিনলো। ভার্সিটিতে নেমে টয়লেটে গিয়ে বাকি গোঁফ কেটে তবেই সাভারের উদ্দেশ্যে যাত্রা। হাসতে হাসতে বলল, `ভাগ্যিস তুমি দেখেছিলে, না হলে কী লজ্জাই না পেতাম।'

: অন্য প্রসঙ্গে আসা যাক। লেখালেখির গোড়া থেকেই আপনি সেলিম আল দীনকে খুব কাছ থেকে দেখেছেন, অনুপ্রেরণা দিয়েছেন। প্রথম দিককার নাটক `সংবাদ কার্টুন' কিংবা `জন্ডিস ও বিবিধ বেলুন' যখন লেখা হয়, তখন তো লেখক হিসেবে সেলিম আল দীন খুবই অপরিচিত নাম। নবীন এক লেখকের সঙ্গে আপনার সংসারজীবনও শুরু হয়। প্রস্তুতিকালের লেখক সেলিম আল দীন সম্পর্কে কিছু বলুন?
মেহেরুন্নেসা সেলিম : নাট্যকার ছিল প্রচ- প্ররিশ্রমী মানুষ। লেখালেখিতে সে সবটুকু মনোযোগ ঢেলে দিয়েছিল। অভিজ্ঞতাও ছিল বেশ। বিচিত্র অভিজ্ঞতায় ঋদ্ধ না হলে কোনো লেখাই হয়তো লেখা হয়ে ওঠে না। শুধু কাগজ-কলমে সখ্য হলেই যে লেখক হওয়া যায় না, লেখার ব্যাপারটি যে কতটা শ্রমসাধ্য অভিজ্ঞতালব্ধ, ধৈর্য ও অনুশীলনসাপেক্ষ, সে আমি নাট্যকারের সান্নিধ্যে থেকে অনুভব করেছি। উপাত্ত সংগ্রহের ক্ষেত্রে সে বড় বেশি পরিশ্রমী ও কঠোর অধ্যবসায়ী ছিল। বিভিন্ন বিষয়ের ওপর এক একটি লেখা লিখতে গিয়ে তাকে কী কঠিন কঠোর পরিশ্রমই না করতে হয়েছিল। সবকিছুকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখত সে, এক মুহূর্তের দেখা নয়, সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্মভাবে একেবারে কাছে থেকে প্রতিটি বিষয়ের গভীরে মিশে গিয়ে দেখা, শোনা এবং জানা। কিত্তনখোলা থেকে শুরু করে বনপাংশুল ও প্রাচ্য প্রতিটি নাটকের ক্ষেত্রেই এ কথা বলা যায়। উপাত্ত সংগ্রহের জন্য সে বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে সেখানকার মানুষের সঙ্গে মিশেছে, থেকেছে, খেয়েছে। তাদের জীবনাচরণ, সামাজিক, ধর্মীয় ও ভাষাগত ব্যাপারগুলো অনুধাবনের চেষ্টা করেছে।

: সেলিম আল দীনের প্রথম দিকের লেখাগুলো ছিল কিছ্টুা পাশ্চাত্যরীতি ঘরানার, এরপরে তিনি সম্পূর্ণ প্রাচ্য ধারায় লেখা শুরু করলেন। হঠাৎ করেই কী তাঁর এ মতাদর্শিক পরিবর্তন হলো?
মেহেরুন্নেসা সেলিম : আমার বিয়ের পর প্রথম যখন আমাদের গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জের তালুকনগরে নাট্যকার বেড়াতে যায়, সময়টা শীতকাল। ঘোড়ার গাড়িতে করে সোনালি সর্ষে ক্ষেতের ভেতর দিয়ে রবিশস্যের মদির গন্ধ বয়ে বয়ে দূর পথে যাত্রা। তারই চমৎকার বর্ণনা পাওয়া যায় কিত্তনখোলার প্রথম অংশে। আমাদের গ্রামের আজহার বয়াতীর মাঘী মেলাই তাকে কিত্তনখোলা লিখতে উদ্বুদ্ধ করেছিল।
বয়াতীর উঠানে প্রতি বছর মাঘ মাসে সারারাত গান গেয়ে গুরুর উদ্দেশে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হতো। বছরে একটা নির্দিষ্ট সময়ে মেলা বসতো। মূলত ওই সময়ই তার বৃহত্তর জনজীবন ও প্রকৃতির সঙ্গে পরিচয়ের শুরু।

: `হরগজ' নাটকেও মানিকগঞ্জের পটভূমির দেখা পাই। মানিকগঞ্জের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া একটি ঝড়কে কেন্দ্র করে এটি লেখা হয়।
মেহেরুন্নেসা সেলিম : মানিকগঞ্জের হরগজ নামের এলাকায় এক ভয়াবহ প্রলঙ্করী টর্নেডো সংঘটিত হয় ১৯৮৯ সালে। ওই ঝড়ের ভয়াবহতা এমনই প্রচ- আর ভয়ঙ্কর ছিল যে, ঝড়বিধ্বস্ত এলাকার বিবরণ লোকমুখে শুনে, পত্রিকায় পড়ে ভয়ে কুঁকড়ে শিউরে উঠেছিলাম আমরা। প্রতিদিনই বিশ্ববিদ্যাল থেকে দলে দলে শিক্ষার্থীরা যেত ত্রাণসামগ্রী নিয়ে। ফিরে এসে বর্ণনা করত ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা। কী করে একটা বিশাল ওজনের ভারবাহী ট্রাক নদীর এপার থেকে ওপারে গিয়ে দিব্যি দাঁড়িয়েছিল, ভরা পুকুরগুলোতে একবিন্দু পানি অবশিষ্ট ছিল না, সবটুকু পানি মাছ ও জলজ প্রাণীসহ কী করে উঠে এসেছিল শস্যক্ষেতে, খেজুর গাছ থেকে কী করে উদ্ধার করা হয়েছিল কাঁটাবিদ্ধ মহিলার মৃতদেহÑ এমনি অজস্র ঘটনা। এ ছাড়া বেঁচে থাকা মানুষের বিচিত্র অভিজ্ঞতার গল্প কল্পনাকেও হার মানিয়েছিল সেদিন। নাট্যকার এ ঘটনাকে কেন্দ্র করেই লিখল হরগজ। নাটকটির প্রায় প্রতিটি ঘটনা এবং তথ্যাবলিই ছিল সত্যাশ্রয়ী।

: আপনাদের বাসায় তখন অনেক লেখক-শিল্পীর যাতায়াত ছিল। শিল্প-সাহিত্য নিয়ে নিয়মিত আড্ডা হতো। তখনকার ওই আড্ডাগুলোর কথা মনে পড়ে আপনার?
মেহেরুন্নেসা সেলিম : বাসায় তখন প্রায় নিয়মিতই শিল্প-বিষয়ক আড্ডা বসতো। আসতো নাট্যকারের ছাত্র-ভক্তরা, আসত শিমুল-বাচ্চু, সুর্বণা-ফরিদী, আফজাল, আসাদ, পীযূষ, জামিল, প্রয়াত কবি রুদ্র, ঔপন্যাসিক ইমদাদুল হক মিলন, ঢাকা থিয়েটারের অন্য ভ্রাতৃপ্রতিম বন্ধুরা। কে আসেনি? পরিচিতজন প্রায় সবাই আসতো। চলতো গল্পগুজব, নতুন নাটকের পাঠ, সাহিত্য নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা। সেইসব দিনের কথা খুবই মনে পড়ে, খুবই। সবাই আজ বড় বেশি ব্যস্ত, নাগরিক সভ্যতা হরণ করেছে তাদের হৃদয়াবেগ। কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে যেন বেশি কঠিনতর হয়ে উঠেছে সবাই। এখন যেন কারো হাতেই সময় নেই, সবাই মহাব্যস্ত।

: বাংলাদেশ টেলিভিশনে ভালো নাটকের সংখ্যা হাতেগোনা। সেলিম আল দীনের নাটক `ভাঙ্গনের শব্দ শুনি', `গ্রন্থিকগণ কহে' ও `রক্তের আঙ্গুরলতা' বিপুল দর্শকপ্রিয়তা পেয়েছিল। টিভি নাটকেও তিনি ছিলেন সফল। টাকার জন্যই তিনি নাকি টিভি নাটক লিখতেন। এ সম্পর্কে আপনার অভিমত কী ছিল?
মেহেরুন্নেসা সেলিম : আমার শ্বশুর মরহুম মফিজ উদ্দিন আহমেদ ছিলেন অত্যন্ত ভালো মানুষ। স্বাধীনতা যুদ্ধের কিছুদিন আগেই চাকরি থেকে তাঁর অবসর হয়। ছয় ভাইবোন নিয়ে নাট্যকারের পরিবার তখন যেন মহাসমুদ্রে পড়ে গেল। আর্থিক অবস্থাও খুব নাজুক ছিল। যুদ্ধের পরে বোনদের পড়াশোনার খরচ সে-ই দিত। টাকা জোগাড় করার জন্য তাকে বেশ পরিশ্রম করতে হয়। বন্ধুরা পরামর্শ দিল, টিভি নাটক লিখলে টাকা পাওয়া যায়। নাট্যকার টিভি নাটক লেখা শুরু করলো। সত্তরের পরে প্রায় নিয়মিতই তার নাটক প্রচারিত হতো। দর্শকপ্রিয়তাও ছিল বিপুল। ‘ঘুম নেই’ টিভিতে প্রচারিত তাঁর প্রথম নাটক। পরবর্তী সময়ে তাঁর লেখা নাটক `মুনিরা মফঃস্বলে', `অশ্রুত গান্ধার', `শ্যামল ছায়ায়', `হলুদ পাতার গান', `ছায়া-শিকারী' খুব জনপ্রিয় হয়। `ভাঙ্গনের শব্দ শুনি', `গ্রন্থিকগণ কহে' ও `রক্তের আঙ্গুরলতা' নাটকের জনপ্রিয়তা ছিল বিপুল।

: শেষদিকে সেলিম আল দীন নিয়মিত ডায়েরি লিখতেন। ডায়েরি লেখার খাতাটিও নাকি আপনার উপহার দেয়া?
মেহেরুন্নেসা সেলিম : একানব্বই সালের জানুয়ারির প্রথম দিকে বাংলাবাজারে বই কিনতে গিয়ে একটি রোলটানা মোটা খাতা কিনেছিলাম নাট্যকারকে উপহার দেব বলে। উদ্দেশ্য ছিল তার স্মৃতিকথা যখন যা মনে আসে লিখবে। স্মৃতি কখনো পর্যায়ক্রমে মননে ধরা দেয় না, বড্ড বেশি এলোমেলো সে। আমরা সারাদিনে যা কিছু বলি তার পুরোটাই তো প্রায় বিগত দিনের স্মৃতি কথায় আচ্ছন্ন। আমার উদ্দেশ্য ছিল নাট্যকার তার অতীতে ফেলে আসা দিনগুলো, শৈশব-কৈশর-বাল্যবয়সের ঘটনাগুলো কুড়িয়ে কুড়িয়ে পৃষ্ঠাবন্দি করবে; তারপর সেগুলোকে সুশৃঙ্খলভাবে জীবনীমূলক একটা লেখা দাঁড় করাবে। খাতাটি মুখ থুবড়ে পড়ে থাকলো একদশক কী একযুগ। কলমের আঁচড় পড়েনি তার গায়ে। সযতেœ তোলা ছিল পা-ুলিপি রাখার আলমারিতে। ২০০১ সালের একদিন নাট্যকার আমাকে ডেকে বলল, `তুমি আমাকে একটি খাতা কিনে দিয়েছিলে, সেটি কোথায়? আছে কি? আমি আমার জীবনে দেখা একশজন মানুষের গল্প বলবো, তাদের নিয়ে লিখবো।' আমি সম্মতিসূচক উত্তর দিয়ে তাকে খাতাটি বের করে দিই। নাট্যকার এটিকে স্মৃতিচারণের খাতা না করে এতে দিনলিপি লেখা শুরু করলো। তবে এতে যে তার দেখা মানুষের গল্প নেই তা কিন্তু নয়। ডায়েরির অনেক জায়গাতেই স্মৃতিচারণমূলক অনেক বিষয় ও প্রসঙ্গ এসেছে। এটাকে বিশুদ্ধ দিনপঞ্জি বলা যাবে না, আবার বিশুদ্ধ স্মৃতিচারণমূলক লেখাও বলা সম্ভব নয়। দুইয়ের মেলবন্ধনে তৈরি হয়েছে এ লেখাগুলো।

: ডায়েরির বেশ বড় একটা অংশই অপ্রকাশিত। এবারের একুশে বইমেলায় এটি বই আকারে বের হওয়ার কথা, ডায়েরির লেখাগুলো প্রসঙ্গে অনেকেরই কৌতূহল রয়েছে।
মেহেরুন্নেসা সেলিম : নাট্যকারের দিনলিপি ও স্মৃতিচারণমূলক এ লেখাগুলো ভিন্ন মাত্রিক, ভিন্ন স্বাদের। শিল্পমূল্য বিচারে তার অন্য যে কোনো লেখার চেয়ে এ লেখাকে ছোট করে দেখার অবকাশ নেই। এ লেখা তার অন্যান্য লেখার মতোই সাহিত্যিক মূল্যে সমৃদ্ধ। এতে একদিকে যেমন আছে নিত্যনৈমিকতার অনুপুঙ্খ বিবরণ, ব্যক্তিগত আবেগ-উচ্ছ্বাস, তেমনি আছে স্মৃতিচারিতা। জীবন-জগৎ-বিশ্বপ্রকৃতিকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখেছেন নাট্যকার কী অপূর্ব মহিমায়।
সেলিম আল দীনের জীবনদর্শন, মনস্তাত্ত্বিক দৃষ্টিভঙ্গি, মৃত্যুচিন্তা, রাষ্ট্র-ভাবনা, নাট্যকারের জীবনের বিচিত্রতর উপলব্ধিকে জানতে হলে তার এ লেখাগুলো পাঠ করা প্রয়োজন।

: ব্যক্তি সেলিম আল দীন, লেখক সেলিম আল দীনকে আপনি কিভাবে মূল্যায়ন করবেন?
মেহেরুন্নেসা সেলিম : আবেগী ও অস্থির চিত্তের এই মানুষটিকে আমি প্রথম দর্শনেই বুঝেছিলাম, লোকটির ভেতরে প্রচ- একটা শক্তি আছে। ব্যক্তি সেলিম আল দীন কোমল ও কঠোরে মিলানো এক অন্যরকম মানুষ। এক্ষেত্রে জীবনে সাত্বিক পুরুষ, লেখার সময় কারো সঙ্গে আপস করতো না। অসম্ভব পরিশ্রমী, লক্ষ্যে পৌঁছানোর পূর্ব পর্যন্ত সে ছিল অস্থির।

: সেলিম আল দীনের সব নাটকের উদ্বোধনী শোতে আপনাকে প্রায়ই তার পাশে দেখা যেত। আপনারা একসঙ্গে বসে নাটক উপভোগ করতেন। নাটক দেখা নিয়ে আপনার কোনো ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কথা আমাদের বলা যায়?
মেহেরুন্নেসা সেলিম : নাটকের প্রতি তার যে কী গভীর ভালোবাসা ছিল সে গল্প বলি এবার। কিত্তনখোলার প্রথম মঞ্চায়ন। আমি যাইনি এ নাটকের প্রিমিয়ার শো দেখতে। তখন নাট্যকারের সঙ্গে কোনো বিষয়ে আমার মান-অভিমান চলছিল। এর আগে প্রতিটি নাটকের প্রথম মঞ্চায়নের পরই আমার মতামত জানতে চাইতো নাট্যকার। সেদিন হয়তো তেমনটিই প্রত্যাশা করেছিল। বার কয়েক অনুরোধ জানিয়ে ব্যর্থ হয়ে সে একাই নাটক দেখতে গিয়েছিল। কলেজ থেকে ফিরে দেখি একটা চিরকুট লিখে রেখে গেছে। আবেগদীপ্ত চিরকুটে সে লিখেছিল, কিত্তনখোলা নাটকটির দর্শকপ্রিয়তা এবং গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে আকাশপ্রমাণ সংশয়, দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ও সংকোচ ছিল তার। চিঠির এক পর্যায়ে লেখা ছিল নাটকটি দর্শকের কাছে গ্রহণযোগ্যতা হারালে আত্মহত্যা করা ছাড়া আর কোনো পথ খোলা নেই তার সামনে। আমি ভয়ে শিউরে উঠেছিলাম সেদিন। তার ফিরে না আসা পর্যন্ত অধীর উৎকণ্ঠায় অপেক্ষা করা ছাড়া আর কিছুই করার ছিলা না আমার। আজ স্বীকার করতে দ্বিধা নেই, সেদিনের সেই মানসিক অবস্থায় তার সঙ্গে থাকাটা কতটাই না জরুরি ছিল আমার জন্য। কী সাংঘাতিক কথা ভেবে দেখ, শিল্পের জন্য আত্মহনন। শিল্পের প্রতি কতটা অনুগত হলে, তার প্রতি ভালোবাসা আর নিষ্ঠা থাকলে, তাকে সন্তান জ্ঞানে লালন করলে এ কঠিন উচ্চারণ সম্ভব। হৃদয়ের কতটা রক্তক্ষরণে রক্তাক্ত হলে, ক্ষতবিক্ষত হলে এমন সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা ভাবে মানুষ। শেষ পর্যন্ত শিল্পের জন্যই নাট্যকার হয়তো তার জীবনটা এমন করেই বলি দিয়েছিল, কে জানে।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে জানুয়ারি, ২০০৯ সন্ধ্যা ৬:০৬
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মানুষের জন্য নিয়ম নয়, নিয়মের জন্য মানুষ?

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৫:৪৭



কুমিল্লা থেকে বাসযোগে (রূপান্তর পরিবহণ) ঢাকায় আসছিলাম। সাইনবোর্ড এলাকায় আসার পর ট্রাফিক পুলিশ গাড়ি আটকালেন। ঘটনা কী জানতে চাইলে বললেন, আপনাদের অন্য গাড়িতে তুলে দেওয়া হবে। আপনারা নামুন।

এটা তো... ...বাকিটুকু পড়ুন

একটা গাছ কাঠ হলো, কার কী তাতে আসে গেলো!

লিখেছেন নয়ন বড়ুয়া, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:০৬



ছবিঃ একটি ফেসবুক পেইজ থেকে

একটা গাছ আমাকে যতটা আগলে রাখতে চাই, ভালো রাখতে চাই, আমি ততটা সেই গাছের জন্য কিছুই করতে পারিনা...
তাকে কেউ হত্যা করতে চাইলে বাঁধাও দিতে পারিনা...
অথচ... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। কালবৈশাখী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:২৪



গত পরশু এমনটি ঘটেছিল , আজও ঘটলো । ৩৮ / ৩৯ সে, গরমে পুড়ে বিকেলে হটাৎ কালবৈশাখী রুদ্র বেশে হানা দিল । খুশি হলাম বেদম । রূপনগর... ...বাকিটুকু পড়ুন

একজন খাঁটি ব্যবসায়ী ও তার গ্রাহক ভিক্ষুকের গল্প!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৪


ভারতের রাজস্থানী ও মাড়ওয়ার সম্প্রদায়ের লোকজনকে মূলত মাড়ওয়ারি বলে আমরা জানি। এরা মূলত ভারতবর্ষের সবচাইতে সফল ব্যবসায়িক সম্প্রদায়- মাড়ওয়ারি ব্যবসায়ীরা ঐতিহাসিকভাবে অভ্যাসগতভাবে পরিযায়ী। বাংলাদেশ-ভারত নেপাল পাকিস্তান থেকে শুরু করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×