বেকায়দা অবস্থায় আপনাকে পরতেই হবে যদি আপনি বাংলাদেশে থেকে পরিস্থিতি না বুঝে কথা বলেন। মানুষ এখানে ভয়াবহ রকম অশহনশীল। কারো কোন কথা পছন্দ না হলে খুন করে ফেলতে প্রস্তুত। যেমন খুন হয়ে গেল অভিজিৎ রায়। এখানে আওয়ামিলিগের সমালোচনা করলে বিএনপি হিসাবে চিহ্নিত হয়ে যাবার ভয় থাকে। তেমনি বিএনপির সমালোচনা করলে আপনাকে আওয়ামিলিগ ঠাওরাবে মেজরিটি। নাস্তিকের সাথে গলা না মেলালে আপনি হবেন জামাতি ছাগু। আবার জামাতি ছাগুদের সমালোচনা করলে হয়ে যাবেন বলির পাঁঠা নাস্তিক। "মুক্তমনা" হওয়া এখানে দুরুহ ব্যাপার।
আমার মতে নাস্তিক আর ছাগু আসলে একি মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ। রাস্তার কুকুর যেমন মানুষ দেখলে পাশ কেটে যায় কিন্তু আরেক কুকুরের মুখোমুখি হলে ঝগড়া বাঁধিয়ে বসে তেমনি হচ্ছে নাস্তিকে ছাগুতে সম্পর্ক। দুইটারই স্থায়ী ঠিকানা বোকার স্বর্গ। দুইজনই আছেন এক সমস্যা নিয়ে। সমস্যাটার নাম ধর্ম। কর্মে ফারাক। একজন আছেন ঐটাকে প্রতিষ্ঠিত করতে ব্যাস্ত আর আরেকজন ধ্বংস করতে। নাস্তিকের ধারনা ধর্ম দুরীভুত হলে সব সমস্যা দুরিভূত হবে। মানুষ পেট পুরে খাবে, কাজ করবে সবাই, রাজনিতিবিদরা জালিয়াতি ছেড়ে দিবে, খড়ায় মাঠ ফাটবেনা, নদীতে বান আসবেনা, গোলাভর্তি ধান আর পুকুরভর্তি মাছ থাকবে ইত্যাদি ইত্যাদি। আবার ছাগুরও ধারনা ধর্ম প্রতিষ্ঠিত হলেই ঐসব হয়ে যাবে। নাস্তিক বুঝতেই চায়না যে বর্তমান যুগে ধর্ম কোন বড় সমস্যা নয়, বরং আমাদের মতন দেশে ধর্মই অনেক মানুষের শেষ ভরসা। মানুষ যখন নেতা দ্বারা নিগৃহীত হয়, পুলিশের দ্বারা লান্ছিত হয়, নিজের প্রাপ্য জিনিষ বেহাত হয়ে যেতে দেখে, বিনাদোষে জেল খাটে, অকালে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রান হারায় কারো সন্তান, অন্যায়ের বিরুদ্ধে বিচার চেয়ে নিরাশ হয় তখন তাদের শেষ ভরসা ঐ এক আল্লাহ বা ঈশ্বর। সেই আল্লাহ বা ঈশ্বরের কাছে অসহায় মানুষ নিজেকে শঁপে দিয়ে কিন্চিৎ শান্তিলাভের চেস্টা করে। এদিকে খেয়েপরে মোটাতাজা হয়ে ওঠা নাস্তিক বাবুরা ইস্ত্রী করা জামা জুতা গায়ে বসে বসে অলস সময় পার করেন তত্ত্ব কথা আর আমদানি করা বিদেশি সাহেবদের যতোসব দাঁতভাংগা থিওরী কপচিয়ে, কবেকার কোন মোহাম্মদের এগারো স্ত্রী নিয়ে জাবর কেটে। এসবে কার কি এসে যায়? তোমরা যখন গরীব অসহায়ের শেষ আশ্রয় আল্লাহকে নিয়ে টানাহেঁচড়া করো তখন কি ভেবে দেখো যে এর বিনিময়ে আমি ওদেরকে কিসের ভরসা দিচ্ছি? পৃথিবীর সব মানুষকে নাস্তিক বানিয়ে ফেলা যাবেনা। এটা অসম্ভব। যেমন তামাকের গায়ে বড় বড় করে সতর্ক বানী লিখলেও গোটা দুনিয়াকে ধুমপানমুক্ত করা যাবেনা, ঠিক তেমন। একি কথা বলা যায় আস্তিকদেরকেও। পৃথিবীর সবাইকে ঈশ্বর বিশ্বাসী বানিয়ে ফেলা সম্ভব না। কেন আপনারা একে অপরের সাথে খামোখা ঝগড়ায় লিপ্ত হন? পারলে মানুষকে ভালো কিছু শিখান। মানুষকে শিখান যে, প্রকাশ্য লোকালয়ে এক বা একাধীক অস্ত্রধারী আচমকা কারো উপর চড়াও হলে সবাই গরু ছাগলের মতন তামশা না দেখে সম্মিলিত ভাবে আক্রমনকারীদের বাধা দিলে কোন অঘটন ঘটেনা। এটা শেখান যে দুর্বৃত্তরা আসলে সম্মিলিত প্রতিরোধের সামনে দারুন রকম শক্তিহীন। একিভাবে মানুষ যখন কোন একাকী নারীকে বখাটেদের দ্বারা লান্ছিত হতে দেখে তখন যেন "আমার কেউতো না" ভেবে পাশ কাটিয়ে না যায়। যেন সম্মিলিতভাবে অন্যায়কে প্রতিরোধ করতে দ্বিধাবোধ না করে। এসব শিক্ষাই যেই জাতির মানুষের ভিতরে নাই তাদের আপনি কিসের নাস্তিবাদি থিওরী শিখাবেন বা কোন ধর্মে দীক্ষিত করবেন?