বিশ্বনবী মুহাম্মাদ (সা.) এমন এক মহান মানুষ ছিলেন যাঁর সম্পর্কে যত জানবেন ততই অবাক হবেন, মুগ্ধ হবেন। তাঁর ক্ষমাশীলতা আর বিনয়, নম্রতা তুলনাহীন। শিক্ষা দেওয়ার সময়, ভুল সুধরে দেওয়ার সময়ও তিনি ছিলেন শ্রেষ্ঠ বিনয়ী শিক্ষক। একটা অসাধারণ শিক্ষনীয় হাদিস শুনুন। সবার জন্যই এটা খুবই শিক্ষনীয়। বিশেষ করে যারা দ্বীনি দাওয়াতের এবং ইসলাহর কাজ করেন তাদের জন্য।
আবু হুরাইরা (রা.) বলেন, এক বেদুঈন মসজিদের ভেতরে প্রস্রাব করে দিল। সুতরাং লোকেরা তাকে ধমক দিয়ে বকাবকি করতে লাগল। অনেকে তাকে মারতে উদ্যত হল। (কিন্তু) নবী (সা.) বললেন, ‘ওর প্রস্রাব আটকে দিয়ো না, ওকে ছেড়ে দাও’। সুতরাং তাকে ছেড়ে দেওয়া হল। সে প্রস্রাব শেষ করল। অতঃপর রাসুলুল্লাহ (সা.) তাকে ডেকে (নম্রতার সাথে, শান্তভাবে) বললেন, ‘এই মসজিদ গুলো কোন প্রকার পেশাব না নোংরা জিনিসের জন্য নয়। এ হল কেবল আল্লাহ তায়ালার যিকির, নামাজ ও কুর’আন পড়ার জন্য’।(মুসলিম/৬৮৭)। অন্য এক বর্ণনায় আছে, নবী (সা.) তাকে বলেন, ‘ওকে ছেড়ে দাও এবং ওর প্রস্রাবের উপর এক বালতি পানি ঢেলে দাও। কেননা তোমাদেরকে সহজ নীতি অবলম্বন করার জন্য পাঠানো হয়েছে, কঠোরনীতি অবলম্বন করার জন্য পাঠানো হয়নি’। [বুখারী/২২০; ৬১২৮]
এই চমৎকার ঘটনার শেষ এখানেই নয়। বেদুঈন ভুল/অপরাধ করেও নবী (সা.) এর কাছ থেকে এত সুন্দর বিনয়ী ব্যবহার পেয়ে মুসলিম হয়ে যান। পরে এই বেদুইন (আবার ভুল করে) নামাজের দু’আতে বলেছিল, ‘হে আল্লাহ! তুমি আমার ও মুহাম্মাদের প্রতি রহম করো। আর আমাদের সাথে কাউকে রহম করো না’। তা শুনে মুহাম্মাদ (সা.) তাকে বলেছিলেন, ‘তুমি তো প্রশস্ত (আল্লাহর রহমত)-কে সংকীর্ণ করে দিলে!’
এত ভুলের পরেও দয়ার নবী, বিনয়ী শিক্ষক মুহাম্মাদ রাসুলুল্লাহ (সা.) বেদুঈনের প্রতি কঠোর হোননি। বিরক্তও হোননি। নবীজীর নম্রতা ও অমায়িকতা দেখে সে স্বীকার করতে বাধ্য হয়ে বলেছিল, ‘আমার পিতামাতা মুহাম্মাদের জন্য কুরবান হোক। তিনি আমাকে গালি দেননি, বকাবকি করেননি এবং প্রহারও করেননি’। [আহমাদ/১০৫৩৩]
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:০৫