somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অভিশপ্ত বটবৃক্ষ (গল্প) -৩

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আগের পর্বের লিংক

বস্তাপরা ভন্ডা
ডঃ যোসেফ ছায়াকুঠিরে পায়চারি করছে। সবুজ পরিপুর্ণ সুস্থ হয়ে গেছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই সে চলে আসবে। ভালই হলো তার জন্য। নতুন গাইড আর নিতে হবে না। ক্ষতি যেটা হয়েছে সেটা হলো, মাঝখান থেকে ৩টা দিন চলে গেছে। আর তিন-তিনটি দিনের রাতগুলোই উৎকন্ঠায় কেটেছে। প্রতি রাতেই ঐ নারী'র খোঁজে সে গিয়েছিল। প্রথমদিন সাপ দেখে দ্বিতীয় দিন কার্বলিক এসিড সাথে নিয়ে গেছে। যাতে সাপ ও কিছু ছারপোকার দ্বারা ক্ষতিগ্রস্থ না হতে হয়।
১ম দিন যে আশা ও উত্তেজনা নিয়ে সে গিয়েছিল। ২য় ও ৩য় দিনেও প্রায় সমান উৎসাহে গিয়েছে। তাও একা একা। কিন্তু ঐ রহস্যময়ী নারীর দেখা মিলেনি। তাই বলে হাল ছেড়ে দেবার পাত্র নয় যোসেফ।
ডিএনএ টেস্ট করার জন্য পায়ের ছাপ ইতিমধ্যেই জেনেভার প্রাইভেট ইনভেস্টিগেশন কোম্পানি সেকলিপ বরাবর কুরিয়ার করে দিয়েছে। ওরা ল্যাবে টেস্ট করে জরুরী ভিত্তিতে তাকে আগামি এক সপ্তাহের মধ্যেই এটা কি মানুষের, নাকি এলিয়েনের, নাকি কোনও অশরীরি'র সেটা জানিয়ে দেবে।

এই কয়দিন ধরে দৈনন্দিন রুটিন বেশ উল্টো হয়ে গেছে ডঃ যোসেফ এর। রাতভর অশরীরি'র অপেক্ষা করায় ঘুমাতে হচ্ছে ভোরবেলা। আর ঘুম থেকে উঠতে উঠতে বেলা ১টা বেজে যায়। সকালবেলা ২পিস ব্রেড খেয়ে ঘুমিয়ে, ঘুম থেকে উঠে বাংলাদেশের ভাত খেতে খেতে হচ্ছে।
অবশ্য ভাত খাওয়া ব্যাপারটায় এ কদিনে বেশ ভাল লাগছে যোসেফের কাছে। প্রথম ২দিন চামচ দিয়ে খেলেও এই দুইদিন সে হাত দিয়ে খেতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছে অধিক। কেয়ারটেকার আমিন সাহেব রসিকতা করে বলেছে, এভাবে খেলে কয়েক মাসের মধ্যেই নাকি যোসেফ বাঙালি হয়ে যাবে আর বাংলাদেশেই বসবাস শুরু করে দেবে।
ভর বিকেলে এই সব ভাবছিল ডঃ যোসেফ। এমন সময় ঢাকা'র যৌনবিলাস অফিস থেকে ফোন আসল। তারা হাইএসে করে মেয়ে পাঠিয়ে দিতে রাজি। ডঃ যোসেফ কেবল হ্যাঁ বললেই হলো। এখনকার মেয়ের বয়স ২০। ইউনিভার্সিটির ছাত্রী। দুই রাতের জন্য ২০ হাজার টাকা। চা, কফি খুব ভাল বানাতে পারে। ভীষণ রোমান্টিক।

ডঃ যোসেফ একদিন পর পাঠাতে বলল। এই কয়দিন শরীরের উপর দিয়ে ভালই ধকল গেছে। নিত্য দিনের রুটিন ভংগ করে অশরীরি রহস্যের সমাধানে উঠেপড়ে লেগে শরীরের অনিয়ম করা হয়েছে। মেজাজটা ভাল লাগছে না। এর মধ্যে মা ও বাবা তার বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছে। মুখের ওপর ড্যাডিকে "ফাক অফ" বলে ফোনটা রেখে দিল।
এরপর থেকে ২-৩ দিন বাসা থেকে আর ফোন আসবে না তাতে সে নিশ্চিত। এর আগেও এমনটি ঘটিয়েছে ডঃ যোসেফ। সে যে ভীষণ একগুঁয়ে সেটা ওর মা-বাবা ভালই জানে।
এইসময় সিংহদরজায় বেশ শোরগোল শোনা গেল। বিশেষ করে দুজন লোকের কন্ঠস্বর বেশ উচ্চ। মনে হচ্ছে কোনও গোলযোগ বেঁধেছে। হয়ত গ্রামের লোকেরা এসে গন্ডগোল বাঁধানোর চেষ্টা করছে। সে এটা ডেইলি স্টার পত্রিকা পড়ে জেনেছে। গ্রামের স্থানীয় মানুষরা তার অবস্থানকে ভাল চোখে দেখছে না।
প্যান্টের পকেটে রিভলবারটার অবস্থান নিশ্চিত করে সে কি হচ্ছে তা দেখতে গেল। কিন্তু এ-কি!
মাত্র ২জন মানুষ! এও কি সম্ভব? মনে হচ্ছিল অনেক মানুষ এখানে গন্ডগোল পাঁকিয়েছে। সে ঝগড়ারত দারোয়ানকে চেনে। ওকে থামাতে সে ভাঙা বাংলায় বললো "টু-মি ঠামো। আ-মি ডেখচি। প্লিজ স্টপ।"
কি মনে করে দারোয়ান থামল। আর যোসেফ তখনই ঐ লোকটির দিকে একবার ভাল করে দেখল। লোকটির গায়ে পুরনো পাটের বস্তা। মনে হচ্ছে ফকির/সাধু টাইপের কেউ হবে। একটা বস্তা দিয়ে কোনক্রমে কোমরে জড়িয়ে রেখে দড়ি দিয়ে বেঁধে রেখে। আরেকটা বস্তা কেটে টি শার্টের মতো করে গায়ে জড়িয়ে রেখেছে। মুখের ত্বক খটখটে রুক্ষ। গাল দুটি একটু ভেতরে ঢুকে গেছে যে পুষ্টির অভাবে তা বোঝা যায়। তবে বলিষ্টদেহী লোক, ভেতরে যে একটা প্রাকৃতিক পেশিশক্তি বিদ্যমান তা ঢের বোঝা যাচ্ছে।
মানানসই তো দুরে থাক। অদ্ভুত একটা প্রাণি মনে হচ্ছে একে। চুল কোঁকড়া এবং ঘাড়ের উপর পতিত। অনেক চুল থাকলে কি হবে, সবগুলোই ময়লা আর দেখতে বিশ্রি লাগছে সীমাহীন অযত্নের কারণে। এমনকি, অনেক চুল জট লেগে চামড়ার সাথে একিভূত হয়ে গেছে মনে হয়। গা থেকে পঁচা ফলমূলের মতো দুর্গন্ধ বেরুচ্ছে।
নাক চেপে একটু দুরে দাঁড়াল ডঃ যোসেফ। এরপর জিজ্ঞেস করল-
"অ্যাই য্যা, টুমি কি সাউ?"
"শয়তানের বাচ্চা। দুর হ এখান থেকে। তোকে আমি শেষবারের মতো নিষেধ করলাম। ঐ বটগাছের নিচে যদি যাবি তো দেবী তোরে কিচকিচ করে কেটে ফেলবে। ভালয় ভালয় চলে যা। যেখান থেকে এসেছিস, সেখানেই চলে যা।"
হাতে থাকা ফোন দিয়ে হোয়াটসএপে রেকর্ড করে সবুজের কাছে এটা সে পাঠিয়ে দিল। সবুজ আসতে আরো কিছুক্ষণ লাগবে। গাড়িতে বসেই সে ভয়েস মেসেজ দিয়ে বুঝিয়ে দিল যে এই ভন্ডা লোকটি সাধুবেশে কি করতে এসেছে।
সাথে সাথে রিভলবার বের করে ওকে আঁটকাল। আর দারোয়ানকে বলল যে, একে বেঁধে ফেল। দারোয়ানও তড়িৎ গতিতে গার্ডরুম থেকে তৎকনাৎ একটি দড়িও নিয়ে এসে পড়ল। বেটা আর যায় কোথায়?


ত্রিমাত্রিকার দাদা!
ত্রিমাত্রিকার দাদা ছিলেন নাস্তিক। তিনি স্বশিক্ষিত লোক ছিলেন। কোনও শিক্ষা প্রতিষ্টানে শিক্ষাগ্রহণ করেন নি। তবে নানান বইপত্র যোগাড় করে পড়তে পারতেন। নিজের নাম জীবন চন্দ্র ঠাকুর থেকে জীবন শাস্ত্রজ্ঞ রেখেছিলেন। তিনি কেন এই কাজ করেছেন তা নিয়ে গাঁয়ের হিন্দু মুসলিম তেমন প্রতিক্রিয়া দেখায়নি। তবে ব্রাম্মণ পুরোহিত সুভাস চক্রবর্তী একঘরে করে রেখেছিল তাকে।
ত্রিমাত্রিকার দাদী অবশ্য স্বধর্মদ্রোহী আখ্যায়িত করে বাড়ি থেকে বের করে দেয় তাকে। এরপর তার শেষ আশ্রয় হয় পরিত্যাক্ত পোড়াবাড়িতে। অভিশপ্ত বটগাছটির অবস্থানের কারণে একসময়ের ধনী ব্রাম্মণ পরিবার এই বাড়িটি ছেড়ে চলে যায়। কেউ কিনেও এই বাড়ি। তবে সম্পত্তিসুত্রে এই বাড়িটির এখনকার মালিক জীবন শাস্ত্রজ্ঞ।
ত্রিমাত্রিকার জীবন দাদাভাই একা একা জীবনচারণে খুব পটু ছিলেন। এমনিতেই তিনি মানুষের মনের কথা বলে দিতে পারতেন। মানুষেরা অবাক হতো। অনেক মানুষ তাকে পীরের মতো শ্রদ্ধা করে। তবে তাঁর মত গ্রহণের জন্য কাউকেই বলেন না। তবে লোকমুখে শোনা যায় এই বুড়োটা শয়তানেরই একটা চেলা। শয়তান মানুষকে ভগবান/খোদা থেকে বিমুখ করার জন্যই নাকি এই লোককে পাঠিয়েছে।
প্রতিদিন কেউ না কেউ উপঢৌকন নিয়ে আসে। রান্না করা খাবার নিয়ে আসে পোড়াবাড়িতে। গেল ২ বছর হলো একটি দিনও জীবন বাবুকে কোন খাবার রান্না করতেই হয়নি। লোকেরা উনার জন্য রান্না করা খাবার নিয়ে আসে টিফিনে করে কিংবা বক্সে করে। তারা মনে করে উনি আধ্যাত্মিক ক্ষমতাসম্পন্ন। যদিও তিনি না করেন বরাবর।
আশ্চর্যের কথা হলো এই বুড়ো বয়সেও তিনি কম্পিউটার-ই কেবল না, ইন্টারনেট চালাতে জানেন। এই ব্যাপারটি ত্রিমাত্রিকা তার বন্ধুদের কাছে গর্বভরে বলতে পারে।
সে ভারতের আসাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে Botany -তে মাস্টার্স শেষ করে এসেছে। দাদার কথামতো বিয়ে না করে পড়াশুনা করতে পেরে খুব ভাল লাগছে। তবে কেউ-ই জানে না, এই মেয়েটি ভারতের আসামে থেকে থেকে যে পড়ালেখা শেষ করে ফেলেছে। গ্রামের লোকেরা বলে আমাদের গ্রামে পড়াশুনার দরকার নাই। কেউ-ই মেট্রিক পাস করতে পারে নাই। সবাই গাধা।
এই ব্যাপারগুলো নিয়ে অবশ্য দাদাভাইয়ের মতো ত্রিমাত্রিকা তেমন মাথা ঘামায় না। সে বাড়ি এসে সোৎসাহে ঘুরে বেড়াচ্ছে। গ্রামের মানুষের আড়ালে আবডালে কথা শুনে সে বেশ উপভোগ করে।

আজ ত্রিমাত্রিকা দাদার সাথে দেখা করবে। বিকেলবেলা শোবার ঘরে তিনি পান চিবুচ্ছিলেন ঠিক তখনই হুট করে দাদার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ল। দাদা চমকে উঠে বললেন "তিমা! তুই? কবে এলি?"
"এইতো দাদা। কালই এলাম। শরীর ভাল?"
জীবন বাবু তার বুড়ো বয়সের সিনা টান করে বললেন। "এই দেখ ফিট আছি। হাঃ হাঃ হাঃ"।
দাদার কথায় তিমা হেসে বললো- "কিন্তু একটা দুঃসংবাদও আছে দাদা।"
"কি দুঃসংবাদ?"
"আমাকে কালই যেতে হবে। ভার্সিটি থেকে মেইল এসেছে। আমি তাড়াহুড়ো করে চলে আসাটা ঠিক হয়নি।"
এই সময় তিমার মতই একটি মেয়ে হনহন করে এসে ঘরে ঢুকে পড়ল। তবে চোখ কপালে উঠতে সময় লাগেনি।
- কি ব্যাপার মশাই? আমাকে কি আর লাগবে না?
ত্রিমাত্রিকার দাদা থতমত খেয়ে গেলেন। তিমা'র বুদ্ধিমত্তা অতো খারাপ না যে, সে বুঝতে পারবে না। হনহন করে মেয়েটি বেরিয়ে গেল।

এদিকে মন খারাপ করে আসাম চলে এসেছে তিমা। সে নিজে যা-ই হোক, ছোটবেলা থেকে দাদাকে দেখে কিছু শেখার, প্রেরণা নেবার চেষ্টা করেছে। তার সেই দাদা যে এত লুইচ্চা, একটা বদমাশ, সেটা জেনে সে সীমাহীন দুঃখ পেয়েছে। ভুল স্বীকার করলেও অনেক কষ্ট কম হতো। কিন্তু তা-না, উনি জাস্টিফাই করার চেষ্টা করছেন। মুসলমানের মেয়ে বৈশ্যা লিটা'র সাথে তিনি বিছানায় যান। দুঃখে আত্মহত্যা করার ইচ্ছে হচ্ছে তিমা'র।
মেয়েদের জন্য আলাদা হোস্টেলে আছে, আর ম্যাথিউস উইমেন্স হোস্টেলে থাকে তিমা। ফোনটা হাতে নিয়ে ডায়াল করলো একটি নাম্বারে।

বিবসনা নারী
শীতকাল শেষ না হলেও ঠান্ডা, প্রচুর ঠান্ডা এই পুর্ণিমা রাতে। আরজমোল্লা তার নাদুস নুদুস শরীরে বাইসাইকেল চালিয়ে আছাদৌল্লার দিকে যাচ্ছেন।
আকাশ পরিস্কার, পুর্ণিমা রাতের এ আসমান যেন সাদা কালো কোন অপরুপ ছবি। কুয়াশার ফোঁটা ফোঁটা বিন্দু পড়ছে। গাছের পাতা বেয়ে বড় বড় হিম বিন্দু পড়ছে নিচে। মাঝে মাঝেই ঠান্ডা দমকা হাওয়া এসে শীতের তীব্রতা বাড়িয়ে দেয়।

বাইসাইকেল চালাতে চালাতে পোড়োবাড়ি পেরিয়ে বটগাছের সামনে দুরু দুরু বুকে এসে যেটার ভয় করেছিলেন ঠিক সেটাই আজ তার পথ আগলে দাঁড়াল। আপাদমস্তক নগ্ন। হাতে কালো গ্লাভস। পায়ে কালো বুট।
"লা, হাউলা উলা কুয়াত্তা ইললা বিল্লা"।
আরজ মোল্লা জীন ভুত তাড়ানোর দোয়া ভালই পারেন। কিন্তু আজকের এই প্রেত তো চোখের সামনে থেকে যাচ্ছে না। এটাকে দেখতে ব্লু ফিল্মে দেখা ফিরিংগী দেহপসারিনীর মতো মনে হচ্ছে। জীন ভুত হলে তো এতক্ষণে ভস্ম হয়ে যেত। সবচেয়ে কঠিন দোয়া পড়েছেন তিনি। শরীর বন্ধও করেছেন ইতিমধ্যে। কিন্তু কোনই তো লাভ হচ্ছে না। আরজ মোল্লা এতক্ষণে নিশ্চিত যে, এটা কোন জ্বীন পরী নয়। মানুষই।

ভয়বিহব্বল চোখে আরজমোল্লা তাকালেন, স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছে ফিরিংগী কোন মেয়ে। তিনি তার বিদেশী টর্চলাইট-টি সাথে আছে কি-না সাইকেলের ব্যাকসিটে দেখে নিলেন। আছে দেখে ঐটা-ই একমাত্র সম্বল হিসেবে নিয়ে এগুতে থাকলেন। এটা কতটুকু কাজে লাগবে কে জানে।

আচমকা ঐ ফিরিংগী নারী ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে তাকাল। চাঁদের আলতো নীল জোৎস্না সরাসরি তার মুখে পড়েছে। আরজ মোল্লা তার ৩০ বৎসরের জীবনে এইরকম ভয়ংকর সুন্দর মুখ দেখেনি। নীল চোখের মণি অথচ শার্দুলের ন্যায় দৃষ্টি। মাথার উপরিদেশ থেকে বেশ কয়েক গাছি চুল চেহারার উপরে পতিত। মুখাবয়বের ইঞ্চি ইঞ্চি ত্বক থেকে যেন অদ্ভুত মায়াময় শক্তশালী বৈদ্যুতিক আকর্ষণ শক্তি তাঁকে ওর উন্মোচিত দেহের দিকে টেনে চলেছে।
সুগঠিত স্তন, উভয় বাহুর টানটান পেশিতন্তু যেন এক বিপর্যয়ের আহবান জানাচ্ছে তাকে। দেহের কোন অংশে একটি সুতোও নেই। জোৎস্নার আলোয় আজ অভিসারের উদ্দ্যেশ্যেই যেন বের হয়েছে এই আত্মঅশ্লীল নারী।
এক পা দুই পা করে ধীরে ধীরে ঐ নারী এগুচ্ছে। ভয়, কৌতুহল, উত্তেজনা মিশ্রিত অভুতপুর্ব অনুভুতি নিয়ে স্তদ্ধ হয়ে অপেক্ষা করতে লাগলেন আরজন মোল্লা। দুনিয়ার তাবৎ জায়গা সংকুচিত হয়ে গেছে আরজ মোল্লার কাছে। মনে হচ্ছে এই বটগাছের নীচই পৃথিবী। এত ছোট হয়ে গেল কেন এই দুনিয়া? অন্তত এই মুহুর্তের জন্য।

বিবসনা নারী এসেই নিচু হয়ে তার মাথা থেকে টুপি ও বড় রুমাল সরিয়ে পাশে ছুঁড়ে ফেলে দিল। এরপর জোর করে মাটিতে আলতো করে ফেলে ঝাঁপিয়ে পড়ল। আরজ মোল্লার মনে হলো বিষাক্ত ঠোঁট তার ঠোঁটকে গিলে ফেলছে।
আরজ মোল্লা কিছুতেই না করতে পারলেন না। এ শীতের মধ্যে দেহ থেকে জ্যাকেট, পাঞ্জাবী, পায়জামা সহ সব পোশাক খুলে নিয়ে চারদিকে বিক্ষিপ্তভাবে ছুঁড়ে ফেলতে লাগল ঐ নারী। কিন্তু আরজ মোল্লা এখনো আশ্বস্ত হতে পারছে না তার জীবনে এ কী ঘটতে চলেছে।
তিনি অনুভব করতে থাকলেন তাঁর মষ্তিষ্কে একটা ঘোর লাগা কাজ করছে। চিন্তা করতে খুব কষ্ট হচ্ছে। এই খারাপ নারী তাঁর চিন্তাশক্তিকে গ্রাস করে ফেলেছে।

এটা একটি স্বপ্ন ভাবার প্রাণপণ চেষ্টা করতে থাকলেন। কিন্তু প্রচন্ড ঝড়ে পড়ে যদি কেউ চোখ বন্ধ করে তবে কি আদৌ ঝড় বন্ধ হয়ে যায়?
আরজ মোল্লার জীবনে কি কি পাপ করেছেন সেটা চিন্তা করতে করতে আচমকা টের পেলেন তার শিশ্নমুণ্ডে ঐ নারীর সম্মুখভাগের ধারাল দাঁত বসিয়ে দিয়েছে।
"মা-গো" "আল্লাহ গো" বলে চিৎকার ও আর্তনাদ করে উঠলেন আরজ মোল্লা। ততক্ষণে ফিনকি দিয়ে কয়েকটি ধারায় উষ্ণ রক্ত বের হওয়া শুরু করেছে। উত্তেজিত অবস্থায় তাঁর শিশ্নের আয়তন বেড়ে গিয়েছিল। দেহের রক্ত চলাচল ছিল দ্রুত। শিরায় শিরায় ছিল নতুন ও অনিন্দ্য সুন্দরী ফিরিংগী রুপসী কোন নারীর সাথে অভিসারের সংকল্প। আর সে কারণেই রক্তবিন্দুগুলো যেন খাঁচা থেকে ছাড়া পেয়ে উর্ধশ্বাসে দৌড়াচ্ছে ঐ বিশেষ মাংসপিন্ড থেকে।
রান্না করা মাংসের মতো করে তার শিশ্ন কিচকিচ করে চিবিয়ে চিবিয়ে খেতে লাগল ঐ নারী। ওর মুখের মাঝে তখন পৃথিবী ভক্ষণের চিন্তা। রক্তের কয়েকটি ধারা ঠোঁটের নিচ দিয়ে যাচ্ছে। পাশ থেকে একটা মাটির বড় দলা নিয়ে মোল্লার মাথার দিকে ছুঁড়ে দিয়ে দু পা ছড়িয়ে একটা টিবির ওপর বসে গেল শিশ্নখেকো ঐ রহস্যময়ী নারী। (চলবে ☺)
গত পর্বসমূহ-
পর্ব -১ এর লিংক
পর্ব -২ এর লিংক

(বাকিটা একসাথেই দিয়ে দেয়া হবে।)
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৩১
২৪টি মন্তব্য ২৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গণতন্ত্র আর বাক-স্বাধীনতার আলাপসালাপ

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:২৩


একাত্তর সালে আওয়ামী লীগের লোকজন আর হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা ছিল পাকবাহিনীর প্রধান টার্গেট। যদিও সর্বস্তরের মানুষের ওপর নিপীড়ন অব্যাহত ছিল। গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধা আর তাদের পরিবারের... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাফের কুফফারদের দেশে বাস করা হারাম।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:১৩

ফেসবুকে বাঙালিদের মধ্যে ইদানিং নতুন এক ফতোয়া চালু হয়েছে, এবং তা হচ্ছে "দাওয়াতের নিয়্যত ছাড়া কাফের কুফফারদের দেশে বাস করা হারাম।"
সমস্যা হচ্ছে বাঙালি ফতোয়া শুনেই লাফাতে শুরু করে, এবং কোন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×