somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার চেনা নতুন শহর মিউনিখ

২৮ শে মার্চ, ২০১৫ সকাল ৭:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অনেকদিন ধরেই কথাগুলো বলব বলব করেই বলা হচ্ছে না! জার্মানী আসছি প্রায় ৬ মাস হলো। আসার পর থেকেই অনেক ধরনের অভিজ্ঞতা হচ্ছে, অনেক কিছুই মজার আবার কিছু খুব বিরক্তিকরও! বেশকিছু বিরক্তিকর অভিজ্ঞতার একটা হলো ‘ভাষা’, অনেকেই হয়তো ভাবতে শুরু করেছেন জার্মানীতে গেছো মিয়া ভাষা সমস্যায় পড়বা না, তা হয় নাকি? তাদেরকে বলতে চাই, ভাই ও বোনেরা আমার ‘আমি মিউনেখে থাকি, এখানে মোটামুটি সবাই ইংলিশ পারে! এমন কি দোকানের কর্মীরাও!’ তবে কিছু ব্যাতিক্রম যে নাই তা না।

আগেই বলে রাখি, আমার এই লেখা আমার অভিজ্ঞতা আর অনেকজনের ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতার একটা সংকলন! হয়তো আমি তাদের নাম ব্যবহার করব না তবে ঘটনাগুলো অনেকের অভিজ্ঞতার সাথেই মিলে যাবে বা যায়। তাই আগেই আমি তাদের কৃতজ্ঞতা জানিয়ে রাখছি।
এসেই কিছুক্ষণের মধ্যেই আপনার যেই প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে তা হলো Are you from India/Pakistan? যদি কপাল ভাল হয় তাহলে দুই-তিন পর! তবে আপনাকে এই প্রশ্ন শুনতেই হবে, আমি হলফ করে বলতে পারি। আর যদি আপনার কপাল খারাপ হয় তবে হয়তো, আপনাকে হিন্দি বা উর্দুতেই এই প্রশ্ন করা হবে! খুবই অদ্ভুত লাগে এই ইন্ডিয়ান বা পাকিস্থানীদের ব্যবহারগুলা! অনেকেই দেখি আগ বাড়িয়ে তাদের সাথে হিন্দি বা উর্দুতে কথা বলেন! তবে আমার রুচি হয় না! হ্যাঁ, হিন্দি মুভি দেখার কারণে হয়তো আমি কিছু হিন্দি জানি! তাই বলে আমি কেন তাদের ভাষায় কথা বলব? আপনি হয়তো বলবেন হিন্দি বা উর্দু আর বাংলা প্রায় একই! তাদের বলছি, আপনি চাইলেই তারা কি বাংলা ভাষায় কথা বলবে? বলবে না। তবে আপনি কেন বলতে যাবেন?

এবার আমি কিছু অভিজ্ঞতার কথা বলব। জার্মানী আসার একদিন পরেই গেছি সিটি রেজিস্ট্রেশন করতে। ওখানে গিয়ে এক পাকিস্থানীর সাথে দেখা, সে আমাকে দেখেই দৌড়ে এসে বলে Are you from Pakistan? আমি বললাম, না। চুপসে গিয়ে বলে উর্দু জানো? আমি বললাম না। হতাশ হয়ে চলে গেল! অন্য একদিনের ঘটনা, আমার হলে এক ইন্ডিয়ান ছেলে, হিন্দিতে আমাকে জিগায় আমি ইন্ডিয়া থেকে আসছি কি না!!! আমি ইংলিশে বললাম তোমার কি কোন সাহায্য দরকার? এরপর থেকে স্বাভাবিক ভাবেই কথা বলতে শুরু করল।

অন্য আরেক ভাইয়ের অভিজ্ঞতা, ট্রেন ষ্টেশনে এক ইন্ডিয়ান তাকে প্রশ্ন করছে, Are you from India? সে রেগে গিয়ে ইন্ডিয়া আবার কই? সেই ছেলে থতমত খেয়ে চুপ হয়ে গেছে। এরপর সেই ভাই তারে বসে বসে প্রশ্ন করা শিখাইছে!

আরেক ভাইয়ার অভিজ্ঞতার কথা শুনেই সেই মজা পাইছি! ট্রেনের ভিতরে ওনাকে দেখে এক পাকিস্থানী আগাইয়া আসছে, এসে উর্দুতে জিজ্ঞাসা করতেছে এই জায়গাটা কোথায়? ওই পাকিস্থানী উর্দুতে প্রশ্ন জিগায় আর ভাইয়া বাংলায় উত্তর দেয়! সেই লোক কিছু না বুঝে ভাগছে।
এত গেল ভাল অভিজ্ঞতা! অনেকেই আছেন যারা বুক ফুলিয়ে ওনাদের সাথে হিন্দিতেই কথা বলেন এবং গর্ব বোধও করেন! গর্ববোধ আপনি করতেই পারেন! ইংলিশ বা জার্মান না বলতে পারলেও আপনি হিন্দি বলতে পারেন! সেটা কি কম গর্বের!!! তবে সবাই গর্ববোধ করেন না, অনেকেই আছেন যারা এ থেকে মুক্তির পথ খুজতেছেন! কিন্তু ভয়ংকর তথ্য হচ্ছে আপনি চাইলেই তা পারবেন না! আপনি যদি এদের সামনে আপনার মুখ থেকে একবার হিন্দি বা উর্দু বলেছেন তবে আর হয়েছে! ওই শহরের আর সব ইন্ডিয়ান বা পাকিস্থানীরা জেনে যাবে যে আপনি হিন্দি বা উর্দু বলতে পারেন!!!

যারা এই বিপদ থেকে মুক্তির পথ খুজতেছেন তাদের জন্য হয়তো আমি কোন পথ বলে দিতে পারব না। তবে যারা আসছেন তাদেরকে আমি সাবধান করে বলতেই পারি, মাতৃভাষা ব্যাতিত অন্য যে ভাষাতেই আপনি কথা বলেন না কেন, আপনার অসস্থি লাগবেই। অসস্থি যেহেতু লাগবেই, তবে কেন হিন্দি বা উর্দুতে কথা বলা? এর থেকে সেই অসস্থিটুকু আপনি ইংলিশ বা ডয়েচে ব্যবহার করেন। অনেক কাজে দিবে।
-----------------------------------------------
জার্মান প্রবাসের অনুভুতির কথাই এভাবে লিখেনছেন মিউনিক প্রবাসী Wadud Hossain । জার্মান প্রবাসে ওয়েবসাইটে এভাবেই তার মনের কথাগুলো লিখেছেন। জার্মানিতে উচ্চশিক্ষা ও প্রবাসীদের মনের কথা জানতে ঘুরে আসতে পারেন জার্মান প্রবাসে ওয়েবসাইট থেকে। আর জার্মানিতে উচ্চশিক্ষা নিয়ে যে কোন ধরনের তথ্যের জন্য ঘুরে আসতে পারে ৪১ হাজার + মেম্বারের ফেসবুক গ্রুপ থেকে।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে মার্চ, ২০১৫ সকাল ৮:০১
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ডালাসবাসীর নিউ ইয়র্ক ভ্রমণ

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:৪৪

গত পাঁচ ছয় বছর ধরেই নানান কারণে প্রতিবছর আমার নিউইয়র্ক যাওয়া হয়। বিশ্ব অর্থনীতির রাজধানী, ব্রডওয়ে থিয়েটারের রাজধানী ইত্যাদি নানান পরিচয় থাকলেও আমার কাছে নিউইয়র্ককে আমার মত করেই ভাল ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×