ভোরের কাগজ : ০১/০৯/২০১৪
গোলাম মহিউদ্দিন নসু, বেগমগঞ্জ (নোয়াখালী) থেকে : বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুর (আরএন্ডএইচ)-পাটারীর হাট-সিদ্দিকনগর-হাজিপুর ইউপি সড়কটি মেরামতের পর তিন মাস না যেতেই নষ্ট হয়ে তাতে খানাখন্দ সৃষ্টি হতে শুরু হয়েছে। গত জুন ’১৪-এ কাজ চলাকালে কাজের মান খারাপ বলে একাধিকবার উপজেলা প্রকৌশলী জাকির হোসেনের কাছে অভিযোগ করলেও তিনি কোনো ব্যবস্থা নেননি।
নোয়াখালী এলজিইডির আওতায় জেলার বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুর ইউপি (আরএন্ডএইচ) পাটোয়ারীর হাট-সিদ্দিকনগর-হাজিপুর ইউপি সড়কের ১ হাজার ৩৪০ মিটার (প্রায় ১ মাইল) রাস্তা মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ কাজে ১৮ লাখ ১ হাজার ১২৪ টাকা বরাদ্দ করা হয়। নোয়াখালী এলজিইডির স্মারক নং ৪৮১০ তারিখ ২৭-১১-১৩ মোতাবেক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ প্রদান করে প্ল্যান অনুযায়ী কাজের মান নিশ্চিত করতে বেগমগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলীকে নির্দেশ দেয়া হয়েছিল।
গত ডিসেম্বর ’১৩-এ কাজটি শুরু করা হলে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান-মেম্বারসহ এলাকাবাসী কাজের মান খারাপ হচ্ছে মর্মে একাধিকবার অভিযোগ করেন। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা মাঝে মধ্যে আসলেও কাজের গুণগতমানের কোনো উন্নয়ন হয়নি। শেষ পর্যায়ে প্ল্যান অনুযায়ী কাজ করা হয়নি বলে উপজেলা প্রকৌশলীকে জানানো হয়। এমনকি এ বিষয়ে জুন মাসে একাধিক পত্রিকায় সংবাদ ছাপা হয়। কিন্তু উপজেলা প্রকৌশলী জাকির হোসেন কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে মার্চ ‘১৪-এ কাজ শেষ হয়েছে রিপোর্ট দিলে জুনের মধ্যে ঠিকাদারের বিল পরিশোধ করেন। প্ল্যান অনুযায়ী ৮১ হাজার ৮৪৯ টাকা মাটির কাজে বরাদ্দ ছিল।
কিন্তু ১৫ মিটার পেলাসাইটিং কাজের পাশে সামান্য মাটি ফেলা হলেও পুরো রাস্তার সোল্ডারে কোনো মাটি ফেলা হয়নি। রাস্তায় কাজ চলাকালে স্থানীয়রা এ বিষয়ে দাবি করলে মাঠের ধান উঠার পর করা হবে বলা হয়, কিন্তু আর করা হয়নি। অথচ এস্টিমেটে মাটি পরিবহন করে কাজ করার কথা রয়েছে।
স্থানীয়ভাবে জানা গেছে, দু-এক জায়গায় ২-১ টুকরি মাটি দিলেও তা মূল রাস্তার গোড়া কেটে ফেলেছে। তা ছাড়া নিম্নমানের বিটুমিন ও ইটের কনা দিয়ে কাজ করার অভিযোগ রয়েছে।
পুরো কাজের গুণগত মান খারাপ হওয়ায় এখন রাস্তার কার্পেটিং উঠে গিয়ে বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হচ্ছে। পুরো রাস্তার সাইড ইতোমধ্যে ফেটে গেছে। মূল রাস্তাই ভাঙতে শুরু করেছে। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান-মেম্বারসহ এলাকাবাসীর সঙ্গে এ নিয়ে আলাপ করলে তারা উপজেলা প্রকৌশলী জাকির হোসেনকে দায়ী করে তার প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এসব নিয়ে উপজেলা প্রকৌশলীর সঙ্গে আলাপ করতে গিয়ে জানা যায়, মেয়াদপূর্ণ হওয়ার আগেই সম্প্রতি তিনি বদলি হয়ে গেছেন। তিনি গত বছর নভেম্বর মাসে বেগমগঞ্জে যোগদান করলেও ৮ মাসের মাথায় তাকে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় বদলি করা হয়। গুঞ্জন রয়েছে গত কয়েক মাসে তিনি নানামুখি দুর্নীতিতে জড়িয়ে গিয়েছিলেন।