--শারয়ুন বিনতে মহিউদ্দিন অবনী
শিক্ষা আমাদের সবার জীবনের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ও অপরিহার্য বিষয়। জীবনে চলার পথে অবশ্যই এটি আমাদের একমাত্র অবলম্বন। জীবনকে সার্থক ও সাফল্যমণ্ডিত করার জন্য অবশ্যই আমাদেরকে শিক্ষা অর্জন করতে হবে। একদিন এই শিক্ষাই আমাদেরকে নিয়ে যাবে সাফল্যের দরজায়..
আমাদের ধারনা যদি আমরা কয়েক ক্লাস পড়ার পর বড় বড় ডিগ্রী নিতে পারি তাহলেই আমরা সার্থক। তাহলেই আমরা শিক্ষিত। তাহলেই আমরা সমাজের নামি দামি মানুষ। আসুন তো একটু ভেবে দেখি আসলেই কি বড় বড় ডিগ্রী অর্জন করলে কি আমরা শিক্ষিত??
এমন অনেক শিক্ষিত আছে, এমন অনেক নামি দামি মানুষ আছে- যাদের মা বাবা থাকে বৃদ্ধাশ্রমে, ছোট ভাই বোন কয়টা টাকার অভাবে বেশিদূর পড়া লেখা করতে পারে না। এমন অনেক শিক্ষিত পয়সায়ালা আছে যাদের মা মারা যায় ওষুধের অভাবে। বৃদ্ধ বয়সে আয় রোজগারের জন্য বাবাকে যেতে হয় ঘরের বাইরে। মা বাবা কোথায় আছে জানে না বা জানার চেষ্টা ও করে না। তাহলে সেই লোকটিকে শিক্ষিত বলবো কি??
একজন মানুষ ঠিক তখনি শিক্ষিত যখন তার অর্জিত শিক্ষা তার দৈনন্দিন জীবনের কর্মকান্ডে প্রতিফিলিত হবে। একজন মানুষ তখনি শিক্ষিত যখন তার শিক্ষা তার মনুষ্যত্বের বিকাশ ঘটাবে। যে শিক্ষা আমার মনুষ্যত্ব আর বিবেককে বদলায় না, কি হবে সেই শিক্ষা দিয়ে। আর কি হবে অত বড় বড় ডিগ্রী নিয়ে।
যে শিক্ষা কখনো আমার আচার আচরন আর চলাফেরা সংযত করে না,যে শিক্ষা আমার চরিত্রে পরিবর্তন আনে না ,সে শিক্ষা কি আসলে আমাকে শিক্ষিত করতে পারল? আমি কি স্বশিক্ষিত হতে পারলাম?
তাই পড়াশুনা শুধু পাসের জন্য না করে নিজের জীবনে,নিজের চরিত্র গঠনের জন্য করতে হবে।যে সম্মান আর ভালবাসা আমার বড় বড় সার্টিফিকেট দেখে হবে তা কিন্ত আমার মরনের সাথে সাথেই চলে যাবে চিরতরে। আর যে সম্মান আর ভালবাসা আমার শিক্ষার আলোয় আলোকিত চরিত্রের কারনে আসবে তা কিন্ত আমার মরনের পরেও স্থায়ী হবে। তাই আসুন সার্টিফিকেট অর্জনের মোহ থেকে বের হয়ে স্বশিক্ষিত-সুশিক্ষিত হওয়ার আপ্রান চেষ্টা করি।তাহলে আমাদের মরনের পরেও আমরা সার্থক হতে পারব।#