somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্ট টি আমার শৈশব নিয়ে !!!

০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


১৯৯২ সালের ৪ এপ্রিল জন্ম হয় আমার। বাবা ব্যাংক কর্মকর্তা তাই কদিন পর পরই বাবার ট্রান্সফার হয় আর আমাদের ফেমিলি ও নিত্য নতুন জায়গায় শিফট হতে থাকে। ব্যাপার টি আম্মু-আব্বুর কাছে ভাল না লাগলেও আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লাগতো। সবসময় নতুনের খোঁজে থাকতাম, তাই। আমার স্টাডি লাইফ চট্টগ্রাম থেকে শুরু হয়েছিলো। বাবার ট্রান্সফার এতই বেশি হয়েছিলো যে আমার নার্সারি থেকে ক্লাস সেভেন পর্যন্ত ৮ টি স্কুলে পড়তে হয়েছিলো। ৪ মাস এই স্কুলে ত পরের ৪ মাস অন্য স্কুলে। আম্মু এখনও মাঝে মাঝে বলে ছোট বেলায় আমি নাকি অনেক বেশি দুষ্ট ছিলাম সেটাও স্কুল চেইঞ্জ করার আরেকটা কারন ছিল।

মাঝে মাঝে ছুটিতে গ্রামে বেড়াতে আসলে আমি সারাদিন গাছে গাছে নাকি থাকতাম। বাড়িতে আসলে আমার সঙ্গী হত জেঠাতো ভাই Razzak আর রেদোয়ান। ওদের সাথে সারাদিন দিব্বি ঘুরে বেড়াতাম। ওদের জন্য আমি চট্টগ্রাম থেকে লাঠিম নিয়ে আসতাম আর ওরা আমাকে ঘুড়ি উড়ানো শিখাতো। কত মারামারি করতাম অযথাই আবার মিলে যেতাম আর এ দৃশ্য দেখে আমার দাদু অনেক হাঁসতেন।

আর নানার বাড়িতে গেলে আমার সঙ্গী হত Iqbal, Jannatul আর আমার বড় আপু। আমি আর জান্নাত নানাবাড়ির পেছনে সারাদিন টুনটুনি পাখির বাসা খুঁজে বেড়াতাম আর টুনটুনির ডিম পেলে সবগুলো বাসায় নিয়ে আসতাম মুগির ডিমের মত করে ভেজে খাব বলে। জান্নাত আমার কোন কথা না শুনলেই ওকে অনেক মারতাম, আর ও শুধু কান্না করত, ওর কান্না করা দেখে আমি হাঁসতাম আর ওকে আরও বেশি মারতাম। আর ইকবালের সাথে আমার সম্পর্ক অতটা ভালো ছিল না। হুজুর ছিল কিন্তু আমাকে সাথে না নিয়ে মামাদের সাথে যেয়ে ডাব চুরি করতো তাই সে আমার শত্রু ছিল এবং আমি তাকে ভণ্ড হুজুর বলে ডাকতাম। আর বাহিরে কার সাথে ঝগড়া করে না পারলে বাসায় এসে আমার বড় আপুকে শুধু খামচি দিতাম। আম্মু দেখত কিন্তু আমাকে কিছুই বলত না কারণ জানে আমাকে কিছু বললেই আপুকে আরও বেশি মারবো।

আজ খুব বেশি মনে পড়ে Mustafa মামা, Bulu মামা, আব্দুল মামা, শরাফত মামা দের কথা। ছোট বেলায় শুধুই ভয় দেখাতেন আর অনেক বেশি আদর করতেন। বুলু মামা তো নানার নৌকা নিয়ে আমাদের ঘুরতে নিয়ে যেতেন আর মোস্তফা মামার তুলনা হয় না। ছোট বেলায় আমি তাঁর অনেক বড় ভক্ত ছিলাম। উনি অনেক দুষ্ট ছিলেন। রাতের আঁধারে তরমুজ চুরি করে খাওয়া, ডাব চুরি করে খাওয়া আমি তাঁর কাছ থেকেই শিখেছি। উনার মত একজন মামা পেয়ে সত্যিই আমি ধন্য।

আজ জীবনের এ প্রান্তে এসে আমি শুধু ভেবেই যাই কথায় আমার সে সোনালী অতীত, কোথায় আমার সে চিরচেনা গোসাইপুর গ্রাম নামক নানা বাড়ি, কোথায় আমার সে চিরচেনা আমি??? আজ সবাই সবার মত করে অনেক ভালো আছে, কিন্তু দিন শেসে সবাই ক্ষুধার্ত, বড্ড বেশি ক্ষুধার্ত, অতীতের জন্য ক্ষুধার্ত, স্মৃতির জন্য ক্ষুধার্ত, চিরচেনা গ্রামের জন্য ক্ষুধার্ত, হারানো কে ফিরে পাবার জন্য ক্ষুধার্ত।

আমি জানি, রাত পোহালে দিন আসে। এটাও জানি নাটাই বিহীন ঘুড়ি মুক্ত আকাশে উড়ে গেলেও আকাশের মুক্ত বাতাসের সাথে হারিয়ে যাবার আগে সে তার নাটাই এর দিকে মুখ ফিরে চায় অতীতের টানে, অস্তিত্বের টানে, মমতার টানে। কিন্তু আমি জানি না কবে নাগাদ আমরা সবাই আবার এক হয়ে মিলিত হতে পারব। আদৌ কখনও পারবো কি ???

---গোলাম রাব্বানী
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:২৪
৭টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার কিছু ভুল!

লিখেছেন মোঃ খালিদ সাইফুল্লাহ্‌, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮

১। ফ্লাস্কে চা থাকে। চা খেতে টেবিলে চলে গেলাম। কাপে দুধ-চিনি নিয়ে পাশে থাকা ফ্লাস্ক না নিয়ে জগ নিয়ে পানি ঢেলে দিলাম। ভাবছিলাম এখন কি করতে হবে? হুঁশ ফিরে এল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×