মুঠোফোনে সকাল এবং অর্পিতা তাদের না বলা সকল কথা বলে যেতে থাকে। বিভিন্ন কথার ফাঁকে সকাল বলে,
- ‘কৃষ্ণচূড়ার সবগুলো লাল তোমাকে দেবো। তুমি নেবে?’
- ‘আর কিছু দিবা না?’
সকাল কিছুক্ষণ চুপ করে থাকে। তারপর আবার বলতে শুরু করে,
- ‘আকাশে উড়ে যাওয়া সবগুলো মেঘ দেবো।’
- ‘আর?’
- ‘বৃষ্টিতে ভিজে যাওয়া বেলি ফুলের মালা দেবো।’
- ‘আর?’
- ‘স্নান সেরে আসা একগুচ্ছ কদমফুল দেবো।’
- ‘আর?’
- ‘শীতের সকালে সবুজ ঘাসের উপর ঝলমল করতে থাকা শিশির ফোঁটা দেবো।’
- ‘আর?’
- ‘হিম হাওয়ায় সদ্য জন্ম নেওয়া সকাল, মিষ্টি রোদ্দুর, অলস দুপুর, ক্লান্ত বিকেল, লজ্জাবতী সন্ধ্যা, মায়াবী নিশীথ সবই তো তোমাকে দিলাম। আর কি চাও বল?’
অর্পিতা কিছুক্ষণ চুপ করে থাকে। সকালের কাছ থেকে সে আর কী চাইবে তা ভাবতে থাকে। তারপর বলে,
- ‘কেন ভালোবাসা দিবা না?’
অর্পিতার কথা শুনে সকাল কিছুটা অবাক হয়। ঠোঁটের কোণে হাসি লুকিয়ে রেখে সকাল বলে,
- ‘ভালোবাসা পেতে হলে যে কাছে আসতে হয়।’
- ‘তাই না? আচ্ছা যাও, কাছে এলাম।’
- ‘কই, আমি তো তোমাকে খুঁজে পাচ্ছি না।’
- ‘মনের চোখ দিয়ে দেখো। তাহলে খুঁজে পাবা।’
- ‘হুম, এবার পেয়েছি। কিন্তু তুমি এত দূরে দাঁড়িয়ে আছ কেন? আরও কাছে আসো।’
- ‘আরে বাবা, আমি তো কাছেই আছি। আর কত কাছে আসবো?’
- ‘যতটা কাছে আসলে ভালোবাসা দেওয়া যায়!’
সকালের কথা শুনে অর্পিতা হাসে। তখন মুঠোফোনের মাধ্যমে অর্পিতার ঠোঁটে সকাল এঁকে দেয় প্রেমের অদ্ভুত মানচিত্র। কয়েক মিনিট যাবত কেউই আর কোন কথা বলে না। খানিক বাদে অসারতা ভেঙ্গে অর্পিতা জিজ্ঞেস করে, ‘তুমি তো আমাকে অনেক কিছুই দিলে। এবার তুমি কী চাও বল?’
সকাল বলে, ‘সবটা সময় জুড়ে বুকের বাম পাশের চিনচিনে ব্যাথা হয়ে থেকো, প্লিজ!’
'ভালোবাসার এমন সব মিষ্টি গল্প নিয়ে লেখা হয়েছে 'হৃদকথন' উপন্যাসটি।
বইটি পাওয়া যাচ্ছে নওরোজ কিতাবিস্তানের ১১২-১১৩-১১৪ নং স্টলে।