somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নিজের সাথে বোঝাপড়া

১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মানুষ হিসেবে আমরা প্রত্যেকেই কোন না কোন তত্ত্বকে ভিত্তি করে আমাদের বুঝকে ধারণ করে চলি।মানুষের চিন্তার শিশুকাল( thought formation) থেকে চিন্তার গন্তব্য(thought destination বা destination thought) পর্যন্ত কোন না কোন তত্ত্ব আমরা লালন করি, পালন করি।মাঝখানে চিন্তার পরিবর্তনও ঘটে(thought transformation)। যে মানুষ ব্যক্তি জীবনে রিফ্লেকশন করার চর্চা জারি রাখেন, সম্ভবত তাদের পক্ষেই চিন্তার গন্তব্যে পৌছা সম্ভব। বর্তমানে বসে নিজের, পরিবারের, সমাজের, রাষ্ট্রের আমলনামার দিকে ক্রিটিকাল নজর দেয়ার নাম হচ্ছে রিফ্লেকশন।এটা সমগ্রকে সামনে আগাতে সাহায্য করে।

আমরা এমন একটা সংঘাতময় সময় অতিক্রম করছি যেখানে প্রচলিত প্রত্যেকটা বয়ান, তত্ত্ব, ইজম, মত, মতবাদ প্রশ্নবিদ্ধ।এক সময় যাদের দেখে আমরা নিজেদের চিন্তার ডাইরেকশন ঠিক করতাম, এখন এসে দেখি আরে! এই লোকের, লোকদ্বয়ের, দলের বা সংগঠনের তো দেখি নিজেরই কিবলা ঠিক নাই!? দ্বৈততা এখন সত্যের চেয়েও বেশি প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে।বৃদ্ধদের কথা বাদ দিচ্ছি, কিন্তু তরুণদের উদ্দেশ্য বলব এই সময়ে এসে যদি আমরা প্রচলিত প্রত্যকটা বিষয়কে প্রশ্ন না করি তাহলে নিজের সাথে নিজের মীমাংসা হবেনা। কয়েকটা বিষয় বলি;

১। আমাদের প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত আফসোস করে বললেন মুসলমানদের মধ্যে ঐক্য না থাকায় সব জায়গায় মার খাচ্ছে।এখানে ঐক্যের যে তত্ত্ব তিনি অনুমান করছেন, সেটা আসলে উপনিবেশিক প্যান-ইসলামিজম তত্ত্বের প্রতিধ্বনি।আরবলীগ, ওআইসি তৈরি হবার পরও কেন এই তত্ত্ব চলছেনা?

২। মুসলিম মুসলিম ভাই ভাই।আধ্যাত্মিকভাবে এই তত্ত্ব হয়ত সত্য।কিন্তু বাস্তবতা? বুল শিট।পাকিস্তানে প্রায় ৩ মিলয়ন বাঙালী, ইরানে

৩ মিলয়ন আফগানী, বাংলাদেশে ১ মিলিয়ন বিহারী সবাই মুসলিম।অথচ নুন্যতম মানবিক অধিকার এদের নেই।কোন অমুসলিম দেশেও রিফিউজিদের এতটা করুণ অবস্থা কিনা সন্দেহ।

৩। বাঙালী জাতির হাজার বছরের ঐতিহ্য....এই বাঙালীবাদ অচল।আসামের বাঙলাভাষীরা যখন নির্যাতিত হয় আমরা এই তত্ত্বের ধারকেরা চুপ থাকি। রোহিঙ্গারা যখন বাঙালী পরিচয়ে 'উতপাত' তৈরি করে আমরা চেতিয়ে উঠি।

৪। সংখ্যালঘুর অধিকার আদায়ে আমরা সোচ্চার। খুবই ভাল। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে মুসলমান সংখ্যালঘু। বাঙালী হয়েও তারা দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হয়ে আছে।তাদের নিয়ে আমাদের হৈ চৈ এখানে হয় না কেন? সিলেক্টিভ মানবতাবাদ?

৫। সমাজতন্ত্র কায়েম হলে গরীবের রাজ কায়েম হবে।এনাদার বুল শিট।চীনের ৬ মিলিয়ন জীবন দিয়েছে কালচারাল বিপ্লবের নামে।বার্মায় ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর ওপর নিপীড়ন করে শরণার্থী বানানো হয়েছে সোসালিস্ট রিপাবলিকের নামে।

৬। হিন্দু-মুসলিম ঐক্য অসম্ভব।ভারতীয়-পাকিস্তানি জাত শত্রু।বাংলাদেশী-পাকিস্তানি একে অপরের শত্রু, তারা কখনো একত্রে বসবাস করতে পারেনা। অল আর বুল শিট।কেননা আমাদের সাবেক উপনিবেশ মাষ্টার ব্রিটেনে উপরোক্ত সব দেশের, ধর্মের, জাতের মানুষ বছরের পর বছর একত্রে বসবাস করছে।ব্রিটেনে তারা পাশাপাশি বসবাস করতে পারলে ভারতীয় মহাদেশে নয় কেন? অর্থাৎ, তত্ত্ব হিসেবে আজন্ম ঘৃণা, হিংসা টিকে থাকছেনা।কিন্তু আমরা টিকিয়ে রাখছি।কেননা আমাদের এখানে এগুলো বারবার রিসাইক্লিং করে মনে করিয়ে দেয়া হয়।

এভাবে বহু উদাহরণ দেয়া যায়।যেটা বলছি, এসব আমাদের নিজের বুঝ, রেটরিক কোন না কোন তত্ত্ব মেনে চলে।এসবকে প্রশ্ন করা নিজের সাথে এই অশান্ত সময়ে বোঝাপড়ার প্রথম শর্ত।নিজের তত্ত্ব ও চিন্তাকে falsify (ভুল) প্রমান করার অনুশীলন চিন্তার গন্তব্যে পৌছার প্রাথমিক শর্ত। আমি যা জানি তাহাই সঠিক, এমন বিচার মানি কিন্তু তালগাছ আমার টাইপের মানসিকতা নিয়ে আর যাই হোক, সাবালকত্ব অর্জিত হবার নয়। আর এই নাবালকেরা নির্যাতিত নিপীড়িত মানুষের ব্যাথা কমাতে পারেনা,বরং জটিলতা আরো বাড়িয়েই দেয়

মূলধারা বাংলাদেশ
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১১:০১
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হালহকিকত

লিখেছেন স্প্যানকড, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:১২

ছবি নেট ।

মগজে বাস করে অস্পষ্ট কিছু শব্দ
কুয়াসায় ঢাকা ভোর
মাফলারে চায়ের সদ্য লেগে থাকা লালচে দাগ
দু:খ একদম কাছের
অনেকটা রক্তের সম্পর্কের আত্মীয় ।

প্রেম... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×