খুব সকাল এ সিলেট বাস ষ্ট্যান্ড এ নেমে আমরা প্রথম এ হাত মুখ ধুয়ে একটা সিএনজি করে হযরত শাহজালাল (র) এর মাজার জিয়ারত করতে গেলাম মাজার এর সামনে এই ভোরবেলা ও মানুষ এর ভির আমরা লাইন ধরে এগিয়ে চলছি মাজার জিয়ারত করতে প্রথম এ ডুকেই আমরা অজু করে নিলাম অজু করে সোজা মাজার প্রাঙ্গন এ গিয়ে দুই রাকাত নফল নামাজ পড়ে নিলাম নামাজ পড়ে মাজার জিয়ারত করলাম জিয়ারত শেষ করে আমরা সবাই মিলে ছবি তুলতে চাইলাম কিন্তু ঐখানরে খাদেম আমাদের ছবি তুলতে না করলো আমরা ছবি নাতুলে গেলাম আমাদের প্রিয় নায়ক সালমান শাহ এর কবর জিয়ারতে করতে
নায়ক সালমান শাহ এর কবর জিয়ারত শেষে আমরা নেমে আসলাম মাজার চত্তরে ঐখানে কিছু ছবি তুললাম
ছবি তুলে আমরা গেলাম হযরত শাহজালাল (র) এর জালালি কবুতর দেখতে
একটা জিনিস লক্ষ করলাম চারদিকে অনেক অনেক জালালি কবুতর এখান থেকে দেখলাম হযরত শাহজালাল (র) এর কুপ এখন আর সেই আগের মতো নেই এখন খুব নোংরা হয়ে গেছে আমি ছবি তুলতে পারিনি এটা দেখে দেখলাম হযরত শাহজালাল (র) এর গজার মাছ।
মাছ গুলি কে সবাই খাবার দিচ্ছে
কিন্তু খাচ্ছে না সবাই বলে যার খাবার খাবে তার মন এর আসা পুরণ হবে আসলে কি তাই আমার মনে হয় সারা দিন মাছ গুলিকে সবাই খাবার দিচ্ছে কত আর খাবে মাছ দেখে গেলাম হযরত শাহজালাল (র) এর মাজার এ বিশাল আকার হাড়ি
আমাদের হাতে সময় খুব কম তাই বেশিক্ষন সময় নিয়ে দেখার উপায় নেই তাই খুব তারা হুরা করে সব দেখতে হচ্ছে আমরা বেশ কিছু ছবি তুলে মাজার প্রাঙ্গন থেকে বের হইলাম। বের হয়ে আমাদের পরবর্তী গন্তব্য হযরত শাহ পরাণ (র) এর মাজার শরীফ। তাই হযরত শাহজালাল (র) মাজার থেকে বের হয়ে সিএনজি খুজতে লাগলাম, একটা সিএনজি ও পেয়ে গেলাম সিএনজি নিয়ে সোজা রওনা দিলাম হযরত শাহ পরাণ (র) এর মাজার শরীফ এ, যাওয়ার মাঝে দেখা দিলো সিএনজিতে সমস্যা, গ্যাস শেষ। আমরা একটু হেটে সিএনজি ঠেলে ঠেলে গ্যাস পাম্পে পৗেছালাম।
পাম্পে একটা ছবি তুলেছিলাম, গ্যাস পাম্পে ভির ছিলোনা তাই তারা তারি গ্যাস ভরে আবার রওনা হলাম, অল্প কিছু ক্ষণ এর মধ্যে আমরা হযরত শাহ পরাণ (র) এর মাজার শরীফ এ পৌছে গেলাম।
মাজার শরীফ এ পৌছে প্রথম এ ফ্রেশ হয়ে অজু করে নিলাম এখানে অবশ্য একটা পুকুর আছে কিন্তু নোংরা।
অজু করে প্রথম মাজার এ গেলাম গিয়ে দুই দুই করে ৬ রাকাত নফল নামাজ আদায় করলাম। নামাজ শেষ করে মাজার এর সামনে দাড়িয়ে দোয়া দুরুদ পড়ে মাজার জিয়ারত করলাম। এইখানে খুব ভিড় এর মাঝে কিছু ছবি তুলেছি।
মাজার জিয়ারত করে নামতে হয় উল্টা ভাবে সবাই নামছে, আমরা নেমে জাচ্ছি এর মাঝে দেখলাম মাজারের পাশে খুব সুন্দর মসজিদ। আমরা মসজিদ এর সামনে কিছু ক্ষণ বসলাম ছবি তুলে আবার নেমে আসলাম।
অনেক বেলা হয়ে গেছে এর ভিতর কিছুই খাওয়া হয় নাই, খুব খিদে পেয়েছে তাই এখন না খেলে আর সময় পাওয়া যাবেনা কারণ এখান থেকে আমাদের পরের গন্তব্য সিলেট জাফলং, এর মাঝে আর সময় পাওয়া যাবে না তাই খেয়ে নিতে হবে। কিন্তু আসে পাশে যে ভিড় কি করবো বুঝতে পাছিলাম না। তাই ওখান থেকে ১০ টাকা করে মেইন গেট এর সামনে এসে নামলাম মেইন রোড ধরে কিছু দুর হেটে এসে একটা ছোট হোটেল পেলাম কিন্তু এতো ভিড় বসার জায়গা নেই অনেক ক্ষন দারিয়ে ও পেলাম না কি করি বের হলাম বের হয়ে সামনের দিকে একটু এগিয়ে গেলাম আরও একটি হোটেল পেলাম এটাতে ও একি অবস্থা কি করার অনেক ক্ষণ দাড়িয়ে আছি আর ভাবতেছি হাতে সময় ও কম এই খানে সময় নষ্ট করলে ঘুরার সময় পাওয়া যাবেনা। তাই চলে যাব কিনা ভাবছিলাম এর ভিতর একটি টেবিল ফাকা হলো আমরা ৪জন বসে পরলাম কিন্তু সবাই ব্যাস্ত এর মাঝে একজন কে ডেকে খাবার এর অর্ডর করলাম। সে বললো দেরি হবে কি করার বসে রইলাম অনেক ক্ষণ পরে আমাদের জন্য ১টি করে রুটি আর ডাল নিয়ে আসলো। একটি রুটি খেয়ে বসে আছি আর খবর নেই ডিম এর অর্ডার করছি তার তো পাত্তাই নেই। কিছুক্ষণ পর আরও একটি করে রুটি দিলো খেয়ে বিল পরিশোধ করে বাহির হলাম কি করে জাফলং জাওয়া যায় আশে পাশে খোজ নিয়ে জানতে পারলাম সিএনজি এবং বাস দুইটি যায় জাফলং। আজ ছিল শুক্রবার তাই সিএনজি নেই যাও আছে এক দুইটি ভাড়া খুব বেশি ১৫০০ টাকা করে। কি করব ভাবছি এর মাঝে একটি বাস চলে আসল আমরা সবাই বাস এ উঠে পড়লাম। কিন্তু বাস এ কোন সিট ফাকা নেই বাস কানায় কানায় ভরপুর কোন উপায় না দেখে দারিয়ে আছি। কিন্তু কত দূর আমাদের কারও জানা ছিলনা। বাস চলছে তো চলছে এতো দূরেরর রাস্তা সবাই দারিয়ে। আমাদের দারিয়ে থাকার অভ্যাস নেই হাত পা খুব বেথা হয়ে গেলো তার উপর লোকাল বাস জায়গাই জায়গাই থামছে আর যাত্রি তুলছিল। বাস ভরা লোক দাড়িয়ে আছে। প্রয় ২-৩ ঘন্টা পর আমরা জাফলং এসে পৌছলাম। তবে হযরত শাহ পরাণ (র) এর মাজার শরীফ হইতে জাফলং পর্যন্ত রাস্তা খুব সুন্দর। চার পাশে প্রকৃতিক পরিবেশ গাছ পালা ভরপুর অপূর্ব সুন্দর। জাফলং যওয়ার আগে একটা নদী পাড় হতে হয়। নদীর দুই পাড় অপূর্ব সুন্দর, দুই পাড়ে লাল মাটি, নদীর পানি সচ্ছ নীল আর দূরে ভারত এর পাহার দেখা যায়। দৃশ্য দেখে দু চোখ জুরিয়ে যায়, এমন দৃশ্য দেখার পর মনে হয় রাজ্যের ক্লান্তি দূর হয়ে যায়।
অনেক টা পথ চলার পর দুই পাশে শুধু পাথর আর পাথর মানুষ জন পাথর গাড়ি দিয়ে নিয়ে যাচ্ছে আবার মেশিন দিয়ে পাথর ভাঙ্গছে গাড়ি দিয়ে পাথর নদী থেকে তুলে আনছে। কিযে মনোরম দৃশ্য নিজ চোখে না দেখলে বলে বুঝানো যাবে না।
অবশেষে আমরা জাফলং এসে পৌছলাম।
রাস্তার অবস্থা খুব খারাব সারা দিন নদী থেকে ট্রাক ভর্তী পাথর উঠা নামা করে রাস্তা পানি আর কাদায় একাকার। তার ভিতর বাস থেকে আমরা নেমে গেলাম।
তখন বেলা ১২:৩০ কি ১ টা বাজে পেটে খুব খিদে পেয়েছে কিছু না খেলে শরীর আর চলছে না। খাওয়ার কথা বললাম সবাই বললো গােসল করে এসে খাওয়া দাওয়া করব। কিন্তু আমি বল্লাম আমার পক্ষে সম্ভব না, যে না খেয়ে পানিতে নেমে গোসল করা। আগে খেয়ে দেয়ে তার পর ঘুরা ঘুড়ি করবো। বলারপর সবাই মিলে একটি হোটেলে ডুকলাম। খাবার কি আছে জানতে চাইলাম বললো, ভাত, মাছ, মাংস। আমরা ভাত, মাছ, মাংস, সবজি অর্ডার কলাম। কিন্তু খাবার খুব একটা স্বাদ পেলাম না। ভাত আমাদের ঢাকার মত না, কেমন জানি? যাহোক খাওয়া দাওয়া করে আমাদের গন্তব্য স্বপ্নের জাফলং । রাস্তা ধরে হেটে নদীর পার পৗেছানো বেশ কষ্ট সাধ্য রাস্তা খুব খারাব অবস্থা পানি, কাঁদা ভরপুর আর ট্রাক চলছে পানি ছিটে কাপড় নষ্ট হচ্ছে তবু কষ্ট করে হেটে চলছি এর ভিতরে আন্য রকম আনন্দ উপভোগ করলাম ।
রাস্তার দুই পাশে পাথর আর পাথর, দুই ধারে স্তুপ করে রাখা হয়েছে।
মেশিন দিয়ে পাথর ভাংগা হচ্ছে আর রাস্তার দুই পাশে রাখা হচ্ছে স্তুব করে।
আল্লাহর কি অপার মহিমা দেখলাম পাথরের পাহার আবার নদী দিয়ে পাথর ভেসে আসছে মানুষ সেই পাথর সংগ্রহ করছে।
আমরা শুকনো মৌসুমে গেছিলাম তাই দেখলাম এই ভাবে মাটি খুড়ে পাথর তোলা হচ্ছে।
আবার যে সব জায়গাতে পানি আছে সেই জায়গা থেকে ছাকনা দিয়ে ছেকে পাথর তুলছে।
এখানে মানুষ এর জীবিকা এই পাথর তুলে বিক্রয় করা। আমরা রাস্তা ধরে হেটে হেটে একবারে জাফলং মূল ঝর্ণার কাছা কাছি চলে আসলাম। বর্ষা কালে ঝার্ণায় নৌকায় করে যেতে হয়। এখন নদীতে পানি নেই তাই হেটে যাওয়া যায়। তবে জাফলং এর আসল রুপ দেখতে হলে বর্ষার শেষে আসতে হবে। তবেই ঝর্ণার আসল স্বাদ পাওয়া যাবে।
নদী এখন শুকনো পানি নেই সবাই হেটে জাফলং ঝর্ণা দেখতে যাচ্ছে। আমরাও তাদের মত হেটে রওনা হলাম ঝর্ণা দেখতে।
জাফলং এ আমাদের প্রথম সেলফি।
পরের পর্বে থাকবে জাফলং এবং আসপাশের ছবি।
চলবে.....
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জুলাই, ২০১৭ দুপুর ১:৪২