টানা দুই দিন বৃষ্টির পর আকাশ একটু পরিষ্কার হতেই পায়ে জুতা গলিয়ে বেড়িয়ে পড়লাম। শেষ কবে বিকেলটা ঠান্ডা আর ধুলাবালি ছাড়া দেখেছি মনে করতে পারছি না। বুক ভরে পুরোপুরি শ্বাস নিতে পারছি। আহ্! যতদুর চোখ যাচ্ছে, স্বচ্ছ দেখতে পারছি।
টুক করে নীলক্ষেতের বাসে উঠে পড়লাম। এত দুরের যাত্রী পেয়ে কন্ট্রাকর মামাও খুশী। আবার ঝির ঝিরে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। একবার জানালা খুলে বাইরে একটু দেখে জানালা বন্ধ করে দেই। এরকম করতে করতে নীলক্ষেতে চলে এলাম। নিউমার্কেটের ভেতরটা ভেসে গেছে। পাম্প চালিয়ে পানি সরাতে হচ্ছে। মাগরেবের আযান হচ্ছে। রাস্তায় লোকজন কমে এসেছে। ভুল করে ছাতাটা নিয়ে আসা হয়নি। এদোকান ও দোকান ঢু মারছি। যে বইটা চেয়েছি সেটা পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু অক্ষরগুলো এত ছোট যে ইংলিশ টু বাংলা ডিকস্নারির কথা মনে করিয়ে দেয়। ডিকস্নারি তো কালেভাদ্রে খুলে দেখি। কিন্তু বইটা কালেভাদ্রে খোলার জন্য কিনছি না।
দাম কত মামা?
আড়াইশ টাকা।
একটু বড় সাইজের বই হবে?
না আমরা এই সাইজেই প্রিন্ট করি।
একটা বড় সাইজে প্রিন্ট করে দিতে পারবেন?
এফোর সাইজে প্রিন্ট করে দেয়া যাবে। সাড়ে নয়শো পড়বে দাম।
মামা যদি রংগিন প্রিন্ট করাতে চাই?
মামা কেলকুলেটরে হিসেব করে বললেন, আঠারশ টাকা পড়বে।
আমি চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে রইলাম।
আমার অবাক হওয়া দেখে মামা নির্লিপ্ত মুখে বললেন, আজকাল আঠারশ টাকায় ভাবীগর লাইগ্যা শাড়িও কিনতে পাওয়া যায়না।
বইটা কেনা হয়নি। আর গতরাত থেকে জ্বরে ভুগছি। জ্বরের ঘোরে স্বপ্ন দেখছি, আমার মুনিয়া পাখি গুলো এক ডজন বাচ্চা দিয়েছে। দশটি বাচ্চা নীল আর দুইটি বাচ্চা সন্ধ্যার পশ্চিম আকাশের লাল আভার রংয়ের। দুর থেকে ফেরীওয়ালা ডাকছে, শাড়িই কিনবেন শাড়িঈ? টাংগাইলের শাড়িঈ....
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৩:৩২