ঠাস করে জ্বলে উঠে নিভে যায় আমরা বাংলাদেশিদের দেশপ্রেম-অন্যায়ের প্রতিবাদ। সাম্প্রতিক ঘটনাই ধরি! রাজাকারের ফাসির দাবিতে শাহবাগ মোড়ে কয়জনা প্রতিবাদ জানালো, বইমেলার উৎসুক জনতা ভিড় জমালো জমে উঠলো, গড়ে উঠলো গণজাগরণ মঞ্চ। ভায়েগ্রাসেবীরা জাগ্রত হলো ফলাফল দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল এমন কি বিদেশের নানান দেশেও গড়ে উঠলো গণজাগারণ মঞ্চ। ফেসবুক সয়লাব, সরকার প্রধানও যোগ দিয়েছিলেন মোমবাতি প্রজ্জ্বলনে। রাজীব হত্যা হলো, প্রতিবাদে সোচ্চার আবার ভায়েগ্রাসেবীরা (আমি নিজেও তার হত্যা দিনেই প্রতিবাদ জানাই এখানে এবং ফেসবুকে) । সময় গড়ালো, দাবি ফুরালো, বিভেদ এলো, ভেংগে গেলো গণজাগরণ মঞ্চ। রাজীব হত্যার কথা অনেকেরই বোধ করি এখন মনে নেই।
অভিজিৎ এবং তার স্ত্রী নির্মমভাবে অক্রান্ত হলেন। অভিজিৎ নিহিত হলেন প্রতিবাদে সয়লাব এখান, ওখনা, সেখান, ব্লগ এবং ফেসবুক। এমন অনেকেই আছেন জীবনে অভিজিৎ এর নাম শুনেননি তারাও গদগদ হয়ে অভিজিৎ দা, অভিজিৎ দা করে হত্যা প্রতিবাদের স্টাটস দিয়ে প্রতিবাদে মুখর। সময় গড়ালো, দাবি ফুরালো, এখন সব ঠান্ডা। অভিজিৎ এবং রাজিবের সোসাল স্টাটাসে পার্থক্য আছে তাই অভিজিৎ দা সভা, সেমিনারে ফিরে আসবেন, রাজিব ঐ পর্যন্তই।
অভিজিৎ "আইটেম" তো গেলো এখন ভায়েগ্রাসেবীরা কি করবে!!! থার্ড পার্টি ভিডিও মওকা মওকা নিয়ে উচলায় পরতে লাগলো ভায়েগ্রাসেবীরা। ভারতীয় পন্য বর্জন, পেপসি কেনা বন্ধ, দেশে এয়ারটেল ব্যাবহার বন্ধ এবং অতি উৎসাহীদের মওকা মওকা ভিডিওর ইট কা জবাব পাটকেল সে ভিডিও নির্মান।
এবারের ক্রিকেট বিশ্বকাপে ভারত গ্রুপ পর্বে আয়ারল্যান্ড এর মত দেশের কাছে হেরেছে! আরব আমিরাতের কাছে হারতে হারতে জিতেছে! গড় পরতা খেলেছে জিম্বাবুয়ে কিবা পাকিস্তানের সাথে!!
ওহে অবোধ ক্রীকেট প্রেমি ভারত এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপে টাইটেল ধারী বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। গ্রুপ পর্বে কোনো দলের কাছে হারেনি কিবা হারতে হারতে জিতেনি। তারা ভালোভাবে খেলেই, বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের ভাব বজায় রেখেই কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছে।
রিয়াদের যে ছক্কা/আউট এর ছবি সবাই ফেসবুকে শেয়ার দিচ্ছেন, ভায়েগ্রাসেবীর মতে জ্বলে উঠছেন তারা কি ভিডিও ফুটেজ টা দেখেছেন? বাউন্ডারী লাইন নির্ধারনের ওগুলো কি লোহা দিয়ে তৈরি করা এবং মাটিতে শক্ত করে পুতে রাখা? ওগুলা টেট্রা প্যাকের মত কাগজ। বাউন্ডাড়ি যদি জুতা স্পর্শই করলো তবে এক বিন্দুও কেপে উঠলোনা কিবা নড়লোনা?!!
ব্যাটসম্যান সব সময় বেনিফিট অফ ডাউটের সুফল পায় ফিল্ডার বা বলার নয়। এল বি ডা্ব্লুউ এর যে সিদ্ধান্ত নিয়ে সোচ্চার তা কি ৫০-৫০ নয়? তা কি ১০০ বা ৯০ বা ৭০ বা ৬০ ভাগো বলারের পক্ষে ছিলো? অমুক তখন আউট হলে ৩০-৪০ রান কম হতো। আপনি কিভাবে জানেন পরের ব্যাটসম্যান এসে ৭০-৯০ রান করবেনা?!
ইংল্যান্ড এবং বাংলাদেশের অতীব গুরুত্বপুর্ন ম্যাচে থার্ড আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত কার পক্ষে গেলো? ঐ আউট টা কি বাংলাদেশের টার্নিং নয়? তো আই সি সি এখানে দুর্নীতি করেছে প্রশ্ন উঠলো না কেনো?
বাংলাদেশ ক্রিকেটে তার সর্বোচ্চ খেলাটা খেলেছে। মাশরাফীর প্রথম দিককার ওভার ম্যাচের উপর চাপ ফেলেছে। চাপ ফেলেছে ভায়েগ্রাসেবীদের সমর্থন। মাঠে মাশরাফি যেভাবে তার সতীর্থদের সাথে উত্তেজিত হয়েছেন এমন কি অন্য কোনো দলের অধিনায়ক কভু হয়েছেন কোনো ম্যাচে?!
পরিসংখ্যান, সামর্থ্য এবং অবস্থা বিবেচনা করতে হবে। এবারের বিশ্বকাপে বাংলাদেশের অর্জন অনেক। এই অর্জনকে কাজে লাগাতে হবে। আই সি সি দুর্নীতি করেছে এই কল্প সুখে ভেসে বেড়ালে চলবেনা।