শেষ বিকেলের গাঢ় কুসুমরঙা সূর্যটা ডুবু ডুবু করছে। মায়াবী আবেশে ছেয়ে থাকা ব্যস্ত এই শহরের ফুটপাত ধরে হাঁটছিলাম। শাঁ শাঁ করে ছুটে চলা গাড়িগুলোর দিকে তাকাচিছলাম মাঝে মাঝে। কতো ব্যস্ত এই শহর, কতো ব্যস্ত এই শহরের মানুষ!
হাঁটতে হাঁটতে ছোট্ট একটা জটলা দেখে থমকে দাঁড়ালাম। পনের ষোল জন মানুষের জটলাটা ফাঁক করে উৎসাহী মন নিয়ে ভিতরে ঢুকলাম। প্রথমে ভেবেছিলাম, কোনো এক ক্যানভাসার ভেষজ ওষুধের পসরা সাজিয়ে বসেছেন হয়তো।
তারপর দেখলাম, না। ফুটপাতের কোল ঘেষে মুখ থুবড়ে পড়ে আছে একটি নিথর মানব দেহ। নাক আর মুখের কাছটায় উড়াউড়ি করছে কয়েকটি মাছি। পিচের সাথে লেগে থাকা রক্ত জমাট বেঁধে কালচে রঙ ধারণ করতে শুরু করেছে।
পড়নে ছাই রঙের ফর্মাল প্যান্ট আর গায়ে হালকা আকাশী রঙের ইন করা ফুলহাতা শার্ট। কালো পিচ আর ধুলোবালির সাথে একেবারে আলিঙ্গন করে পড়ে আছে দেহটি।.....
ক্রমশ জটলা কমতে শুরু করেছে। যে যার মতো হাঁটতে লাগলো আপন ঠিকানায়। ব্যস্ত এই শহরের বুকে ফুটপাতের কোল ঘেষে একটি নিথর নিস্তব্ধ দেহ পড়ে থাকা যেন কোনো অস্বাভাবিক ঘটনাই নয়। যে যার মতো যাচ্ছে আর ঘাড় বাকিয়ে একনজর দেখছে শুধু; একটি নিথর নিস্তব্ধ দেহ মুখ থুবড়ে পড়ে আছে, তাতে কারুর ই কিছু যায় আসে না। কারুর ই না।.........
বুকের ঠিক মধ্যখান হতে হাঁড় কাঁপানো গভীর এক দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে ব্যস্ত শহরের দূষিত বাতাসে মিলিয়ে গেল...