....আমি জানি আমার পবিত্র ধর্ম "ইসলাম" শান্তির ধর্ম । কষ্ট লাগে যখন দেখি ইসলামের অপব্যাখ্যা দিয়ে মানুষ হত্যা করা হয়। এ যাবত আমি কোথাও পাই নি, আল্লাহ তালা ও তাঁর প্রিয় হাবিব রাসূল পাক (স.) বলেছেন যে, যারা তোমাদের ধর্মে বিশ্বাস করে না, তাদের তোমরা "হত্যা" করো... কোথাও পাই নি সত্যি। যদি কারও কাছে দলিল থাকে তবে দেখালে বাধিত থাকিবো....
আসুন নিজের বক্তব্য নয়, পবিত্র কুরআনুল কারীম ও হাদিস শরীফ থেকে কিছু কথা আমরা সবাই জানার চেষ্টা করি...
** নরহত্যার শাস্তি সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে স্পষ্টভাবে ঘোষণা করেছেন, "নরহত্যা বা পৃথিবীতে ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তি ছাড়া কেউ কাউকে হত্যা করলে সে যেন দুনিয়ার সমগ্র মানবগোষ্ঠীকে হত্যা করল।" (সূরা আল-মায়িদা, আয়াত: ৩২)**
*রাসূল (স.) বলেছেন যে "দুনিয়া ধ্বংস করে দেওয়ার চেয়েও আল্লাহর কাছে ঘৃণিত কাজ হলো মানুষ হত্যা করা।" (তিরমিযি)*
* "কিয়ামতের দিন মানুষের মধ্যে সর্বপ্রথম যে মোকদ্দমার ফয়সালা হবে, তাহলো রক্তপাত (হত্যা) সম্পর্কিত।" (বুখারি ও মুসলিম)*
* "একজন প্রকৃত মুমিন তার দ্বীনের ব্যাপারে পূর্ণ প্রশান্ত থাকে, যে পর্যন্ত সে অবৈধ হত্যায় লিপ্ত না হয়।" (বুখারি)*
* হযরত আবূ হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত যে, নবী করিম (সা.) বলেছেন, "তোমরা সাতটি ধ্বংসাত্মক কাজ থেকে বিরত থাকো। সাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেন- সেগুলো কী হে আল্লাহর রাসূল? তিনি বললেন, ১. আল্লাহর সাথে শরীক করা ২. জাদু করা ৩. অন্যায়ভাবে নিরপরাধ লোককে হত্যা করা ৪. সুদ খাওয়া ৫. এতিমের সম্পদ আত্মসাৎ করা ৬. রণক্ষেত্র থেকে পলায়ন করা ৭. সুরক্ষিত পবিত্রা নারীকে অপবাদ দেওয়া।’ [ সহীহ বুখারী : ৬৮৫৬; মুসলিম : ১২৯]*
* হযরত ইবন উমর (রা.) থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন "মুমিন তার দীনের (ধর্ম) ব্যাপারে সর্বদা অবকাশের মধ্যেই থাকে যতক্ষণ পর্যন্ত না সে নিষিদ্ধ রক্তপাত ঘটায়।’ [ সহীহ বুখারী : ৬৮৬২]*
* হযরত ইবন আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলু (স.) বলেছেন "কিয়ামতের দিন নিহত ব্যক্তি হত্যাকারীকে নিয়ে আসবে। হত্যাকারীর চুলের অগ্রভাগ ও মাথা নিহতের হাতের মুষ্ঠিতে থাকবে আর তার কণ্ঠনালী থেকে তখন রক্ত ঝরতে থাকবে। সে বলবে, হে প্রভু, এ ব্যক্তি আমাকে হত্যা করেছে। এমনকি সে তাকে আরশের কাছে নিয়ে যাবে।" [তিরমিযী : ২৯৫৫; মুসনাদ আহমদ : ২৫৫১, সহীহ, সিলসিলা সহীহা : ২৬৯৭]
* হযরত আবূ হুরায়রা (রা.) হইতে অপর হাদিসে বর্ণিত যে, রাসূলু (স.) বলেছেন "কিয়ামত ততক্ষণ সংঘটিত হবে না যতক্ষণ না হারাজ বেশি হবে। সাহাবায়ে কিরাম জিজ্ঞাসা করলেন, ‘হারাজ’ কী হে আল্লাহর রাসূল? তিনি বললেন হত্যা, হত্যা।" [মুসলিম : ৫১৪৩]
আশা করি সকলের কাছে দিবালোকের মতো স্পষ্ট যে, নবী করিম (সা.) কখনো একজন মানুষকে হত্যা করেননি, বরং নির্মম হত্যাযজ্ঞ থেকে মানুষকে দূরে থাকতে বলেছেন এমনকি হত্যাকে তিনি কুফরির মতো ভয়াবহ বলে আখ্যায়িত করেছেন।
তিনি মানুষকে হত্যার পরিবর্তে মিত্রতা তথা বন্ধুত্ব স্থাপনের কথা বলেছেন।
বিদায় হজ্বের ভাষণে রাসূল (স) বলেন-
* "সাবধান! ধর্ম সম্বন্ধে বাড়াবাড়ি করো না। এই অতিরিক্ততার ফলে তোমাদের পূর্বে বহু জাতি ধ্বংস হয়ে গেছে। [ইবনে মাজাহ]
* "চারটি কথা, হ্যা! এই চারটি কথা বিশেষভাবে মনে রেখো- শিরক করো না, অন্যায়ভাবে মানুষ হত্যা করো না, পরস্ত্রী অপহরণ করো না, ব্যাভিচার করো না। [মুসনাদে সালমা ইবনে কায়েস, রিহলাতে মুস্তফা]
.......আমি শুধু এটুকুই জেনেছি, যে কোন মৃত্যুই বেদনার, যে কোন হত্যাকাণ্ডই ঘৃণ্য.....
আর হ্যাঁ অভিজিৎ রায় হয়তো কোন একসময় আল্লাহ ও রাসুল (স.) এর উপর ঈমান আনতে পারতেন। এরকম নজির তো বহু রয়েছে পৃথিবীতে। কিন্তু সেই সুযোগ কি তাকে আমরা দিয়েছি??