বছর ছয়-সাতেক আগে সদ্য বিবাহিত এক বড় ভাই'র সাথে আমরা দুই বন্ধু রাজধানীর একটি চাইনিজ রেস্টুরেন্ট এ খেতে বসেছি। কথা বার্তার এক পর্যায় বড় ভাই বললেন, "তোমাদের দুজনারই চোখ খারাপ।"
দুজনই বিব্রত হয়ে গেলাম।
আমি বিব্রত গলায় বললাম, ভাই হঠাৎ এই কথা বললেন যে?"
বড় ভাই বললেন, "আসার পর থেকে দেখছি, তোমরা দুজনই শুধু মেয়েদের দিকে তাকায় তাকায় দেখ।"
বন্ধু করুণ গলায় বলল, "কি করবো ভাই, আমাদের দুজনের একজনেরও গার্লফ্রেন্ড নাই। তাই অন্যেরটা চাইয়া দেখি।"
বড় ভাই হেসে বললেন, "ধুর মিয়া গার্ল ফ্রেন্ড না থাকলেই কি অন্যেরটা চাইয়া দেখতে হইবো?"
আমি সুবোধ বালকের মতো বললাম, "ভাই, আর তাকাবো না। আমি তেমন একটা তাকাইও না। অর চোখ বেশি খারাপ।"
বন্ধু হতাশ গলায় বলল, "ভাই, এই বিষয়টা ভাবলে খুব খারাপ লাগে। লাইফটা বোধহয় বৃথাই গেল। দুজনার একটাও গার্ল ফ্রেন্ড নাই! "
"ধুর বোকা! গার্ল ফ্রেন্ড না থাকলেই বুঝি লাইফ বৃথা? আমারও তো গার্লফ্রেন্ড ছিল না। তাই বলে কি আমার লাইফ বৃথা হয়ে গেছে?"
আমি বললাম, "জ্বি না তা হয় নাই।"
ভাই বললেন, "শোন, কারো গার্লফ্রেন্ড কিংবা বয় ফ্রেন্ড থাকা-না থাকাতে জীবনে কিছু আসে যায় না। এই যে যাদেরকে দেখছ, এদের এক জোড়ারও বিয়ে হবে কি না সন্দেহ।"
"জ্বী ভাই, ঠিক বলেছেন। ভাই, আমরা তো হ্যান্ডসাম না। আমাদের কপালে কি ভবিষ্যতে ভালো পাত্রী জুটবে? "
ভাই এক চুমুক পানি খেয়ে নিলেন। তারপর একটু কেশে বললেন, "বুদ্ধিমতী মেয়ে আর মেয়ের বাবারা সবসময় যোগ্য ছেলে খোঁজে, হ্যান্ডসাম না। এ কথাটি অলওয়েজ মাথায় রাখবা। নিজেদের যোগ্য হিসেবে গড়ে তুলতে পারলে দেখবে গার্লফ্রেন্ড না থাকার আফসোস আর থাকবে না জীবনে।"
আজ অনেক ছেলে মেয়েকে দেখি, তাদের গার্ল ফ্রেন্ড কিংবা বয় ফ্রেন্ড না থাকাতে তারা এক ধরণের হতাশা ও হীনমন্যতায় ভুগে। আমার মনে হয়, তাদের কে আমাদের সেই বড় ভাইর কথাগুলো ফলো করা দরকার।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে আগস্ট, ২০১৫ রাত ৩:০২