somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

লাভ ম‍্যারেজ এর সাইড ইফেক্ট

০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১১:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



চারজনের কাহিনী শেয়ার করছি শুরুতেই ,

প্রথম ঘটনা:      ভার্সিটির শুরুতেই চমৎকার সাত ফ্রেন্ড এর একটা গ্রুপ তৈরি হয়ে যায় । হাসি আনন্দে কেটে যাচ্ছিল বেশ । গ্রুপের একজন ছেলে হঠাৎ করেই গ্রুপের একজন মেয়ের প্রেমে পড়ে যায় । দিন রাত পিছনে পিছনে ঘুরা , নানা ভাবে চেষ্টার পর তাকে পটাতে সক্ষম হয় । প্রেম দারুন ভাবে চলে যাচ্ছিল। কখনো অভিমান করলেই মেয়ের বাড়ির সামনে ছেলের ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে থাকা , ফোনের পর ফোন দেয়া । অদ্ভুত দিক ছিল ম‍্যানেজ করতে না পারলে নিজের হাত কেটে রক্তাক্ত করা ।
     
একসময় মেয়ের পরিবার জানাজানি হলে ছেলে তার চাচা নিয়ে আসেন  ,বাবাকে ম‍্যানেজ করছেন বলেন আরও অনেক কাহিনীর পর বিয়ে ঠিকঠাক , শপিং করা শেষ , ছেলেকে নিয়ে শেরোওয়ানি , সেন্টার সব ভাড়া করা শেষ । তারপর বিয়ের মাত্র দুইদিন বাকি , তখন জানতে পারে ছেলে তার বাবা কে এখনও জানাননি । ওনাদের বাসায় কেউ জানেনা । অথচ ছেলের মা আর চাচা এসে ঠিক করে গেছেন ।
 প্রোগ্রাম ক‍্যানসেল । এই ছেলের সাথে কিছুতেই বিবাহ হবেনা । যার কথার ঠিক নেই তার সাথে কিছুতেই মেয়ের বিয়ে না । অবশেষে ছেলের পাগলামি তে ঘরোয়া ভাবে বিয়ে সম্পূর্ণ হলো ।

বিয়ের পর মেয়ের মাথায় হাত । ছেলে তাহার পরিবার আর অবস্থান সম্পর্কে শতকরা ষাট ভাগ মিথ্যা বলেছেন । দুই বছর শেষে তিন বছর হলো তাদের তুলে নেওয়ার নামগন্ধ নেই । বাবার বাড়ি থাকলেও মেয়ে তাহার শুশুড়বাড়ির দায়িত্ব পালন করে আসছিল । ধীরে ধীরে প্রেমিক বর তাহার রূপ পাল্টালো । ওনি যা বলবেন মেয়েটাকে তা করতেই হবে ,না হলে হুলস্থুল কান্ড কারখানা শুরু হয় । শাশুড়ি অপবাদ দিচ্ছেন রিসেন্টলি , মেয়েই নাকি তার ছেলেকে জোর করে বিয়ে করেছেন । তার ছেলে চাননি ।

দ্বিতীয় ঘটনা :      এই গল্পের নায়িকা হাসি আর দুষ্টুমি তে জীবন পাড় করছিলেন ,  হঠাৎ করেই সমবয়সী এক ছেলের প্রেমে পড়ে যান । ছেলের সাথে যতই কথা বলতে চাইতেন ছেলে ততই ভয়ে সরে যেতো । আর মেয়ে ততই প্রেমে পড়তে থাকে । একসময় ছেলেও পটে যান । নায়িকার হাসি পাগলামি সবকিছুকেই ভালোবেসে ফেলেন অবশেষে ।

ওনাদেরও  অনেক কাহিনীর পর বিবাহ ঠিক হয় । ঘরোয়াভাবে বিয়ে সম্পূর্ণ হয় ।
বিয়ের পর পর ছেলে চাকরি ছেড়ে দুইজন মিলে এমবিএ শুরু করলেন । শুশুর এর টাকাতেই ছেলের বড় বোনের সাথে ওনারা হানিমুন এ গেলেন । ফিরে এসে ননাশের কাছে ওনাদের তোলা ছবিগুলো চাইলেন ননাশ কিছুতেই সেই ছবি দিলেন না ।

বর এর সাথে তার থাকা শাশুড়ি মানতে পারছেন না । রাতে ফোন দিয়ে গল্প জুড়ে দেন । একদিন বিয়ের শুরু তে মেয়ে শুশুড়বাড়ি থেকে গেলেন । কোন এক আত্মীয় এসে হাজির । তার জন্য কেউ রুম ছাড়তে রাজি না , অবশেষে বর আর বউ রুম ছেড়ে দিলেন , ড্রয়িং রুমে থাকলেন ।

ননাশ কাজের লোকের মতো অর্ডার করা শুরু করলো , মেয়ে শেষের দিকে মানতে পারছিল না । অবাক ব‍্যাপার হচ্ছে , একদিন ননাশ চাওমিন খাচ্ছিলেন , সেদিন মেয়েটি শুশুড়বাড়ি কোন এক কাজে আসেন , ননাশ খাওয়ার পর শাশুড়ি চাওমিন ফ্রিজে রেখে দিলেন । বউ কে একবারও স্বাদলেন না ।

ননাশের বিয়ে ঠিক হলো ,ছেলের বউকে বিয়ের আগের দিন জানালেন আসার জন্য । সবার জন্য অনেক শপিং করা হলো ,ছেলের বউর জন্য করেননি ।

ছেলে যথেষ্ট ভালো ভদ্র , তবে তার কিছু বলার নেই ,ইনকাম ও কম ,বউ চালানো র সামর্থ্য নেই , যদিও মেয়ে চাকরি করেন ।
ওনারোও উঠিয়ে নেয়ার খবর নেই কারোও । 

তৃতীয় ঘটনা :        একসাথেই দুইজন গ্রাজুয়েশন সম্পূর্ণ করেন ।
একদিন ছেলেটি পছন্দের কথা জানান দেন । ছেলে মেয়ের পরিবারকে রাজি করিয়ে ফেলেন নানা প্রচেষ্টায় । ধুমধাম করে বিয়ে সম্পূর্ণ হয় ।
    
অপরদিকে মেয়ের শুশুড়বাড়ির প্রোগ্রাম অতি ঘরোয়া ভাবে হলো । বউকে কারোও সাথে পরিচয় করানো হলোনা । মেয়ে বাড়ির লোকজন মন খারাপ করে ফিরলেন , গ্রামের বিয়ে মজার ভেবে অনেকেই গিয়েছিলেন ।

দুই জন মাত্র চাকরি তে ঢুকেছেন ,টুনাটুনির সংসার । বাসা ভাড়া দিয়ে আর তেমন টাকাই বাঁচে না । কেউ আসতে চাইলে বাসায় বাজার থাকে না । নানাভাবে না করতে হয় । ঝগড়া ও বেড়ে চলল দুইজনের মাঝে ।

চতুর্থ ঘটনা :     স্কুল থাকাকালীন মেয়ের প্রেমে পড়েন ভার্সিটিতে পড়ুয়া ছেলে , দীর্ঘ প্রেমের পর মেয়ের পরিবারের অখুশি তে বিয়ে সম্পূর্ণ হয় । বিয়ের বছর খানিক এর মাঝেই ছেলে চাকরি ছেড়ে দিলেন ,অনেক চেষ্টা করেও চাকরি পেলেন না ।

 মেয়ে সবে গ্রাজুয়েশন শেষ , অনলাইনে বিজনেস শুরু করলেন । মেকআপ আর্টিষ্ট হিসেবেও ভালোই চলছিলেন । বরের পছন্দ হলোনা যাচ্ছে তাই বলে থামিয়ে দিতেন ।

শুশুড়বাড়িতে শাশুড়ি রান্না ঘর দখল হবার ভয়ে রান্না ঘরে বউকে ঢুকতে দিতেন না । কাজের লোক রান্না করলেও ,রান্না ঘর হারানোর ভয় পেতেন ।

মেয়ে কিছু করতে না পেরে প্রেগনেন্ট হলেন , সবার এখন সুনজর পড়েছে ওনার উপর । এই ভালোবাসা কতোদিন থাকবে সেটাই দেখার বিষয় ।

বি:দ্রঃ ঘটনা গুলো পরিচিত মানুষের ,খুব কাছ থেকে দেখা ।
সবাই এখন আফসোস করছেন ।


সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১১:১৩
৪১টি মন্তব্য ৪১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দাদার দাদা।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৫৫

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী।

আমার দাদার জন্মসাল আনুমানিক ১৯৫৮ সাল। যদি তার জন্মতারিখ ০১-০১-১৯৫৮ সাল হয় তাহলে আজ তার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×