somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কবে গুলশান বনানীতে প্লট পাবেন, সেই চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলুন

৩০ শে মার্চ, ২০১৫ রাত ৯:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অরবিন্দ কেজরীওয়াল এ মুহুর্তে আমার সবচেয়ে প্রিয় রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্ব। গতকাল রবিবার দিনটা আমার ব্যাক্তিজীবনে অনেক ষ্ট্রেসফুল থাকলেও সন্ধ্যায় একান্ত নির্জনে বসে ওর ভিডিও বক্তব্য শুনছিলাম। ঠিক যেমন অনেকেই মন ভালো করার জন্য প্রিয় গান শুনেন, ঠিক তেমনটাই। আমার মন ভালো করার ঔষধ হলো অনুপ্রেরণামুলক রাজনৈতিক বক্তব্য, সে যেই হোক।

অনেক লম্বা বক্তব্য, পুরোটা মনোযোগ দিয়ে শুনতে পারি নাই। হিন্দি ভাষাটা আমার শতভাগ আয়ত্বে নেই। যতটা শেখা হিন্দি মুভি দেখা শেখা ও জানা। যাই হোক, তিনি ভাষন দিচ্ছিলেন তার দলের এক গুরুত্বপুর্ন সভায়। বলছিলনের মাত্র দেড় মাসে কি সব অভুতপুর্ব কাজে তিনি হাত দিয়েছেন এবং কতখানি সফলতা অর্জন করতে পেরেছেন, সেগুলোর একটা তুলনামুলক চিত্র তিনি বিজেপির মোদীর এক বছরের সরকারের সাথে চোখে আঙুল দিয়ে সবাইকে জানাচ্ছিলনে। কয়েকটা মনে ধরার মত পয়েন্ট আমি এখানে বলছি।

দিল্লীতে যে সব বেসরকারী হাসপাতাল আছে তাদের মালিক যারা তারা সরকারের কাছ থেকে হাসপাতাল করার জন্য জমি নিয়েছেন এই শর্তে যে, শতকরা পঁচিশভাগ গরীব জনসাধারনকে বিনা মুল্যে সেখানে চিকিতসা সেবা দেয়া হবে। কিন্তু পরে দেখা যায়, তারা গরীব মানুষদের সেখানে চিকিতসা দেয়াতো দুরের কথা, সেইসব চকচকে হাসপাতালে ঢুকতে পর্যন্ত দেন না। শুধু কি তাই? সেই পঁচিশভাগ গরীবদের চিকিতসার কোটা তারা তাদের বড়লোক আত্নীয়দেরকে গরীব দেখিয়ে পুরন করেন এবং অবৈধ ফায়দা তুলে নেন। এভাবেই চলে আসছিল এতদিন। এখন কেজরিওয়াল আসার পর সিদ্ধান্ত হয়েছে, এইসব গরীব রোগীদের তিনি সরকারী হাসপাতাল থেকে ট্রান্সফার করে সরাসরি ঐসব বেসরকারী হাসপাতালে পাঠাবেন। অর্থাত পঁচিশভাগ গরীব রোগীদের সেবা না দেবার আর কোন উপায় থাকবে না, সেগুলো সরকারী হাসপাতাল থেকে সরকারী তত্বাবধানে পাঠানো হবে।

এরকম আরো অনেক কথা তিনি বললেন, যেমন ই-রেশন কার্ড চালু করা, নির্বাচনি ওয়াদা অনুযায়ী বিদ্যুতের মুল্য অর্ধেক করে দেয়া, প্রত্যেক ঘরে ঘরে সমানুপাতিক হারে পানি পৌছে দেয়া, আফিসে ঘুষ না দিয়ে নিজে নিজে ঘরে বসে অন লাইনে আইডি কার্ড বানিয়ে প্রিন্ট করে ল্যামিনেটেড করে ব্যবহার করা ইত্যাদি।

বললেন ঈমান ও সততার সাথে নির্বাচনে বিজয়ী হবার কথা। নিজ দলের মধ্যে দুজন মীরজাফরের উথ্থানে নিজের বেদনার কথা তুলে ধরে বললেন, ওরা আদর্শের কথা বলেন, আদর্শ ও বিজয় দুটোর কথা বলেন না। সারা ভারতে ১৩০০ রাজনৈতিক দল আছে, দু একজন বাদে আর কারো খবর মানুষ জানে না। সুতরাং আদর্শ রক্ষার সাথে সাথে, সততা ও ঈমানের সাথে নির্বাচনে জয়লাভ করাটাও একটা গুরুত্বপুর্ন বিষয় বলে উল্লেখ করলেন। আমার ধারনা এই বক্তব্যটা বাংলাদেশের কিছু আদর্শবাদী দলের দাবিদাররা যাচাই করে দেখলে নিজেরা ও দেশকে উপকার করতে পারবেন।

সবশেষে বলবো, আসুন, কবে গুলশান বনানীতে একটা সরকারী প্লট পাবো, কবে মন্ত্রী এমপির সুপারিশে বিনা ভাড়ায় প্রথম শ্রেনীর কামরায় বসে রেল ভ্রমন করতে পারবো, কবে একবেলা ভালো হোটেলে বিনা পয়সায় পোলাও বিরিয়ানী খাবো, কবে উপজেলার গম চাল চুরি করেও জেল না খেটে বুক ফুলিয়ে চলতে পারবো, কবে সরকারী দল করে থানার পুলিশকে ধমক দিয়ে পার পেয়ে যাবো, কবে কোমরে অবৈধ অস্ত্র নিয়ে চললেও কেউ টু শব্দ করার সাহস পাবে না, কবে বড় নেতা নেত্রীর 'ইন্টারন্যাশনাল লাক্স সাবান' দিয়ে ধুয়া, তুলতুলে নরম হাতের পরশে নিজের কাধ, মাথা আরামে বিগলিত হবে, কবে 'কর্তায় কইবে.... ভাই আনন্দের সীমা নাই' হইবে এইসব মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে মস্তিষ্কের ডিস্কটাকে রিফরমেট করে ফেলি। যে যে দলই করি না কেন, মস্তিস্কের সেই রিফরমেটকৃত খালি জায়গাটাকে তৃতীয় রাজনৈতিক ধারার, সুস্হ্য রাজনৈতিক ধারার উপযোগী করে গড়ে তুলি। না হলে অচিরেই যুদ্ধ করে স্বাধীন করা এই দেশ দেশী, বিদেশী হায়েনারা লুটেপুটে খাবে আর আমরা চেয়ে চেয়ে দেখবো, মাথার চুল ছিড়ে ছিড়ে ফেলবো, কারো কিছুই আর করার থাকবে না।
২টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও পদ্মশ্রী পুরস্কার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৬



এ বছরের পদ্মশ্রী (ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা) পদকে ভূষিত করা হয়েছে, বাংলাদেশের রবীন্দ্র সংগীত এর কিংবদন্তি শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে।

আমরা গর্বিত বন্যাকে নিয়ে । ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×