আমি ডাঃ সুব্রত বলছি:
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতলের যে ঘটনা নিয়ে মিডিয়াতে তোলপাড় চলছে আমি তার তীব্র প্রতিবাদ এবং নিন্দা জ্ঞাপন করছি।
আমাকে নিয়ে যে ঘটনা ঘটেছে তার পুরোটা নিচে তুলে ধরলাম:
যে রোগীটা এসেছিল সেটি ছিল Conversion Disorder এর রোগী। আমি তাকে পরীক্ষা করে দেখার জন্য পেইনফুল stimulus দেই। এবং তাকে ধমক দিয়ে টেনে তুলে বসানোর চেষ্টা করি। তাকে ধমক দেয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে তার সাথে থাকা attendant আমার উপর চড়াও হয়ে আমাকে শারিরীকভাবে লাঞ্ছিত করে।
[ বি: দ্র: এত কিছুর পরেও সেই রোগীকে চিকিত্সা দেয়া হয় এবং রোগী কিছুক্ষণ পরেই সুস্থ হয়ে যায়। ]
আমি ঘটনার আকস্মিকতায় হতবাক হয়ে যাই। আমি রোগীর লোকের উপর রেগে গেলে সে আবার আমার উপর চড়াও হয়। আমি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দায়িত্বরত পুলিশ এবং পরিচালককে ঘটনাটি অবহিত করি।
সেই সাথে আমার সহকর্মী ডাক্তারবৃন্দকে ফোনে ঘটনাটি জানালে তারা আমাকে সুরক্ষা দেয়ার জন্য ১৩ নং ওয়ার্ডের সামনে চলে আসে। কিন্তু ইতোমধ্যে পরিচালক পুলিশসহ ওয়ার্ডে চলে আসেন। এবং কোনও ইন্টার্ন ডক্টরকে ভিতরে প্রবেশ করতে দেন নি।
ঘটনার এক পর্যায়ে পুলিশ এবং সাংবাদিকদের সাথে আমার সহকর্মীদের বাদানুবাদ হয়। এবং এতে আমার অনেক সহকর্মী (বিশেষ করে মেয়ে সহকর্মী) পুলিশের হাতে লাঞ্ছিত হয়।
হাসপাতালে ডাক্তারের অবহেলায় রোগী মারা গেছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে সাংবাদিকবৃন্দ হাসপাতালে ভিড় জমায়।( এমনকি সব চ্যানেলে অলরেডি এটা স্ক্রলিং ও হচ্ছে।) । আমার সহকর্মীদের কেউ কেউ সাংবাদিকদের চলে যেতে বলে। সাংবাদিকরা চলে যাওয়াতো দূরের কথা, উল্টো ফুটেজ নিতে থাকে। এবং তারা বহিরাগত কিছু লাঠি-সোটা ধারী লোক নিয়ে আমার সহকর্মীদের উপর চড়াও হয়। এই আক্রমণ প্রতিহত করতে গিয়ে আমার কয়েক বন্ধু-বান্ধবী আহত হয়।
নিচের ভিডিওটা দেখলেই বুঝবেন কে কর উপর চড়াও হয়েছিল। সাংবাদিক কিভাবে সাহস পায় ডাক্তারের উপর লাঠি হাতে আক্রমণ করার?
আমি জানি আমার ওয়ার্ডে কোনও রোগী মারা যায় নি। এবং এটা যে কেউ হাসপাতালে এসে সরেজমিনে দেখে যেতে পারেন। হলুদ সাংবাদিকতার এ কেমন নজির চলছে টিভি চ্যানেল গুলোতে? অধিকাংশ চ্যানেল গুলোতে রোগী মৃত্যুর সংবাদ প্রচার করছে।
আমি ওপেন চ্যালেন্জ দিচ্ছি আমার ওয়ার্ডে কোনও রোগী মারা যায় নি।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ১:৪৫