somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

হাসান জাকির ৭১৭১
আমি- হাসান জাকির। অজ পাড়াগাঁয়ে বড় হয়েছি। কিন্তু জীবিকার তাগিদে শহুরে জীবনে আটকা পড়ে আছি। কাজ করছি- স্বাস্থ্য সেবা খাতে। ভালবাসি নিজেকে- নিজের পরিবারকে, দেশকে- দেশের মানুষকে। সারাদেশে ঘুরে বেড়ানো আমার নেশা।

"চা- চক্র"

২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ দুপুর ২:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বর্তমানে দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও বহুল প্রচলিত রঙিন পানীয় সম্ভবত 'চা"। সম্ভবত বলার কারন হল- ভিআইপি জোনে বিশেষ সংরক্ষিত এলাকায় রাতজুড়ে কি পরিমান বিশেষ রঙিন পানীয় নিঃশেষ করা হয় সে বিষয়ে আমি নিশ্চিত নই।
ব্রিটিশরা আমাদের পূর্বসূরিদের এমন এক নেশাদ্রব্যের সন্ধান দিয়ে গিয়েছেন যা এখন আমাদের দৈনন্দিন জীবনে অত্যাবশ্যকীয় অনুষঙ্গ। যদিও চা এর ইতহাস থেকে জানা যায়- এতদ্বঞ্চলে চা এর উত্থান খুব একটা মসৃন ছিল না। এটিকে জনপ্রিয় করতে ব্রিটিশদের অনেক চেষ্টা-জিকির-ফিকির এমনকি বহু কৌশলেরও আশ্রয় নিতে হয়েছে। বাঙালীরা "ফ্রি তে আলকাতরা খায়" ব্যাপক কথিত প্রবাদ হলেও বাঙালীদের যখন ফ্রি দিয়েও চা খাওয়ানো যায়নি তখন অনেক কৌশলে তাদের সবচেয়ে প্রিয় স্বাস্থ্যসম্মত পানীয় দুধের সাথে মিশিয়ে "দুধ-চা" করে তাকে গ্রহণযোগ্য করতে হয়েছে। তারপরে চা কে আর পিছনে ফিরতে হয়নি। যৌবতী কন্যার মত সকলি তারই পিছনে ধায়..........।
যদিও স্বাস্থ্যগত দিক বিবেচনায় "দুধ-চা" চা পানের উদ্দেশ্যকেই ব্যহত করে তাই এর তুলনায় "রং-চা" বা লিকার চা কেই স্বাস্থ্য সচেতন ব্যক্তিগণ প্রাধান্য দিতে চান। আমরা অবশ্য দুধেল চা বা চায়ের দুধকেই বেশী পছন্দ করি তার এই বিশাল জনপ্রিয়তায় দুধের ভূমিকার স্বীকৃতি স্বরুপ! তবে শুধু দুধ নয়, চা এর সাথে মিলিত হওয়ার সৌভাগ্যবানের তালিকায় যে আরো কত মশলা, চিনি, ফলমূল ও অন্যান্য উপাদান রয়েছে এবং শুধু সাত বা চৌদ্দ রং চা নয় আরো যে কত রকমের চা রয়েছে তা রীতিমত জরিপ অধিদপ্তরের বিষয়। ফুটপাতের সামান্য চা-ই আবার শপিং মল বা সুপার মলের "টি স্টল" বা "কফি শপ" এ ও স্থান করে নিয়েছে ভিন্ন কোন স্বাদ-গন্ধ-দামে।
বই-পুস্তকে বা কাগজে-কলমে "চা" এর সাথে "পান" শব্দটি যুক্ত থাকলেও ব্যবহারিক দিকে এর সাথে "খাওয়া" শব্দটি ব্যাপক জনবহুল! তাইতো, আমরা সবাই মিলে চা খাই দিনে-রাতে, সকাল-সাঝে, কাজে কিংবা অ-কাজে! আজ বাসা-বাড়ি, অফিস-আদালত থেকে শুরু করে হাট-বাজার, গ্রামে-গঞ্জে, শহর কিংবা নগরে হোটেল-রেস্তোরা, রাস্তা-ঘাট অথবা ফুটপাতে চারিদিকেই মেহমানদারী কিংবা আড্ডার রাজ্যে পৃথিবী কেবলই চা-ময়! "পান" এর স্থলে বরং চা- এর সাথে খাওয়া যোগ করার পরে অনেকের কাছেই মসলাযুক্ত খিলি পান অধিক প্রচলিত বিধায় চায়ের সাথে পানের দোকানের সখ্য।
কাজের ফাকে ক্লান্তি দূর করে শরীরকে চাঙ্গা করতে যেমন ধোয়া-ওঠা এক কাপ গরম চা খুব জরুরী, তেমনি কাজে কিংবা সংসার জীবনে বউকে ফাকি দিতে অজুহাত হিসেবেও চা মন্দ নয়। তাই বুঝি মাঝ রাতেও গলির মোড়ের বিখ্যাত নানা স্বাদের চায়ের দোকানে ভিড় থাকে।
চা এর উত্থানের গল্পে শামিল হতে কেউই যেন পিছিয়ে নেই। তাই হয়ত উচ্চ মাধ্যমিকের সহপাঠে আমাদেরকে অদ্ভূত চা খোরের গল্প পড়তে হয়েছিল, যার জীবন বাচাতে শেষ পর্যন্ত তিনি গলায় চা পাতি আর জল ঢেলে দিয়েছিল। সিনেমা নাটকেও নব্য প্রেমিক যুগলের প্রথম পরিচয় থেকে শুরু করে বিচ্ছেদ পর্যন্ত চা-হীন খালি কাপে চুমুক দেয়ার অভিনয় করতে হয়। বিত্তশালীদের স্ট্যাটাস বাড়াতে একটা রিসোর্ট কিংবা চা বাগান থাকা চাই। আর আমাদেরও সেই চা বাগানে বেড়াতে গিয়ে ফেসবুকে অন্তত একটা সেলফি দেয়া চাই। এমনকি মোবাইল কোম্পানীদেরও টকটাইম কিংবা ইন্টারনেট প্যাকেজের জন্য "বারো রকমের মানুষ, তের রকমের চাওয়া" দেখাতে নানা রকমের চা এর বিজ্ঞাপন দিতে হয়।
আমার এক বস বলত- চা খাবো কি, চা- ই তো আমাকে খাচ্ছে।
অবশ্য চা এর এই চক্রে আজ আমরা চা খাচ্ছি, নাকি চা- ই আমাদের খাচ্ছে সেটা হয়ত গবেষণার বিষয়!!

সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৪:৪৮
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হালহকিকত

লিখেছেন স্প্যানকড, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:১২

ছবি নেট ।

মগজে বাস করে অস্পষ্ট কিছু শব্দ
কুয়াসায় ঢাকা ভোর
মাফলারে চায়ের সদ্য লেগে থাকা লালচে দাগ
দু:খ একদম কাছের
অনেকটা রক্তের সম্পর্কের আত্মীয় ।

প্রেম... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×