ইউরোপিয়ান সোশ্যাল বিজনেস ফোরাম-২০১৪ এ যোগদানের জন্যে নোবেল বিজয়ী বাংলাদেশি অর্থনীতিবিদ প্রফেসর মুহম্মদ ইউনুস এর সুইডেন ভ্রমনকালে তাঁকে খুব কাছে থেকে দেখা ও কথা বলার সুযোগ হয়। দেশে তাঁর পক্ষে বা বিপক্ষে বেশ কথা শোনা যায়। আমরা সবাই জানি ব্যাপারটা রাজনৈতিক। আর যেহেতু তাঁকে পূর্বে কাছ থেকে দেখার সুযোগ হয়নি, তাই বেশ উৎসুক ছিলাম। তবে তাঁকে দেখে কয়েকটা বিষয় খেয়াল করে অবাক হলাম, মুগ্ধ হলাম।
১। তিনি খুবই সহজ সাধারন নিরহংকারী একজন মানুষ। অনুষ্ঠানের ফাঁকে ফাঁকে তিনি নিজেই উদ্যোগী হয়ে ছাত্র-ছাত্রীসহ সবার সাথে দেখা করছিলেন, কুশল বিনিময় করছিলেন। আর কথার শেষে হেসে বলছিলেন, এসো এবার একটা ছবি তুলি তোমার সাথে। যেন অনেক দিনের চেনা-জানা। তাঁর সাথে কথা শেষে তাই অনেক বিদেশির মুখে বাংলাদেশি মানুষের ভুয়সী প্রশংসা শুনলাম।
২। অনুষ্ঠানে দেশি বিদেশি নামকরা অনেক বড় বড় স্পিকার এর ভীড়ে তিনি বেস্ট স্পিকার। তার কথার ধরন, যুক্তিবোধ, প্রাঞ্জলতা এমনই গভীর যে উনার বক্তব্য সবাই মুগ্ধ হয়ে শোনেন। শুধুমাত্র তার বক্তব্য শোনার জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে অনেক ব্যক্তি কেন উপস্থিত হয়েছিলেন তা বেশ বুঝতে পারলাম। তিনি যখন বক্তব্য রাখছিলেন বাংলাদেশি হিসেবে বারবার নিজেকে গর্বিত মনে হচ্ছিল। আমাদের এই অভাগা দেশটাকে তিনি বিশ্বের দরবারে কত উচুঁতে নিয়ে গিয়েছেন ভাবতেই ভালো লাগছিল।
৩। সবচেয়ে বড় ব্যাপার, তিনি অনেক বড় মনের ও মাপের একজন মানুষ। আলোচনায় বারবার দেশের রাজনীতি-অর্থনৈতিক বিষয়গুলো প্রাসঙ্গিক হলেও তিনি কখনো এ বিষয়ে কারো প্রসঙ্গে বিরুপ কোন মন্তব্য করেননি। অনেক বিদেশি তাকেঁ দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি হেসে এড়িয়ে গেছেন। কারো বিরুদ্ধে কোন বক্তব্য দেননি, অভিযোগ করেননি।
শুধুমাত্র তাঁর কারনেই বাংলাদেশি জানামাত্রই অনুষ্ঠানে আগত অনেকে নিজ থেকে পরিচিত হলো, কথা বলল। বাংলাদেশ সম্পর্কে জানতে চাইলো। বাংলাদেশের মানুষের জীবন-যাপন, তাদের ইতিহাস-ঐতিহ্য, আচার-আচরন জেনে মুগ্ধ হলো। দিনশেষে ফিরে এলাম একরাশ মধুর অনুভুতি নিয়ে। বাংলাদেশ- আমার দেশ- একরাশ অহংকারবোধ নিয়ে। ধন্যবাদ মুহম্মদ ইউনুসকে। বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশি হিসেবে আমাদের নতুন করে সম্মানিত করার জন্যে।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই অক্টোবর, ২০১৪ ভোর ৪:৫৫